গত কয়েক বছরে ভারত ও মালদ্বীপের মৈত্রী সম্পর্কে এক নতুন জোয়ার এসেছে। সেইসঙ্গে দু’দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতাও বৃদ্ধি পেয়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। অতিমারীর চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক এক সুসংবদ্ধ অংশীদারিত্বের রূপ নিয়েছে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের ভারত সফরকালে এক প্রেস বিবৃতিতে একথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ঐ বিবৃতিতে আরও জানিয়েছেন যে প্রেসিডেন্ট সোলি-র সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলি সম্পর্কেও তাঁরা মতবিনিময় করেছেন। স্বাগত জানানো হয়েছে গ্রেটার মালে কানেক্টিভিটি প্রোজেক্টকেও। এটি হয়ে উঠবে মালদ্বীপের এক বৃহত্তম পরিকাঠামো প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী জানিয়েছেন যে বৃহত্তর মালে কর্মসূচিতে ৪ হাজার সামাজিক আবাসন সম্পর্কিত প্রকল্পগুলিও তাঁরা পর্যালোচনা করেছেন। এর বাইরে আরও ২ হাজার সামাজিক আবাসন গড়ে তোলার জন্য আর্থিক সহযোগিতার বিষয়েও তাঁদের মধ্যে সহমত হয়েছে। সবক’টি প্রকল্প যাতে নির্দিষ্ট সময়ে সম্পূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা নিয়েও তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিবৃতিতে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ এবং মাদকের চোরাকারবার ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এক গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করেছে। এই কারণে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক ও সমন্বয় আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। দু’দেশের মধ্যে সাধারণ চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় সহযোগিতার মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে। এর মধ্যে রয়েছে মালদ্বীপের নিরাপত্তা কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কর্মসূচিগুলিও। শ্রী মোদী ঘোষণা করেন যে মালদ্বীপের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য ২৪টি যান এবং একটি নৌতরী দেওয়া হবে। মালদ্বীপের ৬১টি দ্বীপে পুলিশ বাহিনীর সুযোগসুবিধার প্রসারেও দুটি দেশ পরস্পরের মধ্যে সহযোগিতা করে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিবৃতিতে বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে পরিবেশকে কার্বনশূণ্য করে তোলার এক লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে মালদ্বীপ সরকার। এই কাজে ভারত মালদ্বীপকে সর্বতোভাবে সাহায্য করবে ঐ দেশের নির্দিষ্ট লক্ষ্যপূরণে। ‘অভিন্ন বিশ্ব, একটি সৌর জগৎ ও একটিই গ্রিড’ – এই দৃষ্টিভঙ্গিকে সামনে রেখে ভারত আন্তর্জাতিক স্তরে এক বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং এর আওতায় ভারত ও মালদ্বীপ যৌথভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ভারত-মালদ্বীপ অংশীদারিত্ব যে শুধুমাত্র দুটি দেশের নাগরিকদের স্বার্থরক্ষার জন্যই কাজ করে চলেছে তাই নয়, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির প্রসারেও তা এক অনুঘটকের ভূমিকা পালন করবে। মালদ্বীপের যে কোনও প্রয়োজন বা সঙ্কটে ভারতই যে প্রথম এগিয়ে যাবে, একথাও দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।