প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মধ্যপ্রদেশের সাগরে একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস ও সূচনা করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে ১০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে গড়ে উঠতে চলা সন্ত শিরোমণি গুরুদেব শ্রী রবিদাস স্মৃতি সৌধের ভিত্তিরপ্রস্তর স্থাপন, ১,৫৮০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মিত হতে চলা দুটি সড়ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২৪৭৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত কোটা-বিনা রেল রুটের ডাবল লাইন জাতিকে উৎসর্গ করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধুদের উপস্থিতি, সন্ত রবিদাসের আশীর্বাদ এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের বিশাল সমাবেশে সাগর আজ সত্যিই সমন্বয়ের সাগরে পরিণত হয়েছে। সন্ত শিরোমণি গুরুদেব শ্রী রবিদাস স্মৃতিসৌধের যে ভিত্তিপ্রস্তর আজ স্থাপন করা হল, তা দেশের সমৃদ্ধিকে আরও গতি দেবে। সাধুদের আশীর্বাদ নিয়ে এই স্মৃতিসৌধের ভূমি পূজনে যোগ দেওয়ার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি এই মন্দিরের উদ্বোধন করতে আসবেন। বারাণসীর একজন সাংসদ হিসেবে তিনি বহুবার নানা উপলক্ষে সন্ত রবিদাসের জন্মস্থান পরিদর্শন করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত রবিদাসের যে স্মৃতিসৌধ তৈরি হবে তা যেমন চিত্রাকর্ষক হবে, তেমনি এর মধ্যে দেবত্বের প্রকাশও থাকবে। এই স্মৃতিসৌধ 'সমরাস্তা'-র চেতনায় ২০ হাজারটি গ্রাম, ৩০০টি নদীর মাটি দিয়ে তৈরি হবে বলে তিনি জানান। মধ্যপ্রদেশের বহু পরিবার সমরাস্তার ভোজের জন্য খাদ্যশস্য পাঠিয়েছে। ৫টি যাত্রা আজ সাগরে এসে শেষ হয়েছে। এই যাত্রাগুলি সামাজিক সম্প্রীতির এক নতুন যুগকে চিহ্নিত করে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন প্রেরণা ও প্রগতির মেলবন্ধন ঘটে, তখনই এক নতুন যুগের সূচনা হয়। দুটি সড়ক প্রকল্প এবং কোটা-বিনা রেল ডাবল লাইনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির ফলে সাগর ও আশপাশের এলাকার মানুষজন উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধক রবিদাস স্মৃতিসৌধ ও সংগ্রহালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর এমন এক সময়ে স্থাপন করা হল, যখন দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে এবং অমৃতকালের ২৫ বছর আমাদের সামনে রয়েছে। অতীতের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। জাতির হাজার বছরের যাত্রার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজে অশুভের উদ্ভব অত্যন্ত স্বাভাবিক এক ঘটনা। কিন্তু যখনই সেই অশুভের উদ্ভব হয় তখনই সন্ত রবিদাসের মত কোন সাধক বা মহাত্মা তাকে প্রতিরোধ করতে আবির্ভূত হন, এটাই ভারতীয় সমাজের শক্তি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত রবিদাস এমন এক যুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যখন দেশে মুঘলের শাসন ছিল। ভারসাম্যহীনতা, নিপীড়ন ও অত্যাচারের সঙ্গে যুঝছিল গোটা সমাজ। ওই সময় সন্ত রবিদাস অশুভের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেতনা সঞ্চার করেন। সন্ত রবিদাসকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে মানুষ জাতপাত নিয়ে নিজেদের মধ্যে লড়ছিল, অন্যদিকে অশুভ শক্তি ধীরে ধীরে মানবতাকে গ্রাস করছিল। সন্ত রবিদাস সমাজে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, জাতির আত্মার পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছিলেন। সন্ত রবিদাসের সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, পরনির্ভরশীলতা হল সব থেকে বড় পাপ। যারা এটা মেনে নেয়, তাদের কেউ ভালোবাসে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিক থেকে দেখলে সন্ত রবিদাস অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমাজকে শক্তি জুগিয়েছিলেন এবং ছত্রপতি শিবাজী তাঁর হিন্দভি স্বরাজ্যের ভিত্তি স্থাপনে একেই অনুপ্রেরণা হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার হৃদয়ে এই অনুভূতিই ছিল। আজ দাসত্বের মানসিকতা ঝেড়ে ফেলে এই মুক্তির চেতনাকে বুকে নিয়েই দেশ এগিয়ে চলেছে।
সামাজিক সমতা এবং সকলের কাছে সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে সন্ত রবিদাসের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানন্ত্রী বলেন, অমৃতকালে আমরা দেশ থেকে দারিদ্র ও ক্ষুধা নির্মূল করার চেষ্ট চালাচ্ছি। অতিমারীর সময় দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষজনকে খাদ্য সরবরাহের যে সংকল্প তিনি নিয়েছিলেন, এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ক্ষুধা এবং আত্মসম্মানের জন্য দরিদ্রের ব্যথা আমি বুঝি। আমি আপনাদের পরিবারেরই এক সদস্য, আমাকে বই পড়ে আপনাদের বেদনা বুঝতে হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় ৮০ কোটির বেশি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে, সারা বিশ্ব এর প্রশংসা করেছে।
দেশে বিভিন্ন গরীব কল্যাণ প্রকল্পের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনকার ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা। এখন দলিত, দরিদ্র, আদিবাসী ও মহিলাদের জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে দেশ তাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে। জন্মের সময় মাতৃবন্দনা যোজনা এবং মিশন ইন্দ্রধনুষের আওতায় সাড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি সদ্যোজাত শিশু ও মায়েদের টিকা দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতকে যক্ষ্মা মুক্ত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সিকল সেল অ্যানিমিয়া থেকে ৭ কোটি ভারতীয়কে বাঁচানোর লক্ষ্যে অভিযান চলছে। দেশে কালাজ্বর ও এনসেফালাইটিসের প্রকোপ ক্রমশ কমছে। আয়ুষ্মান কার্ড প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "লোকে বলে তারা মোদী কার্ড পেয়েছে। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য আপনাদের ছেলে রয়েছে।"
জীবনে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদিবাসী এলাকায় ৭০০টি একলব্য স্কুল খোলা হয়েছে। সেখানে বিনামূল্যে বই ও মিডডে মিল দেওয়া হচ্ছে। বৃত্তির ব্যবস্থাও রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি মেয়েদের জন্য সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা, তপশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা এবং মুদ্রা যোজনার আওতায় বিপুল সংখ্যাক তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্তদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থার কথা বলেন। তিনি জানান, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া প্রকল্পের আওতায় তপশিলি জাতি, উপজাতি ভুক্ত যুবকদের ৮ হাজার কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে, ৯০টি বনজপণ্যকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বিদ্যুৎ, জল ও গ্যাসের সংযোগ সহ বাড়ি দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মানুষেরা আজ নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন। সাম্যের ভিত্তিতে তারা সমাজে তাদের সঠিক স্থানটি পাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাগর এমন এক জেলা যার নামে সাগর রয়েছে। এখানে ৪০০ একরের লাখা বাঞ্জারা সরোবরও রয়েছে। লাখা বাঞ্জারার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বহু বছর আগেই জলের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন। আগের সরকারগুলি গরীব মানুষের কাছে পানীয় জলটুকু পর্যন্ত পৌঁছে দিতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জল জীবন মিশনের মাধ্যমে এখন তাঁর সরকার এই কাজ করছে। নলবাহিত জল এখন দলিত, অনগ্রসর ও আদিবাসী এলাকায় পৌঁছোচ্ছে। লাখা বাঞ্জারার ঐতিহ্য অনুসরণ করে প্রতিটি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সরোবরগুলি স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে থাকবে, সামাজিক সম্প্রীতির কেন্দ্র হয়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলিত, বঞ্চিত, অনগ্রসর বা আদিবাসী - তাঁর সরকার সবাইকে যথাযথ সম্মান ও নতুন সুযোগ দিচ্ছে। তিনি বলেন, এইসব সমাজের মানুষেরা দুর্বল নন, তাদের ইতিহাস সেকথা বলে না। সমাজের এই অংশগুলি থেকে একের পর এক মহান ব্যক্তিত্বের আবির্ভাব হয়েছে, যাঁরা জাতি গঠনে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছেন। সেজন্যই দেশ আজ গর্বের সঙ্গে তাঁদের উত্তরাধিকার সংরক্ষণ করছে। উদাহরণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে সন্ত রবিদাসের জন্মস্থানে মন্দিরের সৌন্দর্যকরণ, ভোপালের গোবিন্দপুরায় সন্ত রবিদাসের নামে গ্লোবাল স্কিল পার্কের নামকরণ, বাবাসাহেবের জীবনের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলি নিয়ে পঞ্চ তীর্থ গঠন এবং বিভিন্ন রাজ্যে আদিবাসী সংগ্রহালয় গড়ে তোলার উল্লেখ করেন। ভগবান বীরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তী এখন জনজাতীয় গৌরব দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, মধ্যপ্রদেশের হাবিবগঞ্জ রেলস্টেশনের নামকরণ করা হয়েছে গোন্ড সম্প্রদায়ের রাণী কমলাপতির নামে, পাতালপানি স্টেশনের নামকরণ হয়েছে তাঁতিয়া মামার নামে। এই প্রথম দলিত, অনগ্রসর ও আদিবাসী ঐতিহ্যকে দেশে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াসের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে এগিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত রবিদাসের শিক্ষা এই যাত্রাপথে নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ করে রাখবে।
মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও শ্রী বীরেন্দর কুমার, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল, সাংসদ শ্রী ভি ডি শর্মা এবং মধ্যপ্রদেশ মন্ত্রিসভার সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও শ্রী বীরেন্দর কুমার, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল, সাংসদ শ্রী ভি ডি শর্মা এবং মধ্যপ্রদেশ মন্ত্রিসভার সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
Sant Ravidas Ji awakened the society. pic.twitter.com/hOMaxWJf1m
— PMO India (@PMOIndia) August 12, 2023
आज आजादी के अमृतकाल में हम देश को गरीबी और भूख से मुक्त करने के लिए प्रयास कर रहे हैं। pic.twitter.com/SiaVrgoNU6
— PMO India (@PMOIndia) August 12, 2023
Our focus is on welfare of the poor and empowerment of every section of society. pic.twitter.com/BNDtQwKZ5b
— PMO India (@PMOIndia) August 12, 2023
आज देश का दलित हो, वंचित हो, पिछड़ा और आदिवासी हो, हमारी सरकार इन्हें उचित सम्मान दे रही है, नए अवसर दे रही है। pic.twitter.com/bRnkImOI8h
— PMO India (@PMOIndia) August 12, 2023