প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জয়পুরে রাজস্থানের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে ৬ এবং ৭ জানুয়ারি পুলিশের ডাইরেক্টর জেনারেল এবং ইন্সপেক্টর জেনারেলদের ৫৮-তম সর্বভারতীয় সম্মেলনে অংশ নেন।
নতুন দণ্ডবিধি নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, এই আইনগুলি প্রণয়নের ফলে অপরাধের বিচার ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। তিনি বলেন যে, নতুন দণ্ডবিধি প্রণয়ন করা হয়েছে ‘নাগরিক প্রথম, মর্যাদা প্রথম এবং বিচার প্রথম’ এই দর্শনের ভিত্তিতে এবং ‘ডান্ডা’ নিয়ে কাজ করার বদলে পুলিশের এখন প্রয়োজন ‘তথ্য’ নিয়ে কাজ করা। প্রধানমন্ত্রী পুলিশ প্রধানদের নব প্রণদিত আইনের মূল ভাবনাটিকে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর কাছে সুচারুভাবে পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দেন। মহিলা এবং বালিকাদের নতুন দণ্ডবিধিতে তাঁদের অধিকার এবং সুরক্ষা বিষয়ে যে সংস্থান রাখা হয়েছে সেই সম্পর্কে সচেতন করে তোলার ওপর বিশেষ আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি পুলিশকে নারী সুরক্ষার ওপর জোর দিতে বলেছেন যাতে মহিলারা ‘যখনই হোক আর যেখানে হোক’ কাজ করতে পারেন নির্ভয়ে।
প্রধানমন্ত্রী নাগরিকদের কাছে পুলিশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। নাগরিকদের সুবিধার জন্য ইতিবাচক তথ্য এবং বার্তা পৌঁছে দিতে পুলিশ স্টেশন স্তরে সমাজ মাধ্যমকে ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বিপর্যয়ে ত্রাণ সম্পর্কে আগাম খবর দিতে সমাজ মাধ্যমকে ব্যবহারেরও সুপারিশ করেন তিনি। নাগরিক-পুলিশ সম্পর্ক জোরদার করতে বিভিন্ন ক্রীড়ানুষ্ঠান আয়োজনেরও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি সরকারি আধিকারিকদেরও সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে থেকে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ আরও ভালো করার আর্জি জানিয়েছেন যেহেতু সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি ভারতের ‘প্রথম গ্রাম’।
ভারতের প্রথম সৌর অভিযান আদিত্য এল১-এর সাফল্য এবং আরব সাগরে ছিনতাই হওয়া জাহাজ থেকে নৌবাহিনীর দ্বারা দ্রুত ২১ জন নাবিককে উদ্ধারের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইসব সাফল্য প্রমাণ করে যে ভারত বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে উঠে আসছে। তিনি বলেন, আদিত্য এল১-এর সাফল্য চন্দ্রযান ৩ অভিযানের সাফল্যেরই অনুরূপ। তিনি ভারতীয় নৌবাহিনীর সফল অভিযানে গর্বও প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কাছে ভারতের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে এবং জাতীয় শক্তি বৃদ্ধি করতে ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর উচিত ২০৪৭-এর মধ্যে উন্নত ভারতের স্বপ্নকে সাকার করতে আধুনিক এবং বিশ্বমানের পুলিশ বাহিনী হয়ে ওঠা।
প্রধানমন্ত্রী বিশেষ অবদানের জন্য পুলিশ পদক দেওয়ার পাশাপাশি জয়পুরে তিন দিনের ডিজিপি, আইজিপি সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীগণ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ডিজি এবং আইজিরা এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ সংস্থা ও কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর প্রধানগণ। পূর্ববর্তী বছরগুলির মতোই এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় হাইব্রিড মাধ্যমে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন পদাধিকারী পুলিশ এতে যোগ দেন। সম্মেলনে নবপ্রণীত গুরুত্বপূর্ণ দণ্ডবিধি, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার কলাকৌশল, অতি বাম চরমপন্থা, নতুন নতুন সাইবার আতঙ্ক, বিশ্বব্যাপী মৌলবাদ বিরোধী উদ্যোগ সহ জাতীয় নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলি নিয়ে আলোচনা হয়।