সুধীবৃন্দ,
এত অল্পসময়ের মধ্যে এই বিশেষ আলোচনায় যোগদানের জন্য আমি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাবো আমাদের বন্ধু প্রধানমন্ত্রী ওলিকে, যিনি একটি অপারেশনের পরে পরেই আমাদের সঙ্গে এই আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। আমি তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। আমি রাষ্ট্রপতি আসরাফ ঘনিকে সম্প্রতি নির্বাচনে আবারো বিজয়ী হবার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি।
আমি সার্কের নতুন মহাসচিবকে স্বাগত জানাচ্ছি, যিনি আজ আমাদের সঙ্গে এখানে যোগ দিয়েছেন। আজকের বৈঠকে গান্ধিনগর থেকে সার্ক বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের নির্দেশকও উপস্থিত হয়েছেন।
সুধীবৃন্দ,
আমরা সবাই জানি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-হু কোভিড-১৯কে বিশ্বজুড়ে মহামারী বলে ঘোষণা করেছে।
এ পর্যন্ত আমাদের অঞ্চলে ১৫০জনের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণের খবর এসেছে। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। বিশ্বে মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ আমাদের সার্ক অঞ্চলে বাস করেন। এই অঞ্চলের জনঘনত্ব বেশি। উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে, আমাদের সকলের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌছে দেবার বিষয়ে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। আমাদের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ প্রাচীন কাল থেকে। আমাদের সামাজিক ক্ষেত্রেও নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তাই, আমাদের সকলকে একসঙ্গে প্রস্তুতি নিতে হবে, একসঙ্গে কাজ করতে হবে আর এর থেকেই আমরা একযোগে সফল হব।
সুধীবৃন্দ,
আমরা এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার প্রস্তুতিতে, আপনাদের সঙ্গে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষেত্রে ভারতের অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে জানাতে চাই।
“তৈরি থাকুন, আতঙ্কিত হবেন না” এই ভাবনা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এই সমস্যাকে আমরা খাটো করে দেখছি না। আমরা সজাগ রয়েছি। কিন্তু যে কোন আতঙ্কের পরিস্থিতি থেকে এড়িয়ে চলছি। আমরা সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করছি , প্রতিটি স্তরে সাড়া দিচ্ছি। জানুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে আমরা পরীক্ষা করার কাজ শুরু করেছি। আস্তে আস্তে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাধানিষেধ বাড়িয়েছি। এই ভাবে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে আতঙ্কের পরিবেশ এড়ানো গেছে। আমরা টিভি, মুদ্রণ মাধ্যম এবং স্যোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়েছি।
যারা সুরক্ষিত নন, তাঁদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমরা বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। দেশজুড়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ সহ নানা ভাবে আমরা আমাদের বর্তমান ব্যবস্থার ক্ষমতা বাড়িয়েছি। রোগ নির্ণয়ের ক্ষমতা বাড়িয়েছি। দুই মাসের মধ্যে আমরা সাড়া দেশে ১টি মাত্র প্রধান পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ৬০টির বেশি পরীক্ষাগার গড়ে তুলেছি।
এই মহামারী ঠেকাতে প্রতিটি স্তরে আমরা নিয়মগুলির পরিবর্তন ঘটিয়েছি। এগুলি হলঃ প্রবেশস্থলে পরীক্ষা করা, সন্দেহজনক আক্রান্তদের সংক্রমণের উৎস চিনহিতকরণ, পৃথকভাবে নজরদারীতে রাখার জন্য কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনা এবং যাঁদের সংক্রমণ নেই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া।
বিদেশে আমাদের যেসব নাগরিকরা ছিলেন, আমরা তাঁদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছি। বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা প্রায় ১৪০০ ভারতীয়কে ফিরিয়ে এনেছি। আমাদের ‘প্রতিবেশী প্রথম নীতি’ অনুযায়ী আপনাদের দেশের কয়েকজন নাগরিকদেরও একইভাবে আমরা সাহায্য করেছি।
বিদেশে আমাদের যে ভ্রাম্যমাণ দলগুলি কাজ করছে তাঁরা সেখানে পরীক্ষা করছেন। এছাড়াও আমরা বিদেশ থেকে ফেরত নিয়ে আসার বিষয়ে একটি নিয়মনীতি তৈরি করেছি।
আমরা দেখেছি, অন্য দেশগুলিও ভারতে থাকা তাঁদের নাগরিকদের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তাই আমরা কি কি ব্যবস্থা নিচ্ছি, সেগুলি বিদেশী রাষ্ট্রদূতদেরও জানাচ্ছি।
সুধীবৃন্দ,
আমরা অবশ্যই বুঝতে পারছি যে আমরা অজানা এক পরিস্থিতিতে এখনো রয়েছি। আমরা এখনো নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারছি না, আমাদের সব প্রয়াস সত্ত্বেও পরিস্থিতি কোন দিকে এগোবে। আপনারাও নিশ্চয় একই পরিস্থিতির সম্মুখীন। তাই আমাদের সবার দৃষ্টিকোণ বিচার করার এটাই সময়।
আপনাদের মতামত জানার জন্য আমি আগ্রহী।
ধন্যবাদ।