নয়াদিল্লি, ২ অক্টোবর, ২০২৪: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ঝাড়খন্ডের হাজারিবাগে ৮০ ০০০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। শ্রী মোদী ধরতি আবা জনজাতীয় গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান চালু করেন। একইসাথে ৪০টি একলব্য মডেল আবাসিক স্কুল (ইএমআরএস) উদ্বোধন করেন এবং ২৫টি একলব্য মডেল আবাসিক স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জনজাতি আদিবাসী ন্যায় মহা অভিযান (পিএম-জনমন) এর অধীনে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি স্থাপন করেন।
এই উপলক্ষ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঝাড়খণ্ডের উন্নয়ন যাত্রার অংশ হতে পেরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কয়েক দিন আগে জামশেদপুর সফরের কথা তুলে ধরেন, যেখানে তিনি শত কোটি টাকার একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। শ্রী মোদী প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে ঝাড়খন্ডের হাজার হাজার গরিব পরিবারে পাকা বাড়ি হস্তান্তরের কথা উল্লেখ করেন। ৮০,০০০ কোটি টাকারও অধিক মূল্যের আদিবাসী সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন ও কল্যাণ সম্পর্কিত আজকের প্রকল্পগুলির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন জনজাতি গোষ্ঠীদের প্রতি সরকারের অগ্রাধিকারের প্রমাণ দেয় এই প্রকল্প। আজকের এই প্রকল্পগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ঝাড়খণ্ড সহ সারা দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানান।
মহাত্মা গান্ধীজির জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন আদিবাসী কল্যাণের মহাত্মা গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গি ও ধারণা ভারতের আমানত। প্রধানমন্ত্রী বলেন মহাত্মা গান্ধী বিশ্বাস করতেন যে জনজাতি সমাজের দ্রুত গতিতে অগ্রগতি হলেই ভারতের অগ্রগতি সম্ভব। বর্তমান সরকার উপজাতি উন্নয়নে যে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে একথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী সন্তোষ ব্যক্ত করেন করেছেন এবং আজ ধরতি আবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান চালু করার কথাও তিনি জানিয়ে বলেন, ৮০ ০০০ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের প্রায় ৫৫০ জেলায় খরচে ৬৩,০০০ জনজাতি প্রধান গ্রামকে উন্নত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী জানিয়েছেন যে এই জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলোর আর্থ-সামাজিক জীবনের উন্নতির জন্য কাজ করা হবে এবং এর সুবিধা দেশের ৫ কোটিরও বেশি জনজাতি ভাই ও বোনের কাছে পৌঁছাবে। তিনি আরও বলেন “ঝাড়খন্ডের জনজাতি সমাজও এ থেকে প্রভূত উপকৃত হবে।”
ভগবান বীরসা মুন্ডার ভূমি থেকে ধরতি আবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান শুরু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি মনে করিয়ে দেন যে ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকীতে ঝাড়খণ্ড থেকে পিএম -জনমন যোজনা চালু করা হয়েছিল। তিনি ঘোষণা করেন যে ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর জনজতি গৌরব দিবসে ভারত পিএম -জনমন যোজনার প্রথম বার্ষিকী উদযাপন করবে। তিনি বলেন পিএম -জনমন যোজনার মাধ্যমে উন্নয়নের সুফলগুলো দেশের পিছিয়ে পড়া জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলে পৌঁছেছে। শ্রী মোদী জানান পিএম -জনমন যোজনা-র অধীনে আজ প্রায় ১৩৫০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনজাতীয় অঞ্চলে উন্নত জীবনের জন্য শিক্ষা স্বাস্থ্য এবং সড়কের মতো সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা হবে।
ঝাড়খণ্ডে পিএম-জনমন যোজনা-র প্রথম বছরে অনেক সাফল্য অর্জনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন ৯৫০টিরও বেশি পশ্চাৎপদ গ্রামে প্রত্যেক বাড়িতে জল সরবরাহের কাজ শেষ হয়েছে। তিনি আরও জানান রাজ্যে ৩৫টি বন ধন বিকাশ কেন্দ্র করার ব্যাপারেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্গম উপজাতীয় অঞ্চলগুলিকে মোবাইল সংযোগের সাথে যুক্ত করার জন্য যে কাজ করা হচ্ছে সেটাও তুলে ধরেন যা অগ্রগতির জন্য সমান সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে উপজাতি সমাজকে বদলে দিতে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেন যদি উপজাতি যুবকরা শিক্ষা ও অন্যান্ন সুযোগ পায় তাহলে উপজাতি সমাজের অগ্রগতি হবে। এর জন্য শ্রী মোদী বলেন সরকার উপজাতীয় অঞ্চলে একলব্য আবাসিক স্কুল নির্মাণের কাজ করে চলেছে। ৪০টি একলব্য আবাসিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধন এবং আজ ২৫টি নতুন বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন একলব্য বিদ্যালয়গুলোকে সমস্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সাজানো উচিত এবং উচ্চমানের শিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত। তিনি ও বলেন যে, সরকার প্রতিটি স্কুলের বাজেট প্রায় দ্বিগুণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বিশেষ জোর দিয়ে বলেন, সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে বলেন জনজাতি যুবকরা অবশ্যই এগিয়ে যাবে এবং তাঁদের সক্ষমতা লাভ হওয়া থেকে দেশ উপকৃত হবে।