প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের সুরাটে সুরাট হীরা বাজারের উদ্বোধন করেছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী পঞ্চতত্ত্ব উদ্যানটি ঘুরে দেখেন। সুরাট হীরা বাজার ও সবুজ ভবন ঘুরে দেখেন এবং দর্শনার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট খাতায় স্বাক্ষর করেন। এই অনুষ্ঠানের আগে প্রধানমন্ত্রী সুরাট বিমানবন্দরে একটি নতুন টার্মিনাল ভবনেরও উদ্বোধন করেন।
সভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরাট শহরের সৌন্দর্য্যের সঙ্গে যুক্ত হ’ল হীরার মতো অলঙ্কারের বিশেষত্ব। ‘এ কোনও সাধারণ হীরা নয়, এ হ’ল বিশ্বের সবচেয়ে উন্নতমানের হীরা’, বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, সুরাট হীরা বাজারের আয়তন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভবনের সৌন্দর্য্যকেও হার মানায়। প্রধানমন্ত্রী এই এত বড় পদক্ষেপকে সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করার কৃতিত্ব শ্রী বল্লভভাই লাখানী ও শ্রী লালজীভাই প্যাটেলের বিনম্র স্বভাব এবং সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলার চিন্তাভাবনাকে দেন। তিনি বলেন, “সুরাট হীরা বাজার এখন দুনিয়ার হীরা বাজারগুলির সঙ্গে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠবে এবং দেশের গৌরব বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে”। শ্রী মোদী বলেন, “সুরাট হীরা বাজার, ভারতীয় নক্শা, কারিগর, এই কাজের সঙ্গে যুক্ত সামগ্রী এবং যাবতীয় চিন্তাভাবনাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে। এই ভবন নতুন ভারতের ক্ষমতা ও সংকল্পের প্রতীক”। শ্রী মোদী সুরাট হীরা বাজারের উদ্বোধন হওয়ায় হীরা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সকলকে এবং সুরাট শহর, গুজরাট তথা ভারতের জনগণকে অভিনন্দন জানান। এই অনুষ্ঠানের আগে প্রধানমন্ত্রী সুরাট হীরা বাজার দেখতে যান। তিনি ভবনটির নির্মাণ শৈলীর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিশ্বের দরবারে এই ভবনটি বিশেষ উদাহরণ থাকবে বলেও মন্তব্য করেন। শ্রী মোদী বলেন, সদর্থক চিন্তাভাবনা ও কলাকুশলের এক অনন্য নিদর্শন এই ভবন। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের জন্য এই ভবনটি বিশেষ শিক্ষনীয়।
সুরাটের জন্য অন্য দুই উপহার সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সুরাটে নতুন বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধনের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। সভায় উপস্থিত জনগণ বহু প্রতীক্ষিত এই দাবী পূরণ হওয়ায় তুমুল উল্লাসের সঙ্গে করতালি দিয়ে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী সুরাট থেকে দুবাই বিমান পরিষেবা শুরু হওয়ার কথা এবং খুব শীঘ্রই সুরাট – হংকং বিমান পরিষেবা চালু হবে বলে জানান। তিনি বলেন, গুজরাটে এখন সুরাট সহ তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে ।
সুরাট শহরের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কের ও নানা বিষয়ে শিক্ষার অনুভবের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ‘সবকা সাথ, সবকা প্রয়াস’ – এর ভাবনা। শ্রী মোদী বলেন, “সুরাটের মাটি এই শহরকে অন্যান্য শহর থেকে আলাদা করে তোলে”। তিনি বলেন, এই মাটিতে উৎপন্ন হওয়া কার্পাস গুণগত দিক থেকে সেরা। তিনি বলেন, ব্রিটিশরা যখন প্রথম ভারতে এসেছিলেন, তখন সুরাট শহরের সৌন্দর্য্য তাঁদের আকর্ষিত করেছিল।
সুরাট যখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র ছিল, সেই সময়ের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সেই সময়ে সুরাট বন্দরে ৮৪টি দেশের জাহাজ চলাচল করতো। এখন থেকে সুরাট বন্দরে ১২৫টি দেশের জাহাজ চলাচল করবে”। সুরাট শহরে বানভাসি পরিস্থিতির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। খুব শীঘ্রই সুরাট বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় ১০টি শহরের তালিকায় উঠে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সুরাটের উন্নতমানের স্ট্রিট-ফুড, স্বচ্ছতা এবং কৌশল বিকাশের কথাও উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। সুরাট এর আগে সান সিটি হিসেবে পরিচিত ছিল বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই শহরের জনগণের কঠোর পরিশ্রম এখন এই শহরকে ডায়মন্ড সিটি, সিল্ক সিটি এবং ব্রিজ সিটিতে বদলে দিয়েছে। তিনি বলেন, “বর্তমানে সুরাট লক্ষ লক্ষ যুবকের স্বপ্নের শহর”। তিনি তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সুরাটের উন্নয়নের কথাও উল্লেখ করে বলেন, সুরাটের মতো আধুনিক শহরে হীরা বাজার তৈরি হওয়া এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সুরাটের জনগণ মোদীর গ্যারান্টির কথা অনেক আগে থেকেই জানেন। তিনি বলেন, হীরা বাজার সুরাটের জনগণের জন্য মোদীর গ্যারান্টির এক উদাহরণ। হীরা ব্যবসায় যুক্ত জনগণের সঙ্গে তাঁর আলাপচারিতা এবং দিল্লিতে ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক হীরা সম্মেলনের কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, উদ্যোগ ক্ষেত্রের জন্য হীরা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরাট হীরা বাজার এক বিশাল হীরা কেন্দ্রের সৃষ্টি করেছে। এর ফলে, বাণিজ্যের বিভিন্ন দিক উন্মোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, “কারিগর ও ব্যবসায়ী সহ সকলের জন্যই সুরাট হীরা বাজার বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। এই বাজারে আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কিং এবং সুরক্ষিত গোল্ডের মতো সুবিধা রয়েছে। এখানে ১.৫ লক্ষের কাছাকাছি নতুন কর্মসংস্থান হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সুরাটের ক্ষমতার কথা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থায় ভারতের দশম স্থান থেকে পঞ্চম স্থানে পৌঁছে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এখন মোদী গ্যারান্টি দিচ্ছে যে, এখন ভারত শীর্ষ স্থানীয় তিনটি অর্থ ব্যবস্থার দেশের তালিকায় উঠে আসবে”। শ্রী মোদী বলেন, সরকারের কাছে আগামী ২৫ বছরের পথদিশা রয়েছে। ৫ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যবস্থা ও ১০ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যবস্থার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী রপ্তানী বাড়ানোর প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেন, এর সঙ্গে হীরা ব্যবসার বড় ভূমিকা রয়েছে। উদ্যোগ ক্ষেত্রের বিশিষ্ট জনদের দেশের রপ্তানী বাড়াতে সুরাটের ভূমিকা আরও বিস্তৃত করার বিষয়ে পন্থা-পদ্ধতি খুঁজে দেখার আহ্বান জানান। হীরার গহনা ও রূপার গহনা রপ্তানীর ক্ষেত্রে ভারত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক রত্নালঙ্কার রপ্তানী ক্ষেত্রে ভারতের অংশীদারিত্ব ৩.৫ শতাংশ। এই ক্ষেত্রের উন্নয়নে সরকারের পাশে থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সুরাট যদি সিদ্ধান্ত নেয় তবে রত্নালঙ্কার রপ্তানী ক্ষেত্রে আমাদের অংশীদারিত্ব দুই অঙ্কে পৌঁছতে পারবে”। তিনি এই ক্ষেত্রের রপ্তানীর বিষয়টিকে উৎসাহ দিতে নক্শার পেটেন্ট নেওয়ার উপরও জোর দেন। ভারতের প্রতি বিশ্বের সদর্থক মানসিকতা এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ব্র্যান্ডকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রী মোদী বলেন, সরকার শহরে আধুনিক পরিকাঠামো তৈরির উপর জোর দিচ্ছে। সুরাটের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যও নানারকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সুরাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেট্রো রেল পরিষেবা সহ বিভিন্ন বন্দরগুলির কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সুরাট ক্রমাগত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। বিশ্বের অনেক কম শহরই এমন আন্তর্জাতিক পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। তিনি বুলেট ট্রেন পরিযোজনার সঙ্গে সুরাটের পরিবহণ ব্যবস্থাপনা ও ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেড করিডরে চলা কাজের কথা উল্লেখ করেন। উত্তর ও পূর্ব ভারতের জন্য সুরাটের এই রেল সুবিধা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী শহরের আধুনিকতম পরিবহণ ব্যবস্থার সুবিধা গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “যদি সুরাট উন্নত হয় তবে গুজরাটের উন্নতি হবে আর গুজরাট উন্নত হলে দেশ উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে”। পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রী আগামী মাসে আয়োজিত হতে চলা ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শিখর সম্মেলনের জন্য তাঁর শুভকামনা জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রত, মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র প্যাটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী মনসুখ মান্ডব্য এবং শ্রী পুরুষোত্তম রুপালা। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী দর্শনা জারদোস, সাংসদ শ্রী সি আর পাটিল, সুরাট হীরা বাজারের সভাপতি শ্রী বল্লভভাই লাখানী এবং ধর্মেনন্দন হীরা লিমিটেড – এর শ্রী লালজীভাই প্যাটেলও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রেক্ষাপট: সুরাট হীরা বাজার আন্তর্জাতিক হীরা ও রত্নালঙ্কার ব্যবসার জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও আধুনিক কেন্দ্র হয়ে উঠছে। এখানে কাঁচা ও পালিশ করা হীরার পাশাপাশি গহনার ব্যবসার জন্য আন্তর্জাতিক কেন্দ্র গড়ে উঠবে। এই বাজারে আমদানী – রপ্তানীর জন্য অত্যাধুনিক ‘সীমাশুল্ক’ প্রদান ব্যবস্থাপনার কক্ষ থাকছে। এছাড়াও, খুচরো ব্যবসার জন্য থাকবে বিশেষ সুবিধা যুক্ত মল সহ আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কিং – এর সুবিধা। এই বাজারে থাকবে সুরক্ষিত গোল্ডের সুবিধাও। সবমিলিয়ে এই হীরা বাজার ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। বিশ্ব দরবারে বিশেষ গুরুত্ব পাবে সুরাটের এই হীরা বাজার।
आज सूरत शहर की भव्यता में एक और डायमंड जुड़ गया है।
— PMO India (@PMOIndia) December 17, 2023
और डायमंड भी छोटा-मोटा नहीं है बल्कि ये तो दुनिया में सर्वश्रेष्ठ है। pic.twitter.com/To84moPzeX
The new Terminal Building of Surat Airport has been inaugurated today. With this, Surat Airport has also got the status of international airport. pic.twitter.com/yupor7oe5K
— PMO India (@PMOIndia) December 17, 2023
कामगार हो, कारीगर हो, व्यापारी हो, सबके लिए सूरत Diamond Bourse वन स्टॉप सेंटर है। pic.twitter.com/fDXVmKGwRR
— PMO India (@PMOIndia) December 17, 2023
Today, the global discourse is centered around India.
— PMO India (@PMOIndia) December 17, 2023
'Made in India' has become an influential brand. pic.twitter.com/lp6zslx5Xu