আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। আজ আমরা ফের একবার ‘মন কি বাত’এর জন্য একসঙ্গে মিলিত হচ্ছি। দু’ দিন পরে ডিসেম্বর মাসও শুরু হচ্ছে আর ডিসেম্বর এলেই আমাদের এমন মানসিক ভাব তৈরি হয় যে চলো ভাই, বছরটা শেষ হয়ে গেল। এটা বছরের শেষ মাস আর নতুন বছরের জন্য নকশা-পরিকল্পনা তৈরি শুরু করে দিই। এই মাসেই দেশ ‘নেভি ডে’ আর ‘আর্মড ফোর্সেস ফ্ল্যাগ ডে’ পালন করে । আমরা সবাই জানি যে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীও পালন করছে দেশ। আমি এই সব উপলক্ষ্যে দেশের সুরক্ষা বাহিনীর কীর্তিকে স্মরণ করি, আমাদের বীরদের স্মরণ করি। আর বিশেষভাবে সেইসব বীরদের জন্মদাত্রী বীর মায়েদের স্মরণ করি। প্রত্যেক বারের মত এবারও আমি নমো অ্যাপে, মাইগভে সবার অনেক-অনেক পরামর্শ পেয়েছি। আপনারা আমাকে আপনাদের পরিবারের অংশ মনে করে নিজেদের জীবনের সুখদুঃখও ভাগ করে নিয়েছেন। এঁদের মধ্যে অনেক নব্য যুবক-যুবতী আছেন, ছাত্রছাত্রীরা আছেন। আমার সত্যিই খুব ভালো লাগে যে ‘মন কি বাত’এর আমাদের এই পরিবার নিরন্তর বড় তো হচ্ছেই, মনের দিক থেকে, উদ্দেশ্যের দিক থেকেও সংযুক্ত হচ্ছে আর আমাদের হওয়া গভীরতর সম্পর্ক, আমাদের অন্তরে, নিরন্তর এক সদর্থক প্রবাহ প্রবাহিত করাচ্ছে।
আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাকে সীতাপুরের ওজস্বী লিখেছে যে অমৃত মহোৎসবের বিষয়ে আলোচনা তাঁর খুব পছন্দ হচ্ছে। সে নিজের বন্ধুদের সঙ্গে ‘মন কি বাত’ শোনে আর স্বাধীনতা সংগ্রামের ব্যাপারে কিছু জানার, শেখার ধারাবাহিক প্রয়াস বজায় যায়। বন্ধুরা, অমৃত মহোৎসব কিছু শেখানোর পাশাপাশি আমাদের দেশের জন্য কিছু করারও প্রেরণা দেয় আর এখন তো দেশের সাধারণ মানুষ হোন বা বিভিন্ন সরকার, পঞ্চায়েত থেকে সংসদ অবধি, অমৃত মহোৎসবের গুঞ্জন শোনা যায়, আর একটানা এই মহোৎসবের সঙ্গে জুড়ে থাকা কার্যক্রমের পালা চলছে। এমনই এক আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান কিছু দিন আগে দিল্লীতে হল। ‘আজাদী কি কঁহানী, বচ্চো কি জুবানি’ অনুষ্ঠানে শিশুরা স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত নানা কাহিনীকে পূর্ণ উৎসাহ নিয়ে পরিবেশন করেছিল। বিশেষ ব্যাপার এটাও ছিল যে এখানে ভারতের সঙ্গে নেপাল, মরিশাস, তানজানিয়া, নিউজিল্যাণ্ড আর ফিজির ছাত্রছাত্রীরাও যুক্ত হয়েছিল। আমাদের দেশের মহারত্ন ও এন জি সি। ও এন জি সি-ও কিছুটা ভিন্নভাবে অমৃত মহোৎসব পালন করছে। ও এন জি সি আজকাল তেলের খনিতে নিজেদের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষামূলক ভ্রমণের আয়োজন করছে। এই সব সফরে তরুণদের ও এন জি সি-র তেলের খনির কাজকর্ম সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হচ্ছে – উদ্দেশ্য এই যে আমাদের ভবিষ্যতের ইঞ্জিনীয়াররা রাষ্ট্রনির্মাণের প্রচেষ্টায় পুরো উৎসাহ আর উদ্যমের সঙ্গে যাতে অংশ নিতে পারে।
বন্ধুরা, স্বাধীনতার লড়াইতে আমাদের জনজাতিসমূহের অবদান মনে রেখে দেশ জনজাতীয় গৌরব সপ্তাহও পালন করেছে। দেশের ভিন্ন ভিন্ন অংশে এর সঙ্গে যুক্ত অনুষ্ঠানও হয়েছে। আন্দামান নিকোবর দ্বীপসমূহে জারোয়া আর ওঙ্গি, এমন জনজাতিসমূহর মানুষজন নিজেদের সংস্কৃতির প্রদর্শন করেছেন। এক অসাধারণ কাজ হিমাচল প্রদেশের ঊনার মিনিয়েচার রাইটার রাম কুমার জোশীজিও করেছেন। তিনি ডাকটিকিটের উপর, অর্থাৎ এত ছোট ডাকটিকিটের উপর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর অভূতপূর্ব স্কেচ তৈরি করেছেন। হিন্দীতে লেখা ‘রাম’ শব্দের উপর উনি স্কেচ তৈরি করেছেন, যেখানে সংক্ষেপে দু’জন মহাপুরুষের জীবনীও উৎকীর্ণ রয়েছে। মধ্যপ্রদেশের কাটনি থেকেও কিছু বন্ধু এক অবিস্মরণীয় দাস্তানগোঈ কর্মসূচী সম্পর্কে জানিয়েছেন। এতে রানী দুর্গাবতীর অদম্য সাহস আর বলিদানের স্মৃতিকে জীবন্ত করে তোলা হয়েছে। এমনই এক অনুষ্ঠান কাশীতে হয়েছে। গোস্বামী তুলসীদাস, সন্ত কবীর, সন্ত রুইদাস, ভারতেন্দু হরিশ্চন্দ্র, মুন্সী প্রেমচাঁদ আর জয়শঙ্কর প্রসাদের মত মহান ব্যক্তিদের সম্মানে তিন দিনের মহোৎসব আয়োজিত হয়েছিল। ভিন্ন ভিন্ন সময়পর্বে, এঁদের সবার, দেশের জনজাগরণেতে, খুব বড় ভূমিকা ছিল। আপনাদের মনে থাকবে, ‘মন কি বাত’এর আগের পর্বে আমি তিনটে প্রতিযোগিতার উল্লেখ করেছিলাম, প্রতিযোগিতার আলোচনা করেছিলাম - এক, দেশভক্তি নিয়ে গান রচনা, দেশভক্তির সঙ্গে যুক্ত, স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ঘটনা নিয়ে রঙ্গিন আলপনা আঁকা আর আমাদের শিশুদের মনে মহান ভারতের স্বপ্ন জাগানো ঘুমপাড়ানি গান রচনা করা। আমার আশা যে এই তিন প্রতিযোগিতার জন্য আপনারা অবশ্যই নাম নথিভুক্ত করেছেন, পরিকল্পনা তৈরিও শুরু করেছেন আর নিজেদের বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছেন। আমার আশা, উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে আপনারা ভারতের প্রত্যেক কোণায় অবশ্যই এই কর্মসূচীকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
আমার প্রিয় দেশবাসী, এই আলোচনা থেকে আমি আপনাদের সোজা বৃন্দাবনে নিয়ে যাচ্ছি। বৃন্দাবন প্রসঙ্গে বলা হয় যে এটা ভগবানের প্রেমের প্রত্যক্ষ স্বরূপ। আমাদের সাধুরাও বলেছেন,
“ইয়হ আসা ধরি চিত্ত মে, ইয়হ আসা ধরি চিত্ত মে
কহত যথা মোতি মোর।
বৃন্দাবন সুখ রঙ কো, বৃন্দাবন সুখ রঙ কো,
কাহু না পায়ো ওউর”।
অর্থাৎ বৃন্দাবনের মহিমা আমরা সকলেই নিজেদের সাধ্যমত মূল্যায়ন করি বটে, কিন্তু বৃন্দাবনের যে সুখ, যে মোহ, তার শেষ পর্যন্ত কেউ পৌঁছতে পারেনা, সে তো অসীম। তাইতো বৃন্দাবন সমগ্র বিশ্বের মানুষকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করে। এর দৃষ্টান্ত আপনি বিশ্বের প্রত্যেক প্রান্তে খুঁজে পাবেন।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় একটি শহর আছে, পার্থ। ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ এই জায়গার সঙ্গে ভালোভাবে পরিচিত, কারণ পার্থে প্রায়ই ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজিত হয়। পার্থে ''স্যাক্রেড ইন্ডিয়া গ্যালারি'' নামে একটি আর্ট গ্যালারিও আছে। এই গ্যালারি সোয়ান ভ্যালির একটি সুন্দর জায়গায় তৈরি করা হয়েছে, আর এটি অস্ট্রেলিয়ার এক নাগরিক জগত্তারিণী দাসীর প্রচেষ্টার ফলাফল। জগত্তারিণীজি যদিও অস্ট্রেলিয়ার নিবাসী, তাঁর জন্ম সেখানে হয়েছে, তিনি ওখানেই বড় হয়েছেন, কিন্তু ১৩ বছরেরও বেশি সময় তিনি বৃন্দাবনে কাটিয়েছেন। ওঁর মতে, উনি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে তো গেছেন, নিজের দেশে ফিরে হয়তো গেছেন, কিন্তু উনি কখনোই বৃন্দাবনকে ভুলতে পারেননি। তাই তিনি বৃন্দাবন এবং তার আধ্যাত্মিক ভাবনার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়াতেও বৃন্দাবন তৈরি করেছেন। নিজের শিল্পকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে এক আশ্চর্য বৃন্দাবন সৃষ্টি করেছেন উনি। ওখানে যে সমস্ত মানুষের আসেন, তাঁরা নানা ধরনের শিল্প-সৃষ্টি দেখার সুযোগ পান। ওঁরা ভারতের সর্বাধিক প্রসিদ্ধ তীর্থক্ষেত্র বৃন্দাবন, নবদ্বীপ এবং জগন্নাথধামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি দেখতে পান। ওখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নানা শিল্প-সৃষ্টিরও প্রদর্শন করা হয়। একটা এমনও শিল্পকীর্তি প্রদর্শিত হয়, যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বতকে নিজের কড়ে আঙুলে ওঠাচ্ছেন, যার নিচে বৃন্দাবনের মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জগত্তারিণীজির এই চমৎকার প্রচেষ্টা অবশ্যই আমাদের কৃষ্ণ-ভক্তির শক্তির দর্শন করায়। আমি ওঁকে এই প্রচেষ্টার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, এখনই আমি অস্ট্রেলিয়ার পার্থে তৈরি হওয়া বৃন্দাবনের বিষয়ে কথা বলছিলাম। এখানেও একটা চমৎকার ইতিহাস রয়েছে যে অস্ট্রেলিয়ার একটা সম্পর্ক আমাদের বুন্দেলখন্ডের ঝাঁসির সঙ্গেও আছে, আসলে ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাঈ যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনি লড়াই লড়ছিলেন তখন ওঁর উকিল ছিলেন জন ল্যাঙ। জন ল্যাঙ মূলত অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসী ছিলেন। ভারতে থেকে উনি রানী লক্ষ্মীবাঈ-এর হয়ে এই মোকদ্দমা লড়েছিলেন। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁসি আর বুন্দেলখন্ডের যে কত বড় অবদান ছিল তা আমরা সকলেই জানি। এখানে রানী লক্ষ্মীবাঈ আর ঝলকারি বাঈ-এর মত বীরাঙ্গনারাও জন্মগ্রহণ করেছেন, অন্যদিকে এই অঞ্চল মেজর ধ্যানচাঁদের মত ক্রীড়া-রত্নকেও দেশকে দিয়েছে ।
বন্ধুরা, বীরত্ব কেবলমাত্র যে যুদ্ধের ময়দানেই দেখানো যায়, এমনটা জরুরি নয়। শৌর্য যখন একটা ব্রতের মত হয়ে যায় আর তা বিস্তৃত হয়, তখন প্রতিক্ষেত্রে তার কার্যসিদ্ধি ঘটতে থাকে। আমায় এমনই সাহসিকতার সম্বন্ধে শ্রীমতি জ্যোৎস্না চিঠি লিখে জানিয়েছেন, জালৌনে এক ঐতিহ্যবাহী নদী আছে, নুন নদী। নুন, এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য জলের প্রধান উৎস হিসেবে ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে নুন নদী বিলুপ্ত হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, যতটুকু অস্তিত্ব বেঁচে ছিল ওই নদীর, সেটুকুও নর্দমাইয় রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছিল। এতে কৃষকদের সেচের জন্য সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছিল। জালোনের লোকেরা এই পরিস্থিতি বদলানোর দায়িত্ব নিল। এই বছরের মার্চ মাসে এর জন্য একটি কমিটি বানানো হলো। হাজার হাজার গ্রামীণ এবং স্থানীয় মানুষরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এখানের পঞ্চায়েতগুলো গ্রামের মানুষের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করা শুরু করে, আর এখন খুবই কম সময়ে ও কম পরিশ্রমে এই নদী পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। বহু কৃষক লাভবান হয়েছে এতে। রণক্ষেত্রের বীরত্বের বাইরেও আলাদা বীরত্বের উদাহরণ এটা, আমাদের দেশবাসীর সংকল্পের শক্তি প্রদর্শন করে এবং এটাও বোঝায় যে আমরা যদি কোন বিষয়ে মনস্থির করি তাহলে কিছুই অসম্ভব নয়। তাইতো আমি বলি 'সবকা প্রয়াস'।
আমার প্রিয় দেশবাসী, যখন আমি প্রকৃতির সংরক্ষণ করি, তখন তার পরিবর্তে প্রকৃতি ও আমাদের সংরক্ষণ ও সুরক্ষা প্রদান করে। এই কথাই আমরা নিজের জীবনে অনুভব করি, আর এমনই এক উদাহরণ তামিলনাড়ুর লোকেরা বৃহৎ আকারে তুলে ধরেছেন। এই উদাহরণ তামিলনাড়ুর তুতুকুড়ি জেলার। আমরা জানি যে উপকূলবর্তী এলাকায় অনেকবার জমি প্লাবিত হওয়ার ভয় থাকে। তুতুকুড়ির বেশ কয়েকটা ছোট দ্বীপ ও সমূদ্র তীরবর্তী জনপদের অবস্থা এমন ছিল, যেগুলো সমুদ্রে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছিল। ওই অঞ্চলের লোকেরা আর বিশেষজ্ঞরা এই প্রাকৃতিক সংকট থেকে সুরক্ষার উপায় প্রকৃতির মাধ্যমেই খুঁজছিলেন। ওখানকার লোকেরা এই দ্বীপগুলোতে তাল গাছ লাগিয়েছেন। এই গাছ ঘূর্নিঝড় ও ঝড়ে দাঁড়িয়ে থাকে আর মাটিরও সুরক্ষা প্রদান করে। এর মাধ্যমে এখন এই অঞ্চলকে বাঁচানোর এক নতুন আশা জেগেছে।
বন্ধুরা, প্রকৃতি থেকে আমাদের বিপদের সম্ভাবনা তখনই তৈরি হয় যখন আমরা তার ভারসাম্যকে বিনষ্ট করি অথবা তার পবিত্রতা নষ্ট করি। প্রকৃতি মায়ের মত আমাদের সুরক্ষা প্রদান করে আর আমাদের পৃথিবীতে নতুন নতুন রংয়ের ছোঁয়া দেয়।
এইমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখছিলাম, মেঘালয়ে একটি উড়ন্ত নৌকার ছবি খুব ভাইরাল হয়েছে। এই ছবি প্রথম দর্শনেই আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আপনাদের মত অনেকেই হয়তো তা অনলাইনে নিশ্চয়ই দেখেছেন। হাওয়ায় ভাসমান এই নৌকাকে যখন আমরা খুব কাছ থেকে দেখি তখন বুঝতে পারি যে তা নদীর জলে ভাসছে। নদীর জল এতই স্বচ্ছ যে আমরা তার পাদদেশ দেখতে পাই তাই মনে হয় যেন নৌকা বাতাসে ভাসছে। আমাদের দেশে এমন অনেক রাজ্য, এমন অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে মানুষ তাদের প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের ধারাকে সংরক্ষিত রেখেছেন। তাঁরা প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জীবনধারাকে আজও বাঁচিয়ে রেখেছেন। এটা আমাদের সকলের জন্যও অনুপ্রেরণা। আমাদের চারপাশে যা কিছু প্রাকৃতিক সম্পদ হয়েছে, আমাদের উচিত তা সংরক্ষণ করা, তাদের আসল রূপে ফিরিয়ে আনা। এতে আমাদের সকলের মঙ্গল, বিশ্বেরও মঙ্গল।
আমার প্রিয় দেশবাসী, সরকার যখন পরিকল্পনা করে, বাজেট বরাদ্দ করে, সময়মতো প্রকল্প শেষ করে, তখন মানুষ অনুভব করে যে সরকার কাজ করছে। কিন্তু সরকারের অনেক কাজে, উন্নয়নের অনেক পরিকল্পনার মধ্যে মানবিক সহানুভূতি সংক্রান্ত বিষয়গুলো সবসময়ই আলাদা আনন্দ দেয়। সরকারি প্রচেষ্টা ও পরিকল্পনা কিভাবে বদলে দেয় কারো জীবন, সেই বদলে যাওয়া জীবনের অভিজ্ঞতাই বা কী? সেসব যখন শুনি তখন আমাদেরও মন ভরে যায়। মনকে তৃপ্ত করে এবং সেই পরিকল্পনাকে আরো বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অনুপ্রেরণাও দেয়। এটাই তো "স্বান্তঃ সুখায়"। তাই আজ ‘মন কি বাত’-এ আমাদের সঙ্গে এমন দুজন সঙ্গীও যোগ দিচ্ছেন, যারা নিজের সাহসিকতার বলে এক নতুন জীবন জয় করে এসেছেন। তাঁরা আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সাহায্যে চিকিত্সা করিয়ে একনতুন জীবন শুরু করেছেন। আমাদের প্রথম সঙ্গী হলেন রাজেশ কুমার প্রজাপতি যার হৃদরোগ বা হার্টের সমস্যা ছিল। আসুন, আমরা রাজেশ জির সঙ্গে কথা বলি-
প্রধানমন্ত্রীজী - রাজেশ জি নমস্কার।
রাজেশ প্রজাপতি - নমস্কার স্যার নমস্কার।
প্রধানমন্ত্রীজী - আপনার কি অসুখ ছিল রাজেশ জি? আপনি নিশ্চয়ই কোনো ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন, আমাকে একটু বুঝিয়ে বলুন, স্থানীয় ডাক্তার নিশ্চয়ই এমন কিছু বলেছিলেন তখন অন্য কোনো ডাক্তারের কাছেও গিয়েছিলেন? তখন আপনি কি ভাবছিলেন কি সিদ্ধান্ত নেবেন বা নেবেন না? ঠিক কী কী হয়েছিল?
রাজেশ প্রজাপতি - আমার হার্টে কিছু সমস্যা হয়েছিল স্যার। বুক জ্বালা হত স্যার, তখন আমি ডাক্তার দেখালাম। ডাক্তার প্রথমে বললেন হয়তো তোমার এসিড হয়েছে তাই বেশ কিছুদিন ধরে এসিডের ওষুধ খেলাম। যখন তাতে কিছু লাভ হল না তখন ডাক্তার কাপুর কে দেখালাম। উনি বললেন তোমার যা লক্ষণ দেখছি তা এনজিওগ্রাফিতে ধরা পড়বে, তাই উনি আমায় শ্রীরাম মূর্তি তে রেফার করলেন। ওখানে আমার অমরেশ আগরওয়ালজির সঙ্গে দেখা হলো, উনি আমার এনজিওগ্রাফি করলেন। তিনি জানালেন আমার শিরায় ব্লকেজ রয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম স্যার কত খরচ পড়বে? তিনি জিজ্ঞাসা করলেন আয়ুষ্মানের কার্ড রয়েছে কি, যা প্রধানমন্ত্রীজি বানিয়ে দিয়েছেন? আমি বললাম স্যার আমার কাছে সেই কার্ড আছে। তো তিনি আমার কার্ড নিলেন ও আমার চিকিৎসার সমস্ত খরচা ওই কার্ডের মাধ্যমেই হয়েছে। স্যার আপনি যে এই কার্ড বানিয়েছেন তা খুব ভালোভাবে আমাদের মতো গরিব মানুষদের নানান সুবিধা দিয়েছে। আপনাকে যে কিভাবে ধন্যবাদ জানাবো।
প্রধানমন্ত্রীজী -আপনি কি করেন রাজেশ জি?
রাজেশ প্রজাপতি -স্যার এখন আমি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি।
প্রধানমন্ত্রীজী - আপনার বয়স কত?
রাজেশ প্রজাপতি - ৩৯ বছর স্যার।
প্রধানমন্ত্রীজী - এত অল্প বয়সে আপনার হার্টের সমস্যা শুরু হয়ে গেল।
রাজেশ প্রজাপতি - হ্যাঁ স্যার, কি আর বলবো!
প্রধানমন্ত্রীজী - আপনার পরিবারে আপনার বাবা বা মায়ের এই ধরনের কি কোন সমস্যা ছিল?
রাজেশ প্রজাপতি - না স্যার, কারোরই কোনো সমস্যা নেই স্যার, আমারই প্রথমে সমস্যা হলো।
প্রধানমন্ত্রীজী – এই যে আয়ুষ্মান কার্ড যা ভারত সরকার দিয়ে থাকে, দরিদ্রদের জন্য অনেক বড় প্রকল্প। তার সম্পর্কে আপনি জানলেন কিভাবে?
রাজেশ প্রজাপতি - স্যার এটা তো অনেক বড় প্রকল্প। এতে গরিব মানুষের অনেক লাভ হয়েছে এবং তারা খুব খুশিও স্যার। আমি হসপিটালে দেখেছি এই কার্ডের জন্য মানুষ কত সুবিধা পাচ্ছে। যখন ডাক্তারকে কেউ বলে আমার কাছে কার্ড রয়েছে স্যার, তখন ডাক্তার বলে- ঠিক আছে আপনি কার্ড নিয়ে আসুন, আমি সেই কার্ডে আপনার চিকিৎসা করে দেবো।
প্রধানমন্ত্রীজী -আচ্ছা, যদি কার্ড না থাকতো তাহলে ডাক্তার কত টাকা খরচা হবে বলেছিলেন?
রাজেশ প্রজাপতি - ডাক্তার বলেছিল যদি কার্ড না থাকে তাহলে অনেক টাকা খরচা পড়বে। তখন আমি বললাম স্যার আমার কাছে কার্ড রয়েছে। উনি আমাকে তখনই তা দেখাতে বললেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে তা দেখালাম ও সেই কারণেই আমার চিকিৎসা হলো। আমায় এক পয়সা খরচা করতে হয়নি। এমনকি ওষুধের খরচাও কার্ড থেকেই পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রীজী - তাহলে রাজেশ জি আপনি এখন খুশী তো? শরীর ঠিক আছে?
রাজেশ প্রজাপতি - হ্যাঁ স্যার। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ স্যার। আপনি দীর্ঘজীবী হোন ও দীর্ঘ হোক আপনার শাসনকাল। আমার পরিবারের সবাই আপনাকে নিয়ে এত আনন্দিত যে কি বলবো।
প্রধানমন্ত্রী - রাজেশবাবু, আপনি আমাকে ক্ষমতায় থাকার শুভকামনা জানাবেন না, আমি আজকেও ক্ষমতায় নেই এবং ভবিষ্যতেও যেতে চাই না। আমি শুধু সেবায় থাকতে চাই। আমার কাছে এই প্রধানমন্ত্রীত্ব, এই পদ, এই সব কিছু ক্ষমতার জন্য নয় ভাই, সেবার জন্য।
রাজেশ প্রজাপতি - আমরা তো সেবাই চাই, আর কিছু না।
প্রধানমন্ত্রী - দেখুন, দরিদ্রদের জন্য এই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিজেই…
রাজেশ প্রজাপতি - হ্যাঁ স্যার, খুবই ভাল জিনিস।
প্রধানমন্ত্রী - কিন্তু দেখুন রাজেশবাবু, আপনি আমার একটা কাজ করে দিন, দেবেন?
রাজেশ প্রজাপতি - হ্যাঁ অবশ্যই করব, স্যার।
প্রধানমন্ত্রী - দেখুন, বাস্তবে এই প্রকল্পের ব্যপারে বেশিরভাগ মানুষ জানেন না। আপনি একটা দায়িত্ব নিন। আপনার চারপাশে যত গরীব পরিবার আছে, আপনি তাঁদের এই প্রকল্পে আপনার কী-রকম লাভ হল, কীরকম সাহায্য মিলল তা জানাবেন?
রাজেশ প্রজাপতি - অবশ্যই জানাব স্যার।
প্রধানমন্ত্রী - আর তাঁদের এটাও বলবেন এরকম কার্ড বানাতে। বলা তো যায় না পরিবারে কখন বিপদ আসে এবং দরিদ্র মানুষ ওষুধ কিনতে সমস্যায় পড়েন। এটা তো ঠিক বিষয় নয়। এবং পয়সার অভাবে যদি তাঁরা ওষুধ না নেন এবং অসুখের চিকিৎসা না করেন তাহলে সেটা খুবই চিন্তার বিষয়। আর দরিদ্র মানুষদের কী হয় সেটা আমরা জানি যেমন আপনার হার্ট প্রব্লেম হওয়ার কারণে আপনি বহু মাস কোন কাজ করতে পারেননি নিশ্চয়।
রাজেশ প্রজাপতি - আমি তো দশ পাও চলতে পারতাম না, সিঁড়ি চড়তে পারতাম না, স্যার।
প্রধানমন্ত্রী - বেশ রাজেশ বাবু তাহলে আপনি আমার একজন ভাল বন্ধু হয়ে যান। যত গরীব মানুষকে আপনি এই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ব্যাপারে বোঝাতে পারবেন যত অসুস্থ লোকের সাহায্য করতে পারবেন তাতে আপনিও তৃপ্তি অনুভব করবেন এবং আমারও খুব আনন্দ হবে যে একজন রাজেশবাবুর শরীর তো ঠিক হল কিন্তু সেই রাজেশবাবু আরও কোটি-কোটি মানুষের রোগমুক্তি ঘটালেন। এই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প গরীবদের জন্য, মধ্যবিত্তদের জন্য, সাধারণ পরিবারদের জন্য, তাই ঘরে-ঘরে এই বার্তা পৌঁছে দেবেন আপনি।
রাজেশ প্রজাপতি - অবশ্যই পৌঁছে দেব, স্যার। আমি তো তিনদিন হাসপাতালে ছিলাম স্যার। বহু মানুষ দেখতে এসেছিল তখন, তাঁদের এই প্রকল্পের সব সুবিধের কথা আমি বলেছিলাম। কার্ড ফ্রি তে হবে এটাও বলেছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী - ঠিক আছে রাজেশ বাবু, আপনি নিজেকে সুস্থ রাখুন। একটু শরীরের কথা ভাবুন, আপনার বাচ্চাদের কথা ভাবুন, এবং জীবনে খুব উন্নতি করুন, আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুরা, আমরা রাজেশবাবুর কথা শুনলাম। আসুন এখন আমাদের সঙ্গে সুখদেবীজিও যোগ দিচ্ছেন। তিনি হাটুর সমস্যায় খুব বিপদে পড়েছিলেন। আসুন আমরা প্রথমে সুখদেবীজির থেকে তাঁর দুঃখের কথা শুনি এবং তারপর কীভাবে তাঁর জীবনে সুখ এল সেটাও শুনি।
মোদী জি - সুখদেবীজি নমস্কার। আপনি কোথা থেকে বলছেন?
সুখদেবী - দানদাপরা থেকে।
মোদী জি - সেটা কোন জেলায় পড়ে?
সুখদেবী - মথুরায়।
মোদী জি - মথুরায়! তাহলে তো আপনাকে নমস্কারও জানাতে হবে এবং তাঁর পাশাপাশি রাধে-রাধেও বলতে হবে।
সুখদেবীজি - হ্যাঁ, রাধে-রাধে!
মোদী জি - আচ্ছা আমি শুনেছি আপনি বেশ সমস্যায় ছিলেন। আপনার একটি অপারেশনও হয়েছিল। একটু বলবেন পুরো ব্যাপারটা?
সুখদেবীজি - হ্যাঁ আমার হাঁটু খারাপ হয়ে গেছিল। তাই অপারেশন করতে হয়েছিল। প্রয়াগ হাসপাতালে।
মোদী জি - আপনার বয়স কত? সুখদেবীজি।
সুখদেবীজি - ৪০ বছর।
মোদী জি - ৪০ বছর আর সুখদেবী নাম, আর সুখদেবীর অসুখ হল।
সুখদেবীজি - আমি তো ১৫-১৬ বছর বয়স থেকেই অসুস্থায় ভুগছি।
মোদী জি - আরে বাবা রে। এত কম বয়স থেকেই আপনি হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন?
সুখদেবীজি - একে গেঁটে বাত বলে, যা গাঁটে-গাঁটে ব্যথা সৃষ্টি করে যার ফলে আস্তে আস্তে হাঁটু খারাপ হয়ে গেল।
মোদী জি - তো আপনি ১৬ থেকে ৪০ বছর অব্দি এই রোগের কোন চিকিৎসা করাননি?
সুখদেবীজি - না, করিয়েছিলাম। ব্যথার ওষুধ খেতাম। ছোট-খাটো ডাক্তাররা যেসব দেশীয় ওষুধ আছে সেগুলো দিয়েছিলেন। হাতুড়ে ডাক্তাররা তো সুস্থ হাঁটু অচল করে দিয়েছিলেন। ১-২ কিলোমিটার চলেই আমার হাঁটু খারাপ হয়ে গেছিল।
মোদী জি - তা সুখদেবীজি অপারেশনের ভাবনা কখন মাথায় এল? এর টাকাপয়সার জোগাড় কী করে করেছিলেন? কী ভাবে হল এ সব?
সুখদেবীজি - আমি ওই আয়ুষ্মান কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা করাই।
মোদী জি - তার মানে আপনি আয়ুষ্মান কার্ড পেয়ে গেছিলেন?
সুখদেবীজি - হ্যাঁ।
মোদী জি - আর আয়ুষ্মান কার্ডের মাধ্যমে গরীবদের বিনামূল্যে চিকিৎসা হয় এটা জানতেন?
সুখদেবীজি - স্কুলে মিটিং হচ্ছিল। সেখানে আমার স্বামী জানতে পারেন। তারপর আমার নামে কার্ড তৈরি করেন।
মোদী জি - হ্যাঁ।
সুখদেবীজি - আর তারপর কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা হল। আমাকে কোন টাকা দিতে হয়নি, এবং খুব ভাল চিকিৎসা হয়েছে।
মোদী জি - আচ্ছা কার্ড যদি না হত আপনার তাহলে ডাক্তার কি বলেছিলেন এই চিকিৎসায় কত খরচ পড়ত?
সুখদেবীজি - আড়াই লক্ষ, তিন লক্ষ টাকা। ৬-৭ বছর আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম। ভগবানকে বলতাম আমায় তুলে নিতে, আমি বাঁচতে চাইনা।
মোদীজি - ৬-৭ বছর বিছানায়? বাপ-রে বাপ।
সুখদেবীজি - হ্যাঁ।
মোদীজি - ওহো।
সুখদেবী জি - একদমই উঠতে বসতে পারতাম না
মোদী জি - তা এখন আপনার হাঁটু আগের থেকে ভালো আছে?
সুখদেবী জি - আমি খুব ঘুরে বেড়াই। রান্নাঘরের কাজ করি। ঘরের কাজ করি। বাচ্চাদের খাবার তৈরি করে দিই।
মোদী জি - তার মানে "আয়ুষ্মান ভারত" এর কার্ড আপনাকে সত্যিসত্যিই আয়ুষ্মান করে দিয়েছে।
সুখদেবী জি - অনেক অনেক ধন্যবাদ! আপনার প্রকল্পের ফলে আমি সুস্থ হয়ে উঠেছি। নিজের পায়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছি।
মোদী জি - তাহলে এখন তো বাচ্চারাও নিশ্চয়ই খুব আনন্দিত!
সুখদেবী জি - আজ্ঞে হ্যাঁ। বাচ্চাদের তো তখন খুবই অসুবিধা হতো। মা যদি সমস্যায় থাকেন তাহলে বাচ্চাদের তো অসুবিধা হবেই।
মোদী জি - দেখুন, আমাদের স্বাস্থ্যই হল আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সুখ। এই সুখী জীবন যাতে সবাই পেতে পারে সেটাই "আয়ুষ্মান ভারত" এর ভাবনা। আচ্ছা সুখদেবী জি, আপনাকে আমার তরফ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আরো একবার আপনাকে জানাই, রাধে রাধে।
সুখদেবী জি - রাধে রাধে, নমস্কার।
আমার প্রিয় দেশবাসী, যুব সমাজের দ্বারা সমৃদ্ধ প্রতিটি দেশে তিনটি বিষয় গুরুত্ব বহন করে। সেগুলোই কখনো কখনো যুব সমাজের প্রকৃত পরিচয় হয়ে ওঠে প্রথম বিষয়টি হলো - আইডিয়াস এবং ইনোভেশন। দ্বিতীয়টি হল ঝুঁকি নেওয়ার আবেগ এবং তৃতীয়টি হলো ক্যান ডু স্পিরিট অর্থাৎ যেকোনো কাজ সম্পূর্ণ করার জেদ, তা সে পরিস্থিতি যতই প্রতিকূল হোক না কেন! যখন এই তিনটি বিষয় একত্রিত হয় তখন অভূতপূর্ব ফলাফল দেখা যায়। আশ্চর্য ব্যাপার ঘটে যায়। আজকাল আমরা চারদিকে শুনি স্টার্ট-আপ, স্টার্ট-আপ, স্টার্ট-আপ। একথা ঠিক যে এটা স্টার্ট-আপ এর যুগ আর এটাও সত্য যে স্টার্ট-আপের দুনিয়ায় ভারত আজ সারা বিশ্বে একরকম নেতৃত্ব দিচ্ছে। বছর বছর স্টার্ট-আপে রেকর্ড বিনিয়োগ হচ্ছে। এই ক্ষেত্রটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। এমনকি দেশের ছোট ছোট শহরেও স্টার্ট-আপের প্রসার বাড়ছে। আজকাল "ইউনিকর্ন" শব্দটি খুব আলোচনায় রয়েছে। আপনারা সবাই নিশ্চয়ই এর সম্বন্ধে শুনেছেন। "ইউনিকর্ন" একটি এমন স্টার্ট-আপ যার ভ্যালুয়েশন কমপক্ষে এক বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় সাত হাজার কোটি টাকারও বেশি। বন্ধুরা, ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেশে বড়জোর ন'টি কি দশটি ইউনিকর্ন ছিল। আপনারা জেনে অত্যন্ত খুশি হবেন যে এখন ইউনিকর্নের দুনিয়াতেও ভারত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী এ বছরই একটি বড় পরিবর্তন এসেছে। কেবল দশ মাসের মধ্যেই ভারতে প্রতি ১০ দিনে একটি ইউনিকর্ন তৈরি হয়েছে। এটা এজন্যও একটা বড় বিষয় কারণ আমাদের যুব সমাজ এই সাফল্য করোনা মহামারী চলাকালীন অর্জন করেছে। আজ ভারতে সত্তরটিরও বেশি ইউনিকর্ন তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ সত্তরটিরও বেশি স্টার্ট-আপ এমন যারা একশো কোটি ডলারের বেশি ভ্যালুয়েশন অতিক্রম করেছে। বন্ধুরা, স্টার্ট-আপের এই সাফল্যের ফলে সবার নজরে এসেছে এবং যেভাবে দেশ থেকে, বিদেশ থেকে, বিনিয়োগকারীদের তরফ থেকে সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে তা কয়েকবছর আগে সম্ভবত কেউ কল্পনাও করতে পারতেন না।
বন্ধুরা, স্টার্ট-আপের মাধ্যমে ভারতীয় যুবসমাজ আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধানেও নিজেদের অবদান রাখছেন। আজ আমরা এক যুবক ময়ূর পাটিলের সঙ্গে কথা বলব। উনি নিজের বন্ধুদের সঙ্গে মিলে দূষণ সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছেন।
মোদী জি - ময়ূর জি, নমস্কার।
ময়ূর পাটিল - নমস্কার, স্যার।
মোদী জি - ময়ূর জি, আপনি কেমন আছেন?
ময়ূর পাটিল - খুব ভালো, স্যার। আপনি কেমন আছেন?
মোদী জি - আমি খুব ভালো আছি। আচ্ছা আমাকে বলুন, আজ আপনি স্টার্ট-আপের দুনিয়ায় আছেন।
ময়ূর পাটিল - আজ্ঞে, হ্যাঁ।
মোদী জি - আর ওয়েস্ট থেকে বেস্ট ও করছেন।
ময়ূর পাটিল - আজ্ঞে, হ্যাঁ।
মোদী জি - পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন। আপনার সম্বন্ধে আমাকে একটু বলুন। আপনার কাজের বিষয়ে বলুন। আর এই কাজের পেছনে আপনার চিন্তাভাবনা কীভাবে এলো?
ময়ূর পাটিল: স্যার, যখন কলেজে ছিলাম তখনই আমার কাছে মোটরসাইকেল ছিল। যার মাইলেজ খুব কম ছিল আর কার্বন নিঃসরণ অনেক বেশি ছিল। ওটা টু-স্ট্রোক মোটরসাইকেল ছিল। নিঃসরণ কম করার জন্য আর মাইলেজ কিছুটা বাড়ানোর জন্য আমি চেষ্টা শুরু করেছিলাম। ২০১১-১২ নাগাদ ওটার মাইলেজ আমি প্রায় ৬২ কিলোমিটার পার লিটার পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমি অনুপ্রেরণা পেলাম এমন কিছু একটা তৈরী করার, যার মাস প্রোডাকশন করা সম্ভব। তাহলে বহু মানুষ তার সুফল পাবেন। ২০১৭-১৮ তে আমরা সেই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করলাম এবং রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের আধিকারিকরা দশটি বাসে তা ব্যবহার করলেন। তার ফলাফ্ল পরীক্ষা করে দেখা গেলো, বাসগুলির নিঃসরণ প্রায় চল্লিশ শতাংশ আমরা কমিয়ে দিতে পেরেছি।
মোদী জি - হুমম। আচ্ছা এই প্রযুক্তি যা আপনি সন্ধান করে পেয়েছেন তার পে্টেন্ট ইত্যাদি করিয়ে নিয়েছেন?
ময়ূর পাটিল - আজ্ঞে হ্যাঁ, পেটেন্ট হয়ে গিয়েছে। এবছর এটি পেটেন্ট অনুমোদনও পেয়েছে।
মোদী জি - আর একে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কী পরিকল্পনা আছে আপনার? কীভাবে এগোচ্ছেন? যেমন বাসের রেজাল্ট এসে গেছে। তারও সব খুঁটিনাটি বিষয় প্রকাশিত হয়েছে নিশ্চয়ই। তা কীভাবে অগ্রসর হওয়ার কথা ভাবছেন?
ময়ূর পাটিল - স্যার, স্টার্টআপ ইন্ডিয়ার মধ্যে নীতি আয়োগ অটল নিউ ইন্ডিয়া চ্যালেঞ্জ থেকে আমরা অনুদান পেয়েছি, আর সেই অনুদানের ভিত্তিতে আমরা এখন কারখানা চালু করেছি, যেখানে আমরা এয়ার ফিল্টারের উৎপাদন করতে পারব।
মোদী জি - ভারত সরকারের তরফ থেকে কতটা অনুদান পেয়েছেন আপনারা?
ময়ূর পাটিল - ৯০ লাখ।
মোদী জি - ৯০ লাখ?
ময়ূর পাটিল - আজ্ঞে হ্যাঁ।
মোদী জি - আর তাতে আপনাদের কাজ হয়ে গিয়েছে?
ময়ূর পাটিল - হ্যাঁ, এখন তো চালু হয়ে গিয়েছে। প্রসেসে রয়েছে।
মোদী জী - আপনারা কতজন বন্ধু মিলে করছেন এইসব?
ময়ূর পাটিল - আমরা চারজন আছি স্যার।
মোদী জী - আর চারজন প্রথমে একসঙ্গে পড়াশোনা করতেন আর তখনই আপনাদের এই ভাবনা মাথায় আসে আগে এগোনোর।
ময়ূর পাটিল - হ্যাঁ। হ্যাঁ স্যার। আমরা কলেজেই ছিলাম আর কলেজে আমরা এসব ভাবি আর এটা আমারই আইডিয়া ছিলো যে আমি আমার মোটরসাইকেলের অন্তত দূষণ যাতে কমাতে পারি আর মাইলেজ বাড়াতে পারি।
মোদী জী - আচ্ছা দূষণ কম করেছেন, মাইলেজ বাড়িয়েছেন তাহলে গড়ে কত সাশ্রয় হয়?
ময়ূর পাটিল - স্যার মোটরসাইকেলে আমরা টেস্ট করেছিলাম। এর মাইলেজ ছিল ২৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার, সেটা বাড়িয়ে আমরা করলাম ৩৯ কিলোমিটার প্রতি লিটার, তাহলে প্রায় ১৪ কিলোমিটার এর লাভ হলো আর তার ফলে চল্লিশ শতাংশ কার্বন নিঃসরণও কমানো গেল। আর যখন রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন এর বাসে এটা লাগানো হল করা হল তখন ১০% জ্বালানীর দক্ষতা বাড়ল হলো আর তাতেও ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ নিঃসরণ কম হল।
মোদী জী - ময়ূর আপনার সঙ্গে কথা বলে আমার খুব ভালো লাগলো আর আপনাদের বন্ধুদেরও আমার তরফ থেকে অভিনন্দন জানাবেন, যে কলেজ জীবনে নিজেদের যা সমস্যা ছিল তার সমাধানও আপনারা খুঁজেছেন আর এই সমাধানের পথ ধরে পরিবেশের সমস্যাকে সমাধান করার দায়িত্ব নিয়েছেন। আমাদের দেশের যুবকদের ক্ষমতা এতটাই যে, যেকোনো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে আর তার সমাধান খুঁজতে পারে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের অনেক অভিনন্দন। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ময়ূর পাটিল - ধন্যবাদ স্যার। ধন্যবাদ।
বন্ধুরা, কিছু বছর আগেও যদি কেউ বলত যে সে ব্যবসা করতে চায় বা কোন নতুন কোম্পানি শুরু করতে চায় তখন পরিবারের প্রবীণদের উত্তর হতে যে "তুমি চাকরি কেন করতে চাও না! চাকরি করো। চাকরি তে নিরাপত্তা থাকে, বেতন থাকে। ঝামেলা কম হয়। কিন্তু আজ যদি কেউ নিজের কোম্পানি শুরু করতে চান, তার আশেপাশের সব লোক অনেক উৎসাহিত হন, আর এতে তাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতাও করেন। বন্ধুরা ভারতের উন্নয়নের টার্নিং পয়েন্ট এটাই, যেখানে এখন শুধু কর্মপ্রার্থী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন না বরং কর্ম সংস্থানও তৈরি করছেন। এতে বিশ্বমঞ্চে ভারতের অবস্থান আরো মজবুত হবে।
আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘আজ মন কি বাত’এ আমরা অমৃত মহোৎসবের কথা বললাম।অমৃত কালে কিভাবে আমাদের দেশবাসী নতুন নতুন সংকল্প পূরণ করেছেন তার চর্চা করলাম আর তার সঙ্গে ডিসেম্বর মাসে সেনার শৌর্যের সঙ্গে যুক্ত উপলক্ষ গুলিরও উল্লেখ করলাম। ডিসেম্বর মাসে আরেকটি বড় দিন আমাদের সামনে আসে যেটা থেকে আমরা প্রেরণা পাই। এই দিনটি হল ৬ই ডিসেম্বর বাবাসাহেব আম্বেদকর এর পূণ্য তিথি। বাবাসাহেব নিজের পুরো জীবন দেশ ও সমাজের প্রতি নিজ কর্তব্য পালনে সমর্পণ করেছিলেন। আমরা দেশবাসীরা এটা কখনও ভুলব না যে আমাদের সংবিধানের মূল ভাবনা, আমাদের সংবিধান আমাদের সকল দেশবাসীর কাছে নিজ নিজ কর্তব্য পালনের প্রত্যাশা করে। তাহলে আসুন আমরাও সংকল্প নিই যে অমৃত মহোৎসবে আমরা আমাদের কর্তব্য সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের প্রচেষ্টা করবো। এটাই হবে বাবা সাহেবের প্রতি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি।
বন্ধুরা, এখন আমরা ডিসেম্বর মাসে প্রবেশ করছি। স্বাভাবিকভাবেই পরের মন কি বাত ২০২১ সালের শেষ মন কি বাত হবে। ২০২২ এ পুনরায় যাত্রা শুরু করা হবে আর আমি তো আপনাদের কাছ থেকে অনেক উপদেশের অপেক্ষা করতেই থাকি আর করতে থাকবোও। আপনারা এই বছরকে কিভাবে বিদায় জানাচ্ছেন, নতুন বছরে কী করতে চলেছেন এটা অবশ্যই বলবেন আর হ্যাঁ এটা কখনো ভুলবেন না করোনা এখনো চলে যায়নি। সর্তকতা অবলম্বন করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Salutes to the bravehearts. #MannKiBaat pic.twitter.com/c7QEeIO3sX
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
From Panchayat to Parliament, we can see the spirit of Amrit Mahotsav. #MannKiBaat pic.twitter.com/pYO7yHjx2v
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
आजादी में अपने जनजातीय समुदाय के योगदान को देखते हुए देश ने जनजातीय गौरव सप्ताह भी मनाया है। #MannKiBaat pic.twitter.com/iIYMuxQfEI
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
PM @narendramodi appreciates unique efforts of citizens. #MannKiBaat pic.twitter.com/k4forIkOf8
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
वृंदावन दुनिया भर के लोगों को अपनी तरफ आकर्षित करता रहा है।
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
इसकी छाप आपको दुनिया के कोने-कोने में मिल जाएगी। #MannKiBaat pic.twitter.com/JhUOtC2VB0
A special connect between Vrindavan and Perth. #MannKiBaat pic.twitter.com/o4Tq9qeIrU
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
Australia has a special relation with Jhansi.
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
John Lang, Rani Lakshmibai's lawyer during legal battle against the East India Company, was originally from Australia. #MannKiBaat pic.twitter.com/TC0AHa49Tc
PM @narendramodi praises people's efforts to revive Noon River in Jalaun. #MannKiBaat pic.twitter.com/7WgYBA4v35
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
Commendable efforts in Thoothukudi. #MannKiBaat pic.twitter.com/qAyvcaek0c
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
प्रकृति से हमारे लिये खतरा तभी पैदा होता है जब हम उसके संतुलन को बिगाड़ते हैं या उसकी पवित्रता नष्ट करते हैं।
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
प्रकृति माँ की तरह हमारा पालन भी करती है और हमारी दुनिया में नए-नए रंग भी भरती है। #MannKiBaat pic.twitter.com/Ocibec3xvZ
Protecting natural resources around us is in the interest of the world. #MannKiBaat pic.twitter.com/4OnJtKoDRs
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
स्वान्त: सुखाय। #MannKiBaat pic.twitter.com/fbOTZ9y8hY
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
Hear PM @narendramodi interaction with Rajesh Ji, a beneficiary of Ayushman Bharat Yojana.
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
He shares how the scheme helped him get timely and free treatment. https://t.co/hvWCMRHNcy
मैं आज भी सत्ता में नहीं हूँ और भविष्य में भी सत्ता में जाना नहीं चाहता हूँ।
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
मैं सिर्फ सेवा में रहना चाहता हूँ, मेरे लिए ये पद, ये प्रधानमंत्री सारी चीजें ये सत्ता के लिए है ही नहीं भाई, सेवा के लिए है: PM during interaction with Ayushman Bharat Yojana beneficiary #MannKiBaat
Sukhdevi Ji, a beneficiary of Ayushman Bharat Yojana from Mathura narrates how the scheme benefitted her. She thanks the Prime Minister for the initiative.
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
Hear their interaction. #MannKiBaat https://t.co/hvWCMRHNcy
India is leading the world when it comes to start-ups. #MannKiBaat pic.twitter.com/FKlDpGKXr4
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
Today there are more than 70 Unicorns in India. #MannKiBaat pic.twitter.com/fZ6817XKZl
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
Hear this enriching conversation between PM @narendramodi and Mayur Patil, who is striving to find solution to the problem of pollution. #MannKiBaat https://t.co/hvWCMRHNcy
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
This is the turning point of India's growth story, where now people are not only dreaming of becoming job seekers but also becoming job creators. #MannKiBaat pic.twitter.com/CN0HtG4lzX
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021
आइये, हम भी संकल्प लें कि अमृत महोत्सव में हम कर्तव्यों को पूरी निष्ठा से निभाने का प्रयास करेंगे। #MannKiBaat pic.twitter.com/zfNjUjK8BP
— narendramodi_in (@narendramodi_in) November 28, 2021