“সন্ত মীরাবাঈ – এর ৫২৫তম জন্মবার্ষিকী ভারতের সংস্কৃতি এবং ভালোবাসার ঐতিহ্যের উদযাপন”
“মীরাবাঈ ভারতের চেতনার সঙ্গে ভক্তি ও অধ্যাত্মকে লালিত করেছেন”
“ভারতে সর্বদাই নারী শক্তি পূজিত হয়”
মথুরা ও ব্রজ উন্নয়ন যাত্রায় আর পিছিয়ে থাকবে না”
“ব্রজভূমিতে বর্তমানে যে উন্নয়ন হচ্ছে, তা দেশের পরিবর্তিত ভাবনাচিন্তার প্রতিফলন”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তর প্রদেশের মথুরায় সন্ত মীরাবাঈ জন্মোৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি সন্ত মীরাবাঈ-কে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি স্মারক ডাকটিকিট ও মুদ্রা প্রকাশ করেছেন। তিনি অনুষ্ঠান-স্থলে আয়োজিত প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন। এছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। সন্ত মীরাবাঈ – এর স্মরণে বর্ষব্যাপী যে কর্মসূচি পালিত হবে, এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তা সূচিত হ’ল। 
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ব্রজভূমির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ব্রজবাসীদের মধ্যে থাকতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই অঞ্চলের আধ্যাত্মিক গুরুত্বের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে শ্রী মোদী ভগবান কৃষ্ণ, রাধারানী, মীরাবাঈ সহ ব্রজভূমির সকল সাধুসন্ত-কে প্রণাম জানান। মথুরার সাংসদ শ্রীমতী হেমা মালিনীর উদ্যোগের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রীমতী মালিনী ভগবান কৃষ্ণের ভক্তিসাগরে নিজেকে নিমজ্জিত করেছেন। 
ভগবান কৃষ্ণ ও মীরাবাঈ – এর সঙ্গে গুজরাটের যোগাযোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মথুরা সফরের গুরুত্বের দিকটি তুলে ধরেন। “মথুরার কানাইয়া গুজরাটে গিয়ে দ্বারকাধীশের ভূমিকা পালন করেছেন”। রাজস্থানের সন্ত মীরাবাঈজী মথুরা যাত্রায় ভালোবাসার প্রসার ঘটিয়েছেন। জীবনের অন্তিমপর্ব তিনি গুজরাটের দ্বারকায় অতিবাহিত করেন। গুজরাটবাসী যখন উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থানে ব্রজভূমি দর্শন করেন, তখন তাঁরা সেটিকে দ্বারকাধীশের আশীর্বাদ বলে বিবেচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৪ সাল থেকে বারাণসীর সাংসদ হওয়ার সুবাদে তিনি উত্তর প্রদেশের একজন হয়ে উঠেছেন। 

শ্রী মোদী বলেন, সন্ত মীরাবাঈ – এর ৫২৫তম জন্মবার্ষিকী আসলে ভারতের সংস্কৃতি এবং ভালোবাসার ঐতিহ্যের উদযাপন। এই উদযাপনের মধ্য দিয়ে নর ও নারায়ণ, জীব ও শিব, ভক্ত ও ভগবান এক হয়ে যাবেন। 
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, মীরাবাঈ আত্মত্যাগ ও শৌর্যের ভূমি রাজস্থান থেকে উঠে এসেছেন। ৮৪টি ‘কোস’ - এ উত্তর প্রদেশ ও রাজস্থান এই দুই রাজ্যেরই প্রভাব প্রতিফলিত। “মীরাবাঈ ভারতের চেতনার সঙ্গে ভক্তি ও অধ্যাত্মকে লালিত করেছেন। তাঁর স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভারতের আত্মত্যাগ ও শৌর্যের কথা যেমন মনে করিয়ে দেয়, পাশাপাশি দেশের সংস্কৃতি ও চেতনাকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে রাজস্থানবাসীর ভক্তির ঐতিহ্যকেও স্মরণ করতে হয়”।  
শ্রী মোদী বলেন, ভারতে সর্বদাই নারী শক্তি পূজিত হয়েছে। ব্রজবাসী অন্যসব অঞ্চল থেকে এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। কৃষ্ণের দেশে সকলকেই স্বাগত জানানোর সময়, অভ্যর্থনা জানানোর সময় এবং সংবর্ধনা জানানোর সময় ‘রাধে রাধে’ বলে সম্বোধন করা হয়। ‘রাধার নাম যুক্ত করলেই কৃষ্ণের নাম উচ্চারণ সম্পূর্ণ হয়’। এর মাধ্যমে দেশ গঠনের কাজে মহিলাদের অবদান স্বীকৃতি পায়। মীরাবাঈ এক্ষেত্রে আদর্শ এক উদাহরণ। প্রধানমন্ত্রী মীরার ভজনের একটি অংশ উদ্ধৃত করে বলেন, “আকাশ ও ভূমির মধ্যে যাই ঘটুক না কেন, তার শেষ আছে”। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সঙ্কটের সময় নারী শক্তি কিভাবে সারা বিশ্বকে পথ দেখাতে পারে, মীরাবাঈ তার উদাহরণ। তাঁর গুরু ছিলেন সন্ত রবিদাস। তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক। তাঁর কাব্যগাঁথা আজও আমাদের পথ দেখায়। মূল্যবোধকে আদর্শ করে কিভাবে চলতে হয় মীরাবাঈ – এর থেকে আমরা সেই শিক্ষাই পেয়েছি। 

প্রধানমন্ত্রী ভারতে শাশ্বত ভাবনাকে স্মরণ করে বলেন, যখন দেশের চেতনা দুর্বল হয়েছে, আক্রমণের সম্মুখীন হয়েছে, তখনই দেশের অভ্যন্তর থেকেই এক শক্তি জাগ্রত হয়েছে এবং এই সমস্যার সমাধান হয়েছে। কোনও কোনও পথ প্রদর্শক যোদ্ধার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন, আবার কেউ হয়েছেন সাধু। ভক্তি যুগে দক্ষিণ ভারতের আলাভার, নয়নার সন্ত, আচার্য রামানুচার্য; উত্তর ভারতের তুলসীদাস, কবীরদাস, রবিদাস ও সুরদাস; পাঞ্জাবের গুরু নানকদেব, পূর্ব ভারতের বাংলার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভূ এবং পশ্চিমে গুজরাটের নারসিং মেহতা ও মহারাষ্ট্রের তুকারাম এবং নামদেবের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এরা সেই সময় দেশকে পথ দেখিয়েছেন। তাঁদের ভাষা ও সংস্কৃতি পৃথক হলেও তাঁদের বার্তা ছিল অভিন্ন। তাঁরা আধ্যাত্মিকতা ও জ্ঞানের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।   

শ্রী মোদী মলুক দাস, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভূ, মহাপ্রভূ বল্লভাচার্য, স্বামী হরিদাস ও স্বামী হিত হরিবংশ মহাপ্রভূর উদাহরণ দিয়ে বলেন, মথুরা ভক্তি আন্দোলনের সময় বিভিন্ন ভাবধারার সঙ্গম-স্থল হয়ে উঠেছিল। “ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদে আজও ভক্তিযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হচ্ছে”। 
প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মথুরাকে যে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ ছিল, সেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ভারতের গৌরবোজ্জ্বল অতীতের কথা ভুলে দাসত্বের মানসিকতার কারণেই ব্রজভূমি অবহেলার শিকার হয়েছে। অমৃতকালের এই সময় দেশ প্রথমবারের মতো দাসত্বের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। লালকেল্লার প্রকার থেকে যে পঞ্চ প্রণ (সংকল্প) – এর কথা তিনি উল্লেখ করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গের অবতারণা করে শ্রী মোদী বলেন, আজ কাশী বিশ্বনাথ ধাম ও কেদারনাথ ধামের পুনর্গঠন হচ্ছে। শ্রীরাম মন্দির শীঘ্রই উদ্বোধন হবে। “উন্নয়ন যাত্রায় মথুরা ও ব্রজ আর পিছিয়ে থাকবে না। ব্রজের উন্নয়নে উত্তর প্রদেশ ব্রজ তীর্থ বিকাশ পরিষদ গঠিত হয়েছে। তীর্থ যাত্রীদের সুবিধার্থে এবং এই অঞ্চলের বিকাশে পরিষদ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে”।  
শ্রী মোদী বলেন, মথুরা, বৃন্দাবন, ভরতপুর, কারৌলি, আগ্রা, ফিরোজাবাদ, কাশগঞ্জ, পালওয়াল, বল্লভগড় – বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও এই অঞ্চলগুলি কৃষ্ণ লীলার সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সঙ্গে একযোগে কেন্দ্রীয় সরকার এই অঞ্চলগুলির উন্নয়ন ঘটাচ্ছে। 
পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রজভূমিতে যে পরিবর্তন ও উন্নয়ন প্রত্যক্ষ হচ্ছে, তা শুধু দেশের বর্তমান ব্যবস্থার পরিবর্তনের প্রতিফলনই নয়, সেটি আসলে দেশের পরিবর্তিত ভাবনাচিন্তার প্রতমান-ও। “ভারতের যখনই পুনর্জন্ম হয়েছে, তা আসলে ভগবান কৃষ্ণের আশীর্বাদেরই ফল, যার প্রমাণ মহাভারত”। বিকশিত ভারত গড়ে তুলতে দেশের সংকল্পের কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল শ্রীমতী আনন্দীবেন প্যাটেল, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রীদ্বয় শ্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য ও শ্রী ব্রজেশ পাঠক এবং সাংসদ শ্রীমতী হেমা মালিনী উপস্থিত ছিলেন। 

 

 

 

 

 

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 নভেম্বর 2024
November 21, 2024

PM Modi's International Accolades: A Reflection of India's Growing Influence on the World Stage