আগামী ২৫ বছরে ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
আজ বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন সঙ্গী এবং এই অঞ্চলে আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার: প্রধানমন্ত্রী
ভারত-বাংলাদেশ কোশিয়ারি নদীর জল বণ্টন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী

 

মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দ্বিপাক্ষিক প্রতিনিধিদলের মাননীয় সদস্যবৃন্দ এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি বন্ধুরা,

নমস্কার!

প্রথমেই আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাজি ও তাঁর প্রতিনিধিদলকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। গত বছর আমরা যৌথভাবে উদযাপন করেছি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী, আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী। আবার, গত বছর ৬ ডিসেম্বর দিনটিতে আমরা একসঙ্গে বিশ্বের সর্বত্রই পালন করেছি প্রথম ‘মৈত্রী দিবস’। আমাদের স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ভারত সফরে এসেছেন। অমৃতকালের আগামী ২৫ বছরে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্পর্ক যে এক নতুন উচ্চতা স্পর্শ করতে চলেছে, এ বিষয়ে আমি আশাবাদী।

বন্ধুগণ,

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাজির নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির পথে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতাও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে গত কয়েক বছরে। আজ বাংলাদেশ হল উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারতের বৃহত্তম এক অংশীদার এবং এই অঞ্চলে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্যিক সহযোগী।

দু’দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক তথা নাগরিক সম্পর্ক উন্নত হয়েছে নিরন্তরভাবে। দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক স্তরের সবক’টি বিষয় নিয়েই প্রধানমন্ত্রী হাসিনাজির সঙ্গে আজ আমার বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

আমরা উভয়েই বিশ্বাস করি যে কোভিড মহামারী এবং সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও বলিষ্ঠ করে তোলার সময় ও প্রয়োজন এখন উপস্থিত।

দু’দেশের মধ্যে সংযোগ ও যোগাযোগের প্রসার এবং সীমান্ত বরাবর বাণিজ্যিক পরিকাঠামোর উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দু’দেশের অর্থনীতি আরও বেশি করে পারস্পরিক সম্পর্ককে মজবুত করে তুলতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে বৃদ্ধি পাবে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ও সমর্থনও। আমাদের দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে দ্রুততার সঙ্গে। বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বর্তমানে ভারত হল এশিয়ার বৃহত্তম বিপণন কেন্দ্র। উন্নয়নের গতিকে দ্রুততম করে তুলতে দ্বিপাক্ষিক সুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলি নিয়ে আমরা অচিরেই আলাপ-আলোচনা শুরু করতে চলেছি।

তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ ও পরমাণু শক্তি হল বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে খুবই আগ্রহের বিষয়। তাই, এই ক্ষেত্রগুলিতেও আমরা পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। জলবায়ু পরিবর্তন এবং সুন্দরবনের মতো একটি সাধারণ ঐতিহ্যের সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিষয়গুলিতেও আমরা আমাদের সহযোগিতাকে নিরন্তর রাখব।

বন্ধুগণ,

জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি বর্তমানে সবক’টি উন্নয়নশীল দেশের কাছেই একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটির উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে সুলভ বিদ্যুতের যোগান বৃদ্ধি পেতে চলেছে। দু’দেশের বিদ্যুৎ সংবহন ব্যবস্থাকে যুক্ত করার বিষয়েও ফলপ্রসূ আলোচনার পথ আমরা বেছে নিয়েছি। সংযোগ ও যোগাযোগের প্রসারে রূপসা নদীর ওপর রেল সেতুর উদ্বোধন আরও একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। খুলনা ও মঙ্গলা বন্দরের মধ্যে যে নতুন রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশই হল নির্মিত এই সেতুটি। বাংলাদেশে রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে সমস্ত রকমভাবে সহযোগিতা ও সমর্থন যুগিয়ে যাবে ভারত।

বন্ধুগণ,

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে ৫৪টি নদী। বহু শতক ধরেই দু’দেশের অধিবাসীদের জীবন ও জীবিকা এই নদীগুলির ওপর নির্ভরশীল। এই সমস্ত নদী, সে সম্পর্কে প্রচলিত লোকগাথা ও উপকথা, লোকসঙ্গীত ইত্যাদি আমাদের দু’দেশের মিলিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরই পরিচয় বহন করে। কুশিয়ারা নদীর জল ভাগ করে নেওয়া সম্পর্কে আজ আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে স্বাক্ষরও করেছি। এর ফলে উপকৃত হবে ভারতের দক্ষিণ আসাম এবং বাংলাদেশের শ্রীহট্ট অঞ্চল।

বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতার মাত্রাকে আরও বৃদ্ধি করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার আলোচনা বেশ ফলপ্রসূই হয়েছে। প্রকৃত পরিস্থিতি অনুযায়ী বন্যা সম্পর্কিত তথ্য ও পরিসংখ্যান বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা ভাগ করে নিয়েছি এবং এ সম্পর্কিত সময়সীমাও আমরা আরও বৃদ্ধি করেছি।

সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টিতেও আমরা বর্তমানে জোর দিয়েছি। ১৯৭১ সালের সেই শক্তি ও উদ্যমকে অক্ষুণ্ণ রাখতে আমাদের পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসকে যারা ধ্বংস করতে উদ্যত, তাদের বিরুদ্ধে জেহাদ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুগণ,

যে স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, তাকে মূর্ত করে তুলতে প্রতিটি পদক্ষেপেই ভারত থাকবে বাংলাদেশের পাশে। এই অঙ্গীকারকে আরও একবার গ্রহণ করার চমৎকার সুযোগ আমরা পেয়েছি আমাদের আলোচনাকালে।

আমি আরও একবার আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাজি এবং ভারত সফররত তাঁর প্রতিনিধিদলকে। ভারতে তাঁদের অবস্থান সুন্দর হয়ে উঠুক, এই কামনা পোষণ করি।

আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India's manufacturing sector showed robust job creation, December PMI at 56.4

Media Coverage

India's manufacturing sector showed robust job creation, December PMI at 56.4
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister greets on the occasion of Urs of Khwaja Moinuddin Chishti
January 02, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi today greeted on the occasion of Urs of Khwaja Moinuddin Chishti.

Responding to a post by Shri Kiren Rijiju on X, Shri Modi wrote:

“Greetings on the Urs of Khwaja Moinuddin Chishti. May this occasion bring happiness and peace into everyone’s lives.