প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সিন্ধুদুর্গে নৌ দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ, ডুবো জাহাজ ও বিমান এবং সিন্ধুদুর্গের তারকারলি বিচের বিশেষ বাহিনীর মহড়ার সাক্ষী থাকেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪ ডিসেম্বরের এই ঐতিহাসিক দিনে সিন্ধুদুর্গ কেল্লায় নৌ দিবসের উদযাপন, রাজকোট দুর্গে শিবাজী মহারাজের মূর্তির অবরণ উন্মোচন এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর শৌর্য প্রদর্শন প্রতিটি নাগরিককে আবেগ ও উদ্দীপনায় পরিপূর্ণ করে তুলছে। নৌ দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানান এবং দেশের জন্য যেসব বীর সন্তান জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিন্ধুদুর্গ কেল্লা দেশের প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে গর্বের সঞ্চার করে। যে কোনো দেশের ক্ষেত্রে শক্তিশালী নৌবাহিনীর ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, শিবাজী মহারাজ তা বহু আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। সমুদ্রের উপর যাদের আধিপত্য রয়েছে তারাই যে প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী তা অনুভব করে শিবাজী মহারাজ একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। কানহোজী আংরে, মায়াজী নায়েক ভাটকর, হিরোজী ইন্দুলকর প্রমুখ বীর যোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, এঁরা আজও অনুপ্রেরণার উৎস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের আদর্শ অনুসরণ করে ভারত আজ দাসত্বের শৃঙ্খল ছিঁড়ে এগিয়ে চলেছে। নৌ আধিকারিকদের কাঁধে এখন যে নতুন আভরণ রয়েছে, তা ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে গত বছর নৌবাহিনীর পতাকায় নতুন প্রতীক ব্যবহারেরও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীতে নারী শক্তির অংশগ্রহণ বাড়াতে সরকার দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। যুদ্ধ জাহাজে এই প্রথম কম্যান্ডিং অফিসার হিসেবে একজন মহিলাকে নিযুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় নৌবাহিনীকে অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৪০ কোটি ভারতীয়ের আস্থা ও বিশ্বাসই ভারতের সব থেকে বড় শক্তি। তার উপর ভর করেই ভারত বড় বড় লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে চলেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখন ‘নেশন ফার্স্ট’ চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। ইতিহাসের থেকে প্রেরণা নিয়ে ভারত এখন এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। নেতিবাচকতার রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করে মানুষ প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে চলার শপথ নিয়েছেন। এই শপথই আমাদের উন্নত ভারতের দিকে পৌঁছে দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের ইতিহাস কেবল দাসত্ব, পরাজয় ও হতাশার নয়। এর পাতায় পাতায় ছড়িয়ে রয়েছে বিজয়, বীরত্ব, জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সৃজনশীলতা ও সমুদ্র পথে অনায়াস বিচরণের কাহিনী। প্রযুক্তি ও সম্পদ বলতে যখন প্রায় কিছুই ছিল না, তখনও সিন্ধুদুর্গের মতো কেল্লা তৈরি করা হয়েছিল। চোল রাজারা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সমুদ্রপথে বাণিজ্য চালাতেন। কিন্তু বিদেশী শক্তির আক্রমণের পর সমুদ্রক্ষেত্রে ভারত ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে। যে ভারত নৌকো ও জাহাজ তৈরির জন্য প্রসিদ্ধ ছিল, তারা সমুদ্রের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং তার জেরে তাদের কৌশলগত অর্থনৈতিক শক্তিও কমে যায়। সেই হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে সরকার সমুদ্র অর্থনীতির উপর বিশেষ জোর দিয়েছে। সাগর মালা প্রকল্পে বন্দর ভিত্তিক উন্নয়নের পথে এগনো হচ্ছে। বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে সরকার নতুন নিয়ম প্রণয়ন করেছে, এর ফলে গত ৯ বছরে ভারতে জাহাজ চলাচলের সংখ্যা ১৪০ শতাংশ বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন এমন এক সময়ের মধ্য দিয়ে চলেছি, যার উপর ভিত্তি করে শুধু আগামী ৫-১০ বছরের নয়, আগামী শতাব্দীর ইতিহাস লেখা হবে। গত ১০ বছরে ভারত দশম স্থান থেকে উঠে এসে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে এবং দ্রুত গতিতে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার পথে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা পৃথিবী এখন ভারতের মধ্যে বিশ্ব মিত্রকে খুঁজে পাচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া মশলা বাণিজ্যের পথ ফিরিয়ে আনতে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের মধ্যে করিডর গড়ে তোলা হচ্ছে। মেড ইন ইন্ডিয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি তেজস, কিষাণ ড্রোন, ইউপিআই এবং চন্দ্রযান-৩ –এর উল্লেখ করেন। আইএনএস বিক্রান্তের মতো বিমানবাহী রণপোতের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও ভারত এখন স্বনির্ভরতা অর্জন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপকূল এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নকে সরকার বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এজন্য ২০১৯ সালে পৃথক মৎস্য মন্ত্রক গড়ে তোলা হয়েছে। মৎস্য ক্ষেত্রে বিনিযোগ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৪ সালের পর থেকে মৎস্য উৎপাদন ৮ শতাংশ এবং মৎস্য রপ্তানি ১১০ শতাংশ বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া কৃষকদের বীমার পরিমাণ ২ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হয়েছে। তাঁরা কিষান ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ভোগ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোঙ্কন এক অসামান্য সম্ভাবনার অঞ্চল। এখানকার উন্নয়নে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রসঙ্গে তিনি সিন্ধুদুর্গ, রত্নাগিরি, আলিবাগ, পারভানি ও ধারাশিবে মেডিকেল কলেজ স্থাপন, চিপি বিমানবন্দরের কাজকর্ম এবং দিল্লি-মুম্বাই শিল্প করিডরের সঙ্গে মনগাঁওকে সংযুক্ত করার উল্লেখ করেন। এখানকার কাজু চাষিদের জন্য বিশেষ প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। ম্যানগ্রোভের ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য মালভান, আচারা রত্নাগিরি, দেবগড়-বিজয় দুর্গের মতো বিভিন্ন এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐতিহ্যের পাশাপাশি উন্নয়নই হলো নতুন ভারতের পথ। ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের আমলে নির্মিত দুর্গগুলির সংরক্ষণে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে তিনি জানান। এতে স্থানীয় পর্যটনের বিকাশ হবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনা দিবস, নৌ দিবসের মতো দিনগুলি এখন দিল্লির বাইরে উদযাপন করার যে নতুন প্রথা চালু হয়েছে তাতে এই সব বিশেষ দিনের গুরুত্ব কেবল রাজধানীতে আবদ্ধ না থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে এবং নতুন নতুন এলাকা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
অনুষ্ঠানে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল রমেশ বাইস, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহ্বান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরিকুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
India salutes the dedication of our navy personnel. pic.twitter.com/0ZKj7TJ0QL
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023
Veer Chhatrapati Maharaj knew the importance of having a strong naval force. pic.twitter.com/GjnNXRJvOi
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023
छत्रपति वीर शिवाजी महाराज से प्रेरणा लेते हुए आज भारत, गुलामी की मानसिकता को पीछे छोड़कर आगे बढ़ रहा है। pic.twitter.com/flfEk4nmOu
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023
We are committed to increasing the strength of our women in the armed forces. pic.twitter.com/YbqCx8aVSK
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023
Today, India is setting impressive targets. pic.twitter.com/m7Q8TYt2GE
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023
India has a glorious history of victories, bravery, knowledge, sciences, skills and our naval strength. pic.twitter.com/CTKWYrqEA3
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023
Today India is giving unprecedented impetus to blue economy. pic.twitter.com/v5i3bDdVAF
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023
The world is seeing India as a 'Vishwa Mitra.' pic.twitter.com/w9eXeEu4CI
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023
'Made in India' is being discussed all over the world. pic.twitter.com/ToGiVOTpgF
— PMO India (@PMOIndia) December 4, 2023