‘আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা কিভাবে সম্ভব : ব্যক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক বিশ্বব্যাঙ্কের এক আলোচনা-বৈঠকে জানালেন প্রধানমন্ত্রী
মিশন লাইফ’-এর মূল কথাই হল এই।
মানুষ যখন উপলবদ্ধি করেন এবং তাঁদের মধ্যে এই চেতনার উন্মেষ ঘটে যে তাঁদের প্রাত্যহিক জীবনে অতি সহজ ও সরল কাজগুলিরও অনেক শক্তি ও ক্ষমতা রয়েছে তখন পরিবেশের ওপর তার এক ইতিবাচক ফল দেখা যায়।
ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় হাজার হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে জলের যোগান দেওয়ার মাধ্যমে জলের বিশেষ সাশ্রয়ও ঘটেছে আমাদের দেশে।
এফএও-র সূত্র অনুযায়ী ২০২০ সালে বিশ্বের প্রাথমিক শস্য উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯ বিলিয়ন টন।

ব্যক্তিগত পর্যায়ে পৃথিবীর জন্য কোনও ভালো কাজ হয়তো ততটা গুরুত্বপূর্ণ নাও মনে হতে পারে, কিন্তু বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ যখন মিলিতভাবে সেই কাজ সম্পন্ন করে তখন তার ফলাফল কিন্তু বিরাট হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের এই পৃথিবী নামক গ্রহটির জন্য বহু ব্যক্তি যখন মিলিতভাবে পৃথিবীর স্বার্থেই সংগ্রামে লিপ্ত হয় তখন তা সঠিক পদক্ষেপ বলেই আমরা বিশ্বাস করি। ‘মিশন লাইফ’-এর মূল কথাই হল এই।

এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বিশ্বব্যাঙ্কের ‘আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা কিভাবে সম্ভব : ব্যক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। চাণক্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি ছোট ছোট ভালো কাজের গুরুত্বকে তুলে ধরেন। ‘লাইফ’ আন্দোলনের সূচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ২০১৫-র একটি ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন যে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি এক বক্তব্য রেখেছিলেন। এরই সূত্র ধরে পরবর্তীকালে ২০২২-এর অক্টোবরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব এবং তিনি যৌথভাবে ‘মিশন লাইফ’-এর সূচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে সিওপি-২৭-এর মূল খসড়ার প্রস্তাবনায় নিরন্তর জীবনশৈলীর কথা তুলে ধরা হয়েছে। মানুষ যখন উপলব্ধি করেন যে শুধুমাত্র সরকার নয়, তাঁরাও ভালো কাজের জন্য এগিয়ে আসতে পারেন তখন তাঁদের যাবতীয় উদ্বেগ ও আশঙ্কা কর্মযজ্ঞে রূপান্তরিত হয়। বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে জলবায়ু পরিবর্তন হল এমন একটি সমস্যা যার মোকাবিলা সম্মেলনের টেবিলে আলোচনার মাধ্যমে হয় না। প্রতিটি গৃহকোণের খাবার টেবিলেই তার সূচনা হতে পারে। এইভাবেই যখন আলোচনার পরিসর মানুষের গৃহকোণ পর্যন্ত প্রসারিত হয়, তখনই তা জন-আন্দোলনের রূপ গ্রহণ করে। প্রতিটি পরিবার এবং প্রতিটি মানুষকে এই মর্মে সচেতন করে তোলা প্রয়োজন যে তাঁদের পছন্দের এবং অপছন্দের বিষয়গুলি এই পৃথিবীকে নিরন্তর বাসযোগ্য করে তোলার কাজে সাহায্য করতে পারে। সেই অর্থে ‘মিশন লাইফ’ হল জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রামকে গণতান্ত্রিক রূপ দেওয়া। মানুষ যখন উপলবদ্ধি করেন এবং তাঁদের মধ্যে এই চেতনার উন্মেষ ঘটে যে তাঁদের প্রাত্যহিক জীবনে অতি সহজ ও সরল কাজগুলিরও অনেক শক্তি ও ক্ষমতা রয়েছে তখন পরিবেশের ওপর তার এক ইতিবাচক ফল দেখা যায়।

ভারতের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে শ্রী মোদী তাঁর চিন্তাভাবনাকে আরও সুপরিস্ফুট করেন। তিনি বলেন, জন-আন্দোলন এবং আচরণগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ভারতের সাধারণ মানুষ গত কয়েক বছরে অনেক অসাধ্য সাধন করেছেন। উন্নত লিঙ্গানুপাত, স্বচ্ছতা অভিযান, এলইডি বাল্বকে জনপ্রিয় করে তোলা – এ সমস্ত কিছুই ৩৯ মিলিয়ন টন কার্বন ডায়অক্সাইড নির্গমনের মাত্রাকে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনতে পেরেছে। ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় হাজার হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে জলের যোগান দেওয়ার মাধ্যমে জলের বিশেষ সাশ্রয়ও ঘটেছে আমাদের দেশে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ‘মিশন লাইফ’-এর আওতায় সরকারি কর্মপ্রচেষ্টা বর্তমান বহুধাবিস্তৃত। যেমন, স্থানীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিবেশ-বান্ধব করে তোলা হয়েছে, জলের সাশ্রয় ঘটানো হয়েছে, এমনকি সাশ্রয় নিশ্চিত করা হয়েছে জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও। অন্যদিকে, বর্জ্য এবং বৈদ্যুতিন বর্জ্যের মাত্রাকেও অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। গ্রহণ করা হয়েছে সুস্থ জীবনশৈলী এবং প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতিকে। আর সেইসঙ্গে, বাজরা জাতীয় খাদ্যশস্যকে আহার্য হিসেবে গ্রহণ করার মাধ্যমে ‘মিশন লাইফ’কে সফল করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।

শ্রী মোদীর মতে, এই সমস্ত প্রচেষ্টা ২২ বিলিয়ন ইউনিট জ্বালানির যেমন সাশ্রয় ঘটাবে, অন্যদিকে তেমনই জল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাশ্রয় ঘটবে ৯ ট্রিলিয়ন লিটারের। শুধু তাই নয়, বর্জ্যের মাত্রা কমে আসবে ৩৭৫ মিলিয়ন টনে। ১ মিলিয়ন টন বৈদ্যুতিন বর্জ্যকে করে তোলা হবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য। এই সমস্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত অর্থের সাশ্রয় ঘটবে। এছাড়াও, ১৫ বিলিয়ন টন খাদ্যশস্যের অপচয় ও অপব্যবহারও রোধ করা সম্ভব হবে। এফএও-র সূত্র অনুযায়ী ২০২০ সালে বিশ্বের প্রাথমিক শস্য উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯ বিলিয়ন টন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে এই প্রচেষ্টায় সামিল করার জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত তিনি উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় বিশ্বব্যাঙ্কের এক সময়োচিত পদক্ষেপের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন যে বিশ্বব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় আর্থিক সহায়তার মাত্রাকে ২৬ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশে উন্নীত করা। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় সার্বিকভাবে যে অর্থের বিশেষ প্রয়োজন, বিশ্বব্যাঙ্কের তরফে তাতে এই সহায়তার যোগান দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। একইভাবে, আচরণগত উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে এই ধরনের আর্থিক যোগানের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মিশন লাইফ’-এর মতো আচরণগত উদ্যোগকে সাহায্য ও সমর্থন করার জন্য বিশ্বব্যাঙ্ক যেভাবে এগিয়ে এসেছে তার ফল যথেষ্ট ইতিবাচক হয়ে উঠতে পারে।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report

Media Coverage

India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to participate in ‘Odisha Parba 2024’ on 24 November
November 24, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will participate in the ‘Odisha Parba 2024’ programme on 24 November at around 5:30 PM at Jawaharlal Nehru Stadium, New Delhi. He will also address the gathering on the occasion.

Odisha Parba is a flagship event conducted by Odia Samaj, a trust in New Delhi. Through it, they have been engaged in providing valuable support towards preservation and promotion of Odia heritage. Continuing with the tradition, this year Odisha Parba is being organised from 22nd to 24th November. It will showcase the rich heritage of Odisha displaying colourful cultural forms and will exhibit the vibrant social, cultural and political ethos of the State. A National Seminar or Conclave led by prominent experts and distinguished professionals across various domains will also be conducted.