বাজেটে ঘোষিত নতুন সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলি আর্থিক বিকাশে সহায়ক হবে: প্রধানমন্ত্রী
বাজেটে প্রত্যেক নাগরিকের আর্থিক ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
কেন্দ্রীয় বাজেটে কৃষির জন্য সুসংহত দৃষ্টিকোণ গ্রহণ করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২০-র কেন্দ্রীয় বাজেটকে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও কর্মপরিকল্পনামুখি বাজেট হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

কেন্দ্রীয় বাজেট লোকসভায় পেশ করার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাজেটে ঘোষিত নতুন সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলি না কেবল আর্থিক বিকাশে, সেইসঙ্গে দেশে প্রত্যেক নাগরিকের আর্থিক ক্ষমতায়নেও সহায়ক হবে।

নতুন দশকে এই বাজেট অর্থনীতিকে আরও মজবুত করার লক্ষ্যে কাজ করবে বলে শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন।

কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে গুরুত্ব

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০-র বাজেটে কৃষি, পরিকাঠামো, বস্ত্র ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বাজেটে যে ১৬ দফা কর্মপরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়েছে তা কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার পাশাপাশি, গ্রামীণ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

কৃষিক্ষেত্রের জন্য বাজেটে সুসংবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরম্পরাগত চাষে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি, এই বাজেটে উদ্যানপালন, মৎস্যচাষ ও পশুপালন ক্ষেত্রে মূল্য সংযুক্তিকরণ আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এর ফলে, ঐ ক্ষেত্রগুলিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।

শ্রী মোদী বলেন, নীল অর্থনীতির বিকাশে গৃহীত পদক্ষেপগুলির ফলে মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণনের ক্ষেত্রে যুবসম্প্রদায়ের কর্মসংস্থান বাড়বে।

বস্ত্র শিল্প

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাজেটে প্রযুক্তি-নির্ভর বস্ত্রবয়ন ক্ষেত্রে নতুন যন্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কাঁচামাল সংক্রান্ত শুল্ক কাঠামোতে সংস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছে, যার ফলে দেশে হস্তনির্মিত তন্তুর উৎপাদন বাড়বে। বিগত তিন দশক ধরে বস্ত্রক্ষেত্রে শুল্ক কাঠামোয় সংস্কারের দাবি ছিল।

স্বাস্থ্যক্ষেত্র

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির ফলে দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ ঘটেছে। এই সম্প্রসারণের ফলে চিকিৎসক, সেবিকা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত পরিষেবাদাতাদের কাজের সুযোগ আরও বেড়েছে। এর পাশাপাশি, দেশে চিকিৎসা সরঞ্জামের উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই লক্ষ্যে সরকার একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

প্রযুক্তি ক্ষেত্র

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বাড়াতে একাধিক কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। “আমরা স্মার্ট সিটি, বৈদ্যুতিন উপকরণ উৎপাদন, ডেটা সেন্টার পার্ক, জৈব-প্রযুক্তি এবং কোয়ান্টাম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একাধিক নীতি গ্রহণ করেছি। এই উদ্যোগগুলির ফলে ভারত গ্লোবাল ভ্যালু চেন বা বিশ্ব মূল্য শৃঙ্খল ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে।”

তিনি আরও বলেন, বাজেটে যুবসম্প্রদায়ের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে, ডিগ্রি কোর্সে শিক্ষানবিশ, স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থাগুলিতে শিক্ষানবিশ এবং অনলাইন ডিগ্রি কোর্স চালু করার মতো একাধিক নতুন ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প তথা রপ্তানি ক্ষেত্রকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির এক গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাজেটে রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি, ছোট শিল্পগুলিকে আরও অর্থ সহায়তা যোগানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

পরিকাঠামো

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক ভারতের জন্য প্রয়োজন আধুনিক পরিকাঠামো। এমনকি, পরিকাঠামো ক্ষেত্র ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারে।

শ্রী মোদী বলেন, “ব্যাপক কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা বাড়াতে ৬,৫০০-রও বেশি প্রকল্পে ১০০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করা হচ্ছে। শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে জাতীয় লাজিস্টিক্স পলিসি সাহায্য করবে।”

বাজেটে ১০০টি নতুন বিমানবন্দর গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে, দেশে পর্যটন ক্ষেত্রের বিকাশ ঘটবে এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

বিনিয়োগ

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে একাধিক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ অন্যতম চালিকাশক্তি।

তিনি আরও বলেন, বন্ড বাজার ব্যবস্থাকে মজবুত করতে এবং পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থ সহায়তার লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একইভাবে, কোম্পানিগুলির জন্য ডিভিডেন্ড ডিস্ট্রিবিউশন ট্যাক্স প্রথা তুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, কোম্পানিগুলির ২৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে, যা বিনিয়োগের কাজে লাগবে।

তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাজেটে কর ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

স্টার্ট-আপ এবং রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রেও কর ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে শ্রী মোদী জানান।

কর আরোপ ব্যবস্থায় আস্থা বাড়াতে গুরুত্ব

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার করদাতাদের জন্য এমন এক বাতাবরণ গড়ে তুলতে চাইছে যেখানে কোনরকম বিবাদ থাকবে না। পক্ষান্তরে কর আরোপ ব্যবস্থায় আস্থা বাড়বে।

এক সময়ে কোম্পানি আইনে ছোট ভুল-ত্রুটিগুলিকেও ফৌজদারি হিসেবে গণ্য করা হত। “এখন আমরা এ ধরনের ছোটখাট ঘটনাগুলিকে ফৌজদারি বহির্ভূত বিষয় হিসেবে গণ্য করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে” বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।

তিনি বলেন, “আমরা করদাতা সনদ চালু করতে চলেছি, যেখানে করদাতাদের অধিকারের বিষয়গুলির উল্লেখ থাকবে।”

কর ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাজেটে অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থা, যাদের লেনদেন ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত, তাদের জন্য হিসাব-নিকেশ আর বাধ্যতামূলক হবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে, অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলির লেনদেন ১ কোটি টাকা হলে বার্ষিক হিসাব-নিকেশ বাধ্যতামূলক ছিল।

সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন পরীক্ষা ব্যবস্থা

এতদিন পর্যন্ত দেশে যুবসম্প্রদায়কে বিভিন্ন সরকারি পরীক্ষার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরীক্ষায় বসতে হত। ব্যবস্থায় এক পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনতে জাতীয় নিয়োগ এজেন্সি গড়ে তোলার প্রস্তাব বাজেটে করা হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই এজেন্সি ব্যাঙ্ক, রেল ও অন্যান্য সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনলাইনে কেবল একটি অভিন্ন পরীক্ষাই গ্রহণ করবে।

ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপ, সর্বাধিক সুপ্রশাসন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেসলেস আপিল, প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থায় সরলীকরণ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির আরও বেশি বিলগ্নিকরণে প্রয়াস, অভিন্ন সংগ্রহ ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নাম নথিভুক্তিকরণ – এগুলির উদ্দেশ্যই হল ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপ, সর্বাধিক সুপ্রশাসন গড়ে তোলা।

সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য ও সহজে জীবনযাপন

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এবারের বাজেটে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবার মাধ্যমে ১ লক্ষেরও বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অঙ্গনওয়াড়ি, বিদ্যালয়, সার্বিক কল্যাণ কেন্দ্র এবং পুলিশ থানাগুলিকে যুক্ত করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইন্টারনেট পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ফলে ‘সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য ও সহজে জীবনযাপন’-এর সুবিধা বাড়বে।

ব্রডব্যান্ড পরিষেবার মাধ্যমে বহু প্রত্যন্ত জনপদ ইন্টারনেট ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হবে বলেও তিনি জানান।

২০২০-র কেন্দ্রীয় বাজেট আয় ও বিনিয়োগ তথা চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়াবে বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। এমনকি, এই বাজেট আর্থিক ব্যবস্থা ও ঋণ সহায়তা পদ্ধতিতে নতুন করে প্রেরণা যোগাবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Click here to read full text speech

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Employment increases 36 pc to 64.33 cr in last ten years: Mansukh Mandaviya

Media Coverage

Employment increases 36 pc to 64.33 cr in last ten years: Mansukh Mandaviya
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister greets on the occasion of Urs of Khwaja Moinuddin Chishti
January 02, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi today greeted on the occasion of Urs of Khwaja Moinuddin Chishti.

Responding to a post by Shri Kiren Rijiju on X, Shri Modi wrote:

“Greetings on the Urs of Khwaja Moinuddin Chishti. May this occasion bring happiness and peace into everyone’s lives.