প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে আজ কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে কোভিড টিকাকরণের প্রস্তুতি নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে ক্যাবিনেট সচিব, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব, স্বাস্থ্য সচিব সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকরা যোগ দিয়েছেন।
কোভিড-১৯ এর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি বিস্তারিত ও সর্বাঙ্গীন পর্যালোচনা করেছেন। কোভিশিল্ড ও কো-ভ্যাকসিন – এই দুটি টিকা নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রমাণ দেওয়ার পর জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা আপৎকালীন ভিত্তিতে এই টিকা দুটি ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছে।
বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে টিকাকরণের প্রস্তুতি নিয়ে কেন্দ্র কতটা তৎপর বৈঠকে সেটি প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ অর্থাৎ জনভাগিদারী, নির্বাচনের সময় বুথ সামলানোর কৌশলের মতো অভিজ্ঞতা, সর্বজনীন টিকাকরণ কর্মসূচী, বর্তমান স্বাস্থ্য পরিষেবা অক্ষুণ্ণ রাখা, বৈজ্ঞানিক ও প্রথাগত বিভিন্ন নিয়মের সঙ্গে আপোষ না করা, সব রকমের সাধারণ পরিচালন পদ্ধতি মেনে এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে যথাযথভাবে টিকাকরণের বিষয়টি পুরো প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব পাবে।
কোভিড-১৯ টিকা প্রথমে স্বাস্থ্য কর্মী ও সামনের সারিতে থাকা কর্মীদের দেওয়া হবে। এঁদের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। পরবর্তী পর্যায়ে প্রায় ২৭ কোটি নাগরিক যাঁদের বয়স ৫০ এর বেশি এবং ৫০-এর কম যেসমস্ত ব্যক্তি বিভিন্ন জটিল অসুখে ভুগছেন তাঁদের দেওয়া হবে।
কো-উইন টিকা সরবরাহ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এই অনন্য ডিজিটাল মঞ্চটি টিকা মজুত রাখা, কত তাপমাত্রায় টিকাকে মজুত রাখা হচ্ছে এবং কারা কারা টিকা পাচ্ছেন সেই সমস্ত তথ্য সঞ্চিত রাখবে। এর মাধ্যমে সর্বস্তরের টিকাকরণের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা সাহায্য পাবেন। এই ব্যবস্থায় যাঁরা টিকা নেবেন তাঁদের নাম নথিভুক্তকরণ, পরিচয় যাচাই করা এবং টিকাকরণের পর একটি ডিজিটাল শংসাপত্র দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ৭৯ লক্ষ সুবিধাভোগী তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন।
যাঁরা টিকা দেবেন তাঁরা যেহেতু এই টিকাকরণের প্রক্রিয়ায় সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ তাই তাঁদের প্রশিক্ষণের পদ্ধতির বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। টিকাকরণ আধিকারিক, শীতল সরবরাহ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষকদের জাতীয় স্তরে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ২,৩৬০ জন প্রশিক্ষিত হয়েছেন। এপর্যন্ত রাজ্য, জেলা ও ব্লক স্তরে ৬১ হাজার টিকাকরণ কর্মসূচীর ম্যানেজার, ২ লক্ষ কর্মী এবং এই কাজের সহায়তা করবেন এরকম আরও ৩ লক্ষ ৭০ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে বৈঠকে দেশজুড়ে যে তিনটি পর্যায়ে টিকাকরণের মহড়া দেওয়া হয়েছে সেই বিষয়েও জানানো হয়েছে। ৩৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ৬১৫টি জেলায় ৪,৮৯৫টি কেন্দ্রে গতকাল তৃতীয় পর্যায়ের টিকাকরণের মহড়া শেষ হয়েছে।
বিস্তারিত আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে লোহরি, মকর সংক্রান্তি, পোঙ্গল, মাঘ বিহু ইত্যাদি আসন্ন উৎসবের পর ১৬ই জানুয়ারি থেকে কোভিড-১৯ এর টিকাকরণ শুরু হবে।