“যৌথ উদযাপন ভারতের সেই ভাবনার অমর যাত্রার প্রতীক, যা বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন মাধ্যমে এগিয়ে চলেছে”
“আমাদের শক্তির কেন্দ্রগুলি নিছক তীর্থস্থান নয়, তারা কেবল বিশ্বাসের কেন্দ্র নয়, তারা ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ চেতনার জাগ্রত স্থাপনা”
“ভারতে, আমাদের ঋষি ও গুরুরা সর্বদা চিন্তাভাবনাকে পরিমার্জিত করেছেন এবং আমাদের আচরণকে উন্নত করেছেন”
“শ্রী নারায়ণ গুরু জাতপাতের নামে চলা বৈষম্যের বিরুদ্ধে একটি যৌক্তিক ও কার্যকরি লড়াই করেছিলেন। আজ নারায়ণ গুরুজীর অনুপ্রেরণায় দেশ দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া ও প্রান্তিক মানুষের সেবা করছে এবং তাঁদের অধিকার দিয়েছে”
“শ্রী নারায়ণ গুরু ছিলেন একজন সহজাত চিন্তাবিদ ও একজন বাস্তব সংস্কারক”
“যখন আমরা সমাজ সংস্কারের পথে হাঁটি, তখন সমাজে আত্মোন্নয়নের একটি শক্তি জাগ্রত হয়, ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ এর একটি উদাহরণ”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ৭ নম্বর লোক কল্যাণ মার্গে শিবগিরি তীর্থযাত্রা ৯০তম বার্ষিকী এবং ব্রহ্ম বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষব্যাপী যৌথ উদযাপনের জন্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ  করেন। বর্ষব্যাপী এই অনুষ্ঠান যৌথ উদযাপনের জন্য একটি লোগোও প্রকাশ করেন তিনি। শিবগিরি তীর্থযাত্রা ও ব্রহ্ম বিদ্যালয় উভয়ই মহান সমাজ সংস্কারক শ্রী নারায়ণ গুরুর আশীর্বাদ ও নির্দেশনায় শুরু হয়েছিল। শিবগিরি মঠের আধ্যাত্মিক গুরু ও ভক্তরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রাজীব চন্দ্রশেখর এবং শ্রী ভি মুরলীধরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী সাধুসন্তদের বাড়িতে পেয়ে খুশি প্রকাশ করেন। তিনি বছরের পর বছর ধরে শিবগিরি মঠের সাধু ও ভক্তদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেছেন এবং কিভাবে সর্বদা তাঁদের সঙ্গে মতবিনিময় থেকে উৎসাহিত বোধ করেছিলেন, সেকথাও স্মৃতিচারণ করেন। প্রধানমন্ত্রী উত্তরাখন্ড – কেদারনাথ দুর্ঘটনার সময়ের কথা স্মরণ করেন। তৎকালীন কংগ্রেস সরকার এবং কেরল থেকে একজন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁকে শিবগিরি মঠের সাধুদের সাহায্যের কথা বলা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সুযোগ তিনি কখনই ভুলতে পারবেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিবগিরি তীর্থযাত্রার ৯০তম বার্ষিকী ও ব্রহ্ম বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন এই প্রতিষ্ঠানগুলির যাত্রার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিৎ নয়, বরং “এটি ভারতের সেই ভাবনার অমর যাত্রাও, যা বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন মাধ্যমে এগিয়ে চলছে”। তিনি আরও বলেন, “বারাণসীর শিবের শহরকে বা ভারকালের শিবগিরি ভারতের শক্তির প্রতিটি পীঠস্থান আমাদের সকল ভারতীয়র জীবনে একটি বিশেষ স্থান দখল করে রয়েছে। এই স্থানগুলি নিছক কোনও তীর্থস্থান নয়, এগুলি কেবল বিশ্বাসের কেন্দ্র নয়, বরং এগুলি ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ চেতনার জাগ্রত স্থাপনা”। 

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, যখন অনেক দেশ এবং সভ্যতা তাদের ধর্ম ও বস্তুবাদ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তখন ভারত আধ্যাত্মবাদের জায়গা নিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের ঋষি, গুরুরা সর্বদা চিন্তভাবনাকে পরিমার্জিত এবং আমাদের আচরণকে উন্নত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রী নারায়ণ গুরু শুধু আধুনিকতার কথাই বলেননি, একই সঙ্গে তিনি ভারতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে সমৃদ্ধ করেছেন। শ্রী মোদী জানান, শ্রী নারায়ণ গুরু শিক্ষা ও বিজ্ঞানের কথা বলেছেন। ভারতের ধর্ম, বিশ্বাস ও হাজার বছরের ঐতিহ্যের গৌরব তুলে ধরতে কখনই তিনি পিছপা হননি। শ্রী নারায়ণ গুরু প্রচলিত ধ্যানধারণা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছেন ও ভারতকে বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন করেছিলেন। জাতপাতের নামে যে বৈষম্য চলছে, তার বিরুদ্ধে তিনি যৌক্তিক ও কার্যকরি লড়াই করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ নারায়ণ গুরুজীর অনুপ্রেরণায় দেশ দরিদ্র, নিঃস্ব, পিছিয়ে পড়াদের সেবা করছে,তাঁদের অধিকার দিয়েছে”। শ্রী মোদী বলেন, দেশ ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিসওয়াস ও সবকা প্রয়াস’ – এর মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলেছে। 

শ্রী নারায়ণ গুরুকে একজন সহজাত চিন্তাবিদ ও বাস্তব সংস্কারক বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুরুজী সর্বদা আলোচনার শৃঙ্খলা অনুসরণ করতেন এবং সর্বদা অন্যের দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বোঝার চেষ্টা করতেন ও সহযোগিতামূলক উপায়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী প্রকাশ করার চেষ্টা করতেন। তিনি সমাজে এমন পরিবেশ তৈরি করেছেন, যে সমাজ নিজেই সঠিক যুক্তি দিয়ে আত্মোন্নতির পথে এগিয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন সমাজ সংস্কারের এই পথে হাঁটি, তখন সমাজে আত্মোন্নতির একটি শক্তি জাগ্রত হয়। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ অভিযানের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার উদাহরণ তুলে ধরেন, যেখানে সরকার সঠিক পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম হওয়ায় পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, আমাদের একটাই জাত, তা হল ভারতীয়। আমাদের একটাই ধর্ম – সেবা ও কর্তব্য। আমাদের একটাই দেবতা – ভারতমাতা। শ্রী নারায়ণ গুরুর ‘এক জাতি, এক ধর্ম, এক ঈশ্বর’ – এই উপদেশ আমাদের দেশপ্রেমে একটি আধ্যাত্মিক মাত্রা যোগ করেছে বলেও শ্রী মোদী জানান। তিনি বলেন, “আমরা সকলেই জানি যে, ঐক্যবদ্ধ ভারতীয়দের পক্ষে বিশ্বের কোনও লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব নয়”।

আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় স্বাধীনতা সংগ্রামের বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। তাঁর মতে, এটি সর্বদা একটি আধ্যাত্মিক ভিত্তি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম কখনই প্রতিবাদ ও রাজনৈতিক কৌশলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এটি ছিল দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙ্গার লড়াই। আমরা কিভাবে একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে থাকব, সেই দৃষ্টিভঙ্গীই তুলে ধরা হয়েছিল। আমরা কিসের বিরোধিতা করছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা কিসের পক্ষে দাঁড়িয়েছি, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ”।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নারায়ণ গুরুর সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান ব্যক্তিদের যুগান্তকারী বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। গুরুদেব রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর, গান্ধীজী এবং স্বামী বিবেকানন্দ ও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা একাধিক অনুষ্ঠানে শ্রী নারায়ণ গুরুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বৈঠকগুলিতেই ভারতের পুনর্গঠনের বীজ বপণ করা হয়েছিল। এর ফল আজকের ভারত এবং দেশের ৭৫ বছরের যাত্রাপথে দৃশ্যমান। ১০ বছরের মধ্যে শিবগিরি তীর্থযাত্রা এবং ২৫ বছরে ভারতের স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করা হবে। এই উপলক্ষে আমাদের লক্ষ্য অর্জন ও দৃষ্টিভঙ্গী বিশ্ব পর্যায়ে হওয়া উচিৎ বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

শিবগিরি তীর্থযাত্রা প্রতি বছর ৩০শে ডিসেম্বর থেকে পয়লা জানুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনের জন্য তিরুবনন্তপুরমে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। শ্রী নারায়ণ গুরুর মতে, তীর্থযাত্রার লক্ষ্য হওয়া উচিৎ মানুষের মধ্যে সম্যক জ্ঞান সৃষ্টি, সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। তাই, তীর্থযাত্রায় – শিক্ষা, পরিচ্ছন্নতা, ধর্মপ্রাণ, হস্তশিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি ও বিজ্ঞান এবং সংগঠিত প্রয়াস – এই ৮টি বিষয়ের উপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। 

১৯৩৩ সালে মুষ্ঠিমেয় ভক্তদের নিয়ে এই তীর্থযাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু, এখন এটি দক্ষিণ ভারতের অন্যতম প্রধান অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও ভাষা নির্বিশেষে সারা বিশ্ব থেকে লক্ষ লক্ষ ভক্ত তীর্থযাত্রায় অংশ নিতে শিবগিরিতে আসেন।

সমান সম্মান ও মানসিক স্থিরতার সঙ্গে সকল ধর্মের নীতি- নৈতিকতার শিক্ষাকে একত্রিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন শ্রী নারায়ণ গুরু। শিবগিরির ব্রহ্ম বিদ্যালয় এই দৃষ্টিভঙ্গী বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই ব্রহ্ম বিদ্যালয়ে শ্রী নারায়ণ গুরুর কাজ, বিশ্বের সকল গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ সহ ভারতীয় দর্শনের উপর ৭ বছরের একটি পাঠক্রম রয়েছে। 

 

 

 

 

 

 

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Indian Toy Sector Sees 239% Rise In Exports In FY23 Over FY15: Study

Media Coverage

Indian Toy Sector Sees 239% Rise In Exports In FY23 Over FY15: Study
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi highlights extensive work done in boosting metro connectivity, strengthening urban transport
January 05, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has highlighted the remarkable progress in expanding Metro connectivity across India and its pivotal role in transforming urban transport and improving the ‘Ease of Living’ for millions of citizens.

MyGov posted on X threads about India’s Metro revolution on which PM Modi replied and said;

“Over the last decade, extensive work has been done in boosting metro connectivity, thus strengthening urban transport and enhancing ‘Ease of Living.’ #MetroRevolutionInIndia”