প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাতের ছোটৌদেপুরের বোদেলিতে ৫,২০০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করেন। এই এলাকা এবং অন্যান্য আদিবাসী অঞ্চলের উন্নয়নে তাঁর অঙ্গীকারের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, আদিবাসীদের জীবনযাত্রার সঙ্গে তিনি নিবিড়ভাবে পরিচিত। তাঁর আমলের বহু প্রকল্পের সফল রূপায়ণ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিদ্যালয়, সড়ক, আবাসন, জলের সহজলভ্যতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলি সমাজের গরিব শ্রেণির মানুষের মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার মূল ভিত্তি। দেশে গরিব মানুষের জন্য ৪ কোটির বেশি বাড়ি তৈরির কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, জলজীবন মিশনের অধীনে ১০ কোটি নতুন জল সংযোগ দেওয়া হয়েছে। নলবাহিত জল সংযোগ মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষাক্ষেত্র সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাতকে শিখরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আজকের প্রকল্পগুলি এক বড় পদক্ষেপ। বিদ্যা সমীক্ষা কেন্দ্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিশ্বব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান প্রতিটি জেলায় এই ধরনের কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য তাঁর কাছে আর্জি জানিয়েছেন এবং এই কাজে বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এই ধরনের প্রকল্পে মেধাবী পড়ুয়ারা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আগের দশকগুলিতে শিক্ষকের ঘাটতি ছিল এবং স্কুল ও কলেজগুলিতে বিপুল সংখ্যক পড়ুয়া মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিতেন। শ্রী মোদী বলেন, এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গেছে। ২ লক্ষ শিক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছে, ১.২৫ লক্ষের বেশি শ্রেণিকক্ষ গত দু দশকে তৈরি করা হয়েছে। তিনি জানান, সরকার আদিবাসী এলাকাগুলিতে ২৫ হাজার শ্রেণিকক্ষ এবং ৫ টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করেছে।
জাতীয় শিক্ষানীতি সম্পর্কে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাতৃভাষায় শিক্ষাদান আদিবাসী পড়ুয়াদের সামনে নতুন সুযোগ সুবিধার পথ খুলে দেবে। ১৪ হাজারের বেশি প্রধানমন্ত্রী শ্রী স্কুল এবং একলব্য আবাসিক বিদ্যালয় আদিবাসী এলাকার জীবনযাত্রা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্টার্টআপ প্রকল্পে আদিবাসী তরুণদের উৎসাহিত করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।
আজকের দুনিয়ায় দক্ষতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ কেন্দ্র এবং কৌশল বিকাশ যোজনায় লক্ষ লক্ষ তরুণের প্রশিক্ষণের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কোনোরকম সমান্তরাল জমানত ছাড়াই মুদ্রা যোজনায় ঋণ দেওয়া হচ্ছে, যা কোটি কোটি শিল্পোদ্যোগী তৈরি করছে। ১৭ সেপ্টেম্বর চালু হওয়া প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার কথাও তুলে ধরেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পে তিনিই গ্যারান্টার।
একসময় পিছিয়ে থাকা দলিত, অনগ্রসর শ্রেণি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন এখন সরকারি প্রকল্পের সাহায্যে উন্নয়নের স্বাদ পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। তিনি জানান, বর্তমান সরকার আগের তুলনায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য বাজেট বরাদ্দ ৫ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন সংসদ ভবনে এই বিলটি প্রথম পাশ করানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ এবং বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এখন নতুন পথ খুলে গিয়েছে। সংবিধানে তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য যে সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, সেকথাও উল্লেখ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর প্রসঙ্গ টেনে আনেন শ্রী মোদী।
অমৃতকালের কথা উল্লেখ করে এর রূপায়ণ সফলভাবে হবে বলে আত্মবিশ্বাসী সুরে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
গুজরাতের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবরত, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, সাংসদ শ্রী সি আর পাতিল এবং গুজরাত সরকারের বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গুজরাতের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবরত, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, সাংসদ শ্রী সি আর পাতিল এবং গুজরাত সরকারের বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।