প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আমেদাবাদের আসারওয়ায় সিভিল হাসপাতালে ১,২৭৫ কোটি টাকার বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবার উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন।
অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছনোর পর প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি ঘুরে দেখেন। প্রধানমন্ত্রীকে মঞ্চে সম্বর্ধনা জানানোর পর এটি হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। এর মধ্যে রয়েছে – মঞ্জুশ্রী মিল পরিসরে কিডনি রোগ গবেষণা কেন্দ্র, আসারওয়া সিভিল হাসপাতাল চত্বরে গুজরাট ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হাসপাতাল ভবন, ইউ এন মেহতা হাসপাতালের হস্টেল, ডায়ালিসিসের সুবিধার জন্য ব্যবস্থাপনার সম্প্রসারণ, গুজরাট রাজ্যের কেমো কর্মসূচির উন্নয়ন ইত্যাদি। এরপর প্রধানমন্ত্রী নানা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তার মধ্যে গোধরায় নতুন মেডিকেল কলেজ, সোলা-তে নতুন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ, আসারওয়া সিভিল হাসপাতালে মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্রীদের আবাসন, আসারওয়ায় রেন বাসেরা সিভিল হাসপাতাল, ভিলোদায় ১২৫ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল এবং আঞ্জোর-এ ১০০ শয্যাবিশিষ্ট উপ-জেলা হাসপাতাল।
প্রধানমন্ত্রী মোরভা হান্ডফ-এ সিএইচসি-এর রোগীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাটের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের জন্য এ এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিভিন্ন প্রকল্পগুলি নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন হওয়ায় এর সঙ্গে যুক্ত সকলকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, বিশ্বের অন্যতম উন্নত চিকিৎসা প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নত সুবিধা এখন থেকে গুজরাটের জনসাধারণ পাবেন। এই চিকিৎসা পরিষেবাগুলি চালুর ফলে যাঁরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারেন না, তাঁরা সরকারি হাসপাতালে উন্নতমানের পরিষেবা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী সাড়ে তিন বছর আগে তিনি যখন ১,২০০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের উদ্বোধন করেছিলেন সেই ঘটনা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউ এন মেহতা ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওলজি-তে কিডনি রোগ পরিষেবা চালু হওয়ায় রোগীদের বিশেষ সুবিধা হবে। গুজরাট ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবনে বোন ম্যারো প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা চালু হওয়ায় বিশেষ উপকৃত হবেন এখানকার রোগীরা। “দেশের মধ্যে এটি হবে প্রথম সরকারি হাসপাতাল যেখানে সাইবার নাইফ-এর মতো প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়া যাবে” – বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গুজরাটে উন্নয়ন হচ্ছে দ্রুতগতিতে। গত কয়েক বছরে এখানে যে কাজ হয়েছে ও তা থেকে যা সাফল্য পাওয়া গেছে তা গণনা করা কঠিন।
২০-২৫ বছর আগে গুজরাটে চিকিৎসা পরিষেবার দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র স্বাস্থ্য পরিষেবা নয়, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, আইন-শৃঙ্খলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই পিছিয়ে ছিল এই রাজ্য। সর্বোপরি ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিয়েছিল। বর্তমানে গুজরাট এ সবকিছুকে পেছনে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। উন্নয়নের নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে গুজরাটের শিখরে। জল, বিদ্যুৎ, আইন-শৃঙ্খলা – সবকিছুরই এখানে উন্নতি হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, “বর্তমানে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস’-এর লক্ষ্যে গুজরাট সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির সূচনা হল সেগুলি গুজরাটের নতুন পরিচয় সৃষ্টি করবে। উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি গুজরাট বিশ্বের অন্যতম সেরা চিকিৎসা পরিষেবা থাকার গর্বও উপলব্ধি করবে। এর ফলে, চিকিৎসা-পর্যটন বাড়বে এই রাজ্যে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর জন্য যথাযথ নীতি এবং তার প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। “সরকারের হৃদয় যদি জনগণের সমস্যার জন্য ব্যথিত না হয় তবে কখনই যথাযথ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি করা সম্ভব নয়” – বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, সর্বতোভাবে যখন প্রচেষ্টা চালানো হয় তখন তার ফল যথাযথ হয়, “আর এটিই হল গুজরাটের সাফল্যের মন্ত্র”।
চিকিৎসা-বিজ্ঞানের উন্নত দিকগুলি জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও তিনি নানান চেষ্টা চালিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাটই হল প্রথম রাজ্য যেখানে পশু-প্রাণীর যত্নও নেওয়া হয়। তিনি বলেন, বিভিন্ন রোগ এবং অতিমারীর গতি-প্রকৃতির দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের উচিৎ ‘এক পৃথিবী এক স্বাস্থ্য মিশন’ ব্যবস্থাপনাকে আরও মজবুত করা। সরকার এই লক্ষ্যে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। “জনগণের মধ্যে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সমস্যা নির্ধারণ করেছি” – বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যখন গোটা ব্যবস্থাপনা স্বাস্থ্যকর হয়, তখন পরিষেবাও যথাযথভাবে পাওয়া যায়। এই ক্ষেত্রে দেশের কাছে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে গুজরাট।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের নানান ব্যবস্থাপনায় প্রয়োগ করেছেন তিনি। গত আট বছরে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বিভিন্ন অংশে ২২টি নতুন এইমস হাসপাতাল চালু করেছে যা থেকে উপকৃত হয়েছে গুজরাটও। “গুজরাট রাজকোটে তার প্রথম এইমস হাসপাতাল পেয়েছে” – বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসা গবেষণা সহ নানান ক্ষেত্রে গুজরাট আর অল্প কয়েকদিনের মধ্যে বিশ্বমানে পৌঁছবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শ্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার যখন সমাজের বিভিন্ন সমস্যার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়, তখন দরিদ্র শ্রেণীর জনগণ, বিশেষভাবে মা ও শিশুরা তা থেকে উপকৃত হন। এই রাজ্যে যখন শিশু ও মায়েদের মৃত্যুর হার গভীর উদ্বেগের বিষয় ছিল সেই সময়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার নিরলসভাবে এই সমস্যা নিরসনে কাজ করেছে। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ অভিযানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে শ্রী মোদী বলেন, দেশে বর্তমানে নবজাতক শিশুদের মধ্যে ছেলের তুলনায় মেয়ের হার বেশি। গুজরাট সরকারের ‘চিরঞ্জীবি’ এবং ‘খিলখিলাহট’ প্রকল্পের সাফল্যের উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইন্দ্রধনুষ’ এবং ‘মাতৃ বন্দনা’ প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প থেকে কিভাবে দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জনগণের চিকিৎসা হচ্ছে সে বিষয়টি উল্লেখ করেন। ডবল ইঞ্জিন সরকারের গুরুত্বের কথা উত্থাপন করে শ্রী মোদী বলেন, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ এবং ‘মুখ্যমন্ত্রী অমৃতম যোজনা’ একযোগে মিলেমিশে গুজরাটের দরিদ্র শ্রেণীর মানুষকে উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছে। ‘স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা – এই দুটি ক্ষেত্র ভবিষ্যতের দিশা নির্দেশ করে’ বলেও উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, ২০১৯ সালে ১,২০০ শয্যাবিশিষ্ট যে সিভিল হাসপাতালের সূচনা হয়েছিল তা কোভিড অতিমারীর সময় বিশেষভাবে পরিষেবা প্রদান করতে সক্ষম হয়। এই একটি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ক্ষেত্র অতিমারীর সময় হাজার হাজার মানুষের জীবন বাঁচায়। ভবিষ্যতেও এই হাসপাতাল থেকে উপকৃত হবেন অনেকেই। সবশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন – “আপনি এবং আপনার পরিবার যেন নীরোগ থাকে, আমি সেই কামনাই করি।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, সাংসদ শ্রী সি আর পাতিল, শ্রী নরহরি আমিন, শ্রী কীর্তিভাই সোলাঙ্কি এবং শ্রী হাসমুখভাই প্যাটেল সহ অন্যান্যরা।
প্রেক্ষাপট
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আমেদাবাদের আসারওয়ায় সিভিল হাসপাতাল চত্বরে ১,২৭৫ কোটি টাকার বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবার উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। এর মধ্যে দরিদ্র রোগীদের পরিবার-পরিজনের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থাও রয়েছে। তিনি উন্নতমানের সুবিধাযুক্ত হৃদরোগের হাসপাতাল ও ইউ এন মেহতা ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওলজি অ্যান রিসার্চ সেন্টার-এর নতুন হস্টেল ভবনের সূচনা করেন। কিডনি রোগের জন্য ও ক্যান্সার গবেষণার জন্য নতুন হাসপাতাল ভবনেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
Modern medical facilities in Ahmedabad will benefit the citizens. pic.twitter.com/CUMOviKJL7
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
Gujarat is rapidly scaling new heights of development. pic.twitter.com/TcKzb3s219
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
Gujarat is moving ahead and scaling new trajectories of growth. pic.twitter.com/lVA2To4XfP
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
We have worked keeping a holistic approach in mind. This has hugely benefitted in Gujarat's development journey. pic.twitter.com/Hf9lxzZqG4
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
In last 8 years, we have worked to augment India's healthcare infrastructure. pic.twitter.com/qGgmwtkRIk
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
Our government is sensitive towards the weaker sections, mothers and sisters. pic.twitter.com/9THAh7BtiW
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022