গুজরাটের একতা নগরে ‘মেজ গার্ডেন’ এবং ‘মিয়াওয়াকি অরণ্য’ আজ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।
তিনি ‘মিয়াওয়াকি অরণ্য’ পথে বুদ্ধ মূর্তি পরিদর্শনের পর ‘মেজ গার্ডেন’-এর দিকে যাত্রা করেন। সেখানে তিনি একটি নতুন প্রশাসনিক ভবন, বিশ্রাম গৃহ এবং ওওয়াইও হাউজ বোটের উদ্বোধন করেন। ‘মেজ গার্ডেন’-এর মধ্য দিয়ে তিনি হেঁটেও যান।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ স্থলে ‘মিয়াওয়াকি অরণ্য’ এবং ‘মেজ গার্ডেন’ হল দুটি নতুন আকর্ষণ। চার বছর আগে ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’র আবরণ উন্মোচনকালে প্রধানমন্ত্রী আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ঐ স্থানটিকে একটি অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ রূপে গড়ে তোলার। এ পর্যন্ত ৮০ লক্ষেরও বেশি পর্যটক ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ স্থলটি ঘুরে দেখেছেন।
‘মেজ গার্ডেন’টিতে রয়েছে ২,১০০ মিটারের মতো গোলকধাঁধার পথ। এটি হল দেশের বৃহত্তম ‘মেজ গার্ডেন’। মাত্র আট মাসের মধ্যেই একতা নগরের ‘মেজ গার্ডেন’-এর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়। এই গার্ডেনটি গড়ে তোলা হয়েছে ‘যন্ত্র’-এর আকারে যা কিনা ইতিবাচক শক্তির উৎস। এই ধরনের নকশা পছন্দ করার বিশেষ কারণ হল পথ বা রাস্তা তৈরির একটি জটিল নেটওয়ার্ককে সকলের সামনে এক অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে তুলে ধরা। গার্ডেনের গোলকধাঁধা পথে যেতে যেতে পর্যটকদের মনে এর রহস্য উদঘাটনের জেদ চেপে যায়। এইভাবে গোলকধাঁধার মধ্যে বিভ্রান্তি সত্ত্বেও সঠিক পথে বেরোনোর উপায়টি খুঁজে বের করার চ্যালেঞ্জকে তাঁরা আগ্রহের সঙ্গেই গ্রহণ করেন। এই গার্ডেনটিতে অরেঞ্জ জেমিনি, মধুকামিনী, গ্লোরিবাওয়ার এবং মেহেন্দি গাছের ১ লক্ষ ৮০ হাজার চারা লাগানো হয়েছে। আরও মজার বিষয় হল, যে স্থানটিতে এই গার্ডেন গড়ে তোলা হয়েছে তা ছিল এক সময় জঞ্জাল ও আবর্জনার একটি স্তুপবিশেষ। এইভাবেই একটি অব্যবহৃত পতিত জমির সৌন্দর্যায়নের মাধ্যমে চারপাশের পরিবেশকে আরও মনোরম করে তোলা হয়েছে। এই উদ্যান এখন বিভিন্ন ধরনের পাখি, প্রজাপতি ও মৌমাছির মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে।
একতা নগরের পর্যটন আকর্ষণের ক্ষেত্রে আরও একটি নবতম সংযোজন ‘মিয়াওয়াকি অরণ্য’। প্রখ্যাত জাপানি উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ তথা পরিবেশবিদ ডঃ আকিরা মিয়াওয়াকির নামানুসারে এই অরণ্যের নামকরণ করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির এমন কিছু গাছের চারা বসানো হয়েছে যেগুলি ঘন সন্নিবদ্ধ অবস্থায় শহর এলাকার মধ্যেও এক ঘন অরণ্যের পরিবেশ ও সৌন্দর্য এনে দিতে পারে। এখানকার চারাগাছগুলি বসানো হয়েছে এমনভাবে যাতে তা দ্রুত দশগুণ বৃদ্ধি পায়। ফলে, অরণ্যটির বিস্তার ঘটে প্রায় ৩০ গুণ। এক কথায় বলতে গেলে, চিরাচরিত পদ্ধতিতে বনায়ন সম্ভব করে তুলতে যেখানে ২০ থেকে ৩০ বছর লেগে যায়, সেখানে জাপানি উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞের দেখানো পথে মাত্র ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যেই ঘন অরণ্যের বিস্তার ঘটে। অরণ্যের মধ্যে রয়েছে আবার বেশ কয়েকটি বৈচিত্র্য যেমন - একটি পুষ্পোদ্যান, একটি বৃক্ষোদ্যান, একটি ফল বাগিচা এবং একটি ভেষজ উদ্যান।
‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’কে ঘিরে আরও বেশ কয়েকটি পর্যটন আকর্ষণ গড়ে তোলা হয়েছে, যেমন টেন্ট সিটি, থিম পার্ক ইত্যাদি। থিম পার্কগুলির মধ্যে আবার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য আরোগ্য বন, প্রজাপতি উদ্যান, ক্যাকটাস বাগান, বিশ্ব বন, ভারত বন, ইউনিটি গ্লো গার্ডেন, চিল্ড্রেন নিউট্রিশন পার্ক, জঙ্গল সাফারি ইত্যাদি।