প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৬ই জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গুজরাটে একগুচ্ছ রেল প্রকল্প উদ্বোধন ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি গুজরাট সায়েন্স সিটিতে অ্যাকোয়াটিক্স ও রোবটিক্স গ্য়ালারি এবং নেচার পার্কেরও উদ্বোধন করবেন।
যে রেল প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করা হবে, সেগুলি হল : নব নির্মিত গান্ধীনগর ক্যাপিটাল রেল স্টেশন, মাহেসানা – বারেঠার মধ্যে লাইনের গেজ পরিবর্তন এবং বৈদ্যুতিকীকরণ, সুরেন্দ্র নগর – পিপাভাও শাখার বৈদ্যুতিকীকরণ। শ্রী মোদী এই অনুষ্ঠানে গান্ধীনগর ক্য়াপিটাল – বারাণসী সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস এবং গান্ধীনগর ক্যাপিটাল থেকে বারেঠার মধ্যে মেমু ট্রেনের যাত্রার সূচনা করবেন।
নব নির্মিত গান্ধীনগর ক্যাপিটাল রেল স্টেশন :
৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে নব নির্মিত গান্ধীনগর ক্যাপিটাল রেল স্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে। এই স্টেশনে আধুনিক বিমানবন্দরের মতো বিশ্বমানের সব ধরণের সুযোগ সুবিধা থাকবে। ভিন্নভাবে সক্ষমদের সুবিধার জন্য বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। এদের জন্য বিশেষ টিকিট বুকিং কাউন্টার, র্যাম্প, লিফট, গাড়ি পার্কিং এর জায়গা থাকছে। নব নির্মিত রেল স্টেশনটি পরিবেশ বান্ধব স্টেশন। এই স্টেশনে অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধের পাশাপাশি শিল্পের নান্দনিক ছোঁওয়া থাকছে। স্টেশনের বাইরে ৩২ রকমের বিষয়বস্তু সম্বলিত আলোক সজ্জার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এছাড়াও স্টেশনের মধ্যে একটি ফাইভ স্টার হোটেল আছে।
মাহেসানা – বারেঠার মধ্যে লাইনের গেজ পরিবর্তন এবং বৈদ্যুতিকীকরণ (বাড়নগর স্টেশন সহ) :
৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মাহেসানা – বারেঠা শাখায় ২৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রডগেজ লাইন করা হয়েছে। এছাড়াও ৭৪ কোটি টাকা ব্য়য়ে বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ শেষ হয়েছে। এই শাখায় বিসনগর, বাড়নগর, খেলারু এবং বারেঠা স্টেশনে নব নির্মিত ভবন তৈরি করার পাশাপাশি ১০টি স্টেশনের সংস্কার করা হয়েছে। বাড়নগর – মধেরা – পাটন ঐতিহ্যবাহী সার্কিটের আওতায় বাড়নগর স্টেশনটিকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। এই স্টেশনটি মাহেসানা – বারেঠা শাখার গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। বাড়নগর স্টেশনে পাথরের খোদাই করা মূর্তি ছাড়াও আশেপাশে এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য অপরিসীম। এখন থেকে এই স্টেশনে ব্রডগেজ লাইন ব্যবহার করে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন বাধাহীনভাবে চলাচল করবে।
সুরেন্দ্র নগর – পিপাভাও শাখার বৈদ্যুতিকীকরণ :
২৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হয়েছে। এর ফলে পালানপুর, আমেদাবাদ এবং দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে পিপাভাও বন্দরে বাধাহীনভাবে পণ্য পরিবহণ করা যাবে। বৈদ্যুতিকীকরণের ফলে আমেদাবাদ, বিরামগাম এবং সুরেন্দ্রনগর ইয়ার্ডে ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। ট্রেনের ইঞ্জিন পরিবর্তন করার জন্য যে সময় নষ্ট হতো, সেটি আর হবে না।
অ্যাকোয়াটিক্স গ্যালারি :
অত্যাধুনিক অ্যাকোয়াটিক্স গ্যালারিতে বেশ কয়েকটি দিঘী রয়েছে। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের জলজ প্রাণীরা রয়েছে। মূল দিঘীতে বিশ্বের নানা জায়গার হাঙড় রাখা হয়েছে। এখানে ২৮ মিটার দীর্ঘ একটি সুড়ঙ্গ আছে, যার মধ্য দিয়ে হাঁটার সময় অনন্য অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হবে।
রোবটিক্স গ্যালারি :
রোবটিক্স প্রযুক্তির বিভিন্ন তথ্য জানার জন্য এই গ্যালারি তৈরি করা হয়েছে। এখানে দর্শকরা নানা তথ্য জানতে পারবেন। মূল প্রবেশ পথে রোবটের পরিবর্তন নিয়ে একটি বিশাল রেপ্লিকা আছে। এখানে সব থেকে আকর্ষণীয় দিকটি হল, মানুষের অনুভূতি সম্পন্ন রোবট দর্শকদের স্বাগত জানাবে। দর্শকরা আনন্দে বিস্ময়ে উৎফুল্ল হয়ে উঠবেন। প্রদর্শশালার বিভিন্ন তলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করা রোবটের কাজের ধারা সম্পর্কে জানানো হবে। ওষুধ, চিকিৎসা, মহাকাশ, প্রতিরক্ষা সহ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রোবটের ব্যবহার সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানানো হবে।
নেচার পার্ক :
কুয়াশা উদ্যান, দাবা উদ্যান, নিজস্বী বা সেলফি তোলার জায়গা, ভাস্কর্য উদ্যান সহ বিভিন্ন নয়নাভিরাম উপাদান এই উদ্যানে রয়েছে। শিশুরা যাতে ভূলভূলাইয়ার স্বাদ পেতে পারে, এই পার্কে তার ব্যবস্থাও করা আছে। এই উদ্যানে বিলুপ্ত প্রাণী যেমন, ম্য়ামথ, হিংস্র পাখি, বিরাট দাঁত যুক্ত সাবের টুথ সিংহের ভাস্কর্য্য রয়েছে। এখানে এই সব বিলুপ্ত প্রাণী সম্পর্কে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্য লেখা থাকবে।