করোনা ভাইরাস জনিত পরিস্হিতি এবং গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে আপনাদের চিন্তাভাবনা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমরা সকলেই একমত যে, আমরা এক গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আমরা এখনও পর্যন্ত জানিনা আগামী দিনগুলিতে এই মহামারি কেমন রূপ নেবে।
এটা স্পষ্ট যে, আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। আমাদেরকে পৃথকভাবে নয়, একযোগে এগিয়ে আসতে হবে ; বিভ্রান্তির পরিবর্তে পারস্পরিক সহযোগিতা করতে হবে ; আতঙ্কিত না হয়ে প্রস্তুত হতে হবে।
সহযোগিতামূলক মানসিকতার অঙ্গ হিসেবে আমি যৌথ এই প্রচেষ্টায় ভারত কিভাবে সাহায্য করতে পারে, সে বিষয়ে কিছু ভাবনাচিন্তা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।
আমি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আপৎকালীন তহবিল গঠনের প্রস্তাব করছি। এই তহবিল আমাদের সকলের স্বেচ্ছামূলক অবদানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে। এই তহবিল গঠনের জন্য ভারত প্রাথমিকভাবে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে। আমাদের মধ্যে যেকোন দেশ অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের খরচ হিসেবে এই তহবিল ব্যবহার করতে পারবে। আমাদের দূতাবাসগুলির মাধ্যমে বিদেশ সচিবরা এই তহবিলের ব্যবহার চূড়ান্ত করার রূপরেখা প্রণয়নে পারস্পরিক সমন্বয় রক্ষা করবে।
আমরা ভারতে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি রাপিড রেসপন্স টিম গঠন করছি। এদের সঙ্গে রয়েছে টেস্টিং কিট ও অন্যান্য সরঞ্জাম। আপনাদের প্রয়োজনে এই দলকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
আপনাদের ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের জন্য আমরা দ্রুত অনলাইনে প্রশিক্ষণ ব্যবস্হা গ্রহণ করতে পারি। আমাদের দেশে আপৎকালীন পরিস্হিতিতে যে ধরনের মডেল গ্রহণ করা হয় তার ভিত্তিতে এই রেসপন্স টিম গড়ে উঠবে। আমাদের আপৎকালীন পরিস্হিতি মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের দক্ষতা আরও বাড়াতে প্রশিক্ষণের এই উদ্যোগ।
সম্ভাব্য ভাইরাস বাহক এবং এদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের সহজেই চিহ্নিত করতে আমরা একটি ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভাইলেন্স পোর্টাল চালু করেছি। আমরা সার্ক দেশগুলির সঙ্গে ডিজিজ সার্ভাইলেন্স সফ্টওয়্যার বিনিময় করতে পারি। এমনকি এই সফ্টওয়্যার ব্যবহারের প্রশিক্ষণও দিতে পারি।
আমরা বতর্মান সুযোগ-সুবিধা তথা সার্ক বিপর্যয় ব্যবস্হা কেন্দ্রের মতো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্হাকে কাজে লাগাতে পারি।
ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় রেখে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে মহামারির প্রকোপ দমনে গবেষণা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার আমরা একটি অভিন্ন গবেষণামূলক মঞ্চ গঠন করতে পারি। এ ধরনের গবেষণামূলক মঞ্চ স্হাপনে ভারতীয় মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল সাহায্য করতে পারে।
কোভিড-১৯এর প্রেক্ষিতে অর্থ ব্যবস্হার ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সম্পর্কে আমরা আমাদের বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে পারি। কিভাবে আমরা অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য এবং স্হানীয় মূল্য শৃঙ্খল ব্যবস্হাকে অবিচল রাখা যায় সে ব্যাপারেও আমরা তাদের মতামত কাজে লাগাতে পারি।
তবে, এটাই প্রথম বা শেষ মহামারি নয়, যার প্রভাব আমাদের ওপর পরেছে।
কোভিড-১৯এর প্রেক্ষিতে অর্থ ব্যবস্হার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও স্হানীয় মূল্য শৃঙ্খল ব্যবস্হায় দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে যে প্রভাব পড়বে তার মোকাবিলায় আমরা বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে পারি।
বিশেষজ্ঞদের মতামত আমাদের অঞ্চলে এই ধরনের ভাইরাসে ছড়িয়ে পড়া রুখতে সাহায্য করবে, সেইসঙ্গে আমাদের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ব্যবস্হাকে সচল রাখবে।