আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। গত সপ্তাহে আমরা এমন এক সাফল্য অর্জন করলাম যা আমাদের সবাইকে গর্বিত করেছে। আপনারা হয়ত শুনেছেন যে ভারত গত সপ্তাহে চারশো বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৩০ লক্ষ কোটি টাকার রপ্তানীর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। প্রাথমিক ভাবে শুনে মনে হয় যে আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত একটা ব্যাপার, কিন্তু এটা আর্থিক ব্যবস্থার থেকেও বেশি, ভারতের সামর্থ্য, ভারতের সম্ভাবনার সঙ্গে যুক্ত বিষয়। এক সময় ভারত থেকে রপ্তানীর পরিমাণ কখনও একশো বিলিয়ন, কখনও দেড়শো বিলিয়ন, কখনও দু’শো বিলিয়ন হত, আর আজ, ভারত চারশো বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গিয়েছে। এর একটা অর্থ হল যে ভারতে তৈরি জিনিসের চাহিদা বাড়ছে বিশ্বজুড়ে, দ্বিতীয় অর্থ হল যে ভারতের সরবরাহ শৃঙ্খল দিনে-দিনে শক্তিশালী হয়ে উঠছে আর এর একটা গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও রয়েছে। দেশ, বড় পদক্ষেপ তখনই নেয় যখন স্বপ্নের থেকেও বড় হয়ে ওঠে সঙ্কল্প। যখন রাতদিন নিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্কল্পের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখন সেই সঙ্কল্প বাস্তবায়িতও হয়, আর আপনারা দেখুন, কোনও ব্যক্তির জীবনেও তো এমনটাই হয়। যখন কারও সঙ্কল্প, তাঁর চেষ্টা , তাঁর স্বপ্নের থেকেও বড় হয়ে যায় তখন সফলতা নিজে পায়ে হেঁটে তাঁর কাছে আসে।
বন্ধুগণ, দেশের নানা কোণ থেকে নতুন-নতুন পণ্য এখন বিদেশে যাচ্ছে। অসমের হাইলাকান্দির চামড়ার তৈরি পণ্য হোক বা উসমানাবাদের তাঁতের পণ্য, বীজাপুরের ফল-সব্জি হোক বা চন্দৌলির ব্ল্যাক রাইস, সবকিছুর রপ্তানী বাড়ছে। এখন লাদাখের বিশ্বখ্যাত অ্যাপ্রিকট আপনি দুবাইতেও পাবেন আর সৌদি আরবে তামিলনাড়ুর থেকে পাঠানো কলা পাওয়া যাবে। এখন সবথেকে বড় কথা হল যে নতুন-নতুন পণ্য, নতুন-নতুন দেশে পাঠানো হচ্ছে। যেমন হিমাচল, উত্তরাখণ্ডে উৎপন্ন বাজরা জাতীয় মোটা দানার শস্যের প্রথম কিস্তি ডেনমার্কে রপ্তানী করা হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা আর চিত্তুর জেলার বঙ্গনপল্লী আর সুবর্ণরেখা আম দক্ষিণ কোরিয়ায় রপ্তানী করা হয়েছে। ত্রিপুরা থেকে তাজা কাঁঠাল আকাশপথে লণ্ডনে রপ্তানী করা হয়েছে, আরও কী, প্রথম বার নাগাল্যাণ্ডের রাজালঙ্কা লণ্ডনে পাঠানো হয়েছে। এইভাবেই ভালিয়া গমের প্রথম কিস্তি গুজরাত থেকে কেনিয়া আর শ্রীলঙ্কায় রপ্তানী করা হয়েছে। অর্থাৎ, এখন আপনি অন্য দেশে গেলে, আগের থেকে অনেক বেশি মেড ইন ইণ্ডিয়া পণ্য আপনার চোখে পড়বে।
বন্ধুগণ, এই তালিকা অনেক লম্বা আর যত লম্বা এই তালিকা, ততটাই বড়ো মেক ইন ইণ্ডিয়ার শক্তি, ততটাই বিরাট ভারতের সামর্থ্য, আর সামর্থ্যের ভিত্তি – আমাদের কৃষক, আমাদের কারিগর, আমাদের তন্তুবায় শিল্পী, আমাদের ইঞ্জিনীয়ার, আমাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, আমাদের অতি ক্ষুদ্র , ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পোদ্যোগ, বিভিন্ন পেশার অনেক মানুষ, এঁরা সব এর সত্যিকারের শক্তি। এঁদের পরিশ্রমেই চারশো বিলিয়ন ডলারের রপ্তানীর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে আর আমি খুশী যে ভারতের মানুষের এই সামর্থ্য বিশ্বের কোণায়-কোণায়, নতুন বাজারে পৌঁছচ্ছে। যখন এক-একজন ভারতবাসী লোকালের জন্য ভোকাল হন তখন লোকালের গ্লোবাল হতে দেরি হয় না। আসুন, আমরা স্থানীয় পণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যাই আর আমাদের উৎপাদিত বস্তুর খ্যাতি আরও বাড়াই।
বন্ধুরা, 'মন কি বাত'-এর শ্রোতাদের এটা জেনে ভালো লাগবে যে দেশীয় পর্যায়েও আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সাফল্য আমাদের গর্বিত করে। আজ আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সরকারি স্তরে ক্রয়-এর জন্য গভর্নমেন্ট ই-মার্কেট প্লেস অর্থাৎ জিইএম- এর বড় অংশীদার। প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। গত এক বছরে জিইএম পোর্টাল-এর মাধ্যমে সরকার, এক লক্ষ কোটি টাকার বেশি কেনাকাটা করেছে। দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ছোটো দোকানদার তাদের পণ্য সরাসরি সরকারের কাছে বিক্রি করেছে। একটা সময় ছিল যখন শুধুমাত্র বড় কোম্পানিগুলিই সরকারের কাছে পণ্য বিক্রি করতে সক্ষম হতো। কিন্তু এখন দেশ বদলাচ্ছে, পুরনো ব্যবস্থাও বদলাচ্ছে। এখন ছোটোর চেয়ে ছোট দোকানদাররাও তাদের পণ্য জিইএম পোর্টালের মাধ্যমে সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারে। এটাই নতুন ভারত। সে শুধু বড় স্বপ্নই দেখে না, সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর সাহসও দেখায়, যেখানে আগে কেউ আসেনি। এই সাহসের জোরেই আমরা ভারতীয়রা আত্ম নির্ভর ভারতের স্বপ্ন পূরণ করব।
আমার প্রিয় দেশবাসী, সাম্প্রতিক পদ্ম পুরস্কার অনুষ্ঠানে আপনারা নিশ্চয়ই বাবা শিবানন্দজিকে দেখেছেন। ১২৬ বছর বয়সী প্রবীনের উচ্ছ্বাস দেখে আমার মতো সবাই নিশ্চয়ই অবাক হয়েছেন, আর আমি দেখলাম, কিভাবে এক নিমেষে তিনি নন্দী মুদ্রায় প্রণাম করতে লাগলেন। আমিও বাবা শিবানন্দজিকে নত হয়ে বারবার প্রণাম করলাম। ১২৬ বছর বয়সী বাবা শিবানন্দের বয়স এবং ফিটনেস, দুটোই, আজ দেশে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের মন্তব্য দেখলাম, যে বাবা শিবানন্দ তাঁর বয়সের চেয়ে চার গুণ কম বয়সীদের চেয়েও ফিট। সত্যিই, বাবা শিবানন্দের জীবন আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করে। আমি তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করছি। ওঁর মধ্যে যোগব্যায়ামের প্রতি একটা আলাদা আবেগ আছে এবং তিনি খুব স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেন।
জীবেম শরদহ্ শতম্।
আমাদের সংস্কৃতিতে সকলকে সুস্থ জীবনসহ শতায়ু হওয়ার শুভকামনা প্রদান করা হয়। আমরা ৭ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালন করব। আজ সমগ্র বিশ্বে স্বাস্থ্য নিয়ে ভারতীয় চিন্তাধারা, সেটা যোগ হোক অথবা আয়ুর্বেদ, সব কিছুর প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাচ্ছে। আপনারা দেখেছেন যে গত সপ্তাহে কাতারে একটি যোগ অনুশীলনের কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছিল। এতে ১১৪টি দেশের নাগরিকরা অংশগ্রহণ করে নতুন ওয়ার্ল্ড রেকর্ড তৈরি করেছেন। এভাবেই আয়ুস শিল্পের বিপণন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। ৬বছর আগে আয়ুর্বেদের সঙ্গে যুক্ত ওষুধের বাজার ২২,০০০ কোটি টাকার কাছাকাছি ছিল। এখন আয়ুষ উৎপাদন শিল্প প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার কোটির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে সম্ভাবনা অনবরত বেড়েই চলেছে। স্টার্ট আপসের দুনিয়াতেও আয়ুষ আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে।
বন্ধুরা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের অন্য স্টার্ট আপসের সম্বন্ধে তো আমি আগেও অনেকবার কথা বলেছি, কিন্তু এইবার আয়ুস স্টার্ট আপস নিয়ে আপনাদের সঙ্গে বিশেষভাবে কথা বলব। একটা স্টার্ট আপ রয়েছে যার নাম কপিভা। এই নামের মধ্যেই এর অর্থ লুকিয়ে রয়েছে - ক এর অর্থ কফ, পি এর অর্থ পিত্ত, এবং বা এর অর্থ বাত। এই স্টার্টআপ আমাদের ঐতিহ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য গড়ে উঠেছে। আরেকটি স্টার্টআপ নিরোগ-স্ট্রীট রয়েছে, আয়ুর্বেদ চিকিৎসা ব্যবস্থার এক আশ্চর্য ধারণা। এখানে প্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা সারা পৃথিবীর আয়ুর্বেদ ডাক্তারদের সরাসরি সাধারন মানুষদের সঙ্গে যুক্ত করে। ৫০ হাজারেরও বেশি চিকিৎসক এর সঙ্গে যুক্ত। এমনই আত্রেয় ইনোভেশন একটি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের প্রযুক্তি সংক্রান্ত স্টার্ট আপ যা সর্বাঙ্গীণ সুস্থতার জন্য কাজ করছে। ইক্সোরিয়েল কেবলমাত্র অশ্বগন্ধা প্রয়োগ নিয়েই সচেতনতা বৃদ্ধি করেনি বরং উন্নত গুণমানের পণ্যসামগ্রীর বিষয়েও বড় মাত্রা যোগ করেছে। কিওরভেদাও শেকড়-বাকড় এর আধুনিক প্রয়োগ এবং এ বিষয়ের ঐতিহ্য ও জ্ঞানের সমন্বয়ে সর্বাঙ্গীণ জীবনযাত্রা নিয়ে ডায়েটরি সাপ্লিমেন্টসের তৈরি করেছে।
বন্ধুরা, আমি মাত্র কয়েকটা নাম বললাম, এই লিস্ট আসলে অনেক লম্বা। এটি ভারতের তরুণ উদ্যম এবং ভারতে তৈরি নতুন সম্ভাবনার প্রতীক। আমার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নতুন শিল্পোদ্যোগ বা স্টার্ট-আপ্সের বিশেষতঃ আয়ুষ স্টার্ট-আপ্সের কাছে একটা অনুরোধ রয়েছে। আপনারা অনলাইনে যে কোনও পোর্টাল তৈরি করুন, যা কিছু বিষয়বস্তু রচনা করুন করুন, তা রাষ্ট্রসঙ্ঘের মান্যতা প্রাপ্ত সবকটি ভাষায় তৈরি করার চেষ্টা করুন। বিশ্বে এমন বহু দেশ রয়েছে যেখানে ইংরাজি না বিশেষ বলা হয়, না কেউ বিশেষ বোঝে। সেই সব দেশের কথা মাথায় রেখে আপনারা তথ্যের প্রচার-প্রসার করুন। আমার বিশ্বাস, ভারতের আয়ুষ স্টার্ট-আপ্সের উন্নত গুণমানের পণ্য খুব শীঘ্রই বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।
বন্ধুরা, স্বাস্থ্যের সঙ্গে স্বচ্ছতার সোজাসুজি সম্পর্ক রয়েছে। "মন কি বাত"-এ আমরা সবসময় স্বচ্ছতায় আগ্রহীদের বিভিন্ন প্রচেষ্টা সম্পর্কে বলি। এমনি একজন স্বচ্ছতাগ্রহী হলেন চন্দ্রকিশোর পাতিলজি। উনি মহারাষ্ট্রের নাসিকে থাকেন। চন্দ্রকিশোরজি স্বচ্ছতা সম্পর্কে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। তিনি গোদাবরী নদীর তীরে দাঁড়িয়ে জনসাধারণকে নদীতে আবর্জনা না ফেলতে উদ্বুদ্ধ করেন। যদি কাউকে আবর্জনা ফেলতে দেখেন, তৎক্ষণাৎ তাকে বারণ করেন। এই কাজে চন্দ্রকিশোরজি নিজের অনেক সময় ব্যয় করেন। বিকেল অব্দি তাঁর কাছে স্তুপাকৃত আবর্জনার জমা হয়ে যায়, যা সবাই নদীর জলে ফেলার জন্য এনেছিল। চন্দ্রকিশোরজির এই প্রচেষ্টা, সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং অনুপ্রেরণাও যোগায়। এই রকম আরো একজন স্বচ্ছতাগ্রহী - উড়িষ্যার পুরীর রাহুল মহারাণা। রাহুল প্রতি রবিবার সকাল-সকাল পুরীতে তীর্থ ক্ষেত্র ঘুরে ঘুরে প্লাস্টিকের আবর্জনা পরিষ্কার করেন। উনি এখনো পর্যন্ত কয়েকশো কিলো প্লাস্টিকের আবর্জনা ও জঞ্জাল পরিষ্কার করেছেন। পুরীর রাহুল হোক বা নাসিকের চন্দ্রকিশোর, এঁরা সবাই আমাদের অনেক কিছু শেখান। নাগরিক হওয়ার দরুন আমরা আমাদের কর্তব্য পালন করি, তা সে স্বচ্ছতা হোক, পুষ্টি হোক, বা টিকাকরণ, এই সকল প্রয়াস আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
আমার প্রিয় দেশবাসী, এবারে বলবো কেরালার মুপত্তাম শ্রী নারায়ণনজী কথা। তিনি এক প্রকল্প শুরু করেছেন যার নাম - ‘পটস ফর ওয়াটার অফ লাইফ’. আপনি যখন এই প্রকল্প সম্পর্কে জানবেন তখন ভাববেন কি অসাধারণ এই কাজ।
বন্ধুরা, গ্রীষ্মকালে পশুপাখিরা যাতে পানীয় জলের অভাবে কষ্ট না পায় সেজন্য মূপট্টম শ্রী নারায়ণনজী মাটির পাত্র বিলি করার কাজ করে চলেছেন। গরমে তিনি পশুপাখিদের এই কষ্ট দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠতেন। তখন তিনি ভাবলেন, কেমন হয় যদি নিজেই মাটির পাত্র বিলি করা শুরু করেন... তাহলে অন্তত অন্যদের জন্য শুধু সেই পাত্র গুলোয় কেবল জল ভরার কাজটিই পড়ে থাকে! আপনারা শুনলে অবাক হয়ে যাবেন, নারায়ণনজী যত মাটির পাত্র বন্টন করেছেন, তার সংখ্যা এক লক্ষের গন্ডী পার করতে চলেছে। তার এই অভিযানে, এক লক্ষ-তম পাত্রটি তিনি গান্ধীজী স্থাপিত সবরমতী আশ্রমে প্রদান করবেন। ঠিক এই সময়, যখন গ্রীষ্মের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে, তখন নারায়ণনজী'র এই কাজ আমাদের সকলকে নিশ্চয়ই অনুপ্রাণিত করবে, এবং আমরাও এই গ্রীষ্মে পশুপাখি বন্ধুদের জন্য জলের ব্যবস্থা করব!
বন্ধুরা, আমি মন-কী-বাত অনুষ্ঠানের শ্রোতাদেরও অনুরোধ করবো, আমরা যেন সেই প্রতিজ্ঞা অবশ্যই পালন করি। পানীয় জলের প্রতিটি বিন্দু সংরক্ষণের জন্য আমরা যা কিছু করতে পারি তা যেন অবশ্যই করি। তাছাড়া, জলের পুনর্ব্যবহারের বিষয়েও আমাদের সমান গুরুত্ব দিতে হবে। গৃহস্থালির ব্যবহার করা জল ধোয়ার কাজে এবং বাগানে জল দেবার কাজে পুনরায় ব্যবহার করা উচিত। সামান্য চেষ্টা করলেই আপনি আপনার বাড়িতেই এমন ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন। রহীম দাসজী বহু যুগ আগে হয়তো সেই উদ্দেশ্যেই বলে গিয়েছিলেন - "রহিমান পানি রাখিয়ে, বিন পানি সব শূন" অর্থাৎ এই বলে রহিম জী জলের মাহাত্য বোঝাতে চেয়েছিলেন। কারণ জল ছাড়া সবকিছুই বৃথা। জল সংরক্ষণের এই কাজে আমি ছোট্ট বন্ধুদের কাছে অনেক বেশি প্রত্যাশা করি। স্বচ্ছতাকে যেভাবে আমাদের ছোট্ট ছোট্ট বন্ধুরা জন-আন্দোলনে পরিণত করেছে, ঠিক সেভাবেই ওয়াটার ওয়ারিয়র হয়ে তারা জল সংরক্ষণেও সহায়তা করতে পারে।
বন্ধুরা, চিরকালই আমাদের দেশে পানীয় জলের সংরক্ষণ ও জলের উৎস গুলির সুরক্ষা করা আমাদের সামাজিক উদ্যোগের একটা অংশ। আমি আনন্দিত যে আমাদের দেশে অনেকেই জল সংরক্ষণকে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে গ্রহণ করেছেন করে। যেমন চেন্নাইয়ের এক বন্ধু অরুণ কৃষ্ণমূর্তি জী। অরুন জী, তার এলাকায় পুকুর ও দীঘিগুলি পরিষ্কার রাখার কাজ করে চলেছেন। উনি দেড়শোর-ও বেশী দিঘি ও পুকুর পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, এবং তা সাফল্যের সঙ্গে পূর্ণও করেছেন। ঠিক সেরকমই মহারাষ্ট্রের এক বন্ধু রোহন কালে। রোহন পেশাগতভাবে একজন এইচআর প্রোফেশনাল। তিনি মহারাষ্ট্রের শত শত স্টেপওয়েলস অর্থাৎ সিঁড়ি যুক্ত পুরনো জলুকুপগুলির সংরক্ষণের প্রচার চালাচ্ছেন। এগুলোর মধ্যে অনেক কুয়োই বহু প্রাচীন, এবং আমাদের পরম্পরার একটা অংশ।
সিকান্দ্রাবাদের বংশী লাল পেট কুঁয়ো এরকমই একটি step well। বহু বছর উপেক্ষিত থাকার ফলে এই স্টেপ ওয়েল মাটি আর আবর্জনায় ভরে গেছিল। কিন্তু এখন এই স্টেপ ওয়েল-কে পুনরুজ্জীবিত করার অভিযান জন অংশীদারির মাধ্যমে শুরু হয়েছে।
বন্ধুরা, আমি তো সেই রাজ্য থেকে এসেছি, যেখানে সবসময়ই জলের ঘাটতি থাকে। গুজরাতে এই স্টেপ ওয়েল-কে ভাভ বলা হয়। গুজরাতের মতো রাজ্যে ভাভের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কুঁয়ো বা বাউড়ি সংরক্ষণে 'জল মন্দির যোজনা' একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। পুরো গুজরাটে অনেক বাউড়িকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। এর ফলে এই এলাকায় জলস্তর বৃদ্ধিতেও সাহায্য হয়েছে। এরকমই অভিযান আপনারা স্থানীয় স্তরেও চালাতে পারেন। চেক ড্যাম বানানো হোক বা বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনই সমষ্টিগত প্রচেষ্টারও প্রয়োজন আছে। যেরকম স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে আমাদের দেশের প্রত্যেক জেলায় অন্তত ৭৫টি অমৃত সরোবর বানানো যেতে পারে। কিছু পুরানো সরোবরকে সংস্কার করা যেতে পারে আর কিছু নতুন সরোবরও বানানো যেতে পারে। আমার বিশ্বাস আপনারা এই লক্ষ্যে কিছু না কিছু উদ্যোগ নিশ্চয়ই নেবেন।
আমার প্রিয় দেশবাসী 'মন কি বাত'-এর একটা সৌন্দর্য এটাও যে এখানে আমি আপনাদের বার্তা বিভিন্ন ভাষায় ও বিভিন্ন উপভাষায় পাই। অনেকে মাইগভে অডিও মেসেজও পাঠান। ভারতের সংস্কৃতি, আমাদের ভাষা, আমাদের উপভাষা, আমাদের থাকা-খাওয়ার অভ্যাস, এইসব বিবিধতা আমাদের অনেক বড় শক্তি। পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত ভারতের এই বিবিধতা ভারতকে এক করে রেখেছে, 'এক ভারত-শ্রেষ্ঠ ভারত' বানিয়েছে। আর এতেও আমাদের ঐতিহাসিক স্থান আর পৌরাণিক কাহিনী উভয়েরই ভূমিকা আছে। আপনি ভাবছেন এই কথাগুলো আমি এখন আপনাদের কেন বলছি। এর কারণ হলো মাধবপুর মেলা। মাধবপুর মেলা কোথায় বসে, কেন বসে, কিভাবে এটি ভারতের বিবিধতার সঙ্গে জড়িত এটা জানতে শ্রোতাদের খুব আকর্ষণীয় লাগবে।
বন্ধুরা, মাধবপুর মেলা গুজরাটের পোরবন্দরে সমুদ্রতটে অবস্থিত মাধবপুর গ্রামে হয়। কিন্তু এই মেলার সঙ্গে ভারতের পূর্বভাগেরও সম্পর্ক রয়েছে। আপনারা ভাবছেন এও কী করে সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তরও পুরাণের এক আখ্যানে পাওয়া যায় কথিত আছে হাজার-হাজার বছর আগে, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের বিবাহ উত্তরপূর্বের রাজকুমারী রুক্মিণীর সঙ্গে হয়েছিল। এই বিবাহ পোরবন্দরের মাধবপুর গ্রামে সম্পন্ন হয়েছিল আর সেই বিবাহের প্রতীক হিসেবে আজও ওই জায়গায় মাধবপুর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব আর পশ্চিমের এই গভীর সম্পর্ক আমাদের ঐতিহ্য। সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে এবং মানুষের প্রয়াসে এখন মাধবপুরের মেলায় নতুন-নতুন জিনিস যুক্ত হচ্ছে।
আমাদের এখানে কন্যা পক্ষকে ঘরাতি বলে এবং আজকাল এই মেলার সময় উত্তরপূর্ব থেকে বহু ঘরাতি আসছেন। এক সপ্তাহ ধরে চলা এই মেলায় এখন উত্তরপূর্ব অঞ্চলের সব রাজ্য থেকে শিল্পী আসেন, হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত বহু শিল্পী আসেন এবং এই মেলাকে আরও উজ্জ্বল করে তোলেন।
এক সপ্তাহ ধরে চলা এই মাধবপুর মেলায় পশ্চিম ও পূর্বের সংস্কৃতির অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে এবং এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের এক অপরুপ নিদর্শন হয়ে ওঠে এই মেলা। আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি এই মেলার সম্বন্ধে পড়ুন ও জানুন।
আমার প্রিয় দেশবাসী, দেশে চলা আজাদী কী অমৃত মহোৎসব জনসাধারণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুন্দর নিদর্শন হয়ে উঠছে। কিছুদিন আগে ২৩শে মার্চ শহীদ দিবসের দিন দেশের ভিন্ন-ভিন্ন অংশে বহু অনুষ্ঠান হয়। আমাদের দেশ স্বাধীনতার নায়ক-নায়িকাদের শ্রদ্ধাপূর্বক স্মরণ করে ওই দিন। ওই দিনই কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের বিপ্লবী ভারত গ্যালারি জনসাধারণের জন্য উৎসর্গ করার সুযোগ হয় আমার।
ভারতের বীর বিপ্লবীদের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণের জন্য সৃষ্ট এটি একটি বিশেষ গ্যালারি। সময় পেলে অবশ্যই এই গ্যালারিটি দেখতে যাবেন আপনারা। বন্ধুরা এপ্রিল মাসে আমরা দু’জন বিখ্যাত মানুষের জন্মবার্ষিকী পালন করব। এঁরা দুজনেই ভারতীয় সমাজের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিলেন। এই দু’জন মহতি হলেন মহাত্মা ফুলে এবং বাবাসাহেব আম্বেদকর। মহাত্মা ফুলের জন্ম জয়ন্তী ১১ই এপ্রিল এবং বাবাসাহেবের জন্মজয়ন্তী আমরা ১৪ই এপ্রিল পালন করব। এই দুই মহাপুরুষ ভেদাভেদ এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিশাল সংগ্রাম করেন। মহাত্মা ফুলে ওই সময়ে মেয়েদের জন্য স্কুল খোলেন, কন্যা শিশু হত্যার বিরুদ্ধাচরণ করেন। তিনি জলসঙ্কট থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যও বড় অভিযান চালান।
বন্ধুগণ, মহাত্মা ফুলের বিষয়ে আলোচনার সময় সাবিত্রী বাই ফুলের উল্লেখ করাও জরুরী। সাবিত্রী বাই ফুলে বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার নির্মাণে বড়ো ভূমিকা পালন করেছিলেন। একজন শিক্ষিকা এবং একজন সমাজ সংস্কারক হিসেবে উনি সমাজে চেতনা সৃষ্টি করেছিলেন এবং সাহসও জুগিয়েছিলেন। দুজনে মিলে সত্যশোধক সমাজের প্রতিষ্ঠা করেন। মানুষের ক্ষমতায়নের চেষ্টা করেন। আমরা বাবা সাহেব আম্বেদকরের কাজেও মহাত্মা ফুলের প্রভাব পরিষ্কার দেখতে পাই। উনি বলতেন কোনো সমাজের বিকাশের মূল্যায়ন সেই সমাজের মহিলাদের অবস্থা দেখে বোঝা যায়। মহাত্মা ফুলে, সাবিত্রী বাই ফুলে, বাবা সাহেব আম্বেদকরের জীবন থেকে প্রেরণা নিয়ে আমি প্রত্যেক মা-বাবা, অভিভাবকদের অনুরোধ করছি যে তাঁরা যেন মেয়েদের অবশ্যই শিক্ষিত করেন। মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করানোর সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য কিছুদিন আগেই কন্যা শিক্ষা প্রবেশ উৎসব শুরু করা হয়েছে, যে মেয়ের পড়াশোনা কোনো কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে, তাদের দ্বিতীয়বার স্কুলে ভর্তি করানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বন্ধুরা, এটা আমাদের সকলের জন্য সৌভাগ্যের কথা যে বাবা সাহেবের সঙ্গে জুড়ে থাকা পাঁচটি তীর্থস্থানের জন্য কাজ করার সুযোগ পাওয়া গেছে। ওঁর জন্মস্থান মহু হোক, মুম্বাইতে চৈত্যভূমি হোক, লন্ডনে ওঁর বাড়ী হোক, নাগপুরে দীক্ষাভূমি হোক বা দিল্লিতে মহাপরিনির্বান স্থল, আমার সব স্থানগুলিতে, সব তীর্থস্থানগুলিতে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। আমি মন কি বাতের শ্রোতাদের কাছে অনুরোধ করবো যে তাঁরা যেন মহাত্মা ফুলে, সাবিত্রী বাই ফুলে, বাবা সাহেব আম্বেদকরের সঙ্গে জুড়ে থাকা সবকটি জায়গা দর্শন করেন। আপনার সেখানে অনেক কিছু শেখার বিষয় পাবেন।
আমার প্রিয় দেশবাসী, মন কি বাত অনুষ্ঠানে এইবারেও অনেক বিষয়ে কথা বললাম। আগামী মাসে অনেক উৎসব আসছে। কিছুদিন বাদেই নবরাত্রি আসছে। নবরাত্রিতে আমরা ব্রত-উপবাস, শক্তির আরাধনা করি, শক্তির পূজা করি, অর্থাৎ আমাদের সংস্কার আমাদের আনন্দ করতে শেখায় আবার নিয়ন্ত্রণ করতেও শেখায়। দৃঢ়তা এবং তপস্যা আমাদের কাছে উৎসবই, সেইজন্য নবরাত্রি আমাদের সবার কাছে খুবই বিশেষ পার্বণ। নবরাত্রির প্রথম দিনই গুড়িপাড়োয়া উৎসব আছে। এপ্রিল মাসেই ইস্টারও আছে আবার রমজানের পবিত্র দিনও শুরু হচ্ছে। আমরা সকলকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের উৎসব পালন করবো, ভারতের বৈচিত্রকে আরও শক্তিশালী করবো। সবার এটাই কামনা। এইবারে মন কি বাতে এইটুকুই। আগামী মাসে আপনাদের সঙ্গে নতুন বিষয়ে কথা বলবো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
The Prime Minister begins this month's #MannKiBaat by congratulating the people of India for a momentous feat. #MannKiBaat pic.twitter.com/insPTz5EGa
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
India is now thinking big and working to realise that vision! #MannKiBaat pic.twitter.com/j5JgULUeGL
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
Taking massive steps towards economic progress. #MannKiBaat pic.twitter.com/83hIrfCPfh
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
New products are reaching new destinations and this is a great sign! #MannKiBaat pic.twitter.com/PZRI20KF65
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
I applaud our farmers, youngsters, MSMEs says PM @narendramodi. #MannKiBaat pic.twitter.com/Pnw3kLcInY
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
Earlier it was believed only big people could sell products to the Government but the GeM Portal has changed this, illustrating the spirit of a New India! #MannKiBaat pic.twitter.com/GnNmYt6gnh
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
A distinguished Padma Awardee has won the hearts the several Indians... #MannKiBaat pic.twitter.com/qrl37HinDb
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
One of the encouraging trends in the recent years is the rise and success of several start-ups and enterprises in the AYUSH sector. #MannKiBaat pic.twitter.com/SP7cBAyRxZ
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
Inspiring efforts in Maharashtra and Odisha to further cleanliness... #MannKiBaat pic.twitter.com/seOr5wBT2v
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
Here is how a unique effort in Kerala can inspire the nation on the subject of water conservation and on caring for birds... #MannKiBaat pic.twitter.com/2F8hQLr3GT
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
Emphasising on water conservation, PM @narendramodi talks about efforts in Gujarat like Jal Mandirs. Also urges making Amrit Sarovars across India. #MannKiBaat pic.twitter.com/HRuqV9DEEI
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
Every #MannKiBaat is enriched by creative and diverse inputs... #MannKiBaat pic.twitter.com/4MuRLRDPDP
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
How many of know about a fair in the coastal part of Gujarat which is a manifestation of a spirit of Ek Bharat, Shreshtha Bharat! #MannKiBaat pic.twitter.com/cXGeuMi4ZA
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
In the month of April we remember Mahatma Phule and Dr. Babasaheb Ambedkar. #MannKiBaat pic.twitter.com/QB1qNrOJyV
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
The greatness of Mahatma Phule... #MannKiBaat pic.twitter.com/7KPYpGmfmb
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
During #MannKiBaat, PM @narendramodi paid tributes to the great Savitribai Phule. #MannKiBaat pic.twitter.com/C7EvHpTBUQ
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
I feel honoured to have gone to the Panch Teerth associated with Dr. Ambedkar. I would also urge you all to visit these inspiring places. #MannKiBaat pic.twitter.com/7YcEQzmmGv
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022
Let us further girl child education and strengthen women empowerment. #MannKiBaat pic.twitter.com/eH8BPlmKM1
— PMO India (@PMOIndia) March 27, 2022