অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জোসেফ বাইডেনের সঙ্গে জাপানের হিরোশিমায় ২০ মে অনুষ্ঠিত কোয়াড নেতৃবৃন্দের শীর্ষ বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং কৌশলগত স্বার্থরক্ষার পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়ন নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবাধ ও মুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে তাঁরা সার্বভৌমত্বের নীতি, আঞ্চলিক সংহতি ও বিভিন্ন বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দেন।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহনশীলতাকে মজবুত করা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে তাঁরা এই এলাকার উন্নয়নে নিম্নলিখিত উদ্যোগগুলি নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন :
(১) ক্লিন এনার্জি সাপ্লাই চেইনস বা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সরবরাহ শৃঙ্খল গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ যা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিদ্যুৎক্ষেত্রে পরিবর্তনের ব্যাপারে গবেষণা ও উন্নয়নে সহায়ক হবে।
(২) স্ব স্ব দেশে প্রবহমান পরিচালন ব্যবস্থা ও মজবুত পরিকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে নীতি নির্ধারকদের সহায়তার জন্য ‘কোয়াড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফেলোশিপ প্রোগ্রাম’ বা কোয়াড পরিকাঠামো বৃত্তিপ্রদান কর্মসূচি চালু করা।
(৩) সমুদ্রের তলদেশে জটিল কেবল নেটওয়ার্কের সুরক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোয়াড-এর বিশেষজ্ঞদের মিলিত উদ্যোগ গড়ে তোলা।
(৪) প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পালাউ-এ ছোটমাপের ওপেন রেডিও অ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক (ওরান) গড়ে তোলার জন্য কোয়াড সহায়তা।
(৫) কৌশলগত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে লগ্নির পথ সুগম করতে ‘কোয়াড ইনভেস্টর্স নেটওয়ার্ক’ গড়ে তোলা হয়েছে।
(৬) সামুদ্রিক এলাকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতনতার গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত বছর টোকিও বৈঠকে গৃহীত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারিত্বকে স্বাগত জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। এই কর্মসূচির মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য তথ্য বিনিময়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই ভারত মহাসাগর অঞ্চলকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী চাহিদা-ভিত্তিক উন্নয়নে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরেন।
বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংহতি রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে একমত হন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী এবং অস্থায়ী সদস্যপদের সম্প্রসারণ এবং এর বহুমুখী সংস্কারে ধারাবাহিক প্রয়াস চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাঁরা সহমত হন।
প্রধানমন্ত্রী কোয়াড-এর গঠনমূলক বিষয়গুলিকে সংহত করার ওপর জোর দেন। সেইসঙ্গে, নিয়মিত মতবিনিময়ের ব্যাপারে একমত হন কোয়াড নেতৃবৃন্দ। এ প্রসঙ্গে আগামী বছর অর্থাৎ, ২০২৪-এ ভারতে পরবর্তী কোয়াড বৈঠক করার জন্য নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।