আজ ওড়িশার সম্বলপুরে ৬৮,০০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বেশকিছু প্রকল্প তিনি উৎসর্গ করেন জাতির উদ্দেশেও। প্রধানত দেশের জ্বালানী ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে এই প্রকল্পগুলি রূপায়িত হচ্ছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে কয়লা উৎপাদন, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পর্কিত কয়েকটি কর্মসূচি। এছাড়াও রেল, সড়ক এবং উচ্চশিক্ষা সম্পর্কিত কিছু প্রকল্প ও কর্মসূচিও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। একটি বিশেষ মডেল রূপে গড়ে তোলা সম্বলপুরের আইআইএম-ও আজ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতেও উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল তাঁর।
এই উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে উন্নয়নের যাত্রাপথে ওড়িশার আজ একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। কারণ, রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ, পেট্রোলিয়াম এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ৭০,০০০ কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্পের আজ সূচনা হল। তিনি বলেন, ওড়িশার দরিদ্র সাধারণ মানুষ সার্বিক ভাবে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির সুবাদে উপকৃত এবং লাভবান হবেন। শুধু তাই নয়, সরকারি এই উদ্যোগের ফলে ওড়িশার যুবসমাজের কাছে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও উন্মুক্ত ও প্রসারিত হবে।
প্রসঙ্গত ভারতের ভূতপূর্ব উপপ্রধানমন্ত্রী শ্রী লালকৃষ্ণ আডবাণীকে ভারতরত্ন পুরস্কারে সম্মানিত করার সরকারি সিদ্ধান্তের কথাও আজ আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। উপপ্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী থাকাকালীন শ্রী আডবাণীর অনন্য অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আডবাণীজিকে ভারতরত্ন পুরস্কারে সম্মানিত করার অর্থ হল যাঁরা দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে সর্বদাই প্রস্তুত জাতি কখনই তাঁদের বিস্মৃত হতে পারে না। শ্রী এল কে আডবাণীজির কাছ থেকে তিনি যেভাবে ভালোবাসা, আশীর্বাদ এবং সঠিক নির্দেশ লাভ করেছেন তাতে নিজেকে বিশেষ ভাগ্যবান বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। আডবাণীজির দীর্ঘায়ু কামনা করে দেশবাসীর পক্ষ থেকে তাঁকে অভিনন্দিতও করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশাকে শিক্ষা ও শিক্ষা প্রসারের একটি বিশেষ কেন্দ্র রূপে গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি এই রাজ্যটিকে দক্ষতা বিকাশের এক বিশেষ কেন্দ্র রূপেও গড়ে তোলা হবে। বহরমপুরের আইআইএসআর এবং ভূবনেশ্বরের ইন্সটিটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে ওড়িশার যুবসমাজের ভাগ্য এখন অনেকটাই পরিবর্তিত। বর্তমানে আইআইএম সম্বলপুর প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই রাজ্যের উজ্জ্বল ভূমিকাকে তুলে ধরা হচ্ছে। করোনা অতিমারীকালে আইআইএম-এর শিলান্যাস পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সমস্ত রকম বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে এই প্রকল্পটির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায় বিশেষ আনন্দপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শ্রী মোদী বলেন, দেশের প্রতিটি রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত হওয়ার মধ্যেই নিহিত রয়েছে বিকশিত ভারত গঠনের লক্ষ্য পূরণের সম্ভাবনা। উন্নয়ন প্রচেষ্টার প্রতিটি ক্ষেত্রে ওড়িশাকে সমর্থন যুগিয়ে যেতে কেন্দ্র যে কখনই পিছপা হবে না, একথা আজ বিশেষ জোর দিয়ে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত গত এক দশকে কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টার একটি তালিকা তুলে ধরে শ্রী মোদী পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোকেমিক্যাল ক্ষেত্রে ওড়িশায় ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই রাজ্যটির অনুকূলে রেল বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ১২ গুণেরও বেশি। এই রাজ্যটিতে ৪,০০০ কিলোমিটারি দীর্ঘ জাতীয় মহাসড়ক ছাড়াও গ্রামাঞ্চলগুলিতে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার আওতায় নির্মিত হয়েছে ৫০,০০০ কিলোমিটার সড়কপথ।
প্রধানমন্ত্রীর আজকের কর্মসূচির মধ্যে ছিল তিনটি জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের উদ্বোধন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওড়িশা ও ঝাড়খন্ডের মধ্যে আন্তঃরাজ্য সড়কপথে যাতায়াতের সময় এখন উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পাবে। খনি, বিদ্যুৎ এবং ইস্পাত শিল্পের জন্য এই রাজ্যটি সুপরিচিত। ওড়িশার এই বিশেষ সম্ভাবনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন সড়ক সংযোগ গড়ে ওঠার ফলে সমগ্র এলাকায় নতুন নতুন শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও এখন উজ্জ্বল। ফলে, হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে এর মধ্য দিয়ে। সম্বলপুর-তালচের রেল সেকশনটিকে ডাবল লাইনে রূপান্তর এবং ঝড়-তরভা - সোনপুর সেকশনের নতুন রেললাইনের উদ্বোধনের কথাও এদিন স্থান পায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। তিনি বলেন, পুরী - সোনপুর এক্সপ্রেসের মাধ্যমে যুক্ত হবে রাজ্যের সুবর্ণপুর জেলা। ফলে, প্রভু জগন্নাথের পূজা ও দর্শন পূণ্যার্থীদের কাছে আরও সহজ হয়ে উঠবে। এছাড়াও যে বড় বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির আজ উদ্বোধন হল তার মাধ্যমে ওড়িশার প্রতিটি পরিবারে সুলভে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে।
শ্রী মোদী বলেন, গত ১০ বছরে কেন্দ্রীয় সরকার গৃহীত বিভিন্ন নীতির সঠিক ও সার্থক বাস্তবায়নে ওড়িশা রাজ্যটি নানা ভাবে উপকৃত হয়েছে। খনি প্রকল্প রূপায়ণে কেন্দ্রীয় সরকার নীতিগত ভাবে যে পরিবর্তন সম্ভব করে তুলেছে তার মাধ্যমে ওড়িশার সার্বিক আয় ও উপার্জন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১০ গুণ। একদা রাজ্যের যে অঞ্চলগুলিতে খনি ও খনন সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারিত হয়নি, সেগুলিকেও এখন নতুন নতুন কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এই রাজ্যটিকে উন্নয়ন খাতে এপর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ২৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি, যা কিনা বিনিয়োগ করা হচ্ছে রাজ্যবাসীর কল্যাণে। বিশেষত খনি প্রকল্পগুলি রাজ্যবাসীকে নানা ভাবে সুযোগ, সুবিধা ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে। এই রাজ্যের সার্বিক বিকাশে কেন্দ্রীয় সরকার যে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে একথাও আজ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওড়িশার রাজ্যপাল শ্রী রঘুবর দাস, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নবীন পটনায়ক, কেন্দ্রীয় শিক্ষা, দক্ষতা বিকাশ ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
आज देश ने अपने एक महान सपूत, पूर्व उप-प्रधानमंत्री लालकृष्ण आडवाणी जी को भारत रत्न देने का भी निर्णय लिया है: PM @narendramodi pic.twitter.com/1YjHcWYJav
— PMO India (@PMOIndia) February 3, 2024
हमने ओडिशा को शिक्षा का, कौशल विकास का एक महत्वपूर्ण केंद्र बनाने के लिए निरंतर प्रयास किए हैं: PM @narendramodi pic.twitter.com/foAmT5qDeq
— PMO India (@PMOIndia) February 3, 2024
विकसित भारत के लक्ष्य को हम तभी प्राप्त कर सकते हैं, जब भारत का हर राज्य विकसित बने: PM @narendramodi pic.twitter.com/5euHFdGZZx
— PMO India (@PMOIndia) February 3, 2024