#MannKiBaat: প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয় পরিদর্শন করা মানুষদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, নাগরিকদের প্রতি নমো অ্যাপে #MuseumQuiz হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন
যে কোনো স্থানীয় মিউজিয়াম দেখতে যান। আপনারা নিজেদের অভিজ্ঞতা #museummemories-এ সকলের সাথে অবশ্যই ভাগ করে নিন: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
#MannKiBaat: ছোট ছোট অনলাইন লেনদেন দিয়ে দেশের কত বড় ডিজিট্যাল অর্থনীতি তৈরি হয়েছে, বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
#MannKiBaat: আমাদের দেশে প্রায় কুড়ি হাজার কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন রোজ হয়ে থাকে, বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
খেলাধুলোর মতই, আর্টস, একাডেমিকস এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে তারা অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছেন। কিন্তু যখন এই বন্ধুরা প্রযুক্তির সাহায্য পায় তখন তারা আরো বড় লক্ষ্য অর্জন করে দেখায়: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
অমৃত মহোৎসব চলাকালীন দেশের প্রতিটি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর বানানো হবে: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
#MannKiBaat: ক্যালকুলাস থেকে কম্পিউটার পর্যন্ত সব বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার জিরোর উপরেই তো আধারিত
আমাদের ভারতীয়দের জন্য গণিত কখনই কঠিন বিষয় ছিল না। এর একটি বড় কারণ হল আমাদের বৈদিক গণিত: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার।

নতুন বিষয় সঙ্গে নিয়ে, অনুপ্রেরণা জাগানো নতুন উদাহরণের সঙ্গে, নতুন-নতুন খবর সংগ্রহ করে, আরো এক বার আমি আপনাদের সঙ্গে ‘মন কি বাত’ করতে এসেছি। জানেন এবার আমি সবথেকে বেশি চিঠি আর বার্তা কোন বিষয়ে পেয়েছি? এই বিষয়টা এমন যা বর্তমান, অতীত আর ভবিষ্যৎ তিনটেরই সঙ্গে জুড়ে আছে। দেশ যে নতুন প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয় পেয়েছে আমি সেই ব্যাপারে কথা বলছি। গত ১৪ই এপ্রিল বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয় দেশবাসীর উদ্দেশে সমর্পিত হল। দেশের নাগরিকদের জন্য এর দ্বার উন্মুক্ত করা হয়েছে। এক জন শ্রোতা আছেন শ্রীমান সার্থক জী− সার্থক জী গুরুগ্রামে থাকেন আর প্রথম সুযোগেই তিনি প্রধানমন্ত্রী সংগ্রহালয় দেখে এসেছেন। সার্থক জী নমো অ্যাপে যে বার্তা পাঠিয়েছেন আমাকে, তা বেশ ইন্টারেস্টিং। তিনি লিখেছেন যে বহু বছর ধরে উনি নিউজ চ্যানেল দেখছেন, খবরের কাগজ পড়ছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গেও যুক্ত উনি, তাই ওনার মনে হয়েছিল যে ওনার সাধারণ জ্ঞান খুব ভালো রয়েছে, কিন্তু যখন পি এম সংগ্রহালয়ে গেলেন তখন উনি বেশ অবাক হলেন, উনি বুঝলেন যে নিজের দেশ আর দেশের নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে উনি অনেক কিছু জানেনই না। উনি পি এম সংগ্রহালয়ের এমন কিছু কিছু বিষয় নিয়ে লিখেছেন যা ওনার জিজ্ঞাসা আরও বাড়িয়ে তুলেছে, যেমন উনি লালবাহাদুর শাস্ত্রীর সেই চরকা দেখে খুব খুশী হয়েছেন যা তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন। উনি শাস্ত্রীজীর পাসবুকও দেখেছেন আর এটাও দেখেছেন যে তাঁর সঞ্চয় কত কম ছিল। সার্থকজী লিখেছেন যে ওনার এটাও জানা ছিল না, যে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেওয়ার আগে মোরারজী ভাই দেশাই গুজরাতে ডেপুটি কালেক্টর ছিলেন। প্রশাসনিক পরিষেবায় ওনার দীর্ঘ একটা কেরিয়ার ছিল। সার্থকজী চৌধুরী চরণ সিংয়ের ব্যাপারে সেই বিষয়টা নিয়ে লিখছেন যা তাঁর জানা ছিল না যে জমিদারি উচ্ছেদের ক্ষেত্রে চৌধুরী চরণ সিংয়ের অনেক বড় অবদান ছিল। এটুকুই নয়, এরপর তিনি লিখছেন যে ভূমি সংস্কারের ব্যাপারে ওখানে আমি দেখলাম যে শ্রী পি ভি নরসিম্হা রাওজি ভূমি সংস্কারের কাজে গভীর আগ্রহ দেখাতেন। সার্থকজীরও এই মিউজিয়ামে এসেই জানা হল যে চন্দ্রশেখরজি চার হাজার কিলোমিটারের বেশি পায়ে হেঁটে ঐতিহাসিক ভারত যাত্রা সম্পন্ন করেন। উনি যখন সংগ্রহালয়ে সেই সব জিনিস দেখেন যা অটলজী ব্যবহার করতেন, তাঁর ভাষণ শোনেন, তখন গর্বে তাঁর বুক ভরে উঠেছিল। সার্থকজী এও বলেছেন যে এই সংগ্রহালয়ে মহাত্মা গান্ধী, সর্দার প্যাটেল, ডক্টর আম্বেদকর, জয়প্রকাশ নারায়ণ আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জহরলাল নেহরু সম্পর্কেও অনেক আকর্ষণীয় তথ্য রয়েছে।

বন্ধুগণ, দেশের প্রধানমন্ত্রীর অবদানকে স্মরণ করতে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের চেয়ে ভাল সময় কি-ই বা হতে পারে। দেশের জন্য এটা গর্বের বিষয় যে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব একটি গণআন্দোলনের রূপ নিচ্ছে। ইতিহাসের প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে এবং পি.এম. সংগ্রহশালা তরুণদের আকর্ষণের উৎস হয়ে উঠেছে, যা তাদের দেশের অমূল্য ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত করছে। যাইহোক, যখন জাদুঘর সম্পর্কে এত কথাই হচ্ছে আপনাদের সঙ্গে, তখন আমার মনে হচ্ছে যে আমারও আপনাদের কিছু প্রশ্ন করা উচিত। দেখা যাক আপনাদের সাধারণ জ্ঞানের পরিধি কেমন - আপনাদের কতটুকু জ্ঞান আছে। আমার তরুণ বন্ধুরা আপনারা তৈরী তো? কাগজ কলম হাতে নিয়ে নিয়েছেন তো? এই মুহূর্তে আমি আপনাদের যা জিজ্ঞাসা করতে চলেছি, তার উত্তর আপনারা নমো অ্যাপ বা স্যোসাল মিডিয়াতে #MuseumQuiz লিখে শেয়ার করতে পারেন। অবশ্যই করবেন। আমি আপনাদের অনুরোধ করছি যে আপনারা অবশ্যই এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন। এর মাধ্যমে এই দেশের মানুষ জাদুঘরের প্রতি আরও আগ্রহী হবেন। আপনারা কি জানেন দেশের কোন শহরে একটি বিখ্যাত রেল মিউজিয়াম আছে, যেখানে বিগত ৪৫ বছর ধরে, মানুষ ভারতীয় রেলের ঐতিহ্য উপলব্ধি করার সুযোগ পাচ্ছেন? আমি আপনাদের একটি ক্লু দিচ্ছি । আপনারা এখানে ফেয়ারি কুইন থেকে শুরু করে সেলুন অফ প্রিন্স অফ ওয়েলসের এবং ফায়ারলেস স্টিম লোকোমোটিভও দেখতে পাবেন। আপনারা কি জানেন মুম্বাইয়ে এমন কোন জাদুঘর আছে যেখানে খুবই আকর্ষণীয় উপায়ে মুদ্রার বিবর্তন দেখতে পাওয়া যায়? এখানে এক দিকে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর মুদ্রা যেমন বিদ্যমান, তেমনি ই-মানিও রয়েছে। তৃতীয় প্রশ্ন 'বিরাসত -এ -খালসা' এই জাদুঘর-এর সঙ্গে সম্পর্কিত। আপনারা বলতে পারবেন, এই জাদুঘরটি পাঞ্জাবের কোন শহরে অবস্থিত? ঘুড়ি ওড়ানো আপনারা সবাই নিশ্চয়ই বেশ উপভোগ করেন, পরের প্রশ্নটি এর সঙ্গেই সংযুক্ত। দেশের একমাত্র ঘুড়ি জাদুঘর কোথায় অবস্থিত? আসুন আমি আপনাদের একটা ক্লু দিচ্ছি, যে এখানে রাখা সবচেয়ে বড় ঘুড়িটির আকার ২২ বাই ১৬ ফুট। কিছু মনে এলো? না হলে এখানে- আর একটা কথা বলবো- এই শহরের সঙ্গে বাপুর বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। শৈশবে ডাকটিকিট সংগ্রহ করার শখ অনেকেরই থাকে? কিন্তু, আপনারা কি জানেন যে ভারতে ডাকটিকিটের সঙ্গে সংযুক্ত জাতীয় জাদুঘরটি কোথায় অবস্থিত? আমি আপনাদের জন্য আরো একটি প্রশ্ন রাখছি। গুলশান মহল নামের ভবনে কোন জাদুঘর রয়েছে? আপনাদের জন্য একটা ক্লু হলো, যে এই মিউজিয়ামে গিয়ে আপনারা একজন চিত্র পরিচালকও হতে পারেন, এছাড়াও এখানে আপনারা ক্যামেরা ও সম্পাদনার খুঁটিনাটিও শিখতে পারেন। আচ্ছা, আপনারা এমন কোনো জাদুঘর সম্পর্কে জানেন যা ভারতের বস্ত্রশিল্প সম্পর্কিত এবং যা বস্ত্রশিল্পর ঐতিহ্য তুলে করে। এই মিউজিয়ামে মিনিয়েচার পেইন্টিং, জৈন পাণ্ডুলিপি, ভাস্কর্য- অনেক কিছু আছে। এটি তার অনন্য প্রদর্শন শৈলীর জন্যও পরিচিত।

বন্ধুরা, প্রযুক্তির এই সময়ে সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা খুবই সহজ। এই প্রশ্নগুলি আমি এই জন্য করলাম যাতে আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে কৌতুহল বাড়ে, তারা এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আরও পড়াশোনা করে, চাক্ষুষ করতে যায়। আজকাল তা মিউজিয়ামের মাহাত্ম্য বুঝে অনেকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এগিয়ে এসে মিউজিয়ামে অনেক দানও করেন। এরকম অনেকে আছেন যারা তাদের পুরনো সংগ্রহ, বহু ঐতিহাসিক জিনিস জাদুঘরকে দিয়ে দিচ্ছেন। আপনি যখন এরকম করেন তখন আপনি এক সাংস্কৃতিক সম্ভারকে গোটা সমাজের সাথে ভাগ করে নেন। ভারতে এখন অনেক মানুষ এর জন্য এগিয়ে আসছেন। আমি এরকম সকল নিজস্ব উদ্যোগকে সাহায্য করি। আজ এই বদলে যাওয়া সময় ও কোভিড প্রোটোকলের কারণে সংগ্রহশালাগুলিতে নিত্যনতুন পদ্ধতি অবলম্বনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। মিউজিয়ামগুলোয় ডিজিটাইজেশনের উপর গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে। আপনারা জানেন ১৮ই মে গোটা বিশ্বে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস পালিত হবে। এই প্রসঙ্গে আমার যুবক-যুবতী বন্ধুদের জন্য আমার একটা প্রস্তাব আছে। সামনে যে ছুটির দিন আসছে, তাতে বন্ধু বান্ধবদের দল বল নিয়ে কোনো স্থানীয় মিউজিয়াম দেখতে যান। আপনারা নিজেদের অভিজ্ঞতা #museummemories-এ সকলের সাথে অবশ্যই ভাগ করে নিন। এর মাধ্যমে অন্যদের মনেও সংগ্রহশালা সম্পর্কে আগ্রহ জন্মাবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনারা নিজেদের জীবনে অনেক সংকল্প নিয়ে থাকবেন এবং সেগুলি পূরণ করার জন্য অনেক পরিশ্রমও করে থাকবেন। কিন্তু বন্ধুরা, হালফিলএ আমি এক অভিনব সংকল্পর কথা জানতে পেরেছি। তাই ভাবলাম, এটা ‘মান কি বাত’ এর শ্রোতাদের সাথে নিশ্চয়ই ভাগ করি।

বন্ধুরা, আপনারা ভাবতে পারেন কেউ নিজের ঘর থেকে এই সংকল্প নিয়ে বেরচ্ছেন যে সারাদিন শহরে ঘুরবেন কিন্তু কোনো কিছু নগদ টাকা দিয়ে করবেন না! একটিও লেনদেন নগদে হবেনা। সত্যি অভিনব সংকল্প বৈকি। দিল্লির দুই মেয়ে, সাগরিকা ও প্রেক্ষা, এরকমই একটি নগদবিহীন দিন কাটালেন। সাগরিকা ও প্রেক্ষা দিল্লিতে যেখানেই যান, তারা নগদবিহীন পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন করার সুবিধা পেয়েও যান। ইউপিআই কিউআর কোড থাকায় তাদের নগদ টাকা বের করার কোন প্রয়োজনই পড়েনি। এমনকি স্ট্রীট ফুড ও রাস্তার দোকানে কেনাকাটার সময়েও বেশীরভাগ জায়গায় তারা অনলাইনে আর্থিক লেনদেনের সুবিধা পান।

বন্ধুরা, কেউ ভাববেন যেহেতু দিল্লি মেট্রো শহর, তাই এখানে এটা সহজেই সম্ভব। কিন্তু এখন এরকম নয় যে ইউপিআই এর পরিষেবা শুধু দিল্লির মত বড় শহরেই সীমাবদ্ধ। গাজিয়াবাদের আনন্দিতা ত্রিপাঠীর এক বার্তাও পেয়েছি। গত সপ্তাহে আনন্দিতা তার স্বামীর সঙ্গে উত্তরপূর্ব বেড়াতে গিয়েছিলেন। তিনি অসম থেকে মেঘালয়, এমনকি অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও আমাকে জানিয়েছেন। আপনারাও চমৎকৃত হবেন জেনে যে বেশ কয়েকদিন এই ভ্রমণ চলাকালীন তাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কখনো নগদ টাকা ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়েনি। কিছু বছর আগেও যেসব এলাকায় ভালো ইন্টারনেট এর পরিষেবা পাওয়া যেত না, সেখানেও এখন ইউপিআই এর মাধ্যমে লেনদেনের সুবিধা পাওয়া সম্ভব। সাগরিকা, প্রেক্ষা ও আনন্দিতার অভিজ্ঞতা জেনে আমিও আপনাদের অনুরোধ করব নগদবিহীন একটি লেনদেনের দিন কাটান, এ ধরণের একটি অভিজ্ঞতা ভেবে দেখুন।

বন্ধুরা, বিগত কিছু বছরে ভিম ইউপিআই আমাদের অর্থনীতি এবং অভ্যাসের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। এখন ছোট ছোট শহরে এমনকি বেশিরভাগ গ্রামেও মানুষ ইউপিআই দিয়ে লেন-দেনের কারবার করছেন। ডিজিট্যাল অর্থনীতির মাধ্যমে আমাদের দেশে এক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। অলি গলির মধ্যে ছোটখাটো দোকানেও ডিজিট্যাল অর্থনীতির দরুন অনেক বেশি সংখ্যক গ্রাহককে সহজেই পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখন ওদের খুচরো পয়সা নিয়েও সমস্যা হয় না। আপনিও হয়তো দৈনন্দিন জীবনে ইউপিআই-এর সহজলভ্য পরিষেবা উপভোগ করছেন। যেখানেই যান, নগদ টাকা নিয়ে যাওয়ার, ব্যাংকে যাওয়ার, বা এটিএম খোঁজার ঝঞ্ঝাটই শেষ। মোবাইল দিয়েই সমস্ত আর্থিক লেনদেন হয়ে যায়, কিন্তু, আপনি কি কখনো ভেবেছেন আপনার এই ছোট ছোট অনলাইন লেনদেন দিয়ে দেশের কত বড় ডিজিট্যাল অর্থনীতি তৈরি হয়েছে। এখন আমাদের দেশে প্রায় কুড়ি হাজার কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন রোজ হয়ে থাকে। গত মার্চ মাসে ইউপিআই এর মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন প্রায় দশ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছে গিয়েছিল। এইভাবে দেশে সুবিধাও বেড়েছে, সঙ্গে সততার পরিবেশও সৃষ্টি হয়েছে। এবার দেশে ফিন-টেকের সঙ্গে যুক্ত অনেক নতুন স্টার্ট আপ্সের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি চাইবো যদি আপনার কাছেও ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন ও স্টার্ট আপ্সের ব্যবস্থাপনার শক্তি সম্পর্কিত কোন অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আমাদের তা জানান। আপনার অভিজ্ঞতা অন্যদের ও দেশবাসীকে অনুপ্রেরণা দিতে পারে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, প্রযুক্তি'র শক্তি কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবন বদলে দিচ্ছে তা আমরা আমাদের চারপাশে ক্রমাগত দেখতে পাচ্ছি। প্রযুক্তি আরও একটা দুর্দান্ত কাজ করেছে, ভিন্নভাবে সক্ষম বন্ধুদের অসাধারণ ক্ষমতার পরিচয় দেশ ও দুনিয়ার সামনে তুলে ধরেছে। আমাদের দিব্যাঙ্গ ভাই-বোনেরা কি কি করতে পারেন তা আমরা টোকিও প্যারা-অলিম্পিকে দেখেছি! খেলাধুলোর মতই, আর্টস, একাডেমিকস এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে তারা অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছেন। কিন্তু যখন এই বন্ধুরা প্রযুক্তির সাহায্য পায় তখন তারা আরো বড় লক্ষ্য অর্জন করে দেখায়। এইজন্য এখন আমাদের দেশ ভিন্নভাবে সক্ষম বন্ধুদের জন্য সরঞ্জাম ও পরিকাঠামো সহজলভ্য করে তোলার ক্রমাগত চেষ্টা করছে। আমাদের দেশে এমন বহু স্টার্ট-আপ এবং সংস্থা আছে যারা এই উদ্দেশ্যে উৎসাহব্যাঞ্জক কাজ করে চলেছে। এমনই একটি সংস্থা ভয়েস অফ স্পেশালি-এবলড পিওপ্ল; এই সংস্থাটি সহায়ক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করছে। বিশেষভাবে সক্ষম শিল্পী বন্ধুদের কাজকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য-ও একটা উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ভয়েস অফ স্পেশালি-এবলড পিওপলের এই শিল্পীদের আঁকা ছবি নিয়ে একটি ডিজিটাল আর্ট গ্যালারি'ও তৈরি করা হয়েছে। দিব্যাঙ্গ বন্ধুরা কতটা অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী হয় এবং তাদের কত অসাধারণ ক্ষমতা থাকে তার উদাহরণ এই আর্ট গ্যালারি। ভিন্নভাবে সক্ষম বন্ধুদের জীবনে কত প্রতিকূলতা থাকে, সেই প্রতিকূলতা কাটিয়ে তারা কতদূর অগ্রসর হতে পারে... এমন বহু বিষয় এই ছবিগুলির মাধ্যমে অনুভব করতে পারবেন। যদি এমনি কোন দিব্যাঙ্গ বন্ধুকে চেনেন, এবং তার প্রতিভার বিষয়ে জানেন, তাহলে আপনিও ডিজিট্যাল প্রযুক্তির সাহায্যে তাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারেন। যাদের ভিন্নভাবে সক্ষম বন্ধু আছেন, তারাও যেন এই ধরনের উদ্যোগের সঙ্গে নিজেদের অবশ্যই যুক্ত করেন।

আমার প্রিয় দেশবাসী, দেশের অধিকাংশ জায়গায় গ্রীষ্মের দাবদাহ খুব দ্রুত বেড়ে চলেছে। বাড়তে চলা এই গরমে, জল বাঁচানোর প্রয়োজনটাকেও একইরকম প্রাধান্য দেয়। হতে পারে আপনি এখন যেখানে আছেন, সেখানে জল পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় । কিন্তু, আপনাকে সেই কোটি কোটি মানুষদেরও সবসময় মনে রাখতে হবে, যাঁরা জলসঙ্কট হয় সেইরকম জায়গায় থাকেন, যাঁদের কাছে জলের এক একটি বিন্দু অমৃত সমান হয়।

বন্ধুগণ, এই সময় স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে, দেশ যে সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছে, তাতে জল সংরক্ষণও আছে। অমৃত মহোৎসব চলাকালীন দেশের প্রতিটি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর বানানো হবে। আপনি কল্পনা করতে পারেন যে এই অভিযানটি কতো বড়ো আকারের হতে চলেছে। সেই দিন আর দূরে নেই, যখন আপনার জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর থাকবে। আমি, আপনাদের সবাইকে, এবং বিশেষকরে যুবাদের বলব যে তারা যেন এই অভিযানের বিষয়ে জানে এবং এর দায়িত্ব পালন করে। যদি আপনার অঞ্চলে স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত কোনো ইতিহাস থাকে, কোনো বিপ্লবীর স্মৃতি থাকে, তাহলে সেই ইতিহাসও অমৃত সরোবরের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন। যদিও আমার এটা জেনে ভালো লেগেছে যে অমৃত সরোবরের সংকল্প নেওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় এই বিষয়ে কাজ দ্রুততার সঙ্গে শুরু হয়ে গেছে। আমি উত্তর প্রদেশের রামপুরের গ্রাম পঞ্চায়েত পটবইয়ের সম্বন্ধে জানতে পেরেছি। সেখানে গ্রাম সভার মাঠে একটি পুকুর ছিল; কিন্তু সেটি, ময়লা এবং আবর্জনার স্তুপে ভর্তি ছিল। গত কয়েক সপ্তাহে অনেক পরিশ্রম করে স্থানীয় লোকদের সাহায্যে, স্থানীয় স্কুলের বাচ্চাদের সহায়তায়, ঐ নোংরা পুকুরটি পুনরুদ্ধার হয়েছে। এখন, ঐ পুকুরটিতে পার বাধানো হয়েছে, সুন্দর প্রাচীর, ফুড কোর্ট, ফোয়ারা এবং আলোকসজ্জা− এরকম আরও কত ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি রামপুরের পটবাই গ্রাম পঞ্চায়েতকে, গ্রামের লোকেদের, সেখানের বাচ্চাদের এই প্রয়াসের জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।

বন্ধুরা, জলের অভাব এবং জলের উপস্থিতি প্রতিটি দেশের প্রগতি এবং গতি প্রভাবিত করে। আপনারাও নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন, ‘মন কী বাত’ অনুষ্ঠানে আমি পরিচ্ছন্নতার মত বিষয়ের পাশাপাশি জল সংরক্ষণের বিষয়েও বারবার কথা বলেছি নিশ্চিতরূপে । আমাদের প্রাচীন গ্রন্থে তো স্পষ্ট লেখা রয়েছেঃ

পানিয়ম্ পরমম্ লোকে, জীবানাম্ জীবনম সম্রিতম্।

অর্থাৎ, জগৎ সংসারে জলই প্রত্যেক জীবের জীবনের সহায় এবং সবচেয়ে বড় সম্পদ, সেই জন্যই আমাদের পূর্বপুরুষরা জল সংরক্ষণের উপর এত জোর দিয়েছিলেন। বেদ থেকে পুরাণ পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় জল বাঁচানো, পুকুর, ঝিল, ইত্যাদি বানানো মানুষের সামাজিক ও আধ্যাত্মিক কাজের অঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বাল্মীকি রামায়ণে জলের উৎসগুলিকে যুক্ত করা, জল সংরক্ষণ করার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

ঠিক একই ভাবে, ইতিহাসের ছাত্রছাত্রীরা জানবেন, সিন্ধু- সরস্বতী ও হারাপ্পা সভ্যতার সময়ে আমাদের দেশে কী রকম অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হয়েছিল।

প্রাচীন কালে, বহু শহরে জলের উৎসগুলির মধ্যে আন্তঃ-সংযোগ ব্যবস্থাপনা তৈরি করা হয়েছিল, একে-অপরের সঙ্গে তাদের যুক্ত করা হয়েছিল। সে সময় জনসংখ্যা এত ছিল না, প্রাকৃতিক সম্পদের অপ্রতুলতা ছিল না, বরং প্রাচুর্য ছিল, তবুও জল সংরক্ষণের বিষয়ে জন সচেতনতা ছিল বিপুল মাত্রায়।

কিন্তু আজ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। আমি আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা আপনাদের এলাকার এই ধরণের সমস্ত প্রাচীন পুকুর, কুয়ো, ঝিলের ব্যাপারে জানুন। অমৃত সরোবর অভিযানের হেতু জল সংরক্ষণের পাশাপাশি আপনাদের নিজেদের এলাকার পরিচিতিও তৈরি হবে। এর ফলে শহরগুলিতে, অঞ্চলগুলিতে অবস্থিত স্থানীয় পর্যটনস্থলগুলিও বিকশিত হবে। সাধারণ মানুষের ঘোরাঘুরির জন্যও নতুন জায়গা মিলবে।

বন্ধুরা, জলের সঙ্গে জড়িত সমস্ত প্রচেষ্টাই আমাদের ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত। এতে পুরো সমাজেরই দায়িত্ব থাকে। এরজন্য বছরের-পর-বছর বিভিন্ন সমাজ নিয়মিতভাবে বিভিন্ন উপায়ে প্রচেষ্টা করে গেছে। যেমন 'কচ্ছের রান' এর এক জনজাতি 'মালধারী' জল সংরক্ষণের জন্য 'বৃদাস' নামের একটি উপায় ব্যবহার করে থাকে। এর জন্য ছোট কুয়ো বানানো হয় আর তাকে বাঁচানোর জন্য তার আশেপাশে গাছপালা লাগানো হয়ে থাকে। এই ভাবেই মধ্যপ্রদেশের ভিল জনজাতি নিজস্ব একটি ঐতিহাসিক পরম্পরা 'হলমা'-কে জল সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত করে থাকে। এই পরম্পরায় এই জনজাতির মানুষ জলের সঙ্গে যুক্ত সমস্যার সমাধানের জন্য এক জায়গায় একত্রিত হন। হলমা পরম্পরার মাধ্যমে পাওয়া পরামর্শের জন্যই এই এলাকায় জলের সংকট কম হয়েছে আর মাটির নীচের জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে।

বন্ধুরা, এ রকমই কর্তব্যের ভাব যদি সবার মনে সঞ্চারিত হয় তাহলে জল সংকটের সঙ্গে যুক্ত বড় বড় সমস্যার সমাধান হতে পারে। আসুন, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে আমরা জল সংরক্ষণ আর জীবন সংরক্ষণের সংকল্প গ্রহণ করি। আমরা বিন্দু বিন্দু জল বাঁচাবো আর তার সঙ্গে প্রত্যেকটি জীবনও।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনারা দেখেছেন যে কিছুদিন আগে আমি আমাদের তরুণ বন্ধু আর ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে পরীক্ষা-পে-চর্চা করেছিলাম। এই চর্চার সময় কিছু ছাত্রছাত্রী বলেছিলেন যে তাদের অঙ্ক পরীক্ষার প্রতি ভীতি আছে। এরকম কথা অনেক বিদ্যার্থীই নিজেদের বার্তায় আমায় পাঠিয়েছিলেন। ওই সময়ই আমি স্থির করেছিলাম যে গণিতের উপর আমি মন কি বাতে নিশ্চয়ই চর্চা করব। বন্ধুরা, গনিত তো এমন একটি বিষয় যেটা আমাদের ভারতীয়দের কাছে সবচেয়ে বেশি সহজ হওয়া উচিত। কারণ গণিত নিয়ে সমগ্র বিশ্বের মধ্যে সবথেকে বেশি অবদান ও যোগদান ভারতীয়রাই করেছেন। শূণ্য অর্থাৎ জিরোর আবিষ্কার আর তার মাহাত্ম্য সম্বন্ধে আপনারা সবাই অনেক শুনেছেন। আপনারা এটাও অনেকবার শুনেছেন যে যদি শূন্য আবিষ্কার না হতো তাহলে হয়তো আমরা এত বৈজ্ঞানিক প্রগতি দেখতে পেতাম না। ক্যালকুলাস থেকে কম্পিউটার পর্যন্ত সব বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার জিরোর উপরেই তো আধারিত। ভারতের গণিতজ্ঞ এবং পণ্ডিতেরা এটাও উল্লেখ করেছেন

''যৎ কিঞ্চিৎ বস্তু তত্ সর্বং, গণিতেন বিনা নাহি।''

অর্থাৎ এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যা কিছু রয়েছে তার সবটাই অংক দিয়ে নির্মিত। আপনারা বিজ্ঞানের পড়াশোনার কথা মনে করুন তাহলে এই কথার অর্থ আপনারা বুঝতে পারবেন। বিজ্ঞানের সকল নীতি একটা গাণিতিক সূত্রের মাধ্যমে ব্যক্ত করা হয়। নিউটনের ল, আইনস্টাইনের ফেমাস ইকুয়েশন, বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানের সকল বিষয় আসলে অঙ্ক। এখনতো বৈজ্ঞানিকরাও থিওরি অফ এভরিথিং-এর কথা ও আলোচনা করেন। অর্থাৎ এমন একটা সিঙ্গেল ফর্মুলা যেটা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল বিষয়কে একসঙ্গে যুক্তিপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করে। আমাদের মুনি-ঋষিরা অঙ্কের সাহায্যে বিজ্ঞানের বিস্তার নিয়ে এমন কল্পনা সব সময় এভাবেই ব্যক্ত করেছেন। আমরা যেমন শূন্যের আবিষ্কার করেছি তেমনি অসীম অর্থাৎ ইনফিনিটিকেও প্রকাশ করেছি। আমরা কথা বলার সময় যখন যোগ বা সংখ্যার কথা বলি, তখন মিলিয়ন, বিলিয়ন এবং ট্রিলিয়ন পর্যন্ত বলি আর ভাবি। কিন্তু বেদে আর ভারতীয় গণিতে গণনা এইসব উচ্চসীমা অতিক্রম করে। আমাদের এখানে একটা পুরনো শ্লোক প্রচলিত আছে.

''একং দশং শতং চৈব, সহস্রম, অযুতং, তথা।

লক্ষ্যং, নিযুতং, চ্, কোটিঃ, অর্বুদম এব চ।।

বৃন্দং, খর্ব, নিখর্বঃ চ, শঙ্খঃ পদমঃ চ সাগরঃ

অন্ত্যং মধ্যং পরার্ধঃ চ, দশ বৃদ্ধয়া তথা ক্রমম।।

এই শ্লোকে সংখ্যার একটা অর্ডার বলা রয়েছে।

যেমন এক, দশ, একশ, হাজার আর অযুত। লাখ নিযুত আর কোটি অর্থাৎ ক্রোড়।

এভাবেই এই সংখ্যা এগোয়। সংখ, পদম্ এবং সাগর পর্যন্ত। এক সাগর-এর মানে ১০ এর গুণিতক ৫৭ পর্যন্ত। শুধু এটাই নয়, এরপরেও ঔধ, মহোধের মত সংখ্যাও রয়েছে। এক মহোঘ অর্থাৎ ১০-এর পাওয়ার ৬২ পর্যন্ত। মানে একের পর ৬২টা শূন্য। সিক্সটিটু জিরো। আমরা এত বড় সংখ্যা মাথায় চিন্তা করলেও আমাদের সমস্যা হয়, কিন্তু ভারতীয় গণিতশাস্ত্রে এর ব্যবহার হাজার হাজার বছর ধরে হয়ে এসেছে। এই কিছুদিন আগে আমার ইন্টেল কোম্পানির সি.ই.ও-র সঙ্গে দেখা হয়েছিল। উনি আমায় একটি পেন্টিং দিয়েছিলেন যেখানে বামন অবতার এর মাধ্যমে গণনা বা পরিমাপের ভারতীয় পদ্ধতি চিত্রের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে। ইন্টেলের নাম এলেই কম্পিউটারের কথা আপনার মাথায় নিশ্চয় এসেছে। কম্পিউটারের ভাষায় বাইনারী সিস্টেমের ব্যাপারে আপনারা অবশ্যই শুনেছেন, কিন্তু আপনারা কি জানেন যে আমাদের দেশে আচার্য পিঙ্গলার মত ঋষিরা ছিলেন যিনি বাইনারি কল্পনা করেছিলেন। এভাবেই আর্যভট্ট থেকে শুরু করে রামানুজন পর্যন্ত এমন বিশিষ্ট গণিতজ্ঞরা এরকম কত বিষয়ে এখানে কাজ করেছেন।

বন্ধুগণ, আমাদের ভারতীয়দের জন্য গণিত কখনই কঠিন বিষয় ছিল না। এর একটি বড় কারণ হল আমাদের বৈদিক গণিত। আধুনিক কালে বৈদিক গণিতের কৃতিত্ব দেওয়া হয় শ্রী ভারতী কৃষ্ণ তীর্থজী মহারাজকে। উনি গণনার প্রাচীন পদ্ধতি পুনর্জীবিত করেছেন এবং তাকে বৈদিক গণিতের নাম দিয়েছেন। বৈদিক গণিতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিশেষত্ব হলো যে আপনি এর মাধ্যমে কঠিন থেকে কঠিনতর গণনা চোখের পলকে মনে মনে করে ফেলতে পারবেন। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায়, যুব সম্প্রদায়ের তৈরী বৈদিক গণিত শেখার এবং শেখানোর এমন অনেক ভিডিও আপনি নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন।

বন্ধুগণ, আজ 'মন কি বাতে' বৈদিক গণিত শেখায় এমন এক জন আমাদের সাথে যোগ দেবেন। সেই সাথী হচ্ছেন কলকাতার গৌরব টেকরীওয়াল জী। উনি বিগত দুই থেকে আড়াই দশক ধরে বৈদিক গণিতের আন্দোলনকে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আসুন, তাঁর সাথে কিছু কথা বলি।

মোদি জি- গৌরব জি নমস্কার!

গৌরব- নমস্কার স্যার।

মোদি জি- আমি শুনেছি যে আপনি বৈদিক গণিতের বিষয়ে খুব উৎসাহী । অনেক কিছু করেছেন। প্রথমে আমি আপনার বিষয়ে কিছু জানতে চাইব এবং তারপরে আপনার এই আগ্রহের বিষয়ে আমাকে জানাবেন।

গৌরব- স্যার কুড়ি বছর আগে আমি যখন বিজনেস স্কুলের জন্য আবেদন করছিলাম, তখন তার একটা প্রতিযোগিতামূলক ছিল, যার নাম হচ্ছে ক্যাট। তাতে গণিতের অনেক প্রশ্ন থাকত। যেগুলি কম সময়ের মধ্যে সমাধান করতে হত। তো আমার মা আমাকে একটা বই এনে দেয়, যার নাম ছিল বৈদিক গণিত। স্বামী শ্রী ভারতী কৃষ্ণ তীর্থ জি মহারাজ সে বইটি লিখেছিলেন। সে বইতে উনি ১৬টি সূত্র দিয়েছিলেন। যার মাধ্যমে গণিতের সমাধান খুব সহজ এবং দ্রুত করা যেত। যখন আমি বইটি পড়ি তখন আমি খুব অনুপ্রাণিত হই এবং তারপরে গণিতের প্রতি আমার আগ্রহ জন্ম নেয়। আমি বুঝতে পারি এই বিষয়, যেটি কিনা ভারতেরই উপহার, যা আমাদের ঐতিহ্য, তাকে বিশ্বের প্রতিটি কোণে কোণে পৌঁছে দিতে হবে। তখন থেকেই আমি বৈদিক গণিতকে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করি। কারণ গণিতের আতঙ্ক সবার মনেই আছে। আর বৈদিক গণিতের থেকে সরল আর কি বা হতে পারে !

মোদি জি- গৌরব জি কত বছর ধরে আপনি এই বিষয়ে কাজ করছেন?

গৌরব- আজ প্রায় কুড়ি বছর হয়ে গেল। আমি এই বিষয়ে চেষ্টা করে চলেছি।

মোদি জি- আর সচেতনতার জন্য কি করেছেন? কোন কোন উপায় ব্যবহার করছেন? কিভাবে পৌঁছাচ্ছেন মানুষের কাছে?

গৌরব - আমরা স্কুলে যাই, আমরা অনলাইন শিক্ষা দি। আমাদের সংস্থার নাম হল ভেদিক ম্যাক্স ফোরাম ইন্ডিয়া। এই সংস্থার পক্ষ থেকে আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা বৈদিক অঙ্ক করাই স্যার।

মোদি জি- গৌরব জি, আপনি তো জানেন আমি নিয়মিত বাচ্চাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে পছন্দ করি এবং তার জন্য অবসর খুঁজি। আর "এক্সাম ওয়ারিয়রস" এর মাধ্যমে আমি তো তাদের বলতে গেলে এক রকম ইনস্টিটিউশনালাইজড করে দিয়েছি! আর আমার অভিজ্ঞতা হল, অধিকাংশ ক্ষেত্রে যখন বাচ্চাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলি তখন অংকের নাম শুনলেই তারা পালিয়ে যায়! আর তাই আমার চেষ্টা এটাই, অকারণে একটা যে আতঙ্কের আবহ তৈরি হয়েছে তাকে দূর করা, এই ভয় দূর করা। আর ছোট ছোট টেকনিক যেগুলি পরম্পরায় চলে আসছে তা ভারতের গণিত শাস্ত্রের ক্ষেত্রে কোন নতুন বিষয় নয়। সম্ভবত পৃথিবীতে প্রাচীন ভারতীয় পরম্পরা যেগুলি রয়েছে, তার মধ্যে গণিতের পরম্পরাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে এক্সাম ওয়ারিয়রসদের ভয় দূর করার জন্য আপনি কী করবেন?

গৌরব- স্যার, এটা তো সবচেয়ে বেশি উপযোগী বাচ্চাদের জন্য। কারণ পরীক্ষার এই ভয় প্রত্যেক বাড়িতেই রয়েছে। পরীক্ষার জন্য বাচ্চারা টিউশন নেয়। বাবা মা-রা নাজেহাল হন। টিচাররাও জেরবার হয়ে পড়েন। বৈদিক গণিতের মাধ্যমে এসব ছুমন্তর হয়ে যায়। সাধারণ গণিত এর থেকে বৈদিক গণিত পনেরশো শতাংশ দ্রুত, আর এর মাধ্যমে বাচ্চাদের মধ্যে প্রচুর আত্মবিশ্বাস আসে এবং মস্তিষ্কও দ্রুত কাজ করে। আমরা বৈদিক গণিতের পাশাপাশি যোগও শুরু করেছি, যাতে বাচ্চারা যদি চায় তাহলে চোখ বন্ধ করেও হিসেব কষতে পারে বৈদিক গণিতের মাধ্যমে।

মোদি জি- ধ্যানের যে পরম্পরা আছে তাতেও এভাবে অংক করা বিষয়ে একটি প্রাইমারি কোর্স রয়েছে।

গৌরব- রাইট স্যার।

মোদি জি- আচ্ছা গৌরব জি। আমার খুব ভালো লাগলো। আপনি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই কাজের দায়িত্বভার নিয়েছেন আর বিশেষ করে আপনার মা এক উত্তম গুরুর উদাহরণস্বরূপ আপনাকে এই পথে নিয়ে এসেছেন। আর আজ আপনি লক্ষ লক্ষ বাচ্চাদের সেই রাস্তায় নিয়ে চলেছেন। আমার তরফ থেকে আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

গৌরব- ধন্যবাদ স্যার। আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ স্যার কারণ আপনি বৈদিক গণিতের মাহাত্ম্যকে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং আমাকে বেছে নিয়েছেন। আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।

মোদি জি- অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।

গৌরব- নমস্কার স্যার।

বন্ধুরা গৌরব জি খুব সুন্দর ভাবে বললেন বৈদিক গণিত কিভাবে গণিতের সমস্যাকে মজাদার করে তুলতে পারে। শুধু তাই নয়, বৈদিক গণিতের মাধ্যমে আপনারা বিজ্ঞানের বড় বড় সমস্যার সমাধান করতে পারেন। আমি চাইব সব বাবা মা-রা নিজেদের সন্তানদের বৈদিক গণিত অবশ্যই শেখাবেন। তাতে ওদের আস্থা তো বাড়বেই, ব্রেনের অ্যানালিটিক্যাল পাওয়ারও বাড়বে। আর হ্যাঁ, গণিত নিয়ে কিছু বাচ্চার মধ্যে যেটুকু ভয় আছে সেই ভয়টুকুও পুরোপুরি কেটে যাবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ "মন কি বাতে" মিউজিয়াম থেকে শুরু করে গণিত পর্যন্ত অনেক জ্ঞানবর্ধক বিষয় নিয়ে আলোচনা হল। এইসব বিষয় আপনাদের পরামর্শ অনুসারেই ‘মন কি বাত’ এর অংশ হয়ে ওঠে। আমাকে আপনারা ভবিষ্যতেও এভাবেই আপনাদের পরামর্শ নমো অ্যাপ এবং মাই গভ এর মাধ্যমে পাঠাতে থাকবেন।

আগামী দিনে দেশে ঈদের উৎসব আসতে চলেছে। তেসরা মে অক্ষয় তৃতীয়া এবং ভগবান পরশুরাম এর জন্মতিথি উদযাপিত হবে। কিছুদিন পরেই বৈশাখ বুদ্ধ পূর্ণিমার উৎসব আসবে। এ সকল উৎসবই সংযম, পবিত্রতা, দান এবং সৌহার্দ্যের উৎসব। আপনাদের সবাইকে এই উৎসবগুলির অগ্রিম শুভকামনা জানাই। আপনারা এই উৎসবগুলি খুব আনন্দ ও সৌহার্দ্যের সঙ্গে উদযাপন করুন। এসবের মধ্যে আপনাদের করোনা থেকেও সতর্ক থাকতে হবে। মাস্ক পরা, নিয়মিত ব্যবধানে হাত ধোয়া, সুরক্ষার জন্য যা কিছু জরুরী সব কিছু আপনারা পালন করুন। আগামী "মন কি বাত" এ আমরা আবার মিলিত হব এবং আপনাদের পাঠানো আরও কিছু নতুন বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা করব। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাদের থেকে বিদায় নিচ্ছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait

Media Coverage

When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Under Rozgar Mela, PM to distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits
December 22, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits on 23rd December at around 10:30 AM through video conferencing. He will also address the gathering on the occasion.

Rozgar Mela is a step towards fulfilment of the commitment of the Prime Minister to accord highest priority to employment generation. It will provide meaningful opportunities to the youth for their participation in nation building and self empowerment.

Rozgar Mela will be held at 45 locations across the country. The recruitments are taking place for various Ministries and Departments of the Central Government. The new recruits, selected from across the country will be joining various Ministries/Departments including Ministry of Home Affairs, Department of Posts, Department of Higher Education, Ministry of Health and Family Welfare, Department of Financial Services, among others.