দেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও লজিস্টিক্স ক্ষেত্রে প্রস্তুতি, দেশজুড়ে টিকাকরণ অভিযানের বর্তমান অবস্থা, উদ্ভূত নতুন কোভিড-১৯ ভেরিয়েন্ট এবং দেশে জনস্বাস্থ্যের ওপর তার প্রভাব – এই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কয়েকটি দেশে কোভিড-১৯-এর নতুন করে বাড়বাড়ন্ত দেখা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক আজ অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯-এর বর্তমান অবস্থা এবং কয়েকটি দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যায় বৃদ্ধির ঘটনা নিয়ে একটি উপস্থাপনা পেশ করেন নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য সচিব। প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয় ভারতে কোভিড রোগীর সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫৩। ২২ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে কোভিড আক্রান্তের হার ০.১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। যদিও শেষ ছ’সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে দৈনিক গড় আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৯০ হাজার।
প্রধানমন্ত্রী সমস্ত রকম আত্মসন্তোষ ভুলে চরম সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোভিড এখনও শেষ হয়ে যায়নি। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সহ আধিকারিকদের নজরদারি ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে এবং তাকে শক্তিশালী করার নির্দেশ দেন শ্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী সমস্ত স্তরের সার্বিক কোভিড পরিকাঠামোকে প্রস্তুত রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। যন্ত্রপাতি, মানবসম্পদ এবং পদ্ধতিগত ক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের প্রস্তুতি বজায় রাখার ওপর জোর দেন তিনি। অক্সিজেন সিলিন্ডার, পিএসএ প্ল্যান্ট, ভেন্টিলেটর এবং মানবসম্পদ সহ হাসপাতাল পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে ও কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পরীক্ষা করে দেখার জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আধিকারিকদেরকে কোভিড পরীক্ষা এবং জেনোমিক সিকোয়েন্সিং-এর ওপর জোর দিতে বলেছেন। দৈনিক ভিত্তিতে বেশি সংখ্যায় নমুনা পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত INSACOG জেনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবরেটরি (আইজিএসএল)-তে পাঠাতে বলেছেন। এর ফলে নতুন ভেরিয়েন্টকে নির্ধারিত করা সম্ভব হবে এবং দেশের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে সেক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককে কোভিড আদর্শ আচরণবিধি সব সময় মেনে চলতে বলেছেন বিশেষত, আসন্ন উৎসবের মরশুমে জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরার কথা বলেছেন তিনি। বয়স্ক এবং আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন মানুষদের ক্ষেত্রে প্রিকশন ডোজ নিতে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয় যে চিকিৎসা, টিকা এবং হাসপাতালের শয্যার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। অত্যাবশ্যক ওষুধগুলির দাম এবং সেগুলি পাওয়া যাচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে প্রতিদিন নজরদারি বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন শ্রী মোদী।
বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত অগ্রভাগে থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের নিঃস্বার্থভাবে এই কাজ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেন।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ ডা. মনসুখ মাণ্ডব্য, অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অনুরাগ ঠাকুর, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী ভারতী প্রবীণ পাওয়ার, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব শ্রী পি কে মিশ্র, নীতি আয়োগের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শ্রী পরমেশ্বরন আয়ার, নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য সদস্য ডা. ভি কে পল, ক্যাবিনেট সচিব শ্রী রাজীব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পরামর্শদাতা শ্রী অমিত খারে, স্বরাষ্ট্র সচিব শ্রী এ কে ভাল্লা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ সচিব শ্রী রাজেশ ভূষণ, স্বাস্থ্য গবেষণা দপ্তরের সচিব ডা. রাজীব বেহেল, ফার্মাসিউটিক্যালস (আই / সি)-র সচিব শ্রী অরুণ বারোকা সহ অন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।