প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাজধানীতে নারীশক্তি পুরস্কারপ্রাপকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। লেহ, কাশ্মীর, অন্ধ্র প্রদেশ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১৫ জন সফল মহিলা তাঁদের প্রতিকূলতা, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কিভাবে তাঁরা সাফল্য অর্জন করলেন, সে কথাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভাগ করে নিলেন।
এই সফল মহিলাদের মধ্যে রয়েছেন, ১০৩ বছর বয়সী শ্রীমতী মান কাউর, যিনি ৯৩ বছর বয়সে খেলাধুলোর জগতে প্রবেশ করেন। পোল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড মাস্টারস অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়ানশিপে ফিল্ড এন্ড ট্র্যাক বিভাগে তিনি চারটি সোনা জিতেছিলেন।
বিস্মৃত নুমধা হস্তশিল্পকে আবারো পুনরুদ্ধার করেছেন জম্মুকাশ্মীরের আরিফা জান। তিনি নুমধা হ্যান্ডিক্র্যাফটের প্রতিষ্ঠাতাও। কাশ্মীরে ১০০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই শিল্পের পুনরুদ্ধারের কথা তিনি ভাগ করে নেন।
বায়ুসেনার প্রথম মহিলা যুদ্ধ বিমান চালক মোহনা সিং, ভাবনা কান্থ এবং অবনী চতুর্বেদী তাঁদের অভিজ্ঞতা জানালেন। কেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে বায়ুসেনার যুদ্ধ বিমান মহিলাদের চালাতে দেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর এই তিনজন বায়ুসেনার যুদ্ধ বিমান চালানোর সুযোগ পান। ২০১৮ সালে তাঁরা একক ভাবে প্রথম মহিলা পাইলট হিসেবে মিগ ২১ চালান।
অন্ধ্রপ্রদেশের উপজাতি কৃষক এবং গ্রামীণ মহিলা শিল্পোদ্যোগী পাডালা ভূদেবী এবং মাশরুম চাষকে জনপ্রিয় করেছেন যিনি, বিহারের মুঙ্গেরের সেই ‘মাশরুম মহিলা’ বীণা দেবী তাঁদের কৃষিকাজ এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার অভিজ্ঞতাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভাগ করে নেন।
উত্তরপ্রদেশের কানপুর জেলার মহিলা রাজমিস্ত্রী কলাবতী দেবী জেলায় প্রকাশ্যে শৌচকর্ম বন্ধ করার উদ্যোগের চালিকাশক্তি। কানপুরের আশপাশের গ্রামগুলিতে চারহাজারের বেশি শৌচাগার নির্মাণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। খোলাস্থানে শৌচকর্মর জন্য কেমন করে রোগ ছড়ায় সেটি বোঝাতে তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলকে বুঝিয়েছেন। খোলাস্থানে শৌচকর্মের অভ্যাস কমানোর জন্য কিভাবে তিনি কানপুরের আশেপাশের গ্রামগুলিতে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরেছেন, সেই কথাই কলাবতী দেবী প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।
ঝাড়খন্ডের উৎসাহী পরিবেশবিদ চামি মুর্মু ৩০হাজারের বেশি মহিলাকে নিয়ে ২৮০০টি গোষ্ঠী তৈরি করেছেন। তিনি জানালেন , কিভাবে ফাঁকা জমিতে তিনি ২৫ লক্ষের বেশি গাছ লাগিয়েছেন।
কেরালার সাক্ষরতা অভিযানের অক্ষরলক্ষ্যম যোজনায় ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ৯৮ বছরের কাত্যায়নী আম্মা যে পরীক্ষায় পাশ করেছেন, সেটি চতুর্থ শ্রেনীর পঠনপাঠনের সমতুল। তিনি এই পরীক্ষায় ৯৮% নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তিনিও জানান, তাঁর অভিজ্ঞতার কথা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারীশক্তি পুরস্কার প্রাপকরা সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তাঁরা দেশবাসীকে অনুপ্রেরণা জোগান দেন।
তিনি বলেন, দেশ খোলাস্থানে শৌচকর্ম মুক্ত হওয়ার স্বীকৃতি , মহিলাদের ছাড়া অর্জন করতে পারত না। একইভাবে বেশি সংখ্যক মহিলার অংশগ্রহণের মাধ্যমেই অপুষ্টির সমস্যার সমাধান হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী জলসংরক্ষণের প্রসঙ্গ তোলেন এবং জানান জল জীবন মিশনকে সফল করে তুলতে হলে মহিলাদের ব্যাপক অংশীদারীত্বের প্রয়োজন।
তিনি উপস্থিত সফল মহিলাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এঁরা সারা দেশের অনুপ্রেরণার উৎস।