আমার প্রিয় পরিবারবর্গ, নমস্কার। ‘মন কি বাত’ এর আরও এক পর্বে দেশের সাফল্য, দেশবাসীর সফলতা, তাঁদের প্রেরণাদায়ক জীবনযাত্রা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি আমি। ইদানীং সবথেকে বেশি চিঠি, বার্তা যা আমি পেয়েছি, তা দুটো বিষয়ের ক্ষেত্রে সর্বাধিক। প্রথম বিষয় হল চন্দ্রযান ৩-এর সফল অবতরণ আর দ্বিতীয় বিষয় হল দিল্লীতে জি-টোয়েন্টির সফল আয়োজন। দেশের প্রতিটি অংশ থেকে, সমাজের প্রত্যেকটি শ্রেণী থেকে, আমি সব বয়সের মানুষের কাছ থেকে অগণিত চিঠি পেয়েছি। যখন চন্দ্রযান ৩-এর ল্যাণ্ডার চাঁদে নামতে যাচ্ছে, তখন কোটি-কোটি মানুষ নানা মাধ্যমে এই ঘটনার প্রতিটি মুহূর্তের সাক্ষী হচ্ছিলেন। ইসরোর ইউটিউব লাইভ চ্যানেলে আশি লক্ষেরও বেশি মানুষ এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন – এটা এমনিতেই একটা রেকর্ড। এর থেকে বোঝা যায় যে চন্দ্রযান ৩-এর সঙ্গে কোটি-কোটি ভারতবাসীর কত গভীর বন্ধন রয়েছে। চন্দ্রযানের এই সাফল্য নিয়ে বর্তমানে দেশে এক চমৎকার ক্যুইজ প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে – প্রশ্নমালা আর তার নাম দেওয়া হয়েছে – ‘চন্দ্রযান-৩ মহাক্যুইজ’। মাইগভ পোর্টালে চলা এই প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত পনেরো লক্ষেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছে। মাইগভ শুরু হওয়ার পর থেকে যে কোনও ক্যুইজে এটা সবথেকে বেশি অংশগ্রহণ। আমি তো আপনাদেরও বলব যে আপনারা যদি এখনও এতে অংশ না নিয়ে থাকেন তবে দেরি করবেন না, এখনও এটাতে আরও ছ’দিন সময় আছে। এই ক্যুইজে অবশ্যই অংশ নিন।
আমার প্রিয় পরিবারবর্গ, চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যের পরে জি-টোয়েন্টির জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন প্রতিটি ভারতবাসীর আনন্দকে দ্বিগুণ করে দিয়েছে। ভারত মণ্ডপম তো নিজেই বিখ্যাত মত হয়ে গিয়েছে। মানুষজন এর সঙ্গে সেলফি তুলছেন আর গর্ব করে পোস্টও করছেন। ভারত এই শীর্ষ সম্মেলনে আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি২০-র পূর্ণ সদস্য বানিয়ে নিজের নেতৃত্বকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। আপনাদের মনে থাকবে, ভারত যখন অনেকটাই সমৃদ্ধশালী ছিল, সেই সময়, আমাদের দেশে, এবং সারা বিশ্বে, সিল্ক রুট নিয়ে অনেক আলোচনা হতো। এই সিল্ক রুট ব্যবসা বাণিজ্যের অনেক বড় মাধ্যম ছিল। এখন আধুনিক যুগে ভারত আরেকটি অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি করার ব্যাপারটি জি-20 তে উত্থাপন করেছে। এটি হলো ভারত- মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর। এই করিডোর আগামী শত শত বছর ধরে বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, এবং ইতিহাস এই কথা চিরকাল মনে রাখবে যে এই করিডোরের সূত্রপাত ভারতের মাটিতে হয়েছিল।
বন্ধুরা, জি-20-এর সময় ভারতের তরুণরা যেভাবে এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল, তা নিয়ে আজ একটি বিশেষ আলোচনা আব্যশ্যক। সারা বছর ধরে দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে জি-20 সংক্রান্ত অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এখন এই সিরিজে, দিল্লিতে আরেকটি আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান হতে চলেছে - 'জি-20 ইউনিভারসিটি কানেক্ট প্রোগ্রাম’। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশের লক্ষ লক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হবে। আইআইটি, আইআইএম, এনআইটি এবং মেডিকেল কলেজের মতো অনেক মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানও এতে অংশ নেবে। আমি চাই, আপনি যদি একজন কলেজ ছাত্র হন, তাহলে আপনি অবশ্যই ২৬শে সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলা এই অনুষ্ঠানটি দেখবেন এবং এতে যোগদান করবেন। ভারতের ভবিষ্যৎ নিয়ে, যুব সমাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান হতে চলেছে। আমি নিজেও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করব। আমিও আমার কলেজ ছাত্রদের সংবাদের অপেক্ষায় রয়েছি।
আমার পরিবারবর্গ, আজ থেকে দুদিন পর ২৭সে সেপ্টেম্বর 'বিশ্ব পর্যটন দিবস'। কেউ কেউ পর্যটনকে শুধুমাত্র ঘুরে বেড়ানো হিসেবে দেখেন, কিন্তু পর্যটনের একটি খুব বড় দিক 'কর্মসংস্থান'-এর সঙ্গে সম্পর্কিত। বলা হয়ে থাকে পর্যটন হলো সেই ক্ষেত্র যা কিনা সবচেয়ে কম বিনিয়োগে, সর্বোচ্চ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। পর্যটন শিল্পের অগ্রগতির জন্য যেকোনো দেশের ব্যবসায়ে সুনাম ও সেই দেশের প্রতি আকর্ষণ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গত কয়েক বছরে ভারতের প্রতি আকর্ষণ অনেক বেড়েছে এবং জি-20-এর সফল আয়োজনের পর ভারতের প্রতি বিশ্বের মানুষের আগ্রহ আরও বেড়েছে।
বন্ধুরা, জি-২০ উপলক্ষে এক লাখের বেশী প্রতিনিধি ভারতে আসেন। তাঁরা আমাদের দেশের বৈচিত্র, আমাদের বিভিন্ন পরম্পরা, আমাদের নানান ধরনের খাদ্যাভ্যাস, তথা আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হন। আগত প্রতিনিধিরা তাঁদের সঙ্গে যে অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা নিয়ে গেছেন তাতে পর্যটনের আরও বিস্তার হবে। আপনারা জানেন ভারতে একাধিক অভিনব বিশ্ব ঐতিহ্যশালী স্থান আছে এবং শুধু তাই নয়, এর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিছুদিন আগেই শান্তিনিকেতন এবং কর্নাটকের পবিত্র হোয়শালা মন্দিরকে বিশ্বের ঐতিহ্যশালী স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই অসাধারণ স্বীকৃতির জন্য আমি সমস্ত ভারতবাসীকে অভিনন্দন জানাই। ২০১৮ তে আমার শান্তিনিকেতন যাবার সৌভাগ্য হয়েছিল। শান্তিনিকেতন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ও সম্পৃক্ত। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন সংস্কৃতের এক প্রাচীন শ্লোক থেকেঃ-
‘যত্র বিশ্বম, ভবত্যেক নীড়ম’
অর্থাৎ যেখানে একটি নীড়ে সমস্ত সংসার সমাহিত হতে পারে। কর্নাটকের যে হোয়শালা মন্দিরগুলি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে সেগুলি তেরশো শতাব্দীর অসাধারন স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত। এই মন্দিরগুলির ইউনেস্কোর স্বীকৃতিলাভ, মন্দির নির্মাণে ভারতীয় পদ্ধতিকে সম্মানিত করেছে। আমাদের দেশে এখন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটসের মোট সংখ্যা ৪২। ভারতের এখন এটাও লক্ষ্য, যাতে আরো আরো বেশী ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক জায়গা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটসের তকমা পায়। আমার আপনাদের কাছে অনুরোধ যখনই আপনারা কোথাও বেড়াতে যাবেন, ভারতের এই বৈচিত্র্যময় জায়গা অবশ্যই দর্শন করুন। আপনারা আলাদা আলাদা রাজ্যের সংস্কৃতিকে জানুন, এদের ঐতিহ্যশালী স্থানগুলিকে দেখুন। এইভাবে আপনারা আপনাদের দেশের গৌরবময় ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হবেন এবং স্থানীয় মানুষদের আয় বাড়ানোর অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠবেন।
আমার পরিবারবর্গ, ভারতীয় সংস্কৃতি ও সংগীত এখন আন্তর্জাতিক পরিচিতি লাভ করেছে। এই বিষয়ে দুনিয়াজুড়ে মানুষের আকর্ষণ বেড়েই চলেছে। এক মিষ্টি মেয়ে এমনই এক পরিবেশনা করেছে। তার কিছু অংশ আপনাদের শোনাই.....
(বাণীবদ্ধ করা একটি অংশ)
এটা শোনার পর আপনিও অবাক হয়ে গেলেন, তাই না? কন্ঠস্বরটি কত মধুর এবং প্রতিটি শব্দে যে অনুভূতি প্রতিফলিত হয়, তাতে আমরা ঈশ্বরের প্রতি তাঁর ভক্তি অনুভব করতে পারি। যদি আমি আপনাকে বলি যে এই সুরেলা কন্ঠটি জার্মানির একটি মেয়ের, তাহলে হয়তো আরো বেশি অবাক হবেন। এই মেয়েটির নাম ক্যায়সমি। ২১ বছর বয়সী ক্যায়সমি আজকাল ইন্সটাগ্রামে খুব জনপ্রিয় হয়েছেন। জার্মানি নিবাসী ক্যায়সমি কোনদিন ভারতে আসেননি কিন্ত তিনি ভারতীয় সঙ্গীতের অনুরাগী। যিনি কখনও ভারতকে দেখেননি তাঁর ভারতীয় সঙ্গীতের প্রতি এমন অনুরাগ সত্যিই খুব অনুপ্রেরণামূলক। ক্যায়সমি জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন, কিন্ত এই কঠিন প্রতিবন্ধকতা তাঁর অসাধারণ কৃতিত্বকে আটকাতে পারেনি। সঙ্গীত ও সৃজনশীলতার প্রতি তাঁর এতটাই গভীর অনুরাগ ছিল যে ছোট্টবেলাতেই তিনি গান গাইতে আরম্ভ করেন। তিনি মাত্র ৩ বছর বয়সে আফ্রিকান ড্রাম বাজাতে শুরু করেন। ভারতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় মাত্র ৫-৬ বছর আগে। তিনি ভারতীয় সঙ্গীতে এতটা মুগ্ধ হয়েছিলেন, এতটাই আকৃষ্ট হয়েছিলেন যে তিনি সম্পূর্ণরূপে তা আত্মস্থ করে ফেলেন। তিনি তবলা বাজাতেও শিখেছেন। সবচেয়ে অনুপ্রেরণামূলক বিষয় হল এই যে তিনি অনেক ভারতীয় ভাষায় গান গাওয়ার দক্ষতা অর্জন করেছেন। সংস্কৃত, হিন্দি, মালয়ালম, তামিল, কন্নড় বা অসমীয়া, বাংলা, মারাঠি বা উর্দুই হোক না কেন, এই সব ভাষায় তিনি গান গেয়েছেন। আপনি কল্পনা করতে পারেন যে কাউকে যদি অন্য অজানা ভাষায় দুই-তিন লাইন বলতে হয় তবে কতটা কঠিন হয়, কিন্তু ক্যায়সমির জন্য এটি বাঁ হাতের খেলার মতো। আপনাদের সবার জন্য আমি এখানে তাঁর গাওয়া একটি কন্নড় গান শোনাচ্ছি। (দ্বিতীয় বাণীবদ্ধ অংশ)
ভারতীয় সংস্কৃতি এবং সঙ্গীতের প্রতি জার্মানির ক্যায়সমির এই আবেগকে আমি অন্তর থেকে প্রশংসা করি৷ আশা করি তাঁর এই প্রচেষ্টা প্রতিটি ভারতীয়কে অভিভূত করবে৷
আমার পরিবারবর্গ, আমাদের দেশে শিক্ষাকে সবসময় সেবা রূপে দেখা হয়ে থাকে। আমি উত্তরাখণ্ডের এমন কিছু যুবক-যুবতীর সম্বন্ধে জানতে পেরেছি যাঁরা এইরকম ভাবনার সঙ্গে বাচ্চাদের শিক্ষার জন্য কাজ করছেন। নৈনিতাল জেলার কিছু যুবক যুবতী বাচ্চাদের জন্য এক অনন্য ঘোড়া লাইব্রেরির সূচনা করেছেন। এই লাইব্রেরীর সব থেকে বড় বিশেষত্ব হচ্ছে যে দুর্গম থেকে দুর্গমতর এলাকায় এর মাধ্যমে বাচ্চাদের কাছে বই পৌঁছচ্ছে, আর তার থেকেও বড় কথা, এই পরিষেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এখনো পর্যন্ত এর আওতায় নৈনিতালের বারোটি গ্রামকে অন্তর্ভুক্ত করা গেছে। বাচ্চাদের শিক্ষার সঙ্গে জড়িত এই পবিত্র কাজটিতে সাহায্য করার জন্য স্থানীয় মানুষেরাও এগিয়ে আসছেন। এই ঘোড়া লাইব্রেরীর মাধ্যমে চেষ্টা করা হচ্ছে দূর-দূরান্তের গ্রামের বাচ্চাদের, স্কুলের বই ছাড়াও কবিতা, গল্প এবং নৈতিক শিক্ষার বইও পড়ার সম্পূর্ণ সুযোগ করে দেওয়া। এই অনন্য লাইব্রেরীটি বাচ্চাদেরও অনেক পছন্দ হয়েছে।
বন্ধুরা, আমি হায়দ্রাবাদের একটি লাইব্রেরীর সঙ্গে জড়িত এক অনন্য উদ্যোগের সম্বন্ধেও জানতে পেরেছি। এখানে সপ্তম শ্রেণীতে পাঠরত কন্যা, আকর্ষণা সতীশ এক অদ্ভুত কাজ করে দেখিয়েছেন। আপনারা এটা জেনে খুব আশ্চর্য হবেন যে মাত্র ১১ বছর বয়সে সে বাচ্চাদের জন্য একটি - দুটি নয়, বরঞ্চ সাত সাতটি লাইব্রেরী পরিচালনা করছে। দু বছর আগে আকর্ষণা এই অনুপ্রেরণা তখন পায় যখন সে তার মা-বাবার সঙ্গে একটি ক্যান্সার হাসপাতালে গিয়েছিল। ওর বাবা অভাবগ্রস্থ মানুষদের সাহায্য করার সেখানে গিয়েছিলেন। বাচ্চারা সেখানে তাঁর কাছে কালারিং বুকস চেয়েছিল আর এই কথাটা এই মিষ্টি মেয়েটির মন এতটাই ছুঁয়ে গেছিল, যে সে আলাদা আলাদা ধরনের বই জোগাড় করার জেদ ধরে নেয়। সে নিজের প্রতিবেশী, আত্মীয়- স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে বই একত্রিত করা শুরু করে দিয়েছিল এবং আপনারা এটা জেনে খুশি হবেন যে প্রথম লাইব্রেরী সেই ক্যান্সার হসপিটালের বাচ্চাদের জন্যই খোলা হয়েছিল। অভাবী বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন জায়গায় এই মেয়েটি এখনো পর্যন্ত যে সাতটা লাইব্রেরী খুলেছে, সেখানে এখন প্রায় ছ হাজার বই পাওয়া যায়। ছোট্ট আকর্ষণা যেইভাবে বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ সাজানোর এই মহৎ কাজটি করছে, তা সবাইকে অণুপ্রেরিত করবে।
বন্ধুরা, এ কথা ঠিক যে আজকের যুগ ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-বুকের, কিন্তু তবুও বই
আমাদের জীবনে সব সময় একজন ভালো বন্ধুর ভূমিকা পালন করে। তাই আমাদের উচিত বইপড়ার জন্য শিশুদের উৎসাহিত করা। আমার পরিবারবর্গ, আমাদের শাস্ত্রে কথিত আছে,
"জীবেষু করুণা চাপি, মৈত্রী তেষু বিধিয়তাম।"
অর্থাৎ জীবদের করুণা করুন এবং তাদের নিজের বন্ধু করে তুলুন। আমাদের অধিকাংশ দেবদেবীর বাহনই তো পশুপাখি। অনেক মানুষ মন্দিরে যান, ভগবান দর্শন করেন, কিন্তু যে জীবজন্তু তার বাহন তার দিকে ততটা মনোযোগ দেন না। এই জীবজন্তুদের তো আমাদের আস্থার কেন্দ্রে রাখা উচিত। এদের যথাসম্ভব সংরক্ষণও আমাদের করা উচিত। গত কয়েক বছরে দেশে সিংহ, বাঘ, চিতা ও হাতিদের সংখ্যায় উৎসাহব্যঞ্জক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। অন্যান্য বহু প্রয়াসও নিরন্তর করা হচ্ছে যাতে এই পৃথিবীর বুকে প্রতিটি জীবজন্তুকে বাঁচানো যায়। এমনই এক অনন্য প্রয়াস রাজস্থানের পুষ্করেও করা হচ্ছে। এখানে সুখদেব ভট্টজি এবং তাঁর দলের সদস্যরা মিলে বন্যপ্রাণীদের বাঁচানোর কাজে উদ্যোগী হয়েছেন। আর আপনারা জানেন তাঁদের দলের নাম কী? তাঁদের দলের নাম কোবরা! এই ভয়ানক নাম এই কারণে যে তাঁদের দল এই অঞ্চলে বিপজ্জনক সাপদের উদ্ধার করার কাজও করে। এই দলে অনেক মানুষ যুক্ত হয়েছেন যারা শুধু একটা কল করলেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান এবং নিজেদের মিশন শুরু করে দেন। সুখদেবজির এই দল এখনো পর্যন্ত ত্রিশ হাজারেরও বেশি বিষধর সাপের প্রাণ বাঁচিয়েছে। এই প্রয়াসের মাধ্যমে যেমন মানুষের বিপদ দূর হয় তেমনি পাশাপাশি প্রকৃতির সংরক্ষণও হয়। এই দল অন্যান্য অসুস্থ প্রাণীদের সেবার কাজের সঙ্গেও যুক্ত।
বন্ধুরা, তামিলনাড়ুর চেন্নাইতে অটো ড্রাইভার এম. রাজেন্দ্র প্রসাদজিও এক অনন্য কাজ করে চলেছেন। তিনি গত ২৫-৩০ বছরে পায়রাদের সেবার কাজে যুক্ত আছেন। তাঁর নিজের বাড়িতে ২০০-র বেশি পায়রা আছে। সেইসব পাখিদের খাদ্য, পানীয়, স্বাস্থ্য — প্রতিটি প্রয়োজনের প্রতি তিনি সম্পূর্ণ মনোযোগী ও যত্নবান। এতে ওঁর যথেষ্ট খরচও হয় কিন্তু উনি নিজের কাজে অটল। বন্ধুরা, মানুষকে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এমন কাজ করতে দেখলে সত্যিই ভারি শান্তি পাওয়া যায়। খুব আনন্দ হয়। যদি আপনারাও এমন কিছু অনন্য প্রয়াস সম্বন্ধে জানেন তবে অবশ্যই তা শেয়ার করবেন।
আমার প্রিয় পরিবারবর্গ, স্বাধীনতার এই অমৃতকাল দেশের সকল নাগরিকের জন্যে কর্তব্যকালও। আমরা নিজেদের কর্তব্য পালনের মধ্যে দিয়েই লক্ষে পৌঁছতে পারি, কাঙ্ক্ষিত অভিষ্ট অর্জন করতে পারি। কর্তব্য পালনের এই ভাবনাই আমাদের সবাইকে এক সূত্রে বেঁধে রাখে। উত্তর প্রদেশের সম্ভাল-এ এমনই কর্তব্যবোধের একটা দৃষ্টান্ত সারা দেশ দেখেছে, এবং সেটা আপনাদের সঙ্গে আমি ভাগ করে নিতে চাই। আপনারা ভাবুন, গ্রামের সংখ্যা সত্তরের বেশী, লোক সংখ্যা কয়েক হাজার, আর সমস্ত মানুষ মিলে একটাই লক্ষ্য, একটাই অভিষ্ট অর্জনের জন্য একত্রিত হচ্ছেন, একজোট হচ্ছেন এমনটা সাধারণত দেখা যায় না, কিন্তু সম্ভাল-এর মানুষ সেটাই করে দেখিয়েছেন। এখানকার মানুষ একত্রিত হয়ে জন-অংশীদারিত্ব ও সমষ্টিগত ঐক্যের একটা সুন্দর নজির তৈরি করেছেন। আসলে কয়েক দশক আগে এই অঞ্চলে 'সোত' নামে একটা নদী ছিল। 'আমরোহা' থেকে শুরু হয়ে 'সম্ভল' হয়ে 'বদায়ু' পর্যন্ত বয়ে যাওয়া এই নদী একসময় এ অঞ্চলের জীবনদাত্রী রূপে পরিচিত ছিল। নদীতে যথেষ্ট জলপ্রবাহ ছিল , আর কৃষিজীবীদের কৃষি কাজের জন্য তা ছিল প্রধান ভিত্তি। সময়ের সঙ্গে প্রবাহ ক্ষীণ হয়, নদী যে পথ বয়ে যেত তা দখল হয়ে যায়, আর নদী হারিয়ে যায়। আমাদের যে দেশে নদীকে মাতৃ রূপে কল্পনা করা হয়, সে দেশেরই সম্ভলের মানুষ এই সোত নদীকে পুনরুজ্জীবিত করার সংকল্প নিয়েছিলেন। গত বছর ডিসেম্বর মাসে, ৭০-টিরও বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ একসঙ্গে 'সোত' নদীর পুনরুজ্জীবনের সেই কাজ শুরু করেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের লোকজন সরকারি দপ্তরগুলো'কেও নিজেদের সঙ্গে সামিল করেছেন। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে বছরের প্রথম ছ মাসেই তাঁরা এই নদীর একশো কিলোমিটার'এরও বেশি পুনরুদ্ধার করে ফেলেছিলেন। যখন বর্ষা শুরু হল, তখন এখানকার মানুষের এই পরিশ্রম সার্থক হলো, 'সোত' নদী জলে পরিপুষ্ট হয়ে উঠলো। এখানকার কৃষিজীবী মানুষের জন্য এলো এক বড় খুশির মুহুর্ত। এই অঞ্চলের মানুষ নদীর পাড়ে দশ হাজারেরো বেশি বাঁশ গাছ লাগিয়েছেন, যাতে নদীর পাড় সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত থাকে। নদীর জলে ত্রিশ হাজার'এরও বেশি গম্বুশিয়া মাছ ছাড়া হয়েছে যাতে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বন্ধুরা, 'সোত' নদীর এই দৃষ্টান্ত আমাদের শিখিয়েছে যে দৃঢ়-সংকল্পবদ্ধ হলে আমরা অনেক কঠিন কঠিন সমস্যাও কাটিয়ে উঠে একটা বড় পরিবর্তন আনতে পারি। আপনিও কর্তব্যের এই পথে এগনোর সময় আপনার চারপাশে হতে থাকা এমন অনেক পরিবর্তনের অংশীদার হয়ে উঠতে পারেন।
আমার পরিবারবর্গ, যখন উদ্দেশ্য দৃঢ় হয় এবং কিছু শেখার অধ্যবসায় থাকে, তখন কোন কাজই, কঠিন মনে হয় না। পশ্চিমবঙ্গের শ্রীমতি শকুন্তলা সর্দার এই কথাটি একেবারে সত্যি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। আজ তিনি আরও অনেক নারীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। শকুন্তলা জি জঙ্গলমহলের শাতনালা গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পরিবার প্রতিদিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এমনকি তাঁর পরিবারের জন্য দিন গুজরান করা কঠিন ছিল। এরপর তিনি নতুন পথে এগিয়ে চলার সিদ্ধান্ত নেন এবং সাফল্য অর্জন করে সবাইকে অবাক করে দেন। আপনারা নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন উনি কি করে এই সাফল্যের মুখ দেখলেন! এর উত্তর হল – একটা সেলাই মেশিন। একটা সেলাই মেশিনকে নির্ভর করে উনি ‘শাল’ পাতার ওপর সুন্দর নকশা আঁকতে শুরু করলেন। এই প্রতিভা তাঁর সমগ্র পরিবারের জীবন আমূল বদলে দিয়েছে। ওঁর বানানো এই অদ্ভুত হস্তশিল্পের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। শকুন্তলাজির এই প্রতিভা কেবল তাঁর জীবনই নয়, ‘শাল’ পাতা সংগ্রহকারী অনেক মানুষের জীবনকেও বদলে দিয়েছে। এখন, উনি অনেক মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজও করছেন। আপনি কল্পনা করতে পারেন, একটি পরিবার, যা এক সময় মজদুরীর উপর নির্ভরশীল ছিল, এখন অন্যদের রোজগারের জন্য অনুপ্রেরিত করছেন। উনি দৈনিক মজদুরির উপর নির্ভরশীল নিজের পরিবারকে নিজের পায়ে দাঁড় করিয়েছেন। এর ফলে তাঁর পরিবার অন্যান্য বিষয়েও মনোনিবেশ করার সুযোগ পেয়েছে। আরও একটা ব্যাপার হলো, শকুন্তলা দেবীর আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সঞ্চয় করতে শুরু করেছেন। এখন তিনি জীবন বীমা পরিকল্পনায় বিনিয়োগ শুরু করেছেন, যাতে তাঁর সন্তানদের ভবিষ্যৎও উজ্জ্বল হয়। শকুন্তলা’জির সাহসের জন্য তাঁর প্রশংসা যতই করা হোক না কেন কম হবে। ভারতবর্ষের জনগণ এমনই প্রতিভা সম্পন্ন। আপনারা ওদের সুযোগ দিন আর দেখুন তাঁরা কি কি দারুণ সব কাজ করে দেখান।
আমার পরিবারবর্গ, দিল্লিতে জি-20 শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন, সেই দৃশ্যটি কে ভুলতে পারে, যখন বিশ্বের নেতারা একজোট হয়ে রাজঘাটে বাপুকে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করতে যান। এটা এই ধারণাটাকে আরো দৃঢ় করে যে বাপুর চিন্তাধারা সারা বিশ্বে আজও কতটা প্রাসঙ্গিক। আমি এই ভেবে খুশি যে গান্ধীজয়ন্তী উপলক্ষে সারা দেশে স্বচ্ছতা কেন্দ্রিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রত্যেকটি কার্যালয়ে 'স্বচ্ছতাই সেবা অভিযান' জোর কদমে চলছে। ইন্ডিয়ান স্বচ্ছতা লীগেও যথেষ্ঠ ভালো মাত্রায় অংশগ্রহণ চলছে। আজ আমি ‘মন কি বাত’- এর মাধ্যমে প্রত্যেক দেশবাসীর কাছে একটি আবেদন জানাতে চাই।
১লা অক্টোবর অর্থাৎ রবিবার সকাল দশটার সময় স্বচ্ছতার ওপর একটি বড় অনুষ্ঠান হতে চলেছে। আপনারাও নিজেদের সময় বার করে এই স্বচ্ছতা অভিযানে সঙ্গে যুক্ত হোন এবং অংশগ্রহণ করুন। আপনারা নিজেদের গলি, পাড়া, পার্ক, নদী, সরোবর বা অন্য কোন সার্বজনীন স্থলে এই স্বচ্ছতা অভিযানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন, এবং যে জায়গায় অমৃত সরোবর তৈরি হয়েছে সেখানে তো স্বচ্ছতা রাখতেই হবে। স্বচ্ছতার এই কার্যাবলী গান্ধীজীর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি হবে। আমি আপনাদেরকে আরেকবার মনে করিয়ে দিতে চাই যে গান্ধীজয়ন্তী উপলক্ষে একটা না একটা খাদির জিনিস অবশ্যই কিনবেন।
আমার পরিবারবর্গ, আমাদের দেশে উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে গেছে। আপনাদের বাড়িতেও হয়তো নতুন কিছু কেনাকাটা করার পরিকল্পনা চলছে । কেউ এই অপেক্ষায় রয়েছেন যে নবরাত্রির সময়ে নিজের কোন শুভ কাজ শুরু করবেন। আনন্দ, আশার এই পরিবেশে আপনারা ভোকাল ফর লোকালের মন্ত্র অবশ্যই মনে রাখবেন। যতটা সম্ভব আপনারা ভারতে তৈরি জিনিসপত্র কেনাকাটা করবেন, ভারতীয় সামগ্রীর ব্যবহার করবেন আর মেড ইন ইন্ডিয়া জিনিসপত্রই উপহার হিসেবে দেবেন। আপনার ছোট্ট খুশির মুহূর্ত অন্য আরেকটি পরিবারের বৃহৎ আনন্দের কারণ হতে পারে। আপনারা যে যে ভারতীয় জিনিসপত্র কিনবেন তার লাভ সোজা আমাদের শ্রমিক কর্মচারী, শিল্পী এবং অন্য বিশ্বকর্মা ভাইবোনেদের কাছে পৌঁছে যাবে। আজকাল অনেক স্টার্টাপ ও স্থানীয় পণ্য তৈরির বিষয়ে উৎসাহ দিচ্ছে। আপনারা স্থানীয় জিনিসপত্র কিনলে স্টার্টআপের সঙ্গে যুক্ত থাকা যুববন্ধুদেরও লাভ হবে।
আমার প্রিয় পরিবারবর্গ, ‘মন কি বাত’ আজ এই পর্যন্তই। পরেরবার যখন আপনাদের সঙ্গে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে কথা হবে তখন নবরাত্রি এবং দশেরা পর্ব শেষ হয়ে যাবে। উৎসবের এই মরসুমে আপনারাও দারুণ আনন্দ করুন, উৎসাহের সঙ্গে প্রত্যেক উৎসব পালন করুন। আপনার পরিবারে সর্বদা খুশি থাকুক এটাই আমার প্রার্থনা রইলো। আপনাদের জন্য প্রতিটি উৎসবের শুভকামনা রইল। আপনাদের সঙ্গে আবার দেখা হবে, আরো নতুন বিষয়ের সঙ্গে, দেশবাসীর নতুন সাফল্যের সঙ্গে। আপনারা আপনাদের বার্তা আমায় অবশ্যই পাঠাবেন। নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ভুলবেন না, আমি অপেক্ষা করব। অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।
Deep attachment of crores of Indians to Chandrayaan-3. #MannKiBaat pic.twitter.com/SOvynVo9Kq
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
India showcased its leadership by making the African Union a full member of G20 bloc.
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
The India-Middle East-Europe Economic Corridor proposed during the Summit is also set to become a cornerstone of global trade for times to come. #MannKiBaat pic.twitter.com/4pvCJW8g0l
Matter of immense pride that Santiniketan associated with Gurudev Rabindranath Tagore and the Hoysala Temples of Karnataka have been declared world heritage sites. #MannKiBaat pic.twitter.com/d3lv32rqia
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
21-year-old Kasmi is quite popular these days. A resident of Germany, she has never been to India, but her passion for Indian culture and music is praiseworthy. #MannKiBaat pic.twitter.com/RCJZw2rHpj
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
Youth in Nainital district have started a unique ‘Ghoda Library’ for children.
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
Books are reaching children even in the most remote areas and not only this, the service is absolutely free. #MannKiBaat pic.twitter.com/2SvBII0vb4
11-year-old Akarshana from Hyderabad manages seven libraries for children. The way she is contributing towards shaping the future of children, is inspiring. #MannKiBaat pic.twitter.com/4lLd4IJbqV
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
Various individuals and groups, like Sukhdev Ji's Team Cobra in Rajasthan and auto driver M. Rajendra Prasad Ji in Chennai, are making inspiring efforts towards rescuing and caring for animals, including snakes and pigeons. #MannKiBaat pic.twitter.com/CpDsqwtwz3
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
'Azadi Ka Amrit Kaal' is also 'Kartavya Kaal' for every citizen of the country. #MannKiBaat pic.twitter.com/eIV4k7Yg0u
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
UP’s Sambhal district exemplifies Janbhagidari. 70 villages united revive Sot River. #MannKiBaat pic.twitter.com/WmsaxCSJzY
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
West Bengal's Shakuntala Ji's skill transformed the life of her entire family. She started making beautiful designs on 'Sal' leaves. Now, she is also working on imparting training to many women. #MannKiBaat pic.twitter.com/r5iu9OCknL
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023
Bapu's ideals reverberate globally. #MannKiBaat pic.twitter.com/AUT4SpHP0h
— PMO India (@PMOIndia) September 24, 2023