কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী এল মুরুগনের নয়াদিল্লির বাসভবনে আজ পোঙ্গল উদযাপনে সামিল হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সকলকে পোঙ্গলের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন যে এই উৎসবটির আমেজ তামিলনাড়ুর ঘরে ঘরে অনুভব করা যায়। দেশের সকল নাগরিকদের জীবনে নিরন্তর সুখ, সমৃদ্ধি ও সন্তোষ বিরাজ করুক, এই প্রার্থনাও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতকাল উদযাপিত হল লোহরি পার্বণ। আবার আজ হল মকর উত্তরায়ণ উদযাপনের দিন। মকর সংক্রান্তি উদযাপিত হতে চলেছে আগামীকাল। আবার আর কিছুদিনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মাঘ বিহু উৎসব। দেশের এই উৎসবের আবহে দেশবাসীর সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ ও শুভেচ্ছা কামনা করেছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে গত বছর তামিল পুথান্ডু উৎসবকালে উৎসব মুখর জনসাধারণের যে হাসি মুখ তিনি লক্ষ্য করেছিলেন, তার স্মৃতিচারণও আজ করেন প্রধানমন্ত্রী। আজকের পোঙ্গল উৎসবের উদ্যোগ আয়োজনে শ্রী এল মুরুগনের ভূমিকার সপ্রশংস উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার-পরিজন এবং বন্ধুবর্গের সঙ্গে উৎসব উদযাপনের যে অনুভূতি আমরা লাভ করে থাকি, তারই একটি রেশ আমি অনুভব করছি আজকের এই বিশেষ দিনটিতে।
মহাকবি থিরুভাল্লুভারের কাব্যের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি শিক্ষিত নাগরিক, সৎ ব্যবসায়ী এবং শস্যোৎপাদনের সঙ্গে নিযুক্ত কৃষকদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পোঙ্গল উৎসবকালে নতুন শস্য উৎসর্গ করা হয় ঈশ্বরের উদ্দেশে। সুতরাং, উৎসব উদযাপনের এই ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি বিশেষ নাম – ‘অন্নদাতা কিষাণ’।
ভারতের প্রতিটি উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ ঐতিহ্য, শস্যোৎপাদন এবং কৃষকদের বিশেষ যোগসূত্র রয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, স্মৃতিচারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে গত বছর মিলেট শস্য এবং তামিল ঐতিহ্যের মধ্যে বিশেষ যোগসূত্রের কথা তাঁর বক্তব্যে তিনি তুলে ধরেছিলেন। মিলেটের মতো একটি সুপার ফুড সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে যে নতুন সচেতনতা গড়ে উঠেছে তার বিশেষ প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মিলেট অর্থাৎ, ‘শ্রীঅন্ন’ উৎপাদনকে ঘিরে দেশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু স্টার্ট-আপ উদ্যোগ এবং এই স্টার্ট-আপ স্থাপনের ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছেন দেশের তরুণ ও যুবকরা। বর্তমানে দেশে মিলেট চাষের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৩ কোটিরও বেশি কৃষক। মিলেট জাতীয় খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশের কৃষক সম্প্রদায়ও বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
পোঙ্গল উদযাপনকালে তামিলনাড়ুর প্রতিটি বাড়িতে মহিলারা আলপনা এঁকে দেন। আলপনার নকশা ও পদ্ধতির ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ময়দার সাহায্যে এই আলপনার চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয় গৃহস্থ বাড়ির মেঝেতে। প্রতিটি আলপনাই স্বাতন্ত্র্যের দিক থেকে বৈশিষ্ট্যময়। কিন্তু, আলপনার সবক’টি বিন্দু যখন যুক্ত করে তা রঙের সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হয়, তখন তা উন্নীত হয় এক বিশেষ শিল্পকলায়। এইভাবে দেশের প্রতিটি প্রান্ত যখন উৎসব ও পালা-পার্বণ উপলক্ষে আবেগময় হয়ে ওঠে, তখন আমাদের জাতীয় শক্তিকে আমরা নতুনভাবে আবিষ্কার করি। পোঙ্গল উদযাপনের মধ্যে যে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ চিন্তাদর্শ ফুটে ওঠে, একথাও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কাশী-তামিল সঙ্গমম এবং সৌরাষ্ট্র-তামিল সঙ্গমমকালেও এই চিন্তাদর্শের শক্তি আমরা অনুভব ও উপলব্ধি করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐক্যের এই শক্তি ও উপলব্ধি আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তুলতে পারে। ‘পঞ্চপ্রাণ’-এর যে অন্তর্নিহিত শক্তির কথা এর আগে তুলে ধরা হয়েছে, তা দেশের ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলেই তিনি মনে করেন। জাতীয় ঐক্যকে আরও মজবুত ও শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে সকলকে সঙ্কল্প গ্রহণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।