প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও বার্তার মাধ্যমে কাশীতে কাশী তেলুগু সঙ্গমম – এ ভাষণ দিলেন।
ভাষণের শুরুতে তিনি সকলকে গঙ্গা পুষ্করালু উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান। শ্রী মোদী বলেন, কাশীর ঘাটে গঙ্গা – পুষ্করালু উৎসব গঙ্গা ও গোদাবরীর সম্মিলনের সমতুল। এ ধরনের সমারোহ সনাতন ভারতের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক অনন্য মেলবন্ধন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী কয়েক মাস আগের কাশী – তামিল সঙ্গমম – এর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। কিছু দিন আগে সৌরাষ্ট্র তামিল সঙ্গমম – এ তাঁর যোগদানের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানা বৈচিত্র্যের সমাহারের ফল জাতীয়তাবাদের অমৃত, যা ভবিষ্যৎ ভারতের শক্তির উৎস হয়ে উঠবে।
কাশী ও সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে তেলুগু জনগোষ্ঠীর গভীর সংযোগের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা থেকে কাশীতে বহু পুণ্যার্থী আসেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। কাশীর অনেক সাধু-সন্ত তেলুগু অঞ্চল থেকেই এসেছিলেন - একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ দেন ভিজিয়ানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করা তৈলঙ্গ স্বামীর কথা, যাঁকে রামকৃষ্ণ পরমহংস কাশীর জীবন্ত মহাদেব বলে অভিহিত করেছিলেন। জিড্ডু কৃষ্ণমূর্তি এবং অন্যদের কথাও উঠে আসে, যাঁরা এখনও কাশীর মানুষের কাছে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার আসনে অধিষ্ঠিত।
তেলুগু মানুষের চেতনায় কাশীর বিশেষ জায়গা রয়েছে, ঠিক তেমনভাবেই কাশীও তাঁদের মনোভাব ও আবেগ উপলব্ধি করে – এই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ভেমুলাওয়াড়া মন্দিরের কথা, যাকে বলা হয় দক্ষিণাকাশী। তেলুগু সাহিত্যেও কাশীর বিশেষ স্থান রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কাশী হ’ল মুক্তি ও মোক্ষলাভের পুণ্যস্থল। আগেকার দিনে তেলুগু মানুষদের হাজার হাজার কিলোমিটার হেঁটে কাশীতে পৌঁছতে হ’ত। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত থেকে উন্নততর হয়ে উঠছে। সেজে উঠছে কাশীর ঘাটগুলি। নতুন মহাসড়ক নির্মাণের ফলে বিমানবন্দর থেকে দশাশ্বমেধ ঘাটে পৌঁছতে এখন অনেক কম সময় লাগে। পরিকাঠামোগত প্রশ্নে কাশীতে যে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড চলছে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শহরটির বিভিন্ন জায়গায় মাটির নীচ দিয়ে বৈদ্যুতিক তার পাতা, কুন্ডগুলিকে সাজানো ইত্যাদির প্রসঙ্গও তুলে ধরেন। কাশীর মানুষের জন্য নির্মীয়মান রোপওয়ের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ঐ শহর ও ঘাটগুলির পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সেখানকার মানুষ, বিশেষত যুবদের অনেকটাই দায়িত্ব রয়েছে বলে তিনি মনে করিয়ে দেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের পূর্বসূরীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভারতের ‘চেতনা কেন্দ্র’ তৈরি করে গেছেন, যার সম্মিলন তুলে ধরে ভারতমাতার পূর্ণ রূপ। ভারতের সম্পূর্ণতা এবং পূর্ণ সম্ভাবনা তখনই বোঝা যায়, যখন আমরা এদেশে একতার মধ্যে বৈচিত্র্যের বিষয়টি উপলব্ধি করি। গঙ্গা – পুষ্করালুর উৎসব স্বদেশ চেতনা এবং দেশ সেবার মন্ত্রকেই তুলে ধরে।