ভারতের আড়াই কোটি ক্ষুদ্র কৃষক বর্তমানে সরাসরি বাজরা শস্য উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের জমির পরিমাণ খুবই অল্প এবং জলবায়ুজনিত সমস্যা তাঁরাও ভোগ করে থাকেন। কিন্তু, ভারতের ‘বাজরা মিশন’ কর্মসূচি এই আড়াই কোটি কৃষকের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে।
আজ নয়াদিল্লির পুসায় আইএআরআই ক্যাম্পাসের এনএএসসি কমপ্লেক্সের সুব্রহ্মনিয়ম হল-এ বিশ্ব বাজরা (শ্রী অন্ন) সম্মেলনের উদ্বোধনকালে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান যে স্বাধীনতা-উত্তরকালে এই প্রথমবার সরকার আড়াই কোটি ক্ষুদ্র কৃষক যাতে বাজরা উৎপাদন করতে পারেন তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বাজরা আজ আর শুধু খেত-খামারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, প্রক্রিয়াকরণ এবং প্যাকেটজাত করার পর তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন বাজার ও বিপণিতে। শ্রী অন্ন-এর বিপণন ব্যবস্থা যখন আরও প্রসার লাভ করবে, তখন এই আড়াই কোটি ক্ষুদ্র কৃষকের আয় ও উপার্জনও অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে, চাঙ্গা হয়ে উঠবে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি।
শ্রী মোদী বলেন, শ্রী অন্ন-এর উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন প্রচেষ্টার ফলে দেশে বর্তমানে ৫০০-রও বেশি স্টার্ট-আপ সংস্থা গড়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, গত কয়েক বছরে প্রসার লাভ করেছে অনেকগুলি এফপিও। একইসঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে এমন একটি যোগান শৃঙ্খল যার আওতায় ছোট ছোট গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা বাজরা জাতীয় শস্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণের পর তা পৌঁছে দিতে পারছেন বিভিন্ন মল ও সুপার মার্কেটে।
ভারতের জি-২০ সভাপতিত্বকালে এক ‘অভিন্ন পৃথিবী, এক অভিন্ন পরিবার তথা এক অভিন্ন ভবিষ্যৎ’-এর যে থিম বা আদর্শকে গ্রহণ করা হয়েছে তার সার্থক প্রতিফলন ঘটেছে আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষের কর্মপ্রচেষ্টার মধ্যেও। কারণ, ভারত কখনই বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রতি তার কর্তব্যের কথা বিস্মৃত হয়নি বরং, সমগ্র মানবজাতির সেবার লক্ষ্যে ভারত সঙ্কল্পবদ্ধ। এই প্রসঙ্গে যোগাভ্যাস ও যোগচর্চার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগচর্চার সুফল যাতে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া যায় তা সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের এক বিশেষ অঙ্গ হিসেবে। বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে যোগচর্চার প্রসার ঘটেছে। শুধু তাই নয়, ভারতের পরম্পরাগত চিকিৎসাপদ্ধতি আয়ুর্বেদকে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশ। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার ওপর আলোকপাত করে শ্রী মোদী বলেন যে ভারতের আহ্বানে এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশ। কারণ আন্তর্জাতিক সৌর জোটের লক্ষ্যই হল পৃথিবীকে একটি নিরন্তর বাসযোগ্য গ্রহ করে তোলার। ‘এলআইএফই মিশন’ অথবা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত লক্ষ্য পূরণ যাতে নির্দিষ্ট সময়সীমার আগেই সম্পূর্ণ করা যায় সেই উদ্দেশ্যে ভারত তার ঐতিহ্য ও আদর্শ থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করতে আগ্রহী। এই কারণে সামাজিক পরিবর্তন এবং বিশ্বকল্যাণের মতো বিষয়গুলিকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। বাজরা আন্দোলন হল এমনই একটি বিষয় যার মধ্যে ভারতের এই লক্ষ্য ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটতে চলেছে।
শ্রী অন্ন, অর্থাৎ জোয়ার, বাজরা, রাগি, সামা, কঙ্গনি, চীনা, কোড়ন, কাটকি এবং কুট্টু ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন সুলভ। বহু শতাব্দী ধরেই বাজরা জাতীয় খাদ্যশস্য ভারতবাসীর জীবনশৈলীর এক বিশেষ অঙ্গ হয়ে উঠেছে। শ্রী অন্ন-এর উৎপাদন সম্পর্কিত কৃষি পদ্ধতিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার মানসিকতার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এজন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা গড়ে তোলার দায়িত্ব রয়েছে ভারতের মিত্র দেশগুলির। এছাড়াও, শ্রী অন্ন-এর উৎপাদন ও বিপণন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একটি নতুন যোগান শৃঙ্খল গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আরও বলেন যে বাজরা হল এমন একটি শস্যবিশেষ যার উৎপাদন যে কোনও ধরনের জলবায়ুজনিত পরিস্থিতিতেই সম্ভব। এমনকি, প্রতিকূল আবহাওয়াতেও বাজরার উৎপাদন কোনভাবেই বাধাপ্রাপ্ত হয় না। যে সমস্ত অঞ্চলে জলের সঙ্কট রয়েছে সেখানেও এর পর্যাপ্ত উৎপাদন সম্ভব। কারণ, বাজরা উৎপাদনের ক্ষেত্রে জলের প্রয়োজন হয় অন্যান্য শস্যের তুলনায় অনেকটাই কম। এমনকি, কোনও রাসায়নিক সার ছাড়াই শুধুমাত্র প্রাকৃতিক পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে বাজরা উৎপাদন সম্ভব। বাজরা একদিকে যেমন মানব শরীরে পুষ্টির যোগান দেয়, অন্যদিকে তেমনই এর উৎপাদনের মাধ্যমে মাটির স্বাস্থ্যরক্ষাও সম্ভব।
বর্তমান বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তা তথা খাদ্য সঙ্কট পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে বিশ্বের দক্ষিণ প্রান্তে দরিদ্র মানুষদের জন্য খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার অন্যদিকে, বিশ্বের উত্তরাংশে খাদ্যাভ্যাসের কারণে রোগ-ব্যধির মতো সমস্যাও একটি চিন্তার বিষয়। অর্থাৎ, আমাদের সামনে একদিকে যেমন রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তার মতো একটি সমস্যা, অন্যদিকে আবার তেমনই রয়েছে খাদ্যাভ্যাসজনিত আরও একটি চ্যালেঞ্জ। শস্য উৎপাদনে অত্যধিক পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহারের কুফল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, এই ধরনের সমস্যাগুলির নিরসনের একমাত্র উপায় হল শ্রী অন্ন-এর ব্যাপক উৎপাদন ও ব্যবহার। কারণ, এই শস্যটির উৎপাদন যেমন সহজ, এর উৎপাদন ব্যয়ও তেমনই তুলনামূলকভাবে যথেষ্টই কম। শুধু তাই নয়, অন্যান্য শস্য উৎপাদনের তুলনায় খুব দ্রুত এর উৎপাদন সম্ভব।
শ্রী মোদী বলেন, শ্রী অন্ন-এর মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত খাদ্যগুণ যা মানুষের শরীরে উপযুক্ত পুষ্টির যোগান দিতে পারে। এর মধ্যে ফাইবারের যে উপাদান রয়েছে তা মানুষের শরীর ও স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। শ্রী অন্ন-এর স্বাদও যথেষ্ট ভালো এবং জীবনশৈলীর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের রোগ-ব্যধিও তা প্রতিরোধ করতে পারে। এক কথায়, বাজরা শস্য হল মানব জীবনের এমনই এক খাদ্যাভ্যাস যার সুফল ও সম্ভাবনা রয়েছে অফুরন্ত। কিন্তু বর্তমানে ভারতের খাদ্য তালিকায় শ্রী অন্ন-এর যোগান মাত্র ৫-৬ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে শ্রী অন্ন যাতে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে নিতে পারে সেজন্য বিজ্ঞানী ও কৃষি বিশেষজ্ঞদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বাজরার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের খাদ্য তালিকায় তার সংযোজন নিরন্তর ও সুনিশ্চিত করে তোলার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত তিনি জানান যে ভারত একটি পিএলআই কর্মসূচিরও সূচনা করেছে যার মাধ্যমে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে আরও চাঙ্গা করে তোলা যায়। এই কর্মসূচির আওতায় বাজরা শস্যের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণনগত সুযোগ-সুবিধা যাতে সর্বোচ্চ মাত্রায় পাওয়া যেতে পারে তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এজন্য বাজরা শস্যের উৎপাদন ও বিপণনের কাজে আরও বহু সংস্থাকেই এগিয়ে আসতে হবে। দেশের বহু রাজ্যই যে সরকারি বন্টন ব্যবস্থায় শ্রী অন্ন-কে বেছে নিয়েছে তাতে আনন্দ প্রকাশ করে শ্রী মোদী বলেন যে বাকি রাজ্যগুলিরও এই পথ অনুসরণ করা উচিত। শুধু তাই নয়, স্কুলের ছেলে-মেয়েদের মিড-ডে মিলে শ্রী অন্ন অন্তর্ভুক্ত করারও প্রস্তাব দেন তিনি। শ্রী অন্ন থেকে মুখরোচক খাদ্য প্রস্তুত সম্ভব, সেই কারণে স্বাদু আহার গ্রহণের পাশাপাশি অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের যথাযথ পুষ্টিবিধানও সম্ভব।
আজকের সম্মেলনে আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দ এই উপলক্ষে তাঁদের বার্তাও অংশগ্রহণকারী দেশগুলির কাছে পৌঁছে দেন। ইথিওপিয়ার প্রেসিডেন্ট মাননীয় সাহলে-ওয়ার্ক জিওয়ে এই ধরনের একটি বিষয়ের ওপর সম্মেলন আয়োজনের জন্য ভারতকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বর্তমান সময়কালে বাজরা জাতীয় খাদ্যশস্য সাধারণ মানুষকে একটি সুলভ ও পুষ্টিকর খাদ্যের যোগান দিতে পারে। আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলে ইথিওপিয়া হল এমন একটি দেশ যেখানে বাজরা উৎপাদিত হয় বেশ ভালো পরিমাণেই। বাজরা সম্পর্কে প্রচারের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি এই ধরনের সম্মেলন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যাখ্যা করেন। কোন ধরনের জলবায়ুজনিত পরিস্থিতিতে কোন প্রজাতির বাজরা চাষ যে ভালো ফল দিতে পারে, সে সম্পর্কে সমীক্ষা ও গবেষণার ওপরও জোর দেন তিনি।
অন্যদিকে, গায়ানার প্রসিডেন্ট মাননীয় ডঃ মহম্মদ ইরফান আলি তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন যে বাজরার প্রচার ও প্রসারে ভারত বর্তমানে বিশ্বে নেতৃত্বের স্থানে রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাজরা উৎপাদন সম্পর্কে ভারত তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরেছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির কাছে। নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠতে পারে, সেকথারও উল্লেখ করেন তিনি। ডঃ মহম্মদ ইরফান আলি আরও বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গায়ানা বাজরা জাতীয় খাদ্যশস্যকে একটি মূল উপাদান রূপে চিহ্নিত করেছে। ২০০ একর জমিতে বাজরা উৎপাদনের জন্য ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে তাঁর দেশ কাজ করে যেতে আগ্রহী বলে তিনি সম্মেলনে জানান। এ বিষয়ে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও শলাপরামর্শ ভারতের কাছ থেকে গ্রহণ করতে গায়ানা প্রস্তুত বলেও তিনি প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন।
সমাবেশে ভাষণদানকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিশ্ব বাজরা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দেশকেই অভিনন্দিত করে বলেন যে এই ধরনের কর্মসূচির আয়োজনের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র বিশ্বকল্যাণই নয়, একইসঙ্গে বিশ্বকল্যাণে ভারতের দায়িত্বশীলতা ও দায়বদ্ধতাকেও তা চিহ্নিত করে। ভারতের নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলে বর্তমান বছরটি ‘আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ’ রূপে রাষ্ট্রসঙ্ঘের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ‘আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ’-এ ভারতের অভিযান কর্মসূচিটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করেন তিনি।
বাজরার চাষ ও উৎপাদন, বাজরা অর্থনীতি, স্বাস্থ্যের জন্য বাজরার উপকারিতা এবং কৃষকদের আয় ও উপার্জনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে গ্রাম পঞ্চায়েত, কৃষিকেন্দ্র, স্কুল-কলেজ এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পক্ষ থেকে সমীক্ষা ও গবেষণার আয়োজন করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান যে আজকের এই সম্মেলনে ৭৫ লক্ষেরও বেশি কৃষক ভার্চ্যুয়াল মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন। এই উপলক্ষে একটি স্মারক মুদ্রা ও স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশের ঘটনার কথাও অংশগ্রহণকারীদের কাছে উল্লেখ করেন তিনি। একইসঙ্গে, বাজরার মান সম্পর্কিত একটি বিশেষ গ্রন্থ প্রকাশের ঘটনা সম্পর্কেও সকলকে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিশেষ আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করেন যে ভারতের কৃষি গবেষণা পরিষদ (আইসিএআর)-এর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মিলেট রিসার্চকে বিশ্বের একটি উৎকর্ষকেন্দ্র রূপে ঘোষণা করা হয়েছে।
এই সম্মেলন উপলক্ষে একটি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়। সেটি ঘুরে দেখার জন্য আগত প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী। বাজরা উৎপাদন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়কে ঐ প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে। বাজরা উৎপাদন ও বিপণন সম্পর্কিত ক্ষেত্রে তরুণ ও যুবকরা যেভাবে স্টার্ট-আপ সংস্থা গড়ে তুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাতে স্পষ্টতই আনন্দ প্রকাশ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, বাজরার উৎপাদন, বিপণন ও প্রসারে ভারতের অঙ্গীকার ও দায়বদ্ধতাই এই ঘটনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
বাজরা জাতীয় খাদ্যশস্যকে একটি বিশেষ ব্র্যান্ড নামে ভারত চিহ্নিত করেছে বলেও উল্লেখ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, বাজরা শস্যের নামকরণ করা হয়েছে ‘শ্রী অন্ন’ যা শুধুমাত্র উৎপাদন ও আহার্য হিসেবে গ্রহণ করার মধ্যেই আজ আর সীমাবদ্ধ নেই বরং, শ্রী অন্ন বর্তমানে ভারতের সার্বিক বিকাশ ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ‘গ্রাম’ এবং ‘দরিদ্র জনসাধারণ’ – এই দুটি কথার তাৎপর্য মিশে রয়েছে ঐ খাদ্যশস্য উৎপাদনের সঙ্গে। শ্রী অন্ন-এর ব্যাপক উৎপাদন ও বিপণন যে দরিদ্র কৃষকের ঘরে সমৃদ্ধি নিয়ে আসতে চলেছে, একথাও বিশেষ আশার সঙ্গে ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমস্যার মোকাবিলায় শ্রী অন্ন-এর উৎপাদন যে এক বিশেষ হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে, একথাও দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেন তিনি।
শ্রী অন্ন-এর উৎপাদন ও বিপণন প্রচেষ্টাকে বিশ্ব আন্দোলনের রূপ দিতে তাঁর সরকার যে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, একথার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান যে ২০১৮ সালে বাজরাকে একটি পুষ্টিকর খাদ্যশস্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শুধু তাই নয়, এর উৎপাদন ও উপকারিতা সম্পর্কে কৃষকদের কাছে সচেতনতার বার্তাও পৌঁছে দেওয়া হয়। দেশের ১২ থেকে ১৩টির মতো রাজ্যে প্রাথমিকভাবে এই শস্যটি উৎপাদন করা হয়। এক সময় ব্যক্তিপিছু বাজরা ব্যবহারের সর্বোচ্চ মাসিক পরিমাণ ছিল ৩ কিলোগ্রামের মতো। কিন্তু বর্তমানে প্রতি মাসে ব্যক্তিপিছু এর ব্যবহারের মাত্রা উন্নীত হয়েছে ১৪ কিলোগ্রামে। শুধু তাই নয়, বাজরা জাতীয় খাদ্যশস্যের বিপণনও বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ শতাংশের মতো। সোশ্যাল মিডিয়ার চ্যানেলগুলি ছাড়াও মিলেট কাফেগুলি থেকে বাজরা জাতীয় শস্য থেকে আহার্য প্রস্তুতের বিভিন্ন রেসিপি সকলের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। ‘একটি জেলা, একটি উৎপাদন’ – এই অভিযানের আওতায় বাজরা উৎপাদিত হচ্ছে দেশের প্রায় ১৯টির মতো জেলায়।
আজকের সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রী ডঃ সুব্রহ্মনিয়ম জয়শঙ্কর, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. মনসুখ মাণ্ডব্য, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল এবং কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষককল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শ্রী কৈলাশ চৌধুরি ও শ্রীমতী শোভা কারান্দলাজে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতের প্রস্তাবক্রমে বর্তমান বছর, অর্থাৎ ২০২৩-কে ‘আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষ’ রূপে উদযাপনের কথা ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদ। প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ও দৃষ্টিভঙ্গিকে অনুসরণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের সবক’টি মন্ত্রক, দপ্তর, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, কৃষক গোষ্ঠী, স্টার্ট-আপ সংস্থা, রপ্তানিকারক সংস্থা, খুচরো বিক্রেতা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে শ্রী অন্ন-এর উৎপাদন ও উপকারিতা সম্পর্কে প্রচারের কাজে যুক্ত করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে ভারতে ‘বিশ্ব বাজরা (শ্রী অন্ন) সম্মেলন’-এর আয়োজন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
It is a matter of great honour for us that after India's proposal and efforts, the United Nations declared 2023 as 'International Year of Millets'. pic.twitter.com/BVCSVlqdoP
— PMO India (@PMOIndia) March 18, 2023
In India, millets have been given the identity of Shree Anna. Here's why... pic.twitter.com/6QDN9WptbR
— PMO India (@PMOIndia) March 18, 2023
श्रीअन्न भारत में समग्र विकास का एक माध्यम बन रहा है। pic.twitter.com/Ooif8MK0Oq
— PMO India (@PMOIndia) March 18, 2023
India is the President of G-20 at this time. Our motto is - 'One Earth, One Family, One Future.'
— PMO India (@PMOIndia) March 18, 2023
This is also reflected as we mark the 'International Year of Millets.' pic.twitter.com/QOnbSF1htQ
Millets, मानव और मिट्टी, दोनों के स्वास्थ्य को सुरक्षित रखने की गारंटी देते हैं। pic.twitter.com/0q00kq7seT
— PMO India (@PMOIndia) March 18, 2023
Millets can help tackle challenges of food security as well as food habits. pic.twitter.com/VIyVDIWo5K
— PMO India (@PMOIndia) March 18, 2023