প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাজস্থানের বিকানেরে ২৪,৩০০ কোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে – ১১,১২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অমৃতসর – জামনগর অর্থনৈতিক করিডরের ৬ লেনের গ্রীনফিল্ড এক্সপ্রেসওয়ে শাখা, ১০,৯৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানী করিডরের জন্য প্রথম পর্যায়ের আন্তঃরাজ্য পরিবহণ ব্যাবস্থাপনা, ১৩৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিকানের থেকে ভিওয়াড়ির মধ্যে পরিবহণ লাইন এবং বিকানেরে ৩০ শয্যার কর্মচারী রাজ্য বীমা নিগমের নতুন হাসপাতাল । এছাড়াও তিনি বিকানের রেল স্টেশনের পুনরুন্নয়ন প্রকল্পের এবং ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চুরু – রতনগড় শাখায় দ্বিতীয় রেললাইন বসানোর প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন তিনি।
এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যোদ্ধাভূমির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, রাজ্যের মানুষ উন্নয়নের প্রতি নিজেদের উৎসর্গ করেছেন। তাই তাদের কাছে দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প উৎসর্গ করার সুযোগটি তিনি গ্রহণ করেছেন। আজ ২৪,০০০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্পগুলির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়েক মাসের মধ্যেই রাজস্থান দুটি অত্যাধুনিক ৬ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে পেল। গত ফেব্রুয়ারী মাসে দিল্লি – মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়ে করিডরের, দিল্লি – দাউসা – লালসোট শাখার উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। তার পর আজ অমৃতসর – জামনগর এক্সপ্রেসওয়ের ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬ লেনের গ্রীণফিল্ড শাখার উদ্বোধন করার সুযোগ পাওয়ায় তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। “জাতীয় সড়কের নিরিখে রাজস্থান ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে।” তিনি পরিবেশবান্ধব করিডর এবং কর্মচারী রাজ্য বীমা নিগমের হাসপাতালের জন্য বিকানের এবং রাজস্থানবাসীকে অভিনন্দন জানান।
রাজস্থানকে প্রচুর সম্ভবনার কেন্দ্র বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগ হতে চলেছে। অত্যাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে শিল্পাঞ্চলের উন্নয়ন ঘটবে। উচ্চগতি সম্পন্ন এক্সপ্রেসওয়ে এবং রেললাইন পর্যটনের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে। এর ফলে রাজ্যের যুব সম্প্রদায় উপকৃত হবে।
আজ যে গ্রীণফিল্ড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে, সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এর ফলে রাজস্থানের সঙ্গে হরিয়ানা, পাঞ্জাব, গুজরাট এবং জম্মু-কাশ্মীরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো ভালো হবে। এছাড়াও জামনগর এবং কান্দলার মতো বাণিজ্যিক সমুদ্রবন্দরগুলির সঙ্গে বিকানের সহ রাজস্থানের সরাসরি যোগাযোগ গড়ে উঠবে। অমৃতসর এবং যোধপুরের সঙ্গে বিকানেরের দূরত্ব কমবে। ফলস্বরূপ এই অঞ্চলের কৃষক এবং ব্য়বসায়ীরা উপকৃত হবেন। “সমগ্র পশ্চিম ভারতের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে গ্রীণফিল্ড এক্সপ্রেসওয়ে শক্তিশালী করবে।” তেল পরিশোধনাগারগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটার ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতি আসবে।
প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রুটের দ্বিতীয় রেললাইন বসানোর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, রাজস্থানে রেলপথের উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। ২০০৪ – ২০১৪ সময়কালে রাজস্থানে রেলের জন্য ১০০০ কোটি টাকারও কম বরাদ্দ হয়েছিল। আর ২০১৪ সালের পর প্রতি বছর এই রাজ্যের জন্য রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ হয় গড়ে ১০,০০০ কোটি টাকা।
এই পরিকাঠামোর উন্নয়নের ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিরা সব থেকে বেশি উপকৃত হবেন। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে বিকানেরের আচার, পাঁপড় এবং নিমকি সহ বিভিন্ন পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সহজেই পাঠানো যাবে।
রাজস্থানের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, সীমান্তবর্তী অঞ্চলের দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় থাকা গ্রামগুলির জন্য এখন ভাইব্র্যান্ট ভিলেজ বা প্রানবন্ত গ্রাম যোজনা নেওয়া হয়েছে। “আমরা সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিকে দেশের ‘প্রথম গ্রাম’ হিসেবে ঘোষণা করেছি। এই অঞ্চল সফর করার মধ্য দিয়ে এখানে উন্নয়ন হবে এবং দেশের মানুষের মধ্যে এই জায়গাগুলির বিষয়ে উৎসাহ গড়ে উঠবে।”
প্রধানমন্ত্রী, রাজস্থানের কর্ণীমাতা এবং সালাসার বালাজীর আর্শীবাদের কথা বলেন। তিনি জানান, এই রাজ্যের উন্নয়নের শীর্ষে পৌঁছানো উচিত। আর তাই কেন্দ্র ,রাজ্যের জন্য কাজ করে চলেছে। তার ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, প্রত্যেকের সম্মিলিত উদ্যোগে রাজস্থান উন্নয়নের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবে।
অনুষ্ঠানে রাজস্থানের রাজ্যপাল শ্রী কলরাজ মিশ্র, কেন্দ্রীয় সড়ক, পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রী শ্রী নীতীন গড়করি, কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী শ্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল, কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী শ্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত এবং কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শ্রী কৈলাশ চৌধুরী সহ বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেক্ষাপটঃ
প্রধানমন্ত্রী বিকানেরে ২৪,৩০০ কোটি টাকার বেশি একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। এর ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পরিকাঠামো মানোন্নয়ন হবে।
প্রধানমন্ত্রী আমৃতসর-জামনগর অর্থনৈতিক করিডরে ছয়লেন গ্রিনফিল্ড এক্সপ্রেসওয়েটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। হনুমানগড় জেলার ঝাকদাওয়ালি গ্রাম থেকে জালোর জেলার খেতলাওয়াসের মধ্যে ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১১,১২৫ কোটি টাকা। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং শিল্প করিডরগুলির সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এই প্রকল্পের ফলে পণ্য পরিবহণে গতি আসবে। পাশাপাশি পর্যটন ও আর্থিক বিকাশকেও ত্বরান্বিত করবে।
বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী আন্তঃরাজ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের প্রথম পর্বের উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১০,৯৫০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় ৬ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে যা পরিবেশ-বান্ধব। পশ্চিমাঞ্চলের পুনর্নবীকরণযোগ্য বিদ্যুৎ এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে সমতাও বজায় থাকবে। এছাড়াও, উত্তরাঞ্চলে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ অন্যত্র সরবরাহ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বিকানের থেকে ভিওয়াড়ির মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন উদ্বোধন করেন। এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১,৩৪০ কোটি টাকা। বিকানের থেকে ভিওয়াড়ি পর্যন্ত সরবরাহ লাইনে বিদ্যুৎ পরিবহণের ফলে রাজস্থানে ৮.১ গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী বিকানেরে কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংগঠনের জন্য ৩০ শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতাল উদ্বোধন করেন। এর ফলে এই হাসপাতালে ১০০টি বেড পাওয়া যাবে। স্থানীয় মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে এই হাসপাতাল সহায়ক হবে।
এছাড়াও তিনি বিকানের রেল স্টেশনের পুনরুন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি নির্মাণের কাজ শেষ হলে সংশ্লিষ্ট রেল স্টেশনে চলাচল করতে সুবিধা হবে।
শ্রী মোদী চারু ও রতনগড়ের মধ্যে ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের দ্বিতীয় লাইন বসানোর কাজের শিলান্যাস করেন। এই রেল প্রকল্পটি রূপায়িত হলে জিপসাম, চুনাপাথর, খাদ্যশস্য এবং সার সহ বিভিন্ন সামগ্রী বিকানের থেকে দেশের অন্যত্র পরিবহণে সুবিধা হবে।
राजस्थान अपार सामर्थ्य और संभावनाओं का केंद्र है। pic.twitter.com/sp4xAcwSD9
— PMO India (@PMOIndia) July 8, 2023
हमने सीमांत गाँवों को देश का पहला गाँव घोषित किया है। pic.twitter.com/SVVUJsgthl
— PMO India (@PMOIndia) July 8, 2023