২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ
সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ৩০০-র বেশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের মউ স্বাক্ষরিত
ভারতীয় মেরিটাইমের নীল নকশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শিলান্যাস করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিশ্বে অর্থনৈতিক সঙ্কট সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে এবং সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন ভারত বিশ্বের প্রথম ৩টি আর্থিক শক্তিশালী দেশের একটি হয়ে উঠবে।
এসব কর্মকাণ্ডের ফলে কর্মসংস্থানে সুযোগ বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, উপকূলবর্তী এলাকায় জাহাজ চলাচল ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করে তোলা হচ্ছে এবং গত এক দশকে উপকূল এলাকায় পণ্য পরিবহন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মুম্বইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রুজ টার্মিনাল এবং বিশাখাপত্তনম ও চেন্নাইয়ের আধুনিক ক্রুজ টার্মিনালের কথা তুলে ধরেন তিনি।
ভারতের এই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগ এবং যোগদানের জন্য বিশ্বের দেশগুলির কাছে আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রী।
এই শিখর সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সিইও, প্রথম সারির ব্যবসায়ী এবং পদস্থ সরকারি আধিকারিকরা।
এ যাবৎকালের মধ্যে বৃহত্তম এবারের সামুদ্রিক সম্মেলনে ইউরোপ, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়া (মধ্য এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য ও বিমস্টেক দেশসমূহ) –র মন্ত্রীরা যোগ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে আজ মুম্বইয়ে তৃতীয় গ্লোবল মেরিটাইম ইন্ডিয়া সামিটের উদ্বোধন করেন। সেইসঙ্গে ভারতীয় মেরিটাইমের নীল নকশা ‘অমৃতকাল ভিশন ২০৪৭’- এর সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় মেরিটাইমের নীল নকশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শিলান্যাস করেন তিনি। 

 

তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় গ্লোবল মেরিটাইম ইন্ডিয়া সামিট ২০২৩-এ যোগদানকারী প্রত্যেককে স্বাগত জানান। সেইসঙ্গে ২০২১-এর শীর্ষ বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে কোভিড অতিমারীর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গোটা বিশ্ব আজ এক নতুন দিকে বাঁক নিচ্ছে। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় গোটা দুনিয়া নতুন আশাআকাঙ্খা নিয়ে ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্বে অর্থনৈতিক সঙ্কট সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে এবং সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন ভারত বিশ্বের প্রথম ৩টি আর্থিক শক্তিশালী দেশের একটি হয়ে উঠবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতায় গোটা বিশ্ব উপকৃত হয়েছে। এই ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে যে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা তুলে ধরেন শ্রী মোদী। জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে ঐতিহাসিক সহমতের ভিত্তিতে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ আর্থিক করিডর তৈরির যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তার সর্বাত্মক প্রভাবের কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের মেগা বন্দর, আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহন বন্দর, দ্বীপ উন্নয়ন, অন্তর্দেশীয় জলপথ তৈরির ফলে ব্যবসায়িক খরচ কমবে, পরিবেশের উন্নতি ঘটবে এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এটি বিনিয়োগকারীদের কাছে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার এক বড় সুযোগ বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত ভারত গড়ার লক্ষ্যে আগামী ২৫ বছরের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সরকার কাজ করে চলেছে। সেইসঙ্গে সামুদ্রিক ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করতে যে সব কাজ করা হয়েছে, তার উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি জানান, গত এক দশকে দেশের প্রধান বন্দরগুলির ক্ষমতা দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। ২০১৪ সালে বড় বড় জাহাজের যে কাজ করতে ৪২ ঘন্টা সময় লাগত,  এখন তা কমে ২৪ ঘন্টায় নেমে এসেছে। শ্রী মোদী আরও বলেন, নতুন নতুন রাস্তা তৈরির ফলে বন্দরগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে এবং সাগরমালা প্রকল্পের মাধ্যমে উপকূল এলাকার পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে কর্মসংস্থানে সুযোগ বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমৃদ্ধির জন্য বন্দর ও প্রগতির জন্য বন্দর’ এই দৃষ্টিভঙ্গীকে সামনে রেখে তৃণমূল স্তরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনছে সরকার। পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ করে তোলার মধ্যে দিয়ে আর্থিক উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, উপকূলবর্তী এলাকায় জাহাজ চলাচল ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করে তোলা হচ্ছে এবং গত এক দশকে উপকূল এলাকায় পণ্য পরিবহন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। 
জাহাজ নির্মাণ এবং মেরামতির ক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ নজর দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আইএনএস বিক্রন্ত ভারতের সক্ষমতার প্রমাণ দিচ্ছে। তিনি জানান, “আগামী দশকে জাহাজ প্রস্তুতকারী বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিতে চলেছে ভারত। আমাদের মন্ত্র হল ‘মেক ইন ইন্ডিয়া – মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’”। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। 

 

সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ভারতে বড় বড় সংস্থাগুলির প্রবেশের পথ খুলে দিতে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে আমেদাবাদের গিফট সিটির কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ৪টি বড় আন্তর্জাতিক জাহাজ লিজদানকারী সংস্থা গিফট-এ তাদের নাম নথিভুক্ত করেছে। অন্যান্য লিজদানকারী সংস্থাকেও এতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জানান শ্রী মোদী।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের উপকূল এলাকার বিশাল ব্যাপ্তি রয়েছে। রয়েছে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, যা সামুদ্রিক পর্যটনের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে। তিনি বলেন, ভারতে ৫ হাজার বছরের পুরনো বন্দর রয়েছে। মুম্বইয়ের কাছে লোথালে জাতীয় মেরিটাইম হেরিটেজ তৈরি করা হচ্ছে। 

 

সামুদ্রিক পর্যটনকে উৎসাহ দিতে ভারতে নদী পথে দীর্ঘতম সফরের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে মুম্বইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রুজ টার্মিনাল এবং বিশাখাপত্তনম ও চেন্নাইয়ের আধুনিক ক্রুজ টার্মিনালের কথা তুলে ধরেন তিনি। 

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের মুষ্টিমেয় দেশের মধ্যে ভারত হল এমন একটি দেশ, যেখানে উন্নয়ন, জনসংখ্যা, গণতন্ত্র এবং চাহিদা রয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, “ভারত যখন ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার দিকে এগোচ্ছে, তখন এটাই হল আপনাদের কাছে সুবর্ণ সুযোগ।” ভারতের এই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগ এবং যোগদানের জন্য বিশ্বের দেশগুলির কাছে আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ এবং জলপথ মন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রেক্ষাপট :
২০১৬ সালে মুম্বইয়ে প্রথম মেরিটাইম শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালে ভার্চুয়াল মাধ্যমে দ্বিতীয় মেরিটাইম শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 
এ যাবৎকালের মধ্যে বৃহত্তম এবারের সামুদ্রিক সম্মেলনে ইউরোপ, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়া (মধ্য এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য ও বিমস্টেক দেশসমূহ) –র মন্ত্রীরা যোগ দিয়েছেন। এই শিখর সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সিইও, প্রথম সারির ব্যবসায়ী এবং পদস্থ সরকারি আধিকারিকরা। 

 

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Bad loans decline: Banks’ gross NPA ratio declines to 13-year low of 2.5% at September end, says RBI report

Media Coverage

Bad loans decline: Banks’ gross NPA ratio declines to 13-year low of 2.5% at September end, says RBI report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 27 ডিসেম্বর 2024
December 27, 2024
২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ
সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ৩০০-র বেশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের মউ স্বাক্ষরিত
ভারতীয় মেরিটাইমের নীল নকশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শিলান্যাস করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিশ্বে অর্থনৈতিক সঙ্কট সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে এবং সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন ভারত বিশ্বের প্রথম ৩টি আর্থিক শক্তিশালী দেশের একটি হয়ে উঠবে।
এসব কর্মকাণ্ডের ফলে কর্মসংস্থানে সুযোগ বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, উপকূলবর্তী এলাকায় জাহাজ চলাচল ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করে তোলা হচ্ছে এবং গত এক দশকে উপকূল এলাকায় পণ্য পরিবহন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মুম্বইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রুজ টার্মিনাল এবং বিশাখাপত্তনম ও চেন্নাইয়ের আধুনিক ক্রুজ টার্মিনালের কথা তুলে ধরেন তিনি।
ভারতের এই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগ এবং যোগদানের জন্য বিশ্বের দেশগুলির কাছে আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রী।
এই শিখর সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সিইও, প্রথম সারির ব্যবসায়ী এবং পদস্থ সরকারি আধিকারিকরা।
এ যাবৎকালের মধ্যে বৃহত্তম এবারের সামুদ্রিক সম্মেলনে ইউরোপ, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়া (মধ্য এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য ও বিমস্টেক দেশসমূহ) –র মন্ত্রীরা যোগ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে আজ মুম্বইয়ে তৃতীয় গ্লোবল মেরিটাইম ইন্ডিয়া সামিটের উদ্বোধন করেন। সেইসঙ্গে ভারতীয় মেরিটাইমের নীল নকশা ‘অমৃতকাল ভিশন ২০৪৭’- এর সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় মেরিটাইমের নীল নকশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও শিলান্যাস করেন তিনি। 

 

তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় গ্লোবল মেরিটাইম ইন্ডিয়া সামিট ২০২৩-এ যোগদানকারী প্রত্যেককে স্বাগত জানান। সেইসঙ্গে ২০২১-এর শীর্ষ বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে কোভিড অতিমারীর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গোটা বিশ্ব আজ এক নতুন দিকে বাঁক নিচ্ছে। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় গোটা দুনিয়া নতুন আশাআকাঙ্খা নিয়ে ভারতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্বে অর্থনৈতিক সঙ্কট সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে এবং সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন ভারত বিশ্বের প্রথম ৩টি আর্থিক শক্তিশালী দেশের একটি হয়ে উঠবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতায় গোটা বিশ্ব উপকৃত হয়েছে। এই ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে যে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা তুলে ধরেন শ্রী মোদী। জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে ঐতিহাসিক সহমতের ভিত্তিতে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ আর্থিক করিডর তৈরির যে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তার সর্বাত্মক প্রভাবের কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের মেগা বন্দর, আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহন বন্দর, দ্বীপ উন্নয়ন, অন্তর্দেশীয় জলপথ তৈরির ফলে ব্যবসায়িক খরচ কমবে, পরিবেশের উন্নতি ঘটবে এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এটি বিনিয়োগকারীদের কাছে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার এক বড় সুযোগ বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত ভারত গড়ার লক্ষ্যে আগামী ২৫ বছরের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সরকার কাজ করে চলেছে। সেইসঙ্গে সামুদ্রিক ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করতে যে সব কাজ করা হয়েছে, তার উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি জানান, গত এক দশকে দেশের প্রধান বন্দরগুলির ক্ষমতা দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। ২০১৪ সালে বড় বড় জাহাজের যে কাজ করতে ৪২ ঘন্টা সময় লাগত,  এখন তা কমে ২৪ ঘন্টায় নেমে এসেছে। শ্রী মোদী আরও বলেন, নতুন নতুন রাস্তা তৈরির ফলে বন্দরগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে এবং সাগরমালা প্রকল্পের মাধ্যমে উপকূল এলাকার পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে কর্মসংস্থানে সুযোগ বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রা অনেক সহজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমৃদ্ধির জন্য বন্দর ও প্রগতির জন্য বন্দর’ এই দৃষ্টিভঙ্গীকে সামনে রেখে তৃণমূল স্তরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনছে সরকার। পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ করে তোলার মধ্যে দিয়ে আর্থিক উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, উপকূলবর্তী এলাকায় জাহাজ চলাচল ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করে তোলা হচ্ছে এবং গত এক দশকে উপকূল এলাকায় পণ্য পরিবহন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। 
জাহাজ নির্মাণ এবং মেরামতির ক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ নজর দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আইএনএস বিক্রন্ত ভারতের সক্ষমতার প্রমাণ দিচ্ছে। তিনি জানান, “আগামী দশকে জাহাজ প্রস্তুতকারী বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিতে চলেছে ভারত। আমাদের মন্ত্র হল ‘মেক ইন ইন্ডিয়া – মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’”। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। 

 

সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ভারতে বড় বড় সংস্থাগুলির প্রবেশের পথ খুলে দিতে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে আমেদাবাদের গিফট সিটির কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ৪টি বড় আন্তর্জাতিক জাহাজ লিজদানকারী সংস্থা গিফট-এ তাদের নাম নথিভুক্ত করেছে। অন্যান্য লিজদানকারী সংস্থাকেও এতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জানান শ্রী মোদী।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের উপকূল এলাকার বিশাল ব্যাপ্তি রয়েছে। রয়েছে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, যা সামুদ্রিক পর্যটনের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে। তিনি বলেন, ভারতে ৫ হাজার বছরের পুরনো বন্দর রয়েছে। মুম্বইয়ের কাছে লোথালে জাতীয় মেরিটাইম হেরিটেজ তৈরি করা হচ্ছে। 

 

সামুদ্রিক পর্যটনকে উৎসাহ দিতে ভারতে নদী পথে দীর্ঘতম সফরের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে মুম্বইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রুজ টার্মিনাল এবং বিশাখাপত্তনম ও চেন্নাইয়ের আধুনিক ক্রুজ টার্মিনালের কথা তুলে ধরেন তিনি। 

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের মুষ্টিমেয় দেশের মধ্যে ভারত হল এমন একটি দেশ, যেখানে উন্নয়ন, জনসংখ্যা, গণতন্ত্র এবং চাহিদা রয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, “ভারত যখন ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার দিকে এগোচ্ছে, তখন এটাই হল আপনাদের কাছে সুবর্ণ সুযোগ।” ভারতের এই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগ এবং যোগদানের জন্য বিশ্বের দেশগুলির কাছে আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ এবং জলপথ মন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রেক্ষাপট :
২০১৬ সালে মুম্বইয়ে প্রথম মেরিটাইম শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালে ভার্চুয়াল মাধ্যমে দ্বিতীয় মেরিটাইম শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 
এ যাবৎকালের মধ্যে বৃহত্তম এবারের সামুদ্রিক সম্মেলনে ইউরোপ, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং এশিয়া (মধ্য এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য ও বিমস্টেক দেশসমূহ) –র মন্ত্রীরা যোগ দিয়েছেন। এই শিখর সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সিইও, প্রথম সারির ব্যবসায়ী এবং পদস্থ সরকারি আধিকারিকরা। 

 

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন