স্কুলে বহুমুখী ক্রীড়া অনুশীলন কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
সিন্ধিয়া স্কুলের ১২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন
প্রধানমন্ত্রী স্কুলের বিশিষ্ট প্রাক্তনী এবং সফল শিক্ষার্থীদের হাতে বার্ষিক পুরস্কার তুলে দেন
“দূরদর্শী মহারাজা প্রথম মাধো রাও সিন্ধিয়া আগামী প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন”
“গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের দীর্ঘমেয়াদি অভূতপূর্ব কিছু পরিকল্পনার জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”
“দেশের বর্তমান যুগের যুব সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধির জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ গড়ে তুলতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি”
“সিন্ধিয়া স্কুলের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তোলার জন্য পেশাগত ক্ষেত্রে অথবা অন্যত্র উদ্যোগী হতে হবে”
“ভারত বর্তমান সময়কালে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার ব্যাপ্তি বিশাল”
“আপনাদের স্বপ্ন পূরণ করাই আমার সঙ্কল্প”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে সিন্ধিয়া স্কুলের ১২৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন। এই অনুষ্ঠানে স্কুলে বহুমুখী ক্রীড়া অনুশীলন কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী স্কুলের বিশিষ্ট প্রাক্তনী এবং সফল শিক্ষার্থীদের হাতে বার্ষিক পুরস্কার তুলে দেন। সিন্ধিয়া স্কুল ১৮৯৭ সালে ঐতিহাসিক গোয়ালিয়র দুর্গে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই স্কুলের ১২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে শ্রী মোদী একটি স্মারক ডাকটিকিটও প্রকাশ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী শিবাজি মহারাজের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন। বিদ্যালয়ের ১২৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত প্রদর্শনীটিও তিনি ঘুরে দেখেন। 

সিন্ধিয়া স্কুলের ১২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় শ্রী মোদী সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান। এইদিন আজাদ হিন্দ সরকার গঠিত হয়েছিল। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। গোয়ালিয়র শহরের ঐতিহ্যবাহী সিন্ধিয়া স্কুলের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে কৃতজ্ঞতা জানান। শ্রী মোদী তাঁর ভাষণে ঋষি গোয়ালিপা, কিংবদন্তী সঙ্গীতজ্ঞ তানসেন, মহদাজী সিন্ধিয়া, রাজমাতা বিজয় রাজে, অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং ওস্তাদ আমজাদ আলি খাঁ-র কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, গোয়ালিয়রের মাটি থেকে উঠে আসা এইসব মানুষগুলি অন্য সকলের অনুপ্রেরণার উৎস। “এই ভূমি নারীশক্তি ও শৌর্যের।” তিনি বলেন, এখানেই মহারানি গাঙ্গুবাঈ তাঁর অলঙ্কার বিক্রি করে স্বরাজ হিন্দ ফৌজ-এ সেই অর্থ দান করেন।  “গোয়ালিয়রে যখনই পা রেখেছি, তখনই এক অদ্ভুত অনুভূতি হয়েছে।” তিনি ভারতীয় সংস্কৃতি এবং বারাণসীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংরক্ষণে সিন্ধিয়া পরিবারের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এই পরিবারের সদস্যরা কাশীতে বিভিন্ন ঘাট নির্মাণ করেছেন এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তাঁদের অবদান রয়েছে। আজ কাশীতে যে উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা এই পরিবারের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কদের কাছে অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া গুজরাটের জামাতা। প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্যে গায়কোয়াড় পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। 

শ্রী মোদী বলেন, একজন কর্তব্য পরায়ণ ব্যক্তি সর্বদাই তাঁর নিজের আর্থিক লাভের পরিবর্তে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণের জন্য কাজ করে থাকেন। দূরদর্শী মহারাজা প্রথম মাধোরাও সিন্ধিয়া আগামী প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তিনি দীর্ঘমেয়াদি লাভের কথা বিবেচনা করে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, অনেকেই হয়তো জানেন না, মহারাজা যে গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন, তা দিল্লিতে ডিটিসি হিসেবে এখনও কাজ করে চলেছে। তিনি জল সংরক্ষণ এবং সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। তাই, দেড়শ’ বছর পরেও তাঁর নির্মিত হরসি জলাধার আজও এশিয়ার বৃহত্তম মাটি দিয়ে তৈরি জলাধার। তাঁর দূরদর্শী মানসিকতা থেকে আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের শিক্ষা পাই। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ‘শর্ট কাট’ পদ্ধতি অবলম্বন না করার ধারণা আমরা মহারাজার বিভিন্ন কাজের মধ্য থেকে উপলব্ধি করি। 

 

প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে চটজলদি ফল পাওয়ার থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০১৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় তাঁর সরকার বিভিন্ন কাজের জন্য দু’বছর, পাঁচ বছর, আট বছর, দশ বছর, পনেরো বছর এবং কুড়ি বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল। বর্তমান সরকার দশ বছর পূরণ করতে চলেছে। এই সময়কালে দীর্ঘদিনের কিছু বকেয়া সিদ্ধান্তকে কার্যকর করা হয়েছে। ছ’দশকেরও বেশি সময় ধরে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের দাবি উঠেছিল। চার দশক ধরে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ‘এক পদ এক পেনশন’ ব্যবস্থা কার্যকর করার দাবি উঠেছিল। চার দশক ধরে বিভিন্ন সময়ে পণ্য ও পরিষেবা কর কার্যকর করা এবং তিন তালাক প্রথা বাতিল করার প্রস্তাবও উঠেছিল । প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিনের বকেয়া এই দাবিগুলি হয়তো ভবিষ্যতেও কার্যকর করা হত না যদি বর্তমান সরকার উদ্যোগী না হত। এই সরকার দেশের বর্তমান যুগের যুব সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধির জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে, যেখানে সুযোগের কোনো ঘাটতি থাকবে না। তিনি সিন্ধিয়া স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বলেন, “বড় বড় স্বপ্ন দেখুন, তাহলেই বিশাল সাফল্য অর্জন করতে পারবেন।” তিনি আরও বলেন, এই স্কুলের সার্ধ শতবার্ষিকী যখন উদযাপিত হবে, তখন দেশ তার স্বাধীনতার শততম বর্ষ উদযাপন করবে। আগামী ২৫ বছর দেশের যুব সম্প্রদায় একটি উন্নত ভারত গড়ে তুলবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। “যুব সম্প্রদায়ের ক্ষমতার প্রতি আমার আস্থা রয়েছে।” আজ দেশ যে সঙ্কল্প গ্রহণ করেছে, যুব সম্প্রদায় তা বাস্তবায়িত করতে পারবে। আগামী ২৫ বছর ছাত্রছাত্রীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “সিন্ধিয়া স্কুলের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তোলার জন্য পেশাগত ক্ষেত্রে অথবা অন্যত্র উদ্যোগী হতে হবে”।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিন্ধিয়া স্কুলের প্রাক্তনীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তাঁর মনে হয়েছে ‘বিকশিত ভারত’-এর লক্ষ্য পূরণ করার ক্ষমতা তাঁদের রয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং, বেতার ব্যক্তিত্ব আমিন সয়ানি, চলচ্চিত্র তারকা সলমন খান, গায়ক নীতিন মুকেশ এবং প্রধানমন্ত্রীর  রচিত গর্বা যাঁরা উপস্থাপিত করেছেন, সেই মীত ব্রাদার্স এই স্কুলেরই ছাত্র ছিলেন।  

 

শ্রী মোদী আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে চন্দ্রযানের অবতরণ এবং জি-২০ গোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন – প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারত তার সাফল্য দেখিয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশ্বের দ্রুততম বিকাশশীল রাষ্ট্র ভারতে ফিনটেক প্রযুক্তি গ্রহণের হার বেশি। দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্মার্টফোনের মাধ্যমে তথ্য ব্যবহারের পরিমাণও বাড়ছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের নিরিখে সারা বিশ্বে ভারতের স্থান দ্বিতীয়। দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ সংস্থা গড়ে তোলার তকমা পেয়েছে ভারত। আন্তর্জাতিক হিসেব অনুযায়ী, জ্বালানী ব্যবহারের নিরিখে ভারতের স্থান তৃতীয়। বর্তমানে ভারত মহাকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজই গগনযান সংক্রান্ত একটি ব্যবস্থাপনার সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ভারতে তেজস এবং আইএনএস বিক্রান্ত তৈরি হয়েছে। তাই বলা যায়, “ভারতের জন্য কোনকিছুই অসম্ভব নয়।”

প্রধানমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, আজ সারা দুনিয়া তাঁদের হাতের মুঠোয়। তাঁদের জন্য মহাকাশ এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র সহ সর্বত্র নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের প্রচলিত ভাবনার বাইরে বেরিয়ে এসে চিন্তা করতে হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মাধবরাও সিন্ধিয়ার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। মাধবরাও সিন্ধিয়া শতাব্দী এক্সপ্রেসের সূচনা করেছিলেন। তিন দশক পরে দেশ আবারও ‘বন্দে ভারত’ এবং ‘নমো ভারত’ ট্রেনের যাত্রার সূচনা প্রত্যক্ষ করছে। 

শ্রী মোদী বলেন, ‘স্বরাজ’ ভাবনা থেকে সিন্ধিয়া স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই বিদ্যালয় অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি শিবাজী হাউজ, মহদাজী হাউজ, রানোজী হাউজ, দত্তাজী হাউজ, কানারখেড় হাউজ, নিমাজী হাউজ এবং মাধব হাউজের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন যা আসলে সপ্তঋষির মতো শক্তির উৎস। তিনি ছাত্রছাত্রীদেরকে নয়টি কাজের দায়িত্ব দেন। এগুলি হল : জল সংরক্ষণের জন্য সচেতনতা গড়ে তোলা, ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের জন্য সচেতনতা গড়ে তোলা, গোয়ালিয়রকে ভারতের সবথেকে পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তোলা, দেশে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীকে জনপ্রিয় করে তোলা, স্থানীয় স্তরে উৎপাদিত পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করে তোলা, বিদেশে যাওয়ার আগে দেশ সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা, বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকদের প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজে উৎসাহিত করা, মোটা দানার শস্যকে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা, নিয়মিত খেলাধূলা, যোগ বা অন্য পন্থায় শরীরকে সুস্থ রাখা এবং কোনো একটি দরিদ্র পরিবারকে সহায়তা করা। তিনি জানান, এই পথ অনুসরণ করে গত পাঁচ বছরে ১৩ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের কবলমুক্ত হয়েছেন। “ভারত বর্তমান সময়কালে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার ব্যাপ্তি বিশাল”। তিনি ছাত্রছাত্রীদেরকে তাঁদের স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সঙ্কল্প গ্রহণের পরামর্শ দেন। “আপনাদের স্বপ্ন পূরণ করাই আমার সঙ্কল্প”। ছাত্রছাত্রীদেরকে তাঁদের ভাবনা তাঁর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য ‘নমো অ্যাপ’ অথবা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

 

তাঁর ভাষণের শেষে শ্রী মোদী বলেন, “সিন্ধিয়া স্কুল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি ঐতিহ্য।” এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতার আগে এবং পরেও মহারাজ মাধো রাওজির স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করে চলেছে। তিনি আরও একবার পুরস্কৃত ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন জানান এবং সিন্ধিয়া স্কুলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন। 

অনুষ্ঠানে মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, নরেন্দ্র সিং তোমর এবং জিতেন্দ্র সিং সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Text of PM Modi's address at the Parliament of Guyana
November 21, 2024

Hon’ble Speaker, मंज़ूर नादिर जी,
Hon’ble Prime Minister,मार्क एंथनी फिलिप्स जी,
Hon’ble, वाइस प्रेसिडेंट भरत जगदेव जी,
Hon’ble Leader of the Opposition,
Hon’ble Ministers,
Members of the Parliament,
Hon’ble The चांसलर ऑफ द ज्यूडिशियरी,
अन्य महानुभाव,
देवियों और सज्जनों,

गयाना की इस ऐतिहासिक पार्लियामेंट में, आप सभी ने मुझे अपने बीच आने के लिए निमंत्रित किया, मैं आपका बहुत-बहुत आभारी हूं। कल ही गयाना ने मुझे अपना सर्वोच्च सम्मान दिया है। मैं इस सम्मान के लिए भी आप सभी का, गयाना के हर नागरिक का हृदय से आभार व्यक्त करता हूं। गयाना का हर नागरिक मेरे लिए ‘स्टार बाई’ है। यहां के सभी नागरिकों को धन्यवाद! ये सम्मान मैं भारत के प्रत्येक नागरिक को समर्पित करता हूं।

साथियों,

भारत और गयाना का नाता बहुत गहरा है। ये रिश्ता, मिट्टी का है, पसीने का है,परिश्रम का है करीब 180 साल पहले, किसी भारतीय का पहली बार गयाना की धरती पर कदम पड़ा था। उसके बाद दुख में,सुख में,कोई भी परिस्थिति हो, भारत और गयाना का रिश्ता, आत्मीयता से भरा रहा है। India Arrival Monument इसी आत्मीय जुड़ाव का प्रतीक है। अब से कुछ देर बाद, मैं वहां जाने वाला हूं,

साथियों,

आज मैं भारत के प्रधानमंत्री के रूप में आपके बीच हूं, लेकिन 24 साल पहले एक जिज्ञासु के रूप में मुझे इस खूबसूरत देश में आने का अवसर मिला था। आमतौर पर लोग ऐसे देशों में जाना पसंद करते हैं, जहां तामझाम हो, चकाचौंध हो। लेकिन मुझे गयाना की विरासत को, यहां के इतिहास को जानना था,समझना था, आज भी गयाना में कई लोग मिल जाएंगे, जिन्हें मुझसे हुई मुलाकातें याद होंगीं, मेरी तब की यात्रा से बहुत सी यादें जुड़ी हुई हैं, यहां क्रिकेट का पैशन, यहां का गीत-संगीत, और जो बात मैं कभी नहीं भूल सकता, वो है चटनी, चटनी भारत की हो या फिर गयाना की, वाकई कमाल की होती है,

साथियों,

बहुत कम ऐसा होता है, जब आप किसी दूसरे देश में जाएं,और वहां का इतिहास आपको अपने देश के इतिहास जैसा लगे,पिछले दो-ढाई सौ साल में भारत और गयाना ने एक जैसी गुलामी देखी, एक जैसा संघर्ष देखा, दोनों ही देशों में गुलामी से मुक्ति की एक जैसी ही छटपटाहट भी थी, आजादी की लड़ाई में यहां भी,औऱ वहां भी, कितने ही लोगों ने अपना जीवन समर्पित कर दिया, यहां गांधी जी के करीबी सी एफ एंड्रूज हों, ईस्ट इंडियन एसोसिएशन के अध्यक्ष जंग बहादुर सिंह हों, सभी ने गुलामी से मुक्ति की ये लड़ाई मिलकर लड़ी,आजादी पाई। औऱ आज हम दोनों ही देश,दुनिया में डेमोक्रेसी को मज़बूत कर रहे हैं। इसलिए आज गयाना की संसद में, मैं आप सभी का,140 करोड़ भारतवासियों की तरफ से अभिनंदन करता हूं, मैं गयाना संसद के हर प्रतिनिधि को बधाई देता हूं। गयाना में डेमोक्रेसी को मजबूत करने के लिए आपका हर प्रयास, दुनिया के विकास को मजबूत कर रहा है।

साथियों,

डेमोक्रेसी को मजबूत बनाने के प्रयासों के बीच, हमें आज वैश्विक परिस्थितियों पर भी लगातार नजर ऱखनी है। जब भारत और गयाना आजाद हुए थे, तो दुनिया के सामने अलग तरह की चुनौतियां थीं। आज 21वीं सदी की दुनिया के सामने, अलग तरह की चुनौतियां हैं।
दूसरे विश्व युद्ध के बाद बनी व्यवस्थाएं और संस्थाएं,ध्वस्त हो रही हैं, कोरोना के बाद जहां एक नए वर्ल्ड ऑर्डर की तरफ बढ़ना था, दुनिया दूसरी ही चीजों में उलझ गई, इन परिस्थितियों में,आज विश्व के सामने, आगे बढ़ने का सबसे मजबूत मंत्र है-"Democracy First- Humanity First” "Democracy First की भावना हमें सिखाती है कि सबको साथ लेकर चलो,सबको साथ लेकर सबके विकास में सहभागी बनो। Humanity First” की भावना हमारे निर्णयों की दिशा तय करती है, जब हम Humanity First को अपने निर्णयों का आधार बनाते हैं, तो नतीजे भी मानवता का हित करने वाले होते हैं।

साथियों,

हमारी डेमोक्रेटिक वैल्यूज इतनी मजबूत हैं कि विकास के रास्ते पर चलते हुए हर उतार-चढ़ाव में हमारा संबल बनती हैं। एक इंक्लूसिव सोसायटी के निर्माण में डेमोक्रेसी से बड़ा कोई माध्यम नहीं। नागरिकों का कोई भी मत-पंथ हो, उसका कोई भी बैकग्राउंड हो, डेमोक्रेसी हर नागरिक को उसके अधिकारों की रक्षा की,उसके उज्जवल भविष्य की गारंटी देती है। और हम दोनों देशों ने मिलकर दिखाया है कि डेमोक्रेसी सिर्फ एक कानून नहीं है,सिर्फ एक व्यवस्था नहीं है, हमने दिखाया है कि डेमोक्रेसी हमारे DNA में है, हमारे विजन में है, हमारे आचार-व्यवहार में है।

साथियों,

हमारी ह्यूमन सेंट्रिक अप्रोच,हमें सिखाती है कि हर देश,हर देश के नागरिक उतने ही अहम हैं, इसलिए, जब विश्व को एकजुट करने की बात आई, तब भारत ने अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान One Earth, One Family, One Future का मंत्र दिया। जब कोरोना का संकट आया, पूरी मानवता के सामने चुनौती आई, तब भारत ने One Earth, One Health का संदेश दिया। जब क्लाइमेट से जुड़े challenges में हर देश के प्रयासों को जोड़ना था, तब भारत ने वन वर्ल्ड, वन सन, वन ग्रिड का विजन रखा, जब दुनिया को प्राकृतिक आपदाओं से बचाने के लिए सामूहिक प्रयास जरूरी हुए, तब भारत ने CDRI यानि कोएलिशन फॉर डिज़ास्टर रज़ीलिएंट इंफ्रास्ट्रक्चर का initiative लिया। जब दुनिया में pro-planet people का एक बड़ा नेटवर्क तैयार करना था, तब भारत ने मिशन LiFE जैसा एक global movement शुरु किया,

साथियों,

"Democracy First- Humanity First” की इसी भावना पर चलते हुए, आज भारत विश्वबंधु के रूप में विश्व के प्रति अपना कर्तव्य निभा रहा है। दुनिया के किसी भी देश में कोई भी संकट हो, हमारा ईमानदार प्रयास होता है कि हम फर्स्ट रिस्पॉन्डर बनकर वहां पहुंचे। आपने कोरोना का वो दौर देखा है, जब हर देश अपने-अपने बचाव में ही जुटा था। तब भारत ने दुनिया के डेढ़ सौ से अधिक देशों के साथ दवाएं और वैक्सीन्स शेयर कीं। मुझे संतोष है कि भारत, उस मुश्किल दौर में गयाना की जनता को भी मदद पहुंचा सका। दुनिया में जहां-जहां युद्ध की स्थिति आई,भारत राहत और बचाव के लिए आगे आया। श्रीलंका हो, मालदीव हो, जिन भी देशों में संकट आया, भारत ने आगे बढ़कर बिना स्वार्थ के मदद की, नेपाल से लेकर तुर्की और सीरिया तक, जहां-जहां भूकंप आए, भारत सबसे पहले पहुंचा है। यही तो हमारे संस्कार हैं, हम कभी भी स्वार्थ के साथ आगे नहीं बढ़े, हम कभी भी विस्तारवाद की भावना से आगे नहीं बढ़े। हम Resources पर कब्जे की, Resources को हड़पने की भावना से हमेशा दूर रहे हैं। मैं मानता हूं,स्पेस हो,Sea हो, ये यूनीवर्सल कन्फ्लिक्ट के नहीं बल्कि यूनिवर्सल को-ऑपरेशन के विषय होने चाहिए। दुनिया के लिए भी ये समय,Conflict का नहीं है, ये समय, Conflict पैदा करने वाली Conditions को पहचानने और उनको दूर करने का है। आज टेरेरिज्म, ड्रग्स, सायबर क्राइम, ऐसी कितनी ही चुनौतियां हैं, जिनसे मुकाबला करके ही हम अपनी आने वाली पीढ़ियों का भविष्य संवार पाएंगे। और ये तभी संभव है, जब हम Democracy First- Humanity First को सेंटर स्टेज देंगे।

साथियों,

भारत ने हमेशा principles के आधार पर, trust और transparency के आधार पर ही अपनी बात की है। एक भी देश, एक भी रीजन पीछे रह गया, तो हमारे global goals कभी हासिल नहीं हो पाएंगे। तभी भारत कहता है – Every Nation Matters ! इसलिए भारत, आयलैंड नेशन्स को Small Island Nations नहीं बल्कि Large ओशिन कंट्रीज़ मानता है। इसी भाव के तहत हमने इंडियन ओशन से जुड़े आयलैंड देशों के लिए सागर Platform बनाया। हमने पैसिफिक ओशन के देशों को जोड़ने के लिए भी विशेष फोरम बनाया है। इसी नेक नीयत से भारत ने जी-20 की प्रेसिडेंसी के दौरान अफ्रीकन यूनियन को जी-20 में शामिल कराकर अपना कर्तव्य निभाया।

साथियों,

आज भारत, हर तरह से वैश्विक विकास के पक्ष में खड़ा है,शांति के पक्ष में खड़ा है, इसी भावना के साथ आज भारत, ग्लोबल साउथ की भी आवाज बना है। भारत का मत है कि ग्लोबल साउथ ने अतीत में बहुत कुछ भुगता है। हमने अतीत में अपने स्वभाव औऱ संस्कारों के मुताबिक प्रकृति को सुरक्षित रखते हुए प्रगति की। लेकिन कई देशों ने Environment को नुकसान पहुंचाते हुए अपना विकास किया। आज क्लाइमेट चेंज की सबसे बड़ी कीमत, ग्लोबल साउथ के देशों को चुकानी पड़ रही है। इस असंतुलन से दुनिया को निकालना बहुत आवश्यक है।

साथियों,

भारत हो, गयाना हो, हमारी भी विकास की आकांक्षाएं हैं, हमारे सामने अपने लोगों के लिए बेहतर जीवन देने के सपने हैं। इसके लिए ग्लोबल साउथ की एकजुट आवाज़ बहुत ज़रूरी है। ये समय ग्लोबल साउथ के देशों की Awakening का समय है। ये समय हमें एक Opportunity दे रहा है कि हम एक साथ मिलकर एक नया ग्लोबल ऑर्डर बनाएं। और मैं इसमें गयाना की,आप सभी जनप्रतिनिधियों की भी बड़ी भूमिका देख रहा हूं।

साथियों,

यहां अनेक women members मौजूद हैं। दुनिया के फ्यूचर को, फ्यूचर ग्रोथ को, प्रभावित करने वाला एक बहुत बड़ा फैक्टर दुनिया की आधी आबादी है। बीती सदियों में महिलाओं को Global growth में कंट्रीब्यूट करने का पूरा मौका नहीं मिल पाया। इसके कई कारण रहे हैं। ये किसी एक देश की नहीं,सिर्फ ग्लोबल साउथ की नहीं,बल्कि ये पूरी दुनिया की कहानी है।
लेकिन 21st सेंचुरी में, global prosperity सुनिश्चित करने में महिलाओं की बहुत बड़ी भूमिका होने वाली है। इसलिए, अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान, भारत ने Women Led Development को एक बड़ा एजेंडा बनाया था।

साथियों,

भारत में हमने हर सेक्टर में, हर स्तर पर, लीडरशिप की भूमिका देने का एक बड़ा अभियान चलाया है। भारत में हर सेक्टर में आज महिलाएं आगे आ रही हैं। पूरी दुनिया में जितने पायलट्स हैं, उनमें से सिर्फ 5 परसेंट महिलाएं हैं। जबकि भारत में जितने पायलट्स हैं, उनमें से 15 परसेंट महिलाएं हैं। भारत में बड़ी संख्या में फाइटर पायलट्स महिलाएं हैं। दुनिया के विकसित देशों में भी साइंस, टेक्नॉलॉजी, इंजीनियरिंग, मैथ्स यानि STEM graduates में 30-35 परसेंट ही women हैं। भारत में ये संख्या फोर्टी परसेंट से भी ऊपर पहुंच चुकी है। आज भारत के बड़े-बड़े स्पेस मिशन की कमान महिला वैज्ञानिक संभाल रही हैं। आपको ये जानकर भी खुशी होगी कि भारत ने अपनी पार्लियामेंट में महिलाओं को रिजर्वेशन देने का भी कानून पास किया है। आज भारत में डेमोक्रेटिक गवर्नेंस के अलग-अलग लेवल्स पर महिलाओं का प्रतिनिधित्व है। हमारे यहां लोकल लेवल पर पंचायती राज है, लोकल बॉड़ीज़ हैं। हमारे पंचायती राज सिस्टम में 14 लाख से ज्यादा यानि One point four five मिलियन Elected Representatives, महिलाएं हैं। आप कल्पना कर सकते हैं, गयाना की कुल आबादी से भी करीब-करीब दोगुनी आबादी में हमारे यहां महिलाएं लोकल गवर्नेंट को री-प्रजेंट कर रही हैं।

साथियों,

गयाना Latin America के विशाल महाद्वीप का Gateway है। आप भारत और इस विशाल महाद्वीप के बीच अवसरों और संभावनाओं का एक ब्रिज बन सकते हैं। हम एक साथ मिलकर, भारत और Caricom की Partnership को और बेहतर बना सकते हैं। कल ही गयाना में India-Caricom Summit का आयोजन हुआ है। हमने अपनी साझेदारी के हर पहलू को और मजबूत करने का फैसला लिया है।

साथियों,

गयाना के विकास के लिए भी भारत हर संभव सहयोग दे रहा है। यहां के इंफ्रास्ट्रक्चर में निवेश हो, यहां की कैपेसिटी बिल्डिंग में निवेश हो भारत और गयाना मिलकर काम कर रहे हैं। भारत द्वारा दी गई ferry हो, एयरक्राफ्ट हों, ये आज गयाना के बहुत काम आ रहे हैं। रीन्युएबल एनर्जी के सेक्टर में, सोलर पावर के क्षेत्र में भी भारत बड़ी मदद कर रहा है। आपने t-20 क्रिकेट वर्ल्ड कप का शानदार आयोजन किया है। भारत को खुशी है कि स्टेडियम के निर्माण में हम भी सहयोग दे पाए।

साथियों,

डवलपमेंट से जुड़ी हमारी ये पार्टनरशिप अब नए दौर में प्रवेश कर रही है। भारत की Energy डिमांड तेज़ी से बढ़ रही हैं, और भारत अपने Sources को Diversify भी कर रहा है। इसमें गयाना को हम एक महत्वपूर्ण Energy Source के रूप में देख रहे हैं। हमारे Businesses, गयाना में और अधिक Invest करें, इसके लिए भी हम निरंतर प्रयास कर रहे हैं।

साथियों,

आप सभी ये भी जानते हैं, भारत के पास एक बहुत बड़ी Youth Capital है। भारत में Quality Education और Skill Development Ecosystem है। भारत को, गयाना के ज्यादा से ज्यादा Students को Host करने में खुशी होगी। मैं आज गयाना की संसद के माध्यम से,गयाना के युवाओं को, भारतीय इनोवेटर्स और वैज्ञानिकों के साथ मिलकर काम करने के लिए भी आमंत्रित करता हूँ। Collaborate Globally And Act Locally, हम अपने युवाओं को इसके लिए Inspire कर सकते हैं। हम Creative Collaboration के जरिए Global Challenges के Solutions ढूंढ सकते हैं।

साथियों,

गयाना के महान सपूत श्री छेदी जगन ने कहा था, हमें अतीत से सबक लेते हुए अपना वर्तमान सुधारना होगा और भविष्य की मजबूत नींव तैयार करनी होगी। हम दोनों देशों का साझा अतीत, हमारे सबक,हमारा वर्तमान, हमें जरूर उज्जवल भविष्य की तरफ ले जाएंगे। इन्हीं शब्दों के साथ मैं अपनी बात समाप्त करता हूं, मैं आप सभी को भारत आने के लिए भी निमंत्रित करूंगा, मुझे गयाना के ज्यादा से ज्यादा जनप्रतिनिधियों का भारत में स्वागत करते हुए खुशी होगी। मैं एक बार फिर गयाना की संसद का, आप सभी जनप्रतिनिधियों का, बहुत-बहुत आभार, बहुत बहुत धन्यवाद।