প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আন্তর্জাতিক অভিধম্ম দিবস এবং ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে পালি-র স্বীকৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন। অভিধম্ম দিবসের অর্থ, অভিধম্ম শিক্ষা দেওয়ার পরে ঐশ্বরিক সাম্রাজ্য থেকে ভগবান বুদ্ধের অবতরণ। সম্প্রতি পালি ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এ বছর অভিধম্ম দিবস উদযাপনের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ, অভিধম্ম সংক্রান্ত ভগবান বুদ্ধের বাণী মূলত পালি ভাষায় পাওয়া যায়।
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী অভিধম্ম দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন যে এই অনুষ্ঠান মানুষকে মনে করিয়ে দেয় যে পৃথিবীকে ভালোবাসা এবং সহমর্মিতার স্থান হিসেবে গড়ে তোলার কথা। গত বছর কুশীনগরে এই একই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন শ্রী মোদী এবং বলেন, ভগবান বুদ্ধের সঙ্গে সংযোগ যাত্রা শুরু হয়েছিল তার জন্ম থেকে এবং তা আজও চলছে। প্রধানমন্ত্রী জানান যে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন গুজরাটের ভাদনগরে, যা এক সময়ে বৌদ্ধতন্ত্রের একটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র ছিল এবং যা অনুপ্রেরণায় পর্যবসিত হয়েছিল যা ভগবান বুদ্ধের ধম্ম এবং বাণী সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা গড়ে তোলে। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, গত ১০ বছরে দেশে-বিদেশে ভগবান বুদ্ধ সংক্রান্ত নানা পবিত্র অনুষ্ঠানে তাঁর যোগ দেওয়ায় সুযোগ হয়েছে। তিনি নেপালের ভগবান বুদ্ধের জন্মস্থান সফরের উদাহরণ দেন। মঙ্গোলিয়ায় ভগবান বুদ্ধের মূর্তির আবরণ উন্মোচন এবং শ্রীলঙ্কায় বৈশাখ সমারোহ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর বিশ্বাস সঙ্ঘ এবং সাধকের মিলন ভগবান বুদ্ধের আশীর্বাদের ফল। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে তিনি সকলকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি পবিত্র শারদ পূর্ণিমা এবং মহর্ষি বাল্মীকির জন্মবার্ষিকীর উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী সকল দেশবাসীকে তাঁর শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ বছরের অভিধম্ম দিবস বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ভগবান বুদ্ধ যে ভাষায় তাঁর বাণী দিয়েছিলেন, সেই পালি ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে এবং এই মাসে সেটিকে ধ্রপদী ভাষা হিসেবে মর্যাদা দিয়েছে ভারত সরকার। তিনি বলেন, সেইজন্য আজকের এই অনুষ্ঠান আরও তাৎপর্যপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পালি ভাষাকে ধ্রপদী ভাষার মর্যাদাদান ভগবান বুদ্ধের মহান পরম্পরা এবং ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। শ্রী মোদী আরও বলেন যে, ধম্ম অভিধম্ম-এর অন্তর্ভুক্ত এবং ধম্ম-এর প্রকৃত নির্যাস বুঝতে গেলে পালি ভাষায় জ্ঞান থাকা জরুরি। ধম্ম-এর বিভিন্ন অর্থ ব্যাখ্যা করে শ্রী মোদী বলেন, ধম্ম-এর অর্থ ভগবান বুদ্ধের বাণী এবং আদর্শ, মানবের অস্তিত্ব সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর, বুদ্ধের চিরায়ত শিক্ষা এবং সমগ্র মানব সমাজের কল্যাণের জন্য একটি দৃঢ় প্রত্যয়। তিনি আরও বলেন সমগ্র বিশ্ব প্রতিনিয়ত বুদ্ধের ধম্ম দ্বারা আলোকিত হয়ে চলেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভগবান বুদ্ধ যে ভাষায় কথা বলতেন, দুর্ভাগ্যবশত সেই পালি ভাষা সাধারণ্যে আর ব্যবহৃত হয় না। ভাষা শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের আত্মাস্বরূপ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি মৌলিক ভাবপ্রকাশের সঙ্গে যুক্ত এবং পালি ভাষাকে আজকের দিনে সজীব রাখা সকলের দায়িত্ব। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান সরকার অতি বিনয়ের সঙ্গে তাঁর দায়িত্ব পূরণ করেছে এবং কোটি কোটি বুদ্ধ ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেছে।
যে কোনো ঐতিহাসিক নিদর্শন অথবা প্রত্নসামগ্রী যা কোনো দেশ আবিষ্কার করেছে, তা গর্বের সঙ্গে সমগ্র বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। একথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে কোন সমাজের ভাষা সাহিত্য, শিল্প এবং আধ্যাত্মিকতার ঐতিহ্য তার অস্তিত্বকে ব্যাখ্যা করে।” তিনি বলেন, যে যদিও প্রত্যেকটি দেশ তাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিতিকে সংযুক্ত করে, ভারত এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছিল, কারণ স্বাধীনতার আগে বার বার ভারতে বিদেশী অভিযান হয়েছে এবং স্বাধীনতার পরেও দাসত্ব মনোবৃত্তি রয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, ভারতে এমন একটি পরিমণ্ডল তৈরি হয়েছিল, যা দেশকে বিপরীত দিকে ঠেলে দেয়। তিনি বলেন যে বুদ্ধ, যিনি ভারতের আত্মার মধ্যে আছেন এবং তাঁর প্রতীক যা স্বাধীনতার সময়ে গ্রহণ করা হয়েছিল তা পরবর্তী কয়েক যুগে ভুলে যাওয়া হয়েছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে, স্বাধীনতার ৭ দশক পরেও পালি তাঁর প্রকৃত মর্যাদা পায়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ এখন সেই হীনম্মন্যতা কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে এবং বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তিনি বলেন যে, একদিকে পালি ভাষা ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পেয়েছে অন্যদিকে সেই একই মর্যাদা দেওয়া হয়েছে মারাঠী ভাষাকে। তিনি বলেন, যে বাবাসাহেব আম্বেদকর, যাঁর মাতৃভাষা ছিল মারাঠী, তিনিও বৌদ্ধতন্ত্রের মহান সমর্থক ছিলেন। তিনি পালিতে ধম্ম দীক্ষা নিয়েছিলেন। শ্রী মোদী এই সঙ্গেই বাংলা, অসমিয়া এবং প্রাকৃত ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ার কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের বিভিন্ন ভাষা আমাদের বৈচিত্র্যকে লালন করে।” অতীতের ভাষার কথা তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন, যে আমাদের প্রত্যেকটি ভাষা দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। তিনি আরও বলেন যে ভারত নতুন যে জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণ করেছে, তা বর্তমানে এই ভাষাগুলিকে সংরক্ষণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। শ্রী মোদী বলেন, দেশের যুব সমাজ যখন থেকে নিজেদের মাতৃভাষায় লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছে তখন থেকে মাতৃভাষা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার লালকেল্লা থেকে ‘পাঁচ প্রাণ’-এর আদর্শকে তুলে ধরেছে সংকল্প পূরণ করার জন্য। পাঁচ প্রাণের ব্যাখ্যা করে শ্রী মোদী বলেন, এর অর্থ উন্নত ভারত গঠন, দাসত্ব মনোভাব থেকে মুক্তি, দেশের ঐক্য, কর্তব্য পালন এবং ঐতিহ্যের প্রতি গর্ব। তিনি আরও বলেন যে, বর্তমানে ভারত একইসঙ্গে দ্রুত উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের সংকল্পকে পূরণ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাঁচ প্রাণ অভিযানে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে ভগবান বুদ্ধ সংক্রান্ত ঐতিহ্য সংরক্ষণের ওপর।
ভারত এবং নেপালে ভগবান বুদ্ধ সম্পর্কিত স্থানগুলির উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে বুদ্ধ সার্কিট হিসেবে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, কুশীনগরে একটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর চালু হয়েছে, লুম্বিনীতে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর বুদ্ধিস্ট কালচার অ্যান্ড হেরিটেজ তৈরি করা হয়েছে, লুম্বিনীতে বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৌদ্ধ ধর্ম সংক্রান্ত পড়াশোনার জন্য ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর চেয়ার স্থাপন করার পাশাপাশি বোধগয়া, শ্রাবস্তী, কপিলাবস্তু, সাঁচি, সাতনা এবং রেওয়া-র মতো অনেক জায়গায় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। শ্রী মোদী এও জানান যে, আগামী ২০ অক্টোবর ২০২৪-এ বারাণসীর সারনাথ-এ তিনি অনেকগুলি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করবেন। তিনি আরও বলেন, নতুন নির্মাণের পাশাপাশি সরকার ভারতের সমৃদ্ধ অতীত সংরক্ষণেও প্রয়াস নিয়েছে। শ্রী জোর দিয়ে বলেন যে, সরকার গত এক দশকে ৬০০-র বেশি প্রাচীন ঐতিহ্য, শিল্প সামগ্রী দেশে ফিরিয়ে এনেছে যার অনেকগুলিই বুদ্ধ সংক্রান্ত। তিনি আরও বলেন, বুদ্ধ-র ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণে ভারত তার সংস্কৃতি এবং সভ্যতাকে নতুন পথে পরিচালনা করছে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভগবান বুদ্ধের শিক্ষাকে ছড়িয়ে দেওয়া শুধু দেশের স্বার্থেই নয়, সমগ্র মানবতার স্বার্থে। তিনি বলেন, যে সমস্ত দেশ বুদ্ধ-র বাণী অনুসরণ করে, তাদের একত্র করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে এবং মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলি পালি ভাষার ধারাভাষ্য সংকলন করছে। শ্রী মোদী বলেন, পালি ভাষার প্রসারে সরকার ভারতে এই একই প্রয়াস চালাচ্ছে যেখানে ব্যবহৃত হচ্ছে চিরায়ত পদ্ধতির পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ডিজিটাল আর্কাইভ এবং অ্যাপস-এর মতো আধুনিক উপায়। ভগবান বুদ্ধকে জানতে, বুঝতে গবেষণার গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে শ্রী মোদী বলেন, “বুদ্ধ জ্ঞান এবং অনুসন্ধান দুইই” অর্থাৎ, বুদ্ধের শিক্ষাকে জানতে গেলে নিজের অন্তরাত্মাকে যেমন বুঝতে হবে তেমনই প্রয়োজন শিক্ষাগত গবেষণা। তিনি গর্ব প্রকাশ করে বলেন, এই লক্ষ্যে যুব সমাজকে নেতৃত্বদান করছে বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলি এবং সন্ন্যাসীরা।
একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতাকে ছুঁয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বুদ্ধের শিক্ষা বর্তমান বিশ্বে শুধু প্রাসঙ্গিকই নয়, বরং প্রয়োজনীয়। রাষ্ট্রসংঘ থেকে তাঁর বার্তার পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারত বিশ্বযুদ্ধ দেয়নি, দিয়েছে বুদ্ধকে”। তিনি বলেন, বিশ্ব যুদ্ধে নয়, ভগবান বুদ্ধে খুঁজে পাবে সমাধান। তিনি সমগ্র বিশ্বকে বুদ্ধের থেকে শিক্ষা নিয়ে যুদ্ধ পরিহার করে শান্তির পথ খোঁজার আহ্বান জানান। ভগবান বুদ্ধের বাণী উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তির থেকে বড় সন্তুষ্টি আর নেই; বিরোধের দ্বারা বিরোধের নিষ্পত্তি হয় না এবং একমাত্র সহমর্মিতা এবং মানবিকতাই পারে বিদ্বেষ দূর করতে। তিনি আরও একবার সকলের আনন্দ এবং ভালোর জন্য ভগবান বুদ্ধের বাণীর উল্লেখ করেন।
২০৪৭ পর্যন্ত আগামী ২৫ বছরকে অমৃতকাল হিসেবে ভারত চিহ্নিত করেছে। তার উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন যে, অমৃতকালের এই সময়টি হবে ভারতের অগ্রগতি, উন্নত ভারত গঠনের সময় যেখানে ভগবান বুদ্ধের বাণী পথ দেখাবে; যে পথে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হতে চায় ভারত। তিনি আরও বলেন যে, ভগবান বুদ্ধের ভূমিতেই একমাত্র এটি সম্ভব যে ভূমিতে বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যা তার সম্পদ ব্যবহারে সচেতন। সমগ্র বিশ্ব যে জলবায়ু পরিবর্তন সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত শুধুমাত্র তার নিজের জন্যই সমাধান খুঁজছে না, খুঁজছে সমগ্র বিশ্বের জন্য। এই সূত্রেই তিনি জানান, বিশ্বের অনেক দেশকে সঙ্গে নিয়ে ভারত এলআইএফই কর্মসূচি শুরু করেছে।
ভগবান বুদ্ধের একটি বাণী আবৃত্তি করে শ্রী মোদী বলেন, এলআইএফই কর্মসূচির ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে যে কোনো ধরনের ভালো যা শুরু করতে হবে আমাদের নিজেদেরকেই। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘস্থায়ী ভবিষ্যতের পথ বেরিয়ে আসবে প্রত্যেক মানুষের দীর্ঘস্থায়ী জীবন-যাপনের মধ্যে দিয়ে। ভারেত জি২০ সভাপতিত্বকালে আন্তর্জাতিক সৌরজোট, আন্তর্জাতিক জৈব জ্বালানি জোট গঠন, এক সূর্য, এক বিশ্ব, এক গ্রিড-এর মতো বিশ্বকে ভারতের অবদানের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই সবগুলিই ভগবান বুদ্ধের ভাবনার প্রতিফলন। তিনি বলেন যে, ভারতের প্রতিটি প্রয়াস বিশ্বের দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উদ্যোগের কথা যেমন- ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডর, ভারতের গ্রিন হাইড্রোজেন, উদ্যোগ, ২০৩০-এর মধ্যে ভারতীয় রেলকে নিট শূন্য করা, পেট্রোলে ২০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণ বৃদ্ধি করা ইত্যাদির উল্লেখ করে বলেন, এই সবগুলিই পৃথিবীকে রক্ষা করতে ভারতের জোরালো উদ্দেশ্যকে প্রদর্শন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সরকারের অনেক সিদ্ধান্তই অনুপ্রাণিত হয়েছে বুদ্ধ, ধম্ম এবং সংঘের দ্বারা। এই সূত্রেই প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব সংকটে বার বার প্রথম ভারতের এগিয়ে আসার কথা উল্লেখ করেন। তুরস্কে ভূমিকম্প, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট এবং কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ে এ দেশের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন যে এতেই প্রতিফলিত হয় বুদ্ধের সহমর্মিতার নীতি। তিনি বলেন, “বিশ্ববন্ধু হিসেবে ভারত সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলছে”। তিনি বলেন যে, যোগা, মিলেট, আয়ুর্বেদ এবং প্রাকৃতিক চাষের মতো উদ্যোগগুলি অনুপ্রাণিত হয়েছে ভগবান বুদ্ধের শিক্ষাতে।
ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারত, যখন উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তখন সে নিজের শিকড়কেও শক্ত রাখছে।” তিনি বলেন যে, ভারতের যুবাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে বিশ্বকে নেতৃত্বদান, তার পাশাপাশি নিজেদের সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ নিয়েও গর্বিত হতে হবে। তিনি বলেন, এই প্রয়াসে বৌদ্ধতন্ত্রের শিক্ষা আমাদের মহান পথনির্দেশক। তাঁর বিশ্বাস, ভারত ভগবান বুদ্ধের বাণী অবলম্বন করে প্রতিনিয়ত অগ্রগতি ঘটাবে।
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত এবং সংসদ বিষয়ক ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজু-ও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।