আপনাদের বক্তব্য আমাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। প্রত্যেকের মতামত ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে এই কর্মসূচিটি প্রকৃত অর্থেই সফল হয়েছে। গ্লোবাল সাউথ-এর সাধারণ আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলি প্রতিফলিত হয়েছে এর মধ্যে।
কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে এখন চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। তার মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলির বিভিন্ন সমস্যার ক্ষেত্রে যে একটি সাধারণ পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হয়েছে এ সম্পর্কেও আমরা সচেতন।
আমি এখানে প্রাসঙ্গিক কয়েকটি মত ও পথ সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু বলার চেষ্টা করব, গ্লোবাল সাউথ-এর অন্তর্ভুক্ত সবক’টি দেশের পক্ষেই যা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।
দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা প্রসারের প্রশ্নে আমরা সকলেই একমত। সেই কারণে একটি সাধারণ বিশ্ব কর্মসূচি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রথাগত তথা চিরাচরিত চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর একদিকে আমরা যেমন জোর দিয়েছি, অন্যদিকে তেমনই স্বাস্থ্যরক্ষা ও পরিচর্যার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পর্যায়ে কিছু কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজেও আমরা সচেষ্ট রয়েছি। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যাঁরা পেশাদারিত্বের ভূমিকা পালন করেন তাঁদের তৎপর হয়ে ওঠার পথকেও আমরা সুগম করে তুলতে আগ্রহী। ডিজিটাল পদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ করে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে কোনও সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য দিকগুলি সম্পর্কেও আমরা পূর্ণ মাত্রায় সচেতন।
এবার আসা যাক শিক্ষা ব্যবস্থার কথায়। বৃত্তিগত প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতির আমরা আশ্রয় গ্রহণ করে থাকি, তা থেকে কিন্তু আমরা সকলেই নানাভাবে লাভবান হতে পারি। দূরশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার সম্পর্কেও আমাদের মিলিত চিন্তাভাবনা রয়েছে। বিশেষত দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে এর সুফল ও উপযোগিতা আমরা অনুভব করেছি।
অর্থ ও ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা প্রসঙ্গে একথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলির আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচেষ্টায় একদিকে যেমন গতি সঞ্চারিত হবে, অন্যদিক দিয়ে তার পরিধিরও ব্যাপক প্রসার ঘটবে। অন্তত ভারতের নিজস্ব অভিজ্ঞতা সেকথাই বলে।
সংযোগ ও যোগাযোগ পরিকাঠামো খাতে বিনিয়োগের গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা সকলেই একমত। সেইসঙ্গে, বিশ্বের যোগান শৃঙ্খলের বৈচিত্র্যকরণের প্রশ্নেও আমাদের মধ্যে দ্বিধা বা দ্বিমত নেই। এই মূল্য শৃঙ্খলের সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে যুক্ত করার পন্থাপদ্ধতিও আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
জলবায়ু পরিবর্তন খাতে প্রযুক্তি ও বিনিয়োগের প্রশ্নে উন্নত দেশগুলি যে তাদের বাধ্যবাধকতা মেনে চলার বিষয়টিকে পুরোপুরি অনুসরণ করেনি, একথা বিশ্বাস করে প্রতিটি উন্নয়নশীল দেশই।
উৎপাদন ক্ষেত্রে দূষণ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও ‘ব্যবহারের পর ফেলে দাও’ – এই নীতি থেকে এখন আমাদের সরে আসার সময় এসেছে। আমাদের এখন উচিৎ পরিবেশ-বান্ধব নিরন্তর জীবনশৈলী গঠনের দিকে আরও বেশি করে মনযোগ দেওয়া।
‘পরিবেশের জন্য জীবনশৈলী’ অর্থাৎ, ‘এলআইএফই’ – ভারতের এই উদ্যোগ গ্রহণের পেছনে রয়েছে এই মূল দার্শনিক চিন্তাভাবনাটি। অন্য কথায় বলতে গেলে, ভোগ্যবস্তুর সঠিক সদ্ব্যবহার সম্পর্কে একদিকে যেমন আমাদের যত্নশীল হতে হবে, অন্যদিকে তেমনই চক্রাকার অর্থনীতির বিষয়টির ওপরও আরও বেশি করে নজর দিতে হবে।
মাননীয় নেতৃবৃন্দ,
গ্লোবাল সাউথ-এর বৃহত্তর পরিসরে যে সমস্ত মিলিত চিন্তাভাবনার আজ আমরা শরিক হলাম, তা নিঃসন্দেহে ভারতকে বিশেষ অনুপ্রেরণা যোগাবে। কারণ, জি-২০-র সুনির্দিষ্ট কার্যসূচি গড়ে তুলতে ভারত এখন সচেষ্ট রয়েছে। শুধু তাই নয়, আপনাদের সবক’টি দেশের সঙ্গে উন্নয়নের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতেও আমরা বিশেষভাবে আগ্রহী।
‘ভয়েস অফ গ্লোবাল সাউথ’ শীর্ষ বৈঠকের সমাপ্তি পর্বে আপনাদের সানুগ্রহ উপস্থিতির জন্য আরও একবার আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।
আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। অনেক অনেক ধন্যবাদ!
— PMO India (@PMOIndia) January 13, 2023
— PMO India (@PMOIndia) January 13, 2023
We all agree on the importance of South-South Cooperation and collectively shaping the global agenda. pic.twitter.com/23cu1uqz8l
— PMO India (@PMOIndia) January 13, 2023
India’s ‘Lifestyle For Environment’ or LiFE initiative focuses on mindful consumption and circular economy. pic.twitter.com/A1YG9oL8Ll
— PMO India (@PMOIndia) January 13, 2023