প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৬ ফেব্রুয়ারী সকাল ১১-টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘বিকশিত ভারত বিকশিত রাজস্থান’ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানে ১৭,০০০ কোটি টাকারও বেশি নানাবিধ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন, জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এইসব প্রকল্পগুলি সড়ক, রেল, সৌরশক্তি, বিদ্যুৎ পরিবহন, পানীয় জল এবং পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি নানা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির সঙ্গে জড়িত।
প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানে ৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি নানাবিধ জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। তিনি বোনালি-ঝালাই রোড হয়ে মুই ভিলেজ বিভাগ; হারদেওগঞ্জ গ্রাম থেকে মেজ নদী পর্যন্ত বিভাগ এবং টাকলি থেকে রাজস্থান/মধ্যপ্রদেশ সীমানা শাখা পর্যন্ত ৮ লেনের দিল্লি-মুম্বাই গ্রীণ ফিল্ড সংযোগ (এনই-৪)-এর উদ্বোধন করবেন। এইসব বিভাগগুলি ওই এলাকায় আরও দ্রুত এবং উন্নত সংযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। বন্যপ্রানীদের চলাচলে যাতে কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সেইদিকে তাকিয়ে এইসব বিভাগগুলিতে বন্যপ্রানীদের জন্য আন্ডারপাস এবং ওভারপাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বন্যপ্রানীদের ওপর রাস্তায় যান চলাচলের শব্দের কোনো ক্ষতিকারক প্রভাব যথা সম্ভব এড়াতে শব্দকেও নিয়ন্ত্রেণে বেঁধে রাখা হচ্ছে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী দেবাড়িতে জাতীয় মহাসড়ক-৪৮-এর চিত্তোরগড়-উদয়পুর মহাসড়ক বিভাগের সঙ্গে কায়া গ্রামে উদয়পুর-শ্যামলাজি বিভাগের সংযোগ স্থাপনকারী ৬ লেনের গ্রীণ ফিল্ড উদয়পুর বাইপাসেরও উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানের ঝুনঝুনু, আবু রোড এবং টঙ্ক জেলার অন্য নানাবিধ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন-যাতে সড়ক পরিকাঠামোর উন্নতি হবে।
এলাকায় রেল পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করতে রাজস্থানে ২,৩০০ কোটি টাকার ৮টি গুরুত্বপূর্ণ রেল প্রকল্পকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। যেসমস্ত রেলপ্রকল্পগুলি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হবে, তারমধ্যে রয়েছে যোধপুর-রাইকা বাগ-মেত্তারোড-বিকানির বিভাগ(২৭৭ কিলোমিটার), যোধপুর-ফালোদি বিভাগ (১৩৬ কিলোমিটার) এবং বিকানির-রতনগড়-সাদুলপুর-রেওয়াড়ি বিভাগ (৩৭৫ কিলোমিটার)রেল পথের বৈদ্যুতিকরণ। প্রধানমন্ত্রী খাতিপুরা রেল স্টেশনটিকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। জয়পুরের জন্য এটিকে স্যাটেলাইট স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এখান টার্মিনাল সুযোগ থাকছে। ফলে, এখান থেকে ট্রেনের যাত্রা শুরু এবং যাত্রা শেষ হবে। যেসমস্ত রেলপ্রকল্পগুলির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে, তারমধ্যে রয়েছে, যোধপুরে ভাগৎ কি কোঠিতে বন্দে ভারত স্লিপার ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা, এছাড়াও জয়পুরের কাথিপুরায় বন্দে ভারতের মতো ট্রেনগুলির সমস্তরকম রেক, এলএইচবি-র রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকছে। এছাড়াও হনুমানগড়ে ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোচ কেয়ার কমপ্লেসের নির্মাণ, বান্দিকুই থেকে আগ্রা ফোর্ট পর্যন্ত রেললাইলের ডাবলিং-এর কাজ শুরু। এইসমস্ত রেল প্রকল্পগুলির উদ্দেশ্য হল, রেল পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ, নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার প্রসার, সংযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন এবং যাত্রী ও পণ্য চলাচলের আরও উন্নতি সাধন ঘটানো।
এলাকায় পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের প্রসারে প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানে প্রায় ৫,৩০০ কোটি টাকার সৌর প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানের বিকানির জেলায় বারসিনসার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সন্নিকটে এনএলসিআইএল-এর ৩০০ মোগাওয়াট বারসিনসার সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। এইসব সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত। আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে দেশের মধ্যেই এই অত্যাধুনিক সরঞ্জাম নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকায় আর্থিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন রোধে রেখে এইসব নানাবিধ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে।
প্রধানমন্ত্রী রাজস্থানে ২১,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিদ্যুৎ পরিবহন প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। রাজস্থানে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ যাতে সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছতে পারে, সেদিকে তাকিয়ে এই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জলজীবন মিশনের অধীন ২,৪০০ কোটি টাকার নানাবিধ প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন, যার উদ্দেশ্য হল, রাজস্থানে পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করে তোলা। দেশজুড়ে নল বাহিত পরিশ্রুত জল প্রত্যেক বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার প্রধানমন্ত্রীর সংকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে এই প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
যোধপুরে ইন্ডিয়ান অয়েলের এলপিজি বটলিং প্ল্যান্টকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী। অত্যাধুনিক পরিকাঠামো সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং স্বয়ংক্রিয় এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের প্রসার ঘটবে এবং এই এলাকার লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের রান্নার গ্যাসের চাহিদাও পূরণ করা যাবে।
রাজস্থানের সামগ্রিক পরিকাঠামো ক্ষেত্রের রূপান্তর ঘটিয়ে রাজ্যের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির প্রসারে প্রধানমন্ত্রীর নিরলস প্রয়াসকে সফল রূপ দিতেই এইসব উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করা হচ্ছে।
রাজস্থানের সব জেলাগুলির প্রায় ২০০ টি জায়গায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে, মূল অনুষ্ঠানটি হবে জয়পুরে। রাজ্যব্যাপী এইসব নানাবিধ সরকারি প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ সুবিধাভোগী যোগদান করবে। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রী, সাংসদ বিধায়ক এবং স্থানীয় প্রতিনিধিরাও এতে যোগ দেবেন।