এই উদযাপন উপলক্ষে একটি স্মারক লোগোর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন
“মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর প্রদর্শিত পথ কোটি কোটি মানুষের মধ্যে আশার বীজ বপন করে”
“ধর্মের সঙ্গে মিথ্যাক্রমে যে মন্দভাব যুক্ত করা হয়েছিল স্বামীজি তা দুর করেন ধর্মকে আলোর পথ হিসেবে দেখিয়ে”
“স্বামীজি সমাজে বেদের আলোক শিখাকে পুনর্জাগ্রত করেন”
“অমৃতকালে মহর্ষি দয়ানন্দ সবস্বতীর ২০০তম জন্ম জয়ন্তী অনুপ্রেরণার অঙ্গ হয়েছে”
“দেশ আজ দৃঢ়তার সঙ্গে ঐতিহ্যকে নিয়ে গর্ব করার ডাক দিচ্ছে”
“আমাদের কাছে ধর্মের প্রথম যে ব্যাখ্যা তা হল কর্তব্য”
“দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া এবং নিম্নবিত্তদের সেবাই হল দেশের কাছে আজ প্রথম যজ্ঞ”

দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর ২০০তম জন্ম জয়ন্তীর বর্ষব্যাপি উদযাপনের সূচনা করেন। এই উপলক্ষে তিনি একটি স্মারক লোগোর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছানোর পর আর্য সমাজে সরাসরি উপস্থাপিত সুদৃশ্য অনুষ্ঠান স্থল প্রধানমন্ত্রী পায়ে হেঁটে যান এবং যজ্ঞ স্থলে আহুতি অর্পণ করেন। এরপর মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর বার্তা ভারতের অন্যান্য প্রান্তে তথা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে এলইডি মশাল যুব প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেন তিনি।

সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর ২০০তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপনের এই অনুষ্ঠান সমগ্র বিশ্বের কাছে ভবিষ্যৎ গড়ার এক অনুপ্রেরণার কেন্দ্র হয়ে থাকবে। বিশ্বকে আরও ভালোভাবে বসবাসযোগ্য করে তোলার জন্য দয়ানন্দ সরস্বতীর আদর্শের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হিংসা, দ্বেষ এবং অস্থিরতার সময়কালে মহর্ষি দয়ানন্দের প্রদর্শিত পথ আশা সঞ্চার করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পুণ্য অনুষ্ঠান বর্ষব্যাপী উদযাপন করা এবং সরকার মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর ২০০তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানবতার সেবায় নিরন্তর প্রক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যজ্ঞ স্থলে আহুতি অর্পণ করতে পেরে তিনি কৃতার্থ বোধ করছেন। স্বামীজি যেখানে জন্মেছিলেন সেই পুণ্য ভূমিতে জন্মলাভ সৌভাগ্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহর্ষি দয়ানন্দের জীবন এবং তাঁর আদর্শ এখনও অনুরূপ আকর্ষণীয়।

দয়ানন্দ সরস্বতী যখন জন্মেছিলেন সেই সময় ভারতের অবস্থার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শত শত বছর ধরে দাসত্বের ভারে দেশ ক্লান্ত এবং জীর্ণ হয়েছে এবং নিজের প্রতি আস্থা ও আত্মবিশ্বাস হারাতে বসেছে। তিনি বলেন, নানাভাবে চেষ্টা হয়েছে ভারতের আদর্শ ও সংস্কৃতি এবং তার শিকড়কে ধ্বংস করে দেবার। ভারতের ঐতিহ্য এবং তার ধর্মগ্রন্থে কোনো রকম ঘাটতির মনোভাবকে স্বামীজি সম্পূর্ণ খারিজ করে দেন। তিনি উল্লেখ করেন এগুলির প্রকৃত অর্থ আমরা ভুলেছি। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, একটা সময় ছিল যখন ভারতকে খাটো করতে বেদের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং প্রথা ও ঐতিহ্যের বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। সেই সময়কালে মহর্ষি দয়ানন্দের প্রয়াস রক্ষক হিসেবে দেখা দেয়। “মহর্ষিজি বৈষম্য এবং অস্পৃশ্যতার মতো সামাজিক দুরাচারের বিরুদ্ধে প্রবল প্রচারাভিযান শুরু করেন” একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি যে কর্তব্য পথের কথা বলেছেন তার বিরুদ্ধে যে প্রতিক্রিয়া সে কথা উল্লেখ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহর্ষি তাঁর সময়কালে অনুরূপ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করে বলেন, “মিথ্যাচার বশত ধর্মের সঙ্গে মন্দ ভাবকে জড়ানো হয়েছিল স্বামীজি তা সরিয়ে ধর্মকে আলোকশিখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে স্বামীজির লড়াইকে মহাত্মা গান্ধী তাঁর সব থেকে বড় অবদান হিসেবে গণ্য করতেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজে মহিলাদেরকে নিয়ে একপেশে চিন্তার বিরুদ্ধে মহর্ষি দয়ানন্দজি যুক্তিযুক্ত এবং সোচ্চার স্বর হিসেবে দেখা দেন। মহিলাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম বৈষ্যমের প্রবল প্রতিবাদ করেন মহর্ষি দয়ানন্দজি এবং মহিলাদের শিক্ষার জন্য তিনি প্রচারাভিযান চালান। এসব ঘটনা দেড়শো বছরেরও পুরনো বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজও এই সময়কালে এমন সমাজ রয়েছে যা মহিলাদেরকে শিক্ষা এবং সম্মানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। কিন্তু মহর্ষি দয়ানন্দ মহিলাদের সম অধিকারের যে আওয়াজ তুলেছিলেন তা পশ্চিমের দেশগুলিতেও অপূর্ণ বাস্তব হিসেবে রয়ে গেছে।

মহর্ষিজির সাফল্য এবং অসামান্য গুণের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্য সমাজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার ১৫০ বছর এবং তাঁর জন্মের ২০০ বছর পরেও তাঁর প্রতি সম্মান এবং তাঁর ভাবধারার প্রতি নিষ্ঠা আজও অমলিন থাকায় অমৃতকালে মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীজির ২০০তম জন্মবার্ষিকী এক পুণ্য প্রেরণা হিসেবে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে।

শ্রী মোদী বলেন, গভীর আস্থার সঙ্গে স্বামীজির শিক্ষাকে দেশ অনুসরণ করছে। “বেদের পথে ফেরা”র জন্য স্বামীজির আহ্বানের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ দেশ দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করার ডাক দিয়েছে।” ভারতের মানুষ আধুনিকতার পথ যেমন গ্রহণ করেছেন ঠিক তার পাশাপাশি সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করার মধ্যে দিয়ে তাদের আস্থাবোধ ফুটে উঠছে।

প্রধানমন্ত্রী ভারতে ধর্মের বিস্তৃত ভাবধারার ব্যাখ্যা করে বলেন, আচার সর্বস্যতার বাইরে ধর্মকে জীবনের পথ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কাছে ধর্মের প্রথম ব্যাখ্যা হল দায়িত্ববোধ।” তিনি বলেন, স্বামীজি বহুমুখী নেতৃত্বের দায়িত্বভার একদিকে যেমন ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক, তার পাশাপাশি তা সমন্বয় সাধকের। ভারতীয় জীবনে মুনি ঋষি ও সাধকদের বৃহত্তম ভূমিকার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় দর্শন, যোগ, অঙ্কশাস্ত্র, নীতি, কূটনীতি, বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানে তাদের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রাচীন ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে স্বামীজি এক বিরাট ভূমিকা পালন করেছিলেন।

মহর্ষি দয়ানন্দের শিক্ষার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর জীবৎকালে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। মহর্ষি যদিও বিপ্লবী ভাবধারায় বিশ্বাসী ছিলেন, তিনি তাঁর আদর্শকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে কিভাবে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন এবং কয়েক দশক ধরে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুবিধ কল্যাণ কাজে তারা কিভাবে সক্রিয় যোগদান করেছিল সেকথা প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। পরোপকারিনী সভার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহর্ষি নিজে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বেদের ঐতিহ্যকে গুরুকুল ধারা ও বিভিন্ন প্রচার পুস্তিকার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে তিনি কিভাবে নিয়ে গিয়েছিলেন। কুরুক্ষেত্র গুরুকুল, স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ট্রাস্ট এবং মহর্ষি দয়ানন্দ ট্রাস্ট প্রভৃতি সংগঠন যুবকদের জীবন গড়ে তুলতে সুদুরপ্রসারী ভূমিকা নেয় বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, মহর্ষির আদর্শে গড়ে ওঠা জীবন প্রভাত ট্রাস্ট সমাজসেবায় এবং গুজরাটে ২০০১এর বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর ত্রাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ দেশ অবৈষ্যমের নীতি এবং প্রয়াসকে প্রত্যক্ষ করছে যা স্বামীজির কাছে অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত হত। “দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া এবং নিম্নবিত্তদের সেবাই আজ দেশের কাছে প্রথম যজ্ঞ” বলে জানান তিনি। আবাসন, চিকিৎসা এবং মহিলা সশক্তিকরণের কথা এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন তিনি। নতুন শিক্ষা নীতি ভারতীয়ত্বের ওপর জোর দিয়েই আধুনিক শিক্ষার প্রসার ঘটাচ্ছে। স্বামীজি এই শিক্ষাই দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী উপলব্ধি সঞ্জাত ব্যক্তি বলতে স্বামীজির ব্যাখ্যার উল্লেখ করে বলেন, একজন ব্যক্তি যখন নিজে যা গ্রহণ করেন তার থেকে বেশি প্রদান করেন তখন তিনি উপলব্ধি সঞ্জাত ব্যক্তি চিহ্নিত হন। পরিবেশের মধ্যে অযুত বলয়ে এর প্রাসঙ্গিকতা রয়ে গেছে। স্বামীজি বেদের এই জ্ঞানকে গভীরভাবে আত্মস্থ করেছিলেন যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মহর্ষিজি ছিলেন বেদ শিক্ষার ছাত্র এবং জ্ঞান মার্গের সাধক।” তিনি বলেন, ভারত আজ সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে। মিশন লাইফ-এর এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জি২০র প্রধান বিষয় হিসেবে পরিবেশকে তুলে ধরা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাচীন জ্ঞান ভিত্তির পাশাপাশি আধুনিক ভাবধারার প্রসারে আর্য সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি তাদেরকে প্রাকৃতিক চাষের ওপর জোর দিতে বলেন। শ্রী অন্নের ওপরে জোর দেওয়ার কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মহর্ষির ব্যক্তিত্ব থেকে অনেক কিছু শিক্ষণীয় রয়েছে যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী একটি গল্পের অবতারণা করেন। একজন ইংরেজ অফিসার মহর্ষির সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন এবং ভারতে ব্রিটিশ শাসন চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি মহর্ষিকে আবেদন করতে বলেন। এর উত্তরে মহর্ষি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “স্বাধীনতা আমার অন্তরাত্মা আর এটাই ভারতের বার্তা।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসংখ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী, প্রতিষ্ঠান নির্মাতা এবং দেশপ্রেমিক স্বামীজির থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন যেমন লোকমান্য টিলক, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস, বীর সাভারকার, লালা লাজপত রায়, লালা হরদয়াল, চন্দ্রশেখর আজাদ, রামপ্রসাদ বিসমিল প্রমুখ। মহাত্মা হংসরাজ, স্বামী শ্রদ্ধানন্দজি, ভাই পরমানন্দজি প্রমুখ মহর্ষিজির দ্বারা যাঁরা অনুপ্রাণিত তাঁদের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বামীজির শিক্ষার উত্তরাধিকার বহন করছে আর্য সমাজ এবং প্রত্যেক ‘আর্য বীর’এর কাছে দেশের অনেক প্রত্যাশা। তিনি জানান, পরের বছর আর্য সমাজের দেড়শ বছর পূর্তির সূচনা হবে। ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী এই স্মরণীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনার জন্য সকলকে সাধুবাদ জানান। তিনি এই বলে ভাষণ শেষ করেন যে ‘মহর্ষি দয়ানন্দজির নানাবিধ প্রচেষ্টা থেকে অমৃতকালে দেশ অনুপ্রাণিত হবে।’

গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রত, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, শ্রীমতী মীনাক্ষ্মী লেখি, দিল্লি আর্য প্রতিনিধি সভার সভাপতি শ্রী ধরমপাল আর্য, দিল্লি আর্য প্রতিনিধি সভার মহামন্ত্রী শ্রী বিনয় আর্য, সর্বদেশিক আর্য প্রতিনিধি সভার সভাপতি শ্রী সুরেশ চন্দ্র আর্য অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রেক্ষাপট

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতীর ১৮২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক। সামাজিক অসাম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলতে তিনি ১৮৭৫ সালে আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক পুনর্জাগরণে আর্য সমাজ, সমাজ সংস্কার এবং শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Text of PM Modi's address at the Parliament of Guyana
November 21, 2024

Hon’ble Speaker, मंज़ूर नादिर जी,
Hon’ble Prime Minister,मार्क एंथनी फिलिप्स जी,
Hon’ble, वाइस प्रेसिडेंट भरत जगदेव जी,
Hon’ble Leader of the Opposition,
Hon’ble Ministers,
Members of the Parliament,
Hon’ble The चांसलर ऑफ द ज्यूडिशियरी,
अन्य महानुभाव,
देवियों और सज्जनों,

गयाना की इस ऐतिहासिक पार्लियामेंट में, आप सभी ने मुझे अपने बीच आने के लिए निमंत्रित किया, मैं आपका बहुत-बहुत आभारी हूं। कल ही गयाना ने मुझे अपना सर्वोच्च सम्मान दिया है। मैं इस सम्मान के लिए भी आप सभी का, गयाना के हर नागरिक का हृदय से आभार व्यक्त करता हूं। गयाना का हर नागरिक मेरे लिए ‘स्टार बाई’ है। यहां के सभी नागरिकों को धन्यवाद! ये सम्मान मैं भारत के प्रत्येक नागरिक को समर्पित करता हूं।

साथियों,

भारत और गयाना का नाता बहुत गहरा है। ये रिश्ता, मिट्टी का है, पसीने का है,परिश्रम का है करीब 180 साल पहले, किसी भारतीय का पहली बार गयाना की धरती पर कदम पड़ा था। उसके बाद दुख में,सुख में,कोई भी परिस्थिति हो, भारत और गयाना का रिश्ता, आत्मीयता से भरा रहा है। India Arrival Monument इसी आत्मीय जुड़ाव का प्रतीक है। अब से कुछ देर बाद, मैं वहां जाने वाला हूं,

साथियों,

आज मैं भारत के प्रधानमंत्री के रूप में आपके बीच हूं, लेकिन 24 साल पहले एक जिज्ञासु के रूप में मुझे इस खूबसूरत देश में आने का अवसर मिला था। आमतौर पर लोग ऐसे देशों में जाना पसंद करते हैं, जहां तामझाम हो, चकाचौंध हो। लेकिन मुझे गयाना की विरासत को, यहां के इतिहास को जानना था,समझना था, आज भी गयाना में कई लोग मिल जाएंगे, जिन्हें मुझसे हुई मुलाकातें याद होंगीं, मेरी तब की यात्रा से बहुत सी यादें जुड़ी हुई हैं, यहां क्रिकेट का पैशन, यहां का गीत-संगीत, और जो बात मैं कभी नहीं भूल सकता, वो है चटनी, चटनी भारत की हो या फिर गयाना की, वाकई कमाल की होती है,

साथियों,

बहुत कम ऐसा होता है, जब आप किसी दूसरे देश में जाएं,और वहां का इतिहास आपको अपने देश के इतिहास जैसा लगे,पिछले दो-ढाई सौ साल में भारत और गयाना ने एक जैसी गुलामी देखी, एक जैसा संघर्ष देखा, दोनों ही देशों में गुलामी से मुक्ति की एक जैसी ही छटपटाहट भी थी, आजादी की लड़ाई में यहां भी,औऱ वहां भी, कितने ही लोगों ने अपना जीवन समर्पित कर दिया, यहां गांधी जी के करीबी सी एफ एंड्रूज हों, ईस्ट इंडियन एसोसिएशन के अध्यक्ष जंग बहादुर सिंह हों, सभी ने गुलामी से मुक्ति की ये लड़ाई मिलकर लड़ी,आजादी पाई। औऱ आज हम दोनों ही देश,दुनिया में डेमोक्रेसी को मज़बूत कर रहे हैं। इसलिए आज गयाना की संसद में, मैं आप सभी का,140 करोड़ भारतवासियों की तरफ से अभिनंदन करता हूं, मैं गयाना संसद के हर प्रतिनिधि को बधाई देता हूं। गयाना में डेमोक्रेसी को मजबूत करने के लिए आपका हर प्रयास, दुनिया के विकास को मजबूत कर रहा है।

साथियों,

डेमोक्रेसी को मजबूत बनाने के प्रयासों के बीच, हमें आज वैश्विक परिस्थितियों पर भी लगातार नजर ऱखनी है। जब भारत और गयाना आजाद हुए थे, तो दुनिया के सामने अलग तरह की चुनौतियां थीं। आज 21वीं सदी की दुनिया के सामने, अलग तरह की चुनौतियां हैं।
दूसरे विश्व युद्ध के बाद बनी व्यवस्थाएं और संस्थाएं,ध्वस्त हो रही हैं, कोरोना के बाद जहां एक नए वर्ल्ड ऑर्डर की तरफ बढ़ना था, दुनिया दूसरी ही चीजों में उलझ गई, इन परिस्थितियों में,आज विश्व के सामने, आगे बढ़ने का सबसे मजबूत मंत्र है-"Democracy First- Humanity First” "Democracy First की भावना हमें सिखाती है कि सबको साथ लेकर चलो,सबको साथ लेकर सबके विकास में सहभागी बनो। Humanity First” की भावना हमारे निर्णयों की दिशा तय करती है, जब हम Humanity First को अपने निर्णयों का आधार बनाते हैं, तो नतीजे भी मानवता का हित करने वाले होते हैं।

साथियों,

हमारी डेमोक्रेटिक वैल्यूज इतनी मजबूत हैं कि विकास के रास्ते पर चलते हुए हर उतार-चढ़ाव में हमारा संबल बनती हैं। एक इंक्लूसिव सोसायटी के निर्माण में डेमोक्रेसी से बड़ा कोई माध्यम नहीं। नागरिकों का कोई भी मत-पंथ हो, उसका कोई भी बैकग्राउंड हो, डेमोक्रेसी हर नागरिक को उसके अधिकारों की रक्षा की,उसके उज्जवल भविष्य की गारंटी देती है। और हम दोनों देशों ने मिलकर दिखाया है कि डेमोक्रेसी सिर्फ एक कानून नहीं है,सिर्फ एक व्यवस्था नहीं है, हमने दिखाया है कि डेमोक्रेसी हमारे DNA में है, हमारे विजन में है, हमारे आचार-व्यवहार में है।

साथियों,

हमारी ह्यूमन सेंट्रिक अप्रोच,हमें सिखाती है कि हर देश,हर देश के नागरिक उतने ही अहम हैं, इसलिए, जब विश्व को एकजुट करने की बात आई, तब भारत ने अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान One Earth, One Family, One Future का मंत्र दिया। जब कोरोना का संकट आया, पूरी मानवता के सामने चुनौती आई, तब भारत ने One Earth, One Health का संदेश दिया। जब क्लाइमेट से जुड़े challenges में हर देश के प्रयासों को जोड़ना था, तब भारत ने वन वर्ल्ड, वन सन, वन ग्रिड का विजन रखा, जब दुनिया को प्राकृतिक आपदाओं से बचाने के लिए सामूहिक प्रयास जरूरी हुए, तब भारत ने CDRI यानि कोएलिशन फॉर डिज़ास्टर रज़ीलिएंट इंफ्रास्ट्रक्चर का initiative लिया। जब दुनिया में pro-planet people का एक बड़ा नेटवर्क तैयार करना था, तब भारत ने मिशन LiFE जैसा एक global movement शुरु किया,

साथियों,

"Democracy First- Humanity First” की इसी भावना पर चलते हुए, आज भारत विश्वबंधु के रूप में विश्व के प्रति अपना कर्तव्य निभा रहा है। दुनिया के किसी भी देश में कोई भी संकट हो, हमारा ईमानदार प्रयास होता है कि हम फर्स्ट रिस्पॉन्डर बनकर वहां पहुंचे। आपने कोरोना का वो दौर देखा है, जब हर देश अपने-अपने बचाव में ही जुटा था। तब भारत ने दुनिया के डेढ़ सौ से अधिक देशों के साथ दवाएं और वैक्सीन्स शेयर कीं। मुझे संतोष है कि भारत, उस मुश्किल दौर में गयाना की जनता को भी मदद पहुंचा सका। दुनिया में जहां-जहां युद्ध की स्थिति आई,भारत राहत और बचाव के लिए आगे आया। श्रीलंका हो, मालदीव हो, जिन भी देशों में संकट आया, भारत ने आगे बढ़कर बिना स्वार्थ के मदद की, नेपाल से लेकर तुर्की और सीरिया तक, जहां-जहां भूकंप आए, भारत सबसे पहले पहुंचा है। यही तो हमारे संस्कार हैं, हम कभी भी स्वार्थ के साथ आगे नहीं बढ़े, हम कभी भी विस्तारवाद की भावना से आगे नहीं बढ़े। हम Resources पर कब्जे की, Resources को हड़पने की भावना से हमेशा दूर रहे हैं। मैं मानता हूं,स्पेस हो,Sea हो, ये यूनीवर्सल कन्फ्लिक्ट के नहीं बल्कि यूनिवर्सल को-ऑपरेशन के विषय होने चाहिए। दुनिया के लिए भी ये समय,Conflict का नहीं है, ये समय, Conflict पैदा करने वाली Conditions को पहचानने और उनको दूर करने का है। आज टेरेरिज्म, ड्रग्स, सायबर क्राइम, ऐसी कितनी ही चुनौतियां हैं, जिनसे मुकाबला करके ही हम अपनी आने वाली पीढ़ियों का भविष्य संवार पाएंगे। और ये तभी संभव है, जब हम Democracy First- Humanity First को सेंटर स्टेज देंगे।

साथियों,

भारत ने हमेशा principles के आधार पर, trust और transparency के आधार पर ही अपनी बात की है। एक भी देश, एक भी रीजन पीछे रह गया, तो हमारे global goals कभी हासिल नहीं हो पाएंगे। तभी भारत कहता है – Every Nation Matters ! इसलिए भारत, आयलैंड नेशन्स को Small Island Nations नहीं बल्कि Large ओशिन कंट्रीज़ मानता है। इसी भाव के तहत हमने इंडियन ओशन से जुड़े आयलैंड देशों के लिए सागर Platform बनाया। हमने पैसिफिक ओशन के देशों को जोड़ने के लिए भी विशेष फोरम बनाया है। इसी नेक नीयत से भारत ने जी-20 की प्रेसिडेंसी के दौरान अफ्रीकन यूनियन को जी-20 में शामिल कराकर अपना कर्तव्य निभाया।

साथियों,

आज भारत, हर तरह से वैश्विक विकास के पक्ष में खड़ा है,शांति के पक्ष में खड़ा है, इसी भावना के साथ आज भारत, ग्लोबल साउथ की भी आवाज बना है। भारत का मत है कि ग्लोबल साउथ ने अतीत में बहुत कुछ भुगता है। हमने अतीत में अपने स्वभाव औऱ संस्कारों के मुताबिक प्रकृति को सुरक्षित रखते हुए प्रगति की। लेकिन कई देशों ने Environment को नुकसान पहुंचाते हुए अपना विकास किया। आज क्लाइमेट चेंज की सबसे बड़ी कीमत, ग्लोबल साउथ के देशों को चुकानी पड़ रही है। इस असंतुलन से दुनिया को निकालना बहुत आवश्यक है।

साथियों,

भारत हो, गयाना हो, हमारी भी विकास की आकांक्षाएं हैं, हमारे सामने अपने लोगों के लिए बेहतर जीवन देने के सपने हैं। इसके लिए ग्लोबल साउथ की एकजुट आवाज़ बहुत ज़रूरी है। ये समय ग्लोबल साउथ के देशों की Awakening का समय है। ये समय हमें एक Opportunity दे रहा है कि हम एक साथ मिलकर एक नया ग्लोबल ऑर्डर बनाएं। और मैं इसमें गयाना की,आप सभी जनप्रतिनिधियों की भी बड़ी भूमिका देख रहा हूं।

साथियों,

यहां अनेक women members मौजूद हैं। दुनिया के फ्यूचर को, फ्यूचर ग्रोथ को, प्रभावित करने वाला एक बहुत बड़ा फैक्टर दुनिया की आधी आबादी है। बीती सदियों में महिलाओं को Global growth में कंट्रीब्यूट करने का पूरा मौका नहीं मिल पाया। इसके कई कारण रहे हैं। ये किसी एक देश की नहीं,सिर्फ ग्लोबल साउथ की नहीं,बल्कि ये पूरी दुनिया की कहानी है।
लेकिन 21st सेंचुरी में, global prosperity सुनिश्चित करने में महिलाओं की बहुत बड़ी भूमिका होने वाली है। इसलिए, अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान, भारत ने Women Led Development को एक बड़ा एजेंडा बनाया था।

साथियों,

भारत में हमने हर सेक्टर में, हर स्तर पर, लीडरशिप की भूमिका देने का एक बड़ा अभियान चलाया है। भारत में हर सेक्टर में आज महिलाएं आगे आ रही हैं। पूरी दुनिया में जितने पायलट्स हैं, उनमें से सिर्फ 5 परसेंट महिलाएं हैं। जबकि भारत में जितने पायलट्स हैं, उनमें से 15 परसेंट महिलाएं हैं। भारत में बड़ी संख्या में फाइटर पायलट्स महिलाएं हैं। दुनिया के विकसित देशों में भी साइंस, टेक्नॉलॉजी, इंजीनियरिंग, मैथ्स यानि STEM graduates में 30-35 परसेंट ही women हैं। भारत में ये संख्या फोर्टी परसेंट से भी ऊपर पहुंच चुकी है। आज भारत के बड़े-बड़े स्पेस मिशन की कमान महिला वैज्ञानिक संभाल रही हैं। आपको ये जानकर भी खुशी होगी कि भारत ने अपनी पार्लियामेंट में महिलाओं को रिजर्वेशन देने का भी कानून पास किया है। आज भारत में डेमोक्रेटिक गवर्नेंस के अलग-अलग लेवल्स पर महिलाओं का प्रतिनिधित्व है। हमारे यहां लोकल लेवल पर पंचायती राज है, लोकल बॉड़ीज़ हैं। हमारे पंचायती राज सिस्टम में 14 लाख से ज्यादा यानि One point four five मिलियन Elected Representatives, महिलाएं हैं। आप कल्पना कर सकते हैं, गयाना की कुल आबादी से भी करीब-करीब दोगुनी आबादी में हमारे यहां महिलाएं लोकल गवर्नेंट को री-प्रजेंट कर रही हैं।

साथियों,

गयाना Latin America के विशाल महाद्वीप का Gateway है। आप भारत और इस विशाल महाद्वीप के बीच अवसरों और संभावनाओं का एक ब्रिज बन सकते हैं। हम एक साथ मिलकर, भारत और Caricom की Partnership को और बेहतर बना सकते हैं। कल ही गयाना में India-Caricom Summit का आयोजन हुआ है। हमने अपनी साझेदारी के हर पहलू को और मजबूत करने का फैसला लिया है।

साथियों,

गयाना के विकास के लिए भी भारत हर संभव सहयोग दे रहा है। यहां के इंफ्रास्ट्रक्चर में निवेश हो, यहां की कैपेसिटी बिल्डिंग में निवेश हो भारत और गयाना मिलकर काम कर रहे हैं। भारत द्वारा दी गई ferry हो, एयरक्राफ्ट हों, ये आज गयाना के बहुत काम आ रहे हैं। रीन्युएबल एनर्जी के सेक्टर में, सोलर पावर के क्षेत्र में भी भारत बड़ी मदद कर रहा है। आपने t-20 क्रिकेट वर्ल्ड कप का शानदार आयोजन किया है। भारत को खुशी है कि स्टेडियम के निर्माण में हम भी सहयोग दे पाए।

साथियों,

डवलपमेंट से जुड़ी हमारी ये पार्टनरशिप अब नए दौर में प्रवेश कर रही है। भारत की Energy डिमांड तेज़ी से बढ़ रही हैं, और भारत अपने Sources को Diversify भी कर रहा है। इसमें गयाना को हम एक महत्वपूर्ण Energy Source के रूप में देख रहे हैं। हमारे Businesses, गयाना में और अधिक Invest करें, इसके लिए भी हम निरंतर प्रयास कर रहे हैं।

साथियों,

आप सभी ये भी जानते हैं, भारत के पास एक बहुत बड़ी Youth Capital है। भारत में Quality Education और Skill Development Ecosystem है। भारत को, गयाना के ज्यादा से ज्यादा Students को Host करने में खुशी होगी। मैं आज गयाना की संसद के माध्यम से,गयाना के युवाओं को, भारतीय इनोवेटर्स और वैज्ञानिकों के साथ मिलकर काम करने के लिए भी आमंत्रित करता हूँ। Collaborate Globally And Act Locally, हम अपने युवाओं को इसके लिए Inspire कर सकते हैं। हम Creative Collaboration के जरिए Global Challenges के Solutions ढूंढ सकते हैं।

साथियों,

गयाना के महान सपूत श्री छेदी जगन ने कहा था, हमें अतीत से सबक लेते हुए अपना वर्तमान सुधारना होगा और भविष्य की मजबूत नींव तैयार करनी होगी। हम दोनों देशों का साझा अतीत, हमारे सबक,हमारा वर्तमान, हमें जरूर उज्जवल भविष्य की तरफ ले जाएंगे। इन्हीं शब्दों के साथ मैं अपनी बात समाप्त करता हूं, मैं आप सभी को भारत आने के लिए भी निमंत्रित करूंगा, मुझे गयाना के ज्यादा से ज्यादा जनप्रतिनिधियों का भारत में स्वागत करते हुए खुशी होगी। मैं एक बार फिर गयाना की संसद का, आप सभी जनप्रतिनिधियों का, बहुत-बहुत आभार, बहुत बहुत धन्यवाद।