প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২৬শে অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রথম সারির তেল ও গ্যাস কোম্পানীরগুলির মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করবেন। বার্ষিক এই অনুষ্ঠানটি নীতি আয়োগ এবং পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক আয়োজন করবে।
আন্তর্জাতিক স্তরে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। অপরিশোধিত জ্বালানী তেলের তৃতীয় বৃহত্তম উপভোক্তা ছাড়াও ভারত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে চতুর্থ বৃহত্তম আমদানীকারক। পরোক্ষ উপভোক্তার থেকে সক্রিয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে তেল ও গ্যাস সরবরাহ শৃঙ্খলের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে ওঠায় নীতি আয়োগ ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানীগুলির মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকদের মধ্যে প্রথম গোলটেবিল বৈঠকের ব্যবস্থা করে।
এই অনুষ্ঠানটির কলেবর ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর ৪৫ থেকে ৫০টি আন্তর্জাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানীর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকরা বৈঠকে যোগ দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বার্ষিক এই অনুষ্ঠানে আলোচনার গুরুত্ব , পরামর্শের গুণমান এবং অন্যান্য বিষয়গুলি পরবর্তীকালে নীতি – নির্ধারণ তৈরির ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
নীতি আয়োগ এবং পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের উদ্যোগে আয়োজিত পঞ্চম এই অনুষ্ঠানে এবছর প্রধান প্রধান তেল ও গ্যাস কোম্পানীগুলির ৪৫ জন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকরা যোগ দেবেন।
এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ হল, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে ব্যবসা – বাণিজ্যের ভালো পন্থা, সংস্কার নিয়ে আলোচনা করা এবং ভারতীয় তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে গৃহীত কৌশলের বিষয়ে অবগত করা। বার্ষিক এই অনুষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের পাশাপাশি পরিচালন গোষ্ঠীগুলির গৃহীত উদ্যোগের ফলে ক্রমশ গুরুত্ব পাচ্ছে। এই অনুষ্ঠানে বিশ্বের তৃতীয় জ্বালানী ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে ভারতের ভূমিকা শক্তিশালী হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা অনুসারে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০,০০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এই অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখবেন, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস ও ইস্পাত মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। স্বাগত ভাষণের পর ভারতের তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের বিষয়ে সার্বিক পর্যালোচনা এবং সম্ভাবনা নিয়ে সর্বাত্মক আলোচনা হবে।
এই অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকরা ও বিশেষজ্ঞরা মতবিনিময় করবেন। তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রে যাঁরা তাঁদের মূল্যবান পরামর্শ দেবেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন : আবু ধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানীর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর শিল্প এবং আধুনিক প্রযুক্তির মন্ত্রী ড. সুলতান আহমেদ আল জাবের, কাতারের জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী এবং কাতার পেট্রোলিয়ামের ডেপুটি চেয়ারম্যান, সভাপতি ও মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক সাদ শেরিদা আল–কাবি, অস্ট্রিয়া ভিত্তিক সংস্থা ওপেক–এর সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মাদ সানুসি বারকিন্ডো।
রাশিয়ার রোজনেস্টের কর্ণধার ড. ইগর সেচিন, বিপি লিমিটেডের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক মিস্টার বার্নার্ড লুনে, ফ্রান্সের টোটাল এসএ–এর কর্ণধার মিস্টার প্যাট্রিক পাউইয়ান্নে, বেদান্ত রিসোর্সেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শ্রী অনীল আগরওয়াল, আরআইএল-এর চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী মুকেশ আম্বানী, ফ্রান্সের ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. ফাতিহ বিরোল, সৌদি আরবের ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল মি. জোসেফ ম্যাক মনিগলে, জিইসিএফ–এর মহাসচিব মি. ইউরি সেন্টিউরিন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁদের বক্তব্য জানাবেন। লিওনডেল বাসেল, টেলুরিয়ান, শ্লুমবার্গার, বেকারহিউজেস, জেরা, ইমারসন এন্ড এক্স–কোল ও ভারতীয় গ্যাস এবং তেল সংস্থাগুলিও তাঁদের বিষয়ে জানাবে।
প্রধানমন্ত্রী এর পর সেরাউইক আয়োজিত চতুর্থ ইন্ডিয়া এনার্জি ফোরামের উদ্বোধন করবেন। শীর্ষস্থানীয় তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থা আইএইচএস মার্কিট এই অনুষ্ঠানের আয়োজক। ভারত সহ ৩০টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন জ্বালানী সংস্থার পদস্থ আধিকারিকরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
স্বাগত ভাষণে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য :
সৌদি আরবের জ্বালানী মন্ত্রী মি. আবদুলাজিজ বিন সালমান আল সৌদ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানী সচিব ড্যান ব্রৌলেত্তে
সেরাউইকের চেয়ারম্যান, আইএইচএস মার্কিটের ভাইস চেয়ারম্যান ড. ডেনিয়াল ইয়ারগিন
ইন্ডিয়া এনার্জি ফোরামে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য : মহামারীর ফলে ভারতের ভবিষ্যৎ জ্বালানীর চাহিদা, ভারতের আর্থিক বিকাশের জন্য সুরক্ষিত সরবরাহ, ভারতের জন্য জ্বালানীর পরিবর্তন ও পরিবেশগত বিষয়ের গুরুত্ব, ভারতের জ্বালানীর মিশ্রণে প্রাকৃতিক গ্যাস – এর উপায়, শোধনাগার এবং পেট্রোকেমিক্যালস : এ সংক্রান্ত কৌশল, জৈব জ্বালানী, হাইড্রোজেন ও বৈদ্যুতিক যানবাহন ইত্যাদি।