প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ‘রোজগার মেলা’র অধীন নবনিযুক্ত প্রায় ৭১ হাজার জনকে নিয়োগপত্র প্রদান করেন। জাতীয় উন্নয়নের কাজে তাঁদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকে সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি যুব সম্প্রদায়ের সশক্তিকরণের জন্য তাঁদের যুক্তিযুক্ত সম্ভাবনার ক্ষেত্র উন্মোচিত করতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই ‘রোজগার মেলা’ সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়। ‘রোজগার মেলা’র মাধ্যমে ইতিপূর্বে অক্টোবর মাসে ৭৫ হাজার নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়েছে।
সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৪৫টিরও বেশি শহরে ৭১ হাজারেরও বেশি যুবক-যুবতীকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে। এতে তাঁদের পরিবারে এক নতুন আনন্দের সঞ্চার ঘটাবে। তিনি স্মরণ করেন যে ধনতেরাসের দিন কেন্দ্রীয় সরকার ৭৫ হাজার যুবক-যুবতীকে নিয়োগপত্র প্রদান করেছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের যুবক-যুবতীদের কাছে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে কেন্দ্রীয় সরকার যে মিশন মোড ভিত্তিতে কাজ করে চলেছে, আজকের এই রোজগার মেলা তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ।”
এক মাস আগে এই ‘রোজগার মেলা’র সূচনার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময় সময়ে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি এ জাতীয় মেলার আয়োজন করবে। তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন যে মহারাষ্ট্র, গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, লাদাখ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লাক্ষাদ্বীপ, দমন ও দিউ, দাদরা ও নগর হাভেলি এবং চণ্ডীগড়ে সেখানকার সরকার দ্বারা আয়োজিত ‘রোজগার মেলা’র মাধ্যমে হাজার হাজার যুবক-যুবতীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যে গোয়া এবং ত্রিপুরাও কয়েকদিনের মধ্যেই অনুরূপ এই ‘রোজগার মেলা’র আয়োজন করবে। শ্রী মোদী এই অসামান্য কৃতিত্ব ডবল ইঞ্জিন সরকারের সাফল্য বলে বর্ণনা করেন এবং তিনি নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, এই জাতীয় কর্মসংস্থান মেলা দেশের যুবক-যুবতীদের সশক্তি প্রদানে সময়ে সময়ে আয়োজন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যুবশক্তি হল সর্ববৃহৎ শক্তি। রাষ্ট্র গঠনে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের মেধা এবং শক্তিকে কাজে লাগাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি নবনিযুক্ত সরকারি কর্মচারীদের স্বাগত জানান এবং তাঁদের প্রশংসা করেন। তিনি তাঁদেরকে স্মরণ করিয়ে দেন যে অমৃতকালের মতো বিশেষ সময়কালে তাঁরা এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার গ্রহণ করছেন। অমৃতকালে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সঙ্কল্পকে বাস্তব রূপ দিতে তাঁদের ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেন তিনি। তিনি বলেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁরা সর্বতোভাবে তাঁদের দায়িত্ব এবং ভূমিকাকে বোঝার চেষ্টা করবেন এবং তাঁদের কর্মসম্পাদনে দক্ষতা বৃদ্ধির নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাবেন।
‘কর্মযোগী ভারত’ প্ল্যাটফর্ম যার আজ সূচনা হল তার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে সরকারি কর্মচারী ও আধিকারিকদের জন্য অনেক অনলাইন প্রশিক্ষণসূচি রয়েছে বলে জানান তিনি। সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘কর্মযোগী প্রারম্ভ’ নামে যে বিশেষ কোর্সটি তৈরি করা হয়েছে তার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নবনিযুক্তদের এর সর্বাত্মক সদ্ব্যবহারের আহ্বান জানান। এর সুফলের দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে এবং আগামীদিনেও এর থেকে তাঁরা উপকৃত হবেন।
বিশ্বজুড়ে অতিমারী ও যুদ্ধের ফলে যুব সম্প্রদায়ের জন্য যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই কঠিন সময়ে সারা বিশ্বের বিশেষজ্ঞরাও ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির গতিপথ নিয়ে আশাবাদী। শ্রী মোদী বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে পরিষেবা ক্ষেত্রে ভারত এখন একটি প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং বিশ্বের ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবেও তা উঠে আসবে। পিএলআই-এর মতো উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি দেশের যুব সম্প্রদায়কে দক্ষ শ্রমশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে একটি মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘ভোকাল ফর লোকাল’, ‘লোকাল থেকে গ্লোবাল’ যে অভিযান চলছে তা কর্মসংস্থান এবং স্বনিযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করছে। “সরকারি এবং বেসরকারি – উভয় ক্ষেত্রেই নতুন কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুব সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের শহর এবং গ্রামে কাজের সুযোগ বাড়া একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর ফলে, যুবক-যুবতীদের নিজের জায়গা ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার প্রবণতা কমছে। ফলশ্রুতি হিসেবে তাঁর নিজের এলাকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে সে কাজ করতে পারছে” – বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
স্টার্ট-আপ থেকে শুরু করে স্বনিযুক্তি এবং মহাকাশ থেকে ড্রোন – এই সমস্ত ক্ষেত্রেই উদ্যোগ গ্রহণের ফলে নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র উন্মুক্ত হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী আলোকপাত করেন। ৮০ হাজার স্টার্ট-আপ যুব সম্প্রদায়ের মেধাকে তুলে ধরছে। চিকিৎসাক্ষেত্র, কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্র, প্রযুক্তিক্ষেত্র এবং ‘স্বামীত্ব’ প্রকল্পের ম্যাপিং-এর ক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার বেড়ে চলেছে। এর ফলে, যুবক-যুবতীদের নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে। ভারতের প্রথম বেসরকারি ক্ষেত্রে নির্মিত রকেট কয়েকদিন আগে মহাকাশে পাঠানোর কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাকাশ ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তের ফলে যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৩৫ কোটিরও বেশি ‘মুদ্রা’ ঋণ প্রদানের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্র প্রসারের ফলে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
শ্রী মোদী নবনিযুক্তদের এই নতুন সম্ভাবনা সদ্ব্যবহারের আহ্বান জানান। এই নিয়োগপত্রটি তাঁদের সামনে উন্নতির নতুন দ্বারকে উন্মুক্ত করে দেবে এবং কর্মক্ষেত্রে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও সিনিয়রদের থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা নিজেদেরকে যোগ্য করে তুলবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। পরিশেষে, তাঁর নিজের শিক্ষার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন একজন ব্যক্তির শিক্ষার্থী মনকে কখনই নষ্ট হতে দেওয়া উচিৎ নয়। নতুন শেখার সুযোগ হাতছাড়া না করার আহ্বান জানান শ্রী মোদী। তিনি নবনিযুক্তদের অনলাইন প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে বলেন এবং এই ‘কর্মযোগী ভারত’ প্ল্যাটফর্ম আরও কি করে উন্নত করা যায়, সে ব্যাপারে গঠনমূলক ফিডব্যাক দেওয়ার আহ্বান জানান। “ভারতকে ইতিমধ্যেই আমরা উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার পথে এগিয়েছি। এই লক্ষ্যপূরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সকলকে সঙ্কল্প নিতে হবে” – বলে প্রধানমন্ত্রী সবশেষে উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কর্মসংস্থানের প্রসারে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্কল্পকে পূর্ণতা দিতে ‘রোজগার মেলা’ হল একটি অগ্রবর্তী পদক্ষেপ। কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও বেশি প্রসারিত করতে এবং যুব সম্প্রদায়ের সশক্তিকরণের যুক্তিযুক্ত সম্ভাবনার প্রসার এবং জাতীয় উন্নয়নে তাঁদেরকে অংশীদার করে তুলতে ‘রোজগার মেলা’ একটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।
গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশ ছাড়া নবনিযুক্তদের নিয়োগপত্র প্রদানের কাজ দেশের ৪৫টি স্থানে হয়েছে। এর আগে যে সমস্ত পর্যায়ের পদে কর্মপ্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছিল তার বাইরেও শিক্ষক, অধ্যাপক, নার্স, নার্সিং অফিসার, চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, রেডিওগ্রাফার এবং অন্যান্য কারিগরি ও প্যারা-মেডিকেলের শূন্যপদগুলি এবারের মেলায় পূর্ণ করা হবে। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীগুলিতেও নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু রেখেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নবনিযুক্তদের জ্ঞান, দক্ষতা ও যোগ্যতার মান বাড়াতে igotkarmayogi.gov.in –এই প্ল্যাটফর্মটিতে গিয়ে অন্যান্য শিক্ষণীয় বিষয় সম্পর্কেও তাঁরা খোঁজখবর নিতে পারবেন।
Working in mission mode to provide government jobs. pic.twitter.com/A7f6WGmQ08
— PMO India (@PMOIndia) November 22, 2022
Youth are the biggest strength of our country. pic.twitter.com/hb8rl5Nn7X
— PMO India (@PMOIndia) November 22, 2022
The 'Karmayogi Bharat' technology platform which has been launched, has several online courses. This will greatly help in upskilling. pic.twitter.com/KWSirYDxF8
— PMO India (@PMOIndia) November 22, 2022
Experts around the world are optimistic about India's growth trajectory. pic.twitter.com/Pe4h6gQin0
— PMO India (@PMOIndia) November 22, 2022
New opportunities are being created for the youth in India. pic.twitter.com/sZwRbhULJg
— PMO India (@PMOIndia) November 22, 2022