প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার কোচি মেট্রোর উদ্বোধনের পর নতুন মেট্রোতে কিছক্ষণ সফরওকরেন। কোচি মেট্রোকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীতাঁর ভাষণে বলেন :
“কোচিমেট্রোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। গৌরবের এইমুহূর্তে আমার অভিনন্দন সকল কোচিবাসীকে।
বন্ধুগণ!
আরব সাগরেররানী কোচি হল মশলার এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। বর্তমানে এটি পরিচিতি লাভকরেছে কেরলের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে। কেরলে আগত দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সংখ্যার নিরিখেকোচির স্থান রয়েছে প্রথমেই। এই কারণে কোচি শহরটিরও যে মেট্রো রেলের সুযোগ-সুবিধাথাকা প্রয়োজন, একথা খুবই যুক্তিসঙ্গত।
এই শহরেরজনসংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে যা কিনা, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে গিয়েপৌঁছবে ২৩ লক্ষে। এই কারণে নাগরিক পরিকাঠামোর ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের সামাল দিতেএকটি দ্রুত গণ-পরিবহণ মাধ্যম গড়ে তোলা একান্ত জরুরি । কোচির অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রেও তাবিশেষ সহায়ক হবে।
কোচি মেট্রোরেল প্রকল্পটি হল কেন্দ্র ও কেরল সরকারের সম-অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি যৌথউদ্যোগ। কোচি মেট্রোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এ পর্যন্ত মঞ্জুর করেছে ২ হাজার কোটিটাকারও বেশি। আজ যে অংশটির উদ্বোধন হচ্ছে, তা মেট্রোপথে যুক্ত করবে আলুভা ওপালাড়িভাত্তমকে। এই অংশে ১৩.২৬ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে রয়েছে ১১টি স্টেশন।
আবার, এইমেট্রো প্রকল্পটির রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যও।
এটিই হলদেশের প্রথম মেট্রো প্রকল্প যাতে যুক্ত রয়েছে ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা-ভিত্তিক ট্রেননিয়ন্ত্রণ সিগন্যাল ব্যবস্থা’র মতো একটি আধুনিক সিগন্যাল পদ্ধতি।
এরকামরাগুলির মধ্যে প্রতিফলন ঘটেছে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির চিন্তাভাবনা।কামরাগুলির রূপকার ফ্রান্সের আলস্টম। সংস্থার চেন্নাই কারখানায় তৈরি করা হয়েছেএগুলি। এর ৭০ শতাংশ সাজসরঞ্জামই ভারতীয়।
শহরেরসার্বিক জন-পরিবহণ নেটওয়ার্ককে একটিমাত্র ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে কোচিমেট্রো। এই ব্যবস্থায় রয়েছে একটি সাধারণ সময় সারণী, সাধারণ টিকিট বুকিং ব্যবস্থাএবং কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত ‘কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল’ পদ্ধতি। শহরের শেষপ্রান্তটিকেও মেট্রো ব্যবস্থায় যুক্ত করার পাশাপাশি, শহরের মধ্যে ‘নন-মোটরাইজ্ড’পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলারও চিন্তাভাবনা রয়েছে এর মধ্যে।
সরকারি ওবেসরকারি অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে টিকিটের ভাড়া সংগ্রহের জন্য ভারতীয় ব্যাঙ্ক এবংআর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে যুক্ত করার ক্ষেত্রেও কোচি মেট্রো এক উদ্ভাবনমূলকপদক্ষেপের দিশারী। স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সংগ্রহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বরাতপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলিকে।নির্বাচিত ব্যাঙ্কগুলি কোচি মেট্রোর সঙ্গে মিলিতভাবে নিজেদের নাম সম্বলিত ফেয়ারকার্ড ও অ্যাপ চালু করতে পারবে।
এই কোচিআই-কার্ড হল বহু উদ্দেশ্যসাধক একটি প্রি-পেড রুপে কার্ড যা দিয়ে মেট্রো রেলে সফরকরার পাশাপাশি, সাধারণ ডেবিট কার্ড হিসেবেও তা ব্যবহার করা যাবে। বিশ্বের যে ক’টিশহরে আধুনিক ‘ওপেন লুপ স্মার্ট কার্ড’ রয়েছে কোচি হতে চলেছে তারই অন্যতম। এই কার্ডব্যবহার করা যাবে বাস, ট্যাক্সি এবং অটোর মতো অন্যান্য পরিবহণ মাধ্যমগুলিতেও।
‘কোচিআই-মোবাইল অ্যাপ’ উদ্ভাবন করা হয়েছে এক সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা নিয়ে। মোবাইলঅ্যাপটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি ইলেক্ট্রনিক ওয়ালেট যা আবার সংযুক্ত কোচিআই-কার্ড-এর সঙ্গে। সূচনায় এর সাহায্যে কোচির নাগরিকরা মেট্রো পরিষেবার সুযোগগ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু ভবিষ্যতে এই কার্ড দিয়ে তাঁরা মেটাতে পারবেন তাঁদেরভ্রমণ ও সফর সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনও। এছাড়াও, নিয়মিত লেনদেনের ক্ষেত্রে এবংশহর ও পর্যটন সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের জন্যও এটি ব্যবহার করা যাবে। সুতরাং, এটি হলনিঃসন্দেহে বৈদ্যুতিন প্রশাসন তথা পরিচালন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মঞ্চের একভালো উদাহরণ। এই প্রকল্পের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল এই যে, প্রায় ১ হাজার মহিলাএবং ২৩ জন রূপান্তরকামীকে কোচি মেট্রো রেল ব্যবস্থার কাজের জন্য নির্বাচিত করাহয়েছে।
পরিবেশ-বান্ধবপ্রকল্পের একটি দৃষ্টান্তই হল কোচি মেট্রো রেল। এটি চালানোর লক্ষ্যে মোট জ্বালানিচাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশই যোগান দেবে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির উৎসগুলি, বিশেষতসৌরশক্তি তথা সৌর জ্বালানি। এই প্রকল্পের একটি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হল কার্বননির্গমনের মাত্রা পুরোপুরিভাবে শূন্যে নিয়ে এসে নাগরিক পরিবহণ ব্যবস্থা বাস্তবায়িতকরা। এই মেট্রো প্রকল্পের প্রতিটি ষষ্ঠ স্তম্ভ সাজানো হবে একটি করে উদ্যান দিয়ে।শহরাঞ্চলের কঠিন বর্জ্য ব্যবহারের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
খুবইউৎসাহের বিষয় যে কোচি মেট্রোর সবক’টি স্টেশন এমনকি, এটি চালানোর জন্য নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রটিও ‘প্ল্যাটিনাম রেটিং’ লাভ করেছে। এটি হল ইন্ডিয়ান গ্রিন বিল্ডিংকাউন্সিল প্রদত্ত সর্বোচ্চ মাত্রার রেটিং।
বন্ধুগণ!
দেশেরসার্বিক পরিকাঠামোর বিকাশে গত তিন বছরে আমার সরকার বেশ কিছু বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে দৃষ্টিদিয়েছে। রেল, সড়ক ও বিদ্যুৎ রয়েছে আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায়। ‘প্রগতি’র মঞ্চেঅনুষ্ঠিত বৈঠকগুলিতে আমি ব্যক্তিগতভাবে পর্যালোচনা করেছি ৮ লক্ষ কোটি টাকারও বেশিবিনিয়োগের প্রায় ১৭৫টি প্রকল্প। এই ক্ষেত্রগুলিতে প্রতিবন্ধকতা দূর করে রূপায়ণের গড়কেওআমরা যথেষ্ট উন্নত করে তুলেছি। বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য হল পরবর্তী প্রজন্মেরউপযোগী এক পরিকাঠামো ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যার মধ্যে রয়েছে লজিস্টিক্স, ডিজিটালপদ্ধতি এবং গ্যাস।
দেশেরশহরগুলিতে জন-পরিবহণ ব্যবস্থার প্রসারে বেশ কিছু উদ্যোগও গ্রহণ করেছি আমরা। বিদেশিবিনিয়োগকেও এজন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে । ভারতের ৫০টি শহর এখন প্রস্তুত মেট্রো রেল প্রকল্প রূপায়ণের জন্য।
মেট্রো রেলব্যবস্থার আর্থ-সামাজিক সুফলগুলি আজ আর কারোরই অজানা নয়। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতেনীতি প্রণয়নের বিষয়টিকে আমরা আরও গতিশীল করে তুলেছি। সাম্প্রতিককালে, মেট্রো রেলেররোলিং স্টক এবং সিগন্যাল ব্যবস্থার সুনির্দিষ্ট মান সম্পর্কিত খুঁটিনাটিবিষয়গুলিকেও বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে, এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েউৎপাদক ও নির্মাতারা ভারতে তাঁদের নির্মাণ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধার প্রসারেবিশেষভাবে উৎসাহিত হবেন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি অনুসরণে মেট্রো রোলিং স্টকেরঅন্তর্দেশীয় নির্মাণ ও উৎপাদনকে উৎসাহদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ!
নগরপরিকল্পনার মধ্যে সুনির্দিষ্ট পরিবর্তন সম্ভব করে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। এজন্যপ্রয়োজন জনমুখী দৃষ্টিভঙ্গি এবং জমির ব্যবহার ও পরিবহণ ব্যবস্থার মধ্যেসমন্বয়সাধন।
এই লক্ষ্যে ২০১৭-রএপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকাশ করেছে ‘জাতীয় পরিবহণ-কেন্দ্রিক বিকাশ নীতি’।এই নীতির উদ্দেশ্য হল দেশের শহরগুলির রূপান্তর ঘটানো। এর ফলে, সমগ্র ব্যবস্থাটিপরিবহণ-নির্ভরশীল না থেকে বরং পরিবহণ-কেন্দ্রিক হয়ে উঠবে। মূল লক্ষ্য হল, বিভিন্নজনগোষ্ঠী এবং সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থার মধ্যে নিবিড় যোগসূত্র গড়ে তোলা।
সুনির্দিষ্টমূল্যমান-ভিত্তিক আর্থিক নীতির কাঠামো রচনার জন্য ভেঙ্কাইয়াজির নেতৃত্বাধীনকেন্দ্রীয় নগর পরিবহণ মন্ত্রককে আমি সাধুবাদ জানাই। জমির বর্ধিত মূল্যমানকে কাজেলাগানোর এ এক বিশেষ প্রক্রিয়া।
কোচি শহরেরনাগরিকবৃন্দ, কোচি মেট্রো রেল নিগম এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে এই গুরুত্বপূর্ণমাইলফলক স্থাপনের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করব। ২০১৬-রজানুয়ারিতে আয়োজিত চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়ার প্রথম রাউন্ডেই স্মার্ট নগরীর আখ্যাপেয়েছে কোচি। আমি আশাবাদী যে আগামী দিনগুলিতে এই শহর আরও উন্নততর লক্ষ্যে এগিয়েযেতে পারবে।
ধন্যবাদ।”
Kochi, the queen of Arabian Sea was once an important spice trading centre. Today it is known as the commercial capital of Kerala: PM Modi
— PMO India (@PMOIndia) June 17, 2017
Kochi Metro Rail Limited is a 50-50 Joint Venture of GoI & Govt of Kerala. Union Government has so far released over Rs 2000 crore: PM Modi
— PMO India (@PMOIndia) June 17, 2017
The coaches reflect “Make in India” vision. They have been built by Alstom near Chennai, and have an Indian component of around 70%: PM
— PMO India (@PMOIndia) June 17, 2017
Over the last three years, my Government has placed special focus on overall infrastructure development of the nation: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) June 17, 2017
In PRAGATI meetings, I have personally reviewed nearly 175 projects worth more than eight lakh crore rupees & resolved bottlenecks: PM Modi
— PMO India (@PMOIndia) June 17, 2017
We are also focusing on next generation infrastructure, which includes logistics, digital and gas: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) June 17, 2017
There is need to bring about a paradigm shift in urban planning by adopting a people-centric approach & integrating land-use & transport: PM
— PMO India (@PMOIndia) June 17, 2017
Kochi was selected as a Smart City in Round 1 of the challenge in January 2016. I hope it will do even better in the days to come: PM Modi
— PMO India (@PMOIndia) June 17, 2017