নতুন ভাবে গড়ে তোলা অযোধ্যা রেল স্টেশনের আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে তিনি সেখানে কয়েকটি অমৃত ভারত ট্রেন এবং বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রা সঙ্কেত দেন। জাতির উদ্দেশে আরও কয়েকটি প্রকল্প এদিন উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে, এই উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী বলেন, অযোধ্যা রেল স্টেশনটি বর্তমানে ১০ হাজারের মতো যাত্রীর চাপ সামলাতে পারে, কিন্তু স্টেশনটির পুনর্নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হলে ৬০ হাজার যাত্রী এই স্টেশনটি ব্যবহার করতে পারবেন। 'অমৃত ভারত' নামে নতুন একগুচ্ছ ট্রেন পরিষেবার সূচনা সম্পর্কে এদিন বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করেন যে দেশের প্রথম অমৃত ভারত ট্রেনটি অযোধ্যার ছুঁয়ে চলাচল করবে। একগুচ্ছ অমৃত ভারত ট্রেন চালুর সঙ্গে যে রাজ্যগুলি যুক্ত হয়েছে সেখানকার অধিবাসীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান তিনি। এই তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং কর্ণাটকের মত রাজ্যগুলি।
দরিদ্র মানুষের স্বার্থেই যে অমৃত ভারত ট্রেন চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছে একথাও আজ জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দরিদ্র সাধারণ মানুষকে কাজকর্ম ও রুজি-রোজগারের তাগিদে প্রায়ই সুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়। কিন্তু এখন থেকে তাঁরা অনেক কম খরচে অথচ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ স্বচ্ছন্দে ভ্রমণ করতে পারবেন অমৃত ভারত ট্রেনে। দরিদ্র সাধারণ মানুষের জীবনযাপনকে মর্যাদা দানের লক্ষ্যে অমৃত ভারত ট্রেনের নকশা তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করার মাধ্যমে উন্নয়নের সঙ্গে ঐতিহ্যের মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছে। দেশের প্রথম বন্দে ভারত যাত্রা শুরু করে কাশী থেকে। কিন্তু বর্তমানে কাশী, কাটরা, উজ্জ্বয়িনী, পুষ্কর, তিরুপতি, শিরদি, অমৃতসর এবং মাদুরাইয়ের মতো শহরগুলিও যুক্ত হয়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে। অযোধ্যাও উপহার পেয়েছে একটি বন্দে ভারত ট্রেন।
নতুন ভাবে গড়ে তোলা অযোধ্যা রেল স্টেশনটির প্রথম পর্যায়ের কাজ সম্পূর্ণ করতে ব্যয় হয়েছে ২৪০ কোটি টাকারও বেশি। ত্রিস্তরীয় এই আধুনিক রেল স্টেশনটির মূল ভবনটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে লিফ্ট, এসক্যালেটর, ফুড প্লাজা, পূজা উপকরণ ও সামগ্রীর দোকান, ক্লোকরুম, চাইল্ড কেয়ার রুম এবং ওয়েটিং হলের মতো আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ।
প্রধানমন্ত্রী এদিন অমৃত ভারত সিরিজের যে ট্রেনটির যাত্রা সঙ্কেত দেন তার দুই প্রান্তে রয়েছে দুটি পৃথক ইঞ্জিন। দরিদ্র সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে অ-শীতাতপ কামরা সংযোজিত হয়েছে এই ধরনের ট্রেনগুলিতে। এছাড়াও রয়েছে সুন্দর ভাবে সাজানো যাত্রী আসন, মালপত্র রাখার মতো পরিসর, মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট, এলইডি আলো, সিসিটিভি, পাবলিক ইনফরমেশন সিস্টেম ইত্যাদি। এই অনুষ্ঠান স্থল থেকে তিনি যাত্রা সঙ্কেত দেন নতুন ৬টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনেরও।
দ্বারভাঙ্গা - অযোধ্যা - আনন্দবিহার টার্মিনাল এবং মালদা টাউন - স্যার এন বিশ্বেসরাইয়া টার্মিনাস (বেঙ্গালুরু) অমৃত ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির যাত্রা সঙ্কেত দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া যে ৬টি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরুর তিনি সঙ্কেত দেন, তার মধ্যে রয়েছে শ্রীমাতা বৈষ্ণো দেবী কাটরা - নয়া দিল্লি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, অমৃতসর - দিল্লি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, কোয়েম্বাটুর - ব্যাঙ্গালোর ক্যান্টনমেন্ট বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, ব্যাঙ্গালোর - মাদগাঁও বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, জালনা - মুম্বাই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এবং অযোধ্যা - আনন্দবিহার টার্মিনাল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।
এছাড়াও এদিন ২,৩০০ কোটি টাকার তিনটি রেল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী।