ভারতের বৃহৎ শিল্পসংস্থা এবং ১০০টিরও বেশি অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলি বিক্রান্তের নির্মাণে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে
ভারতের সমুদ্র যাত্রার ইতিহাসে দেশে তৈরি বৃহত্তম এই জাহাজে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা রয়েছে
ঔপনিবেশিক অতীত থেকে বেড়িয়ে এসে প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীর জন্য নতুন পতাকা প্রকাশ করেছেন, এই পতাকা ছত্রপতি শিবাজীকে উৎসর্গ করা হয়েছে
“আইএনএস বিক্রান্ত শুধুমাত্র একটি রণতরী নয়, এটি কঠোর পরিশ্রম, মেধা এবং একবিংশ শতাব্দীর ভারতের অঙ্গীকারের প্রতিফলন”
“আইএনএস বিক্রান্ত ভারতের আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার প্রতীক”
“আইএনএস বিক্রান্ত দেশের সম্ভাবনা, দেশীয় সম্পদ ও দক্ষতার প্রতীক”
“এতদিন পর্যন্ত ভারতীয় নৌবাহিনীর পতাকায় দাসত্বের ছোঁয়া ছিল। কিন্তু আজ থেকে ছত্রপতি শিবাজীর অনুপ্রেরণায় নৌবাহিনীর জন্য নতুন যে পতাকার নকশা তৈরি করা হয়েছে, স্বাধীন দেশের সেই পতাকাটি এখন থেকে সমুদ্রের মাঝে আকাশে উড্ডীয়মান হয়ে থাকবে”
“বিক্রান্তে নৌবাহিনীর অনেক মহিলা যোদ্ধা থাকবেন। মহাসাগরের অফুরান শক্তি ও সীমাহীন নারীশক্তিতে বলীয়ান হয়ে এই

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্তকে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নৌবাহিনীর নতুন পতাকা প্রকাশ করেছেন। ঔপনিবেশিক অতীত থেকে বেড়িয়ে এসে ভারতের সমৃদ্ধশালী সামুদ্রিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এই পতাকার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেরালার সমুদ্রতটে নতুন ভবিষ্যতের সূর্যোদয় প্রত্যেক ভারতবাসী আজ প্রত্যক্ষ করছেন। আইএনএস বিক্রান্তের অন্তর্ভুক্তিকে নিয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান বিশ্বের দরবারে ভারতের উচ্চাকাঙ্খার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। তিনি বলেন, আজ আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নপূরণ হতে দেখছি, যাঁরা শক্তিশালী ও সব ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সক্ষম এমন এক ভারতবর্ষের কল্পনা করতেন। শ্রী মোদী বলেন, “বিক্রান্ত বিপুল আয়তনের, বিক্রান্ত অন্য সব কিছুর থেকে আলাদা। বিক্রান্ত একটি রণতরীই নয়, এটি কঠোর পরিশ্রম, মেধা এবং একবিংশ শতাব্দীর ভারতের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। লক্ষ্য যখন নির্দিষ্ট থাকে, সফর যখন দীর্ঘ হয়, মহাসমুদ্র এবং বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের যখন সীমা-পরিসীমা না থাকে, সেই পরিস্থিতিতে ভারতের জবাব বিক্রান্ত। স্বাধীনতার এই অমৃত মহোৎসবের অতুলনীয় অমৃত হল বিক্রান্ত। বিক্রান্ত হল ভারতের স্বনির্ভর হয়ে ওঠার এক অনন্য প্রতিফলন।”

দেশের নতুন ভাবনার সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের ভারতের কাছে যে কোন সমস্যার সমাধান রয়েছে। তিনি বলেন, “বিশ্বের যেসব দেশ বিমানবাহী বৃহৎ আকারের রণতরী নির্মাণ করতে সক্ষম, ভারত আজ সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হল। এই জাহাজ দেশের নতুন প্রত্যয়ে পরিপূর্ণ এবং এর মধ্য দিয়ে দেশে নতুন আস্থার জন্ম নিয়েছে।” শ্রী মোদী এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত নৌবাহিনীর সদস্য, কোচিন শিপ ইয়ার্ডের ইঞ্জিনিয়ার, বিশেষত এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, পবিত্র ওনামের এই পুণ্যলগ্নে বিক্রান্তের অন্তর্ভুক্তি সকলের মধ্যে আরও আনন্দের সঞ্চার করেছে।

আইএনএস বিক্রান্তের প্রতিটি অংশ শক্তির প্রতীক যা উন্নয়নের যাত্রার শরীক। এই রণতরী দেশের সম্ভাবনা, দেশীয় সম্পদ ও দক্ষতার প্রতীক। এই জাহাজের এয়ারবেস তৈরি করতে যে ইস্পাতের ব্যবহার করা হয়েছে সেটি পুরোপুরি দেশজ। ডিআরডিও-র বিজ্ঞানীরা এই ইস্পাত উদ্ভাবন করেছে এবং ভারতীয় সংস্থাগুলি তা উৎপাদন করেছে। বিক্রান্তের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি অনেকটা ভাসমান এক নগরী। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ৫ হাজার বাড়িকে আলোকিত করতে পারে এবং যে পরিমাণ তার ব্যবহৃত হয়েছে তা কাশীর সঙ্গে কোচির যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারে। তিনি বলেন, লালকেল্লার প্রাকার থেকে যে পঞ্চ প্রাণের কথা তিনি বলেছেন তা আইএনএস বিক্রান্তের ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে চলে।

প্রধানমন্ত্রী ভারতের সমুদ্র যাত্রার ঐতিহ্য এবং দক্ষতার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ছত্রপতি বীর শিবাজী মহারাজ এমন এক নৌবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন, যার ক্ষমতা ছিল অপরিসীম- সমুদ্রের শক্তির মতো। এর ফলে শত্রুরা কাছাকাছি আসার সাহস পেত না। বৃটিশরা ভারতে আসার পর তারা ভারতীয় জাহাজগুলির এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষমতায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। তাই তারা ভারতের সামুদ্রিক ক্ষমতাকে চূর্ণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সময়ে বৃটিশ সংসদের আইনের মাধ্যমে ভারতীয় জাহাজ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর যে ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়েছিল ইতিহাস তার সাক্ষী।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজ দোসরা সেপ্টেম্বর এক ঐতিহাসিক দিন। ভারত তার সব ধরনের দাসত্বের চিহ্ন থেকে মুক্ত হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনী আজ থেকে নতুন পতাকা পেল। এতদিন নৌবাহানীর পতাকা দাসত্বের পরিচয় বহন করতো। আজ থেকে ছত্রপতি শিবাজীর অনুপ্রেরণায় নৌবাহিনীর জন্য নতুন যে পতাকার নকশা তৈরি করা হয়েছে, স্বাধীন দেশের সেই পতাকাটি এখন থেকে সমুদ্রের মাঝে আকাশে উড্ডীয়মান হয়ে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিক্রান্ত যখন আমাদের জলসীমাকে রক্ষা করবে সেইসময় এখানে নৌবাহিনীর অনেক মহিলা যোদ্ধা থাকবেন। মহাসাগরের অফুরান শক্তি ও সীমাহীন নারীশক্তিতে বলীয়ান হয়ে এই রণতরী নতুন ভারতের ক্ষমতার পরিচয় হয়ে উঠবে। এখন ভারতীয় নৌবাহিনী তার সমস্ত শাখায় নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অতীতের সব ধরনের বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। সমুদ্রের তরঙ্গ যেমন কোনো সীমা মানে না, একইভাবে ভারতের মেয়েদেরও নিয়মের বেড়াজালে আটকে রাখা সম্ভব নয়।

শ্রী মোদী বলেছেন, এক ফোঁটা দু ফোঁটা করে জলই মহাসমুদ্র সৃষ্টি করে। এই প্রসঙ্গে তিনি স্বাধীনতা দিবসে দেশীয় কামানের মাধ্যমে অভিবাদন গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন। একইভাবে যদি প্রত্যেক ভারতবাসী দেশে তৈরি পণ্যের জন্য সোচ্চার অথবা ভোকাল ফর লোকাল হন তাহলে সেদিন আর বেশি দূরে নেই যেদিন দেশ আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে।

বর্তমান সময়কালে ভূকৌশলগত অংশীদারিত্বের পরিস্থিতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তার দিকটি অগ্রাহ্য করা হতো। কিন্তু আজ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের নিরিখে এই বিষয়টি আমাদের কাছে বিশেষ তাপর্যপূর্ণ। আর তাই আমরা নৌবাহিনীর প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে কাজ করে চলেছি- বাহিনীর জন্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে এর দক্ষতা প্রকাশিত হবে। শ্রী মোদী বলেছেন, শক্তিশালী ভারত একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তুলবে।

অনুষ্ঠানে কেরালার রাজ্যপাল শ্রী আরিফ মহম্মদ খান, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পিনারাই বিজয়ন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং, শ্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল, শ্রী ভি মুরলীধরণ, শ্রী অজয় ভাট, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শ্রী অজিত দোভাল, নৌবাহিনীর প্রধান শ্রী আর হরিপ্রধান উপস্থিত ছিলেন।

আইএনএস বিক্রান্ত

ভারতীয় নৌ-বাহিনীর ওয়ারশিপ ডিজাইন ব্যুরো এই রণতরীর নকশা তৈরি করেছে। এটি বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রকের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কোচিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড নির্মাণ করেছে। ভারতের সমুদ্রযাত্রার ইতিহাসে দেশে তৈরি বৃহত্তম এই জাহাজে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা থাকছে।

দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত বিমানবাহী এই রণতরীটির নামকরণ ভারতের প্রথম বিমানবাহী রণতরীর নাম অনুসারে করা হয়েছে। ১৯৭১-এর যুদ্ধে ‘বিক্রান্ত’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

ভারতের বৃহৎ শিল্প সংস্থা এবং ১০০টির বেশি অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলি বিক্রান্ত-এর নির্মাণে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে। নৌ-বাহিনীতে ‘বিক্রান্ত’-এর অন্তর্ভুক্তির ফলে ভারতের দুটি বিমানবাহী রণতরী আগামীদিনে সমুদ্রপথে টহল দেওয়ার কাজ করবে। এর ফলে দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।

এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নৌ-বাহিনীর নতুন পতাকা প্রকাশ করেছেন। এই পতাকায় ভারতের ঐতিহ্যশালী সামুদ্রিক কর্মতৎপরতার প্রতিফলন রয়েছে এবং ঔপনিবেশিক অতীত থেকে দেশ বেরিয়ে এসেছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Cabinet approves minimum support price for Copra for the 2025 season

Media Coverage

Cabinet approves minimum support price for Copra for the 2025 season
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 ডিসেম্বর 2024
December 21, 2024

Inclusive Progress: Bridging Development, Infrastructure, and Opportunity under the leadership of PM Modi