প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৩ জানুয়ারি সকাল সাড়ে দশটায় বারাণসীতে বিশ্বের বৃহত্তম রিভার ক্রুজ-এমভি গঙ্গা বিলাসের যাত্রার সূচনা করবেন এবং বারাণসী টেন্ট সিটির উদ্বোধন করবেন। তিনি এই একই অনুষ্ঠান থেকে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের আরও কিছু অভ্যন্তরীণ জলপথ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
এমভি গঙ্গা বিলাস
এমভি গঙ্গা বিলাস উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে যাত্রা শুরু করে ভারত এবং বাংলাদেশের ২৭টি নদী পেরিয়ে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করে অসমের ডিব্রুগড়ে পৌঁছাবে। এমভি গঙ্গা বিলাসের তিনটি ডেক এবং ১৮টি স্যুট রয়েছে। ৩৬ জন পর্যটক বিলাসবহুল সুবিধা সহ ভ্রমণ করতে পারবেন। প্রথম দিনে যাত্রার জন্য সুইজারল্যান্ডের ৩২ জন পর্যটক তাদের নাম নথিভুক্ত করেছেন।
এমভি গঙ্গা বিলাস ক্রুজটিকে বিশ্ব দরবারে প্রদর্শনের জন্য দারুণভাবে সাজানো হয়েছে। ৫১ দিনের এই যাত্রায় বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন স্থান, জাতীয় উদ্যান, নদী ঘাট এবং বিহারের পাটনা, ঝাড়খন্ডের সাহেবগঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, বাংলাদেশের ঢাকা এবং অসমের গুয়াহাটির মতো বড় শহরগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হবে। এই সফর পর্যটকদের ভারত ও বাংলাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সুযোগ করে দেবে।
রিভার ক্রুজ পর্যটনে উৎসাহ দিতে প্রধানমন্ত্রী যে প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছেন তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই পরিষেবার সূচনা করা হচ্ছে। এর ফলে ভারতে রিভার ক্রুজ পর্যটন ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা হল।
বারাণসী টেন্ট সিটি
এই অঞ্চলের পর্যটনের মানোন্নয়নে গঙ্গা নদীর তীরে এই টেন্ট সিটি তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে কাশি বিশ্বনাথ ধামে ক্রমবর্ধমান পর্যটকের প্রতি নজর দিয়ে এর ঠিক বিপরীতে তৈরি করা এই টেন্ট সিটিটি পর্যটকদের জন্য সুবিধাজনক হবে। বারাণসী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পিপিপি মডেলে এটি তৈরি করেছে। বিভিন্ন ঘাট থেকে পর্যটকরা নৌকায় করে টেন্ট সিটিতে পৌঁছাবেন। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে জুন মাস পর্যন্ত চালু থাকবে এই টেন্ট সিটি। বর্ষাকালে নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার দিকে নজর রেখে তিন মাস এটি বন্ধ থাকবে।
অভ্যন্তরীণ জলপথ প্রকল্প
প্রধানমন্ত্রী এই সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ার মাল্টি মডেল টার্মিনালের উদ্বোধন করবেন। জলমার্গ বিকাশ প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা এই হলদিয়া মাল্টি মডেল টার্মিনালের পণ্য বহন ক্ষমতা প্রতি বছরে প্রায় ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন বার্থগুলি ৩ হাজার ডেড ওয়েট (ডিডাব্লুটি) টন পর্যন্ত জাহাজ পরিচালনা করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী সৈয়দপুর, চোচাকপুর, জামানিয়া এবং উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার কাঁশপুরে চারটি ভাসমান সমন্বিত জেটির উদ্বোধন করবেন। এছাড়া তিনি দীঘা, নাগতাদিয়ারা, বাঢ়, পানাপুর এবং হাসানপুরে ৫টি সমন্বিত জেটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশে গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় ৬০টি সমন্বিত জেটি তৈরি করা হবে। এরফলে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কাজকর্ম বৃদ্ধির পাশাপাশি জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে। ক্ষুদ্র কৃষক, মৎস্য ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা ও ফুল চাষিরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।
প্রধানমন্ত্রী গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সমুদ্র দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও তিনি গুয়াহাটির পান্ডু টার্মিনালে একটি জাহাজ মেরামতি সুবিধা কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরফলে প্রচুর পরিমাণ অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে।