নয়া দিল্লির ডঃ আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রে আজ 'কর্মযোগী শপথ'- জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-এর সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই কর্মসূচির সূচনা উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে শ্রী মোদী বলেন যে মিশন কর্মযোগী-র মাধ্যমে যে লক্ষ্য পূরণে আমরা আগ্রহী তা হল এমন এক মানবসম্পদ গড়ে তোলা যা দেশের উন্নয়নের যাত্রাপথে এক চালিকাশক্তির ভূমিকা পালন করবে। এই আবেগ ও অনুভূতি নিয়ে যদি আমরা কাজ করে যাই, তাহলে কোন ভাবেই দেশের অগ্রগতি ব্যাহত হবে না। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে অর্জিত নতুন শিক্ষা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সার্বিক ভাবে কর্মক্ষেত্রে শক্তি যোগানোর পাশাপাশি তা কাজের মানও উন্নত করে তুলবে। আর এই ভাবেই আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে।
গত ১০ বছরে সরকারি কাজকর্মে কর্মীদের মানসিকতার কিভাবে পরিবর্তন ঘটেছে তা সংক্ষেপে বর্ণনাও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যে এর সুফল আজ সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারছেন। সরকারি কাজকর্মের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নিরলস প্রয়াস ও প্রচেষ্টাই একদা অসম্ভবকে আজ সম্ভব করে তুলেছে। 'মিশন কর্মযোগী' হল তার লক্ষ্য পূরণে এক সুচিন্তিত পদক্ষেপ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সারা পৃথিবীর কাছে এক বিশেষ সুযোগ নিয়ে উপস্থিত। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে তা একাধারে একটি চ্যালেঞ্জ ও সুযোগও বটে। প্রসঙ্গত দু-ধরনের এআই-এর কথা এদিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তার মধ্যে একটি হল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যটি হল অ্যাসপিরেশ্যানাল ইন্ডিয়া অর্থাৎ এক বিশেষ লক্ষ্য পূরণে আগ্রহী ভারত। এই দুইয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য ও ভারসাম্য রক্ষার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আগ্রহী ভারতের লক্ষ্য পূরণ যদি আমরা চরিতার্থ করতে যাই, তাহলে অবশ্যই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য গ্রহণ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল রূপান্তর প্রচেষ্টা এবং সমাজ মাধ্যমের কল্যাণে তথ্য প্রচার ও প্রকাশের ক্ষেত্রে এক ধরনের সমতা আমরা লক্ষ্য করতে পারি। আবার এআই-এর সাহায্যে তথ্যের প্রয়োগ ও ব্যবহারও ক্রমশ আরও সহজ হয়ে উঠেছে। এই ভাবে দেশের নাগরিকরা প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে অবহিত ও অবগত হয়ে ক্ষমতায়নের স্বাদ অনুভব ও উপলব্ধি করতে পারছেন। এই কারণে সরকারি কর্মীদের উচিত সর্বশেষ প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সম্পর্কে সর্বদাই ওয়াকিবহল থাকা। এই প্রচেষ্টায় 'মিশন কর্মযোগী' সাফল্য এনে দিতে পারে।
প্রসঙ্গত উদ্ভাবনমূলক এবং উদ্ভাবনপ্রসূত চিন্তা-ভাবনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্টার্টআপ সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং দেশের তরুণ ও যুবকদের কাছ থেকে সাহায্য ও সহায়তা গ্রহণ করে আমরা নাগরিক কেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনার একটি মঞ্চ গড়ে তুলতে পারি।
আইজিওটি মঞ্চটির বিশেষ প্রশংসা করে শ্রী মোদী বলেন, ৪০ লক্ষেরও বেশি সরকারি কর্মী তাতে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। এই মঞ্চটিতে ১৪০০-রও বেশি কোর্স চালু হয়েছে এবং দেড় কোটির মতো শংসাপত্র দানেরও ব্যবস্থা রয়েছে, যা ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মী ও আধিকারিক লাভ করেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মিশন কর্মযোগীর কাজ শুরু হয় ২০২০-র সেপ্টেম্বর মাসে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতের উপযোগী সরকারি সেবা গড়ে তোলাই ছিল এই কর্মসূচির লক্ষ্য। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে আমাদের এই প্রচেষ্টা নতুন ভাবে উৎসাহিত হবে।