“বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা শুধুমাত্র সরকারের কোনো কর্মসূচী নয়, এটি সমগ্র দেশের এক কর্মসূচী”
“যখন দরিদ্র মানুষ, কৃষক, মহিলা এবং যুব সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন হয়, দেশও তখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে”
“ভিবিএসওয়াই-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা যাতে প্রতিটি যোগ্য সুবিধাপ্রাপকের কাছে পৌঁছায়”
“কৃষকদের যে কোন ধরনের সমস্যা দূর করতে আমাদের সরকার সর্বোতভাবে উদ্যোগী হয়েছে”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে  বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার সুবিধা প্রাপকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন। এই কর্মসূচীর হাজার হাজার সুবিধাভোগী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক এবং স্থানীয় প্রশাসনের জনপ্রতিনিধিরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  

প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সকলের উদ্দেশে জানান, সম্প্রতি বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা (ভিবিএসওয়াই)কর্মসূচী ৫০ দিন অতিক্রম করেছে।  ইতিমধ্যেই ১১ কোটি মানুষ এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।  “বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা শুধুমাত্র সরকারের কোনো কর্মসূচী নয়, এটি সমগ্র দেশের এক কর্মসূচী। বর্তমানে মোদীর গ্যারান্টির গাড়ি দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছচ্ছে। দরিদ্র মানুষরা এতদিন বিভিন্ন সরকারি  প্রকল্পের জন্য অপেক্ষা করে থাকতেন। আজ এই প্রকল্পগুলি তাঁদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। সরকার সুবিধা প্রাপকদের বাড়ির দুয়ারে প্রকল্পগুলিকে নিয়ে আসছে এবং সুবিধা প্রাপকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছে। মোদীর গ্যারান্টির গাড়ির সঙ্গে সরকারি আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিরাও মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছেন”।  

‘মোদীর গ্যারান্টি’ আজ সারা বিশ্বে আস্থা অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নিশ্চয়তার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সুবিধা প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বিকশিত  ভারতের সিদ্ধান্তগুলিকে কার্যকর করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা যাতে প্রত্যেক যোগ্য সুবিধা প্রাপকের কাছে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “পূর্ববর্তী প্রজন্ম যেভাবে জীবনযাপন করতেন, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ যাতে তার থেকে সহজভাবে জীবনযাপন করতে পারেন আমাদের সরকারে উদ্দেশ্য সেটিই। দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট চাহিদাগুলি পূরণে দেশের বৃহৎ অংশের মানুষ যে সমস্যাগুলির সম্মুখীন হন, তাঁদের সেই সমস্যাগুলি থেকে বের করে নিয়ে আসতে আমাদের সরকার উদ্যোগী হয়েছে। আর তাই আমাদের সরকার দরিদ্র মানুষ, কৃষক, মহিলা এবং যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে থাকে। আমরা মনে করি, দেশের চারটি সবথেকে বড় জাতি হচ্ছেন এঁরা। যখন দরিদ্র মানুষ, কষক, মহিলা এবং যুব সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন হয়, দেশও তখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে”। 
   
প্রধানমন্ত্রী বলেন,ভিবিএসওয়াই-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা যাতে প্রতিটি যোগ্য সুবিধা প্রাপকের কাছে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করা। তিনি জানান, এই যাত্রা শুরু হবার পর থেকে উজ্জ্বলা যোজনার জন্য ১২ লক্ষ নতুন আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এছাড়াও, সুরক্ষা বীমা যোজনা, জীবনজ্যোতি যোজনা এবং পিএম স্বনিধির মতো প্রকল্পের জন্য লক্ষ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। 
ভিবিএসওয়াই-এর প্রভাব সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রী মোদী জানান, এই কর্মসূচীর ফলে এপর্যন্ত ২ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।এর মধ্যে কেউ যক্ষা আক্রান্ত কিনা, এধরনের পরীক্ষা করা হয়েছে ১ কোটি এবং সিকল সেল নির্ধারণের জন্য ২২ লক্ষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা আজ দরিদ্র, দলিত, পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় এবং আদিবাসী সমাজের মানুষের দুয়ারে পৌছচ্ছেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলি যা ভাবতেও পারতনা। আয়ুষ্মান যোজনার মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থা করা হয়ে্ছে। এই প্রকল্পের আওতায়  দরিদ্র মানুষরা বিনামূল্যে ডায়ালিসিস করার সুয়োগ পাচ্ছেন। জনঔষধি কেন্দ্রগুলি থেকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। “দেশ জুড়ে আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির গড়ে তোলা হচ্ছে, এগুলি দরিদ্র মানুষ এবং  গ্রামবাসীদের কাছে উন্নত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চাহিদা পূরণ করছে।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেছে। মুদ্রা যোজনায় সহজেই ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। ব্যাঙ্ক মিত্র, পশু সখী এবং আশাকর্মী হিসেবে মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। গত ১০ বছরে ১০ কোটি মহিলা বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের জন্য ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে দেশের অনেক বোনই লাখপতি দিদি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এই সাফল্যগুলির খতিয়ান তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন, সরকার দেশ জুড়ে লাখপতি দিদির সংখ্যা ২ কোটিতে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে। নমো ড্রোন দিদি প্রকল্পের আওতায় ভিবিএসওয়াই-এর মাধ্যমে ১ লক্ষ ড্রোন প্রদর্শিত হয়েছে।  

দেশের ইতিহাসে এই প্রথম জনসাধারণকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করা হয়েছে। “বর্তমানে শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, আগামীদিনে অন্যান্য ক্ষেত্রে যাতে ড্রোন ব্যবহার করা যায়, সেবিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।”      

 

শ্রী মোদী বলেন, অতীতের সরকারগুলি দেশের কৃষিনীতি নিয়ে আলোচনা করার সময় শুধুমাত্র কৃষিপণ্যের উৎপাদন এবং তা বিক্রির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখত। কৃষকদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সমস্যার কথা তারা বিবেচনা করত না। “কৃষকদের সবধরনের সমস্যা দূর করতে আমাদের সরকার সর্বোতভাবে উদ্যোগী হয়েছে”। তিনি জানান, পিএম কিষাণ সম্মাননিধির আওতায় প্রত্যেক কৃষক অন্তত ৩০ হাজার টাকা পেয়েছেন। পিএসিএস, এফপিও-র মতো বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে কৃষকদের সহযোগিতা বৃদ্ধিতে নানা উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। কৃষিপণ্যের গুদামজাত করার সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য   প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উন্নতিতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত অড়হর ডাল বিক্রির ক্ষেত্রে অন লাইনে সরাসরি সরকারকে বিক্রি করার সুবিধা পাচ্ছেন। এরফলে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে এই ডাল বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। অন্যান্য ডালের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা শীঘ্রই শুরু হবে। “বিদেশ থেকে ডাল আমদানির জন্য যে অর্থ আমরা ব্যয় করতাম, তা যাতে দেশের কৃষকরাই পান, সেটি নিশ্চিত করাই আমাদের উদ্দেশ্য।” 

তাঁর ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী ভিবিএসওয়াই-এর সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। স্থানীয় প্রশাসন যেভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে এই কর্মসূচীর বাস্তবায়ন করছে, তিনি তারও প্রশংসা করেন। “এই ভাবেই আমরা ভারতে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের কর্তব্যগুলি পালন করব।” 

 প্রেক্ষাপটঃ  

২০২৩-এর ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচীর সূচনা করেন। এরপর তিনি নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। ৩০ নভেম্বর, ৯ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বর এবং ২৭ ডিসেম্বর-এই চারদিন ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সুবিধাপ্রাপকদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়াও গতমাসে ১৭ এবং ১৮ ডিসেম্বর বারাণসী সফরকালে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকজন সুবিধাপ্রাপকের সঙ্গে আলাপচারিতায় যোগ দেন। 

সরকারের বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের সুবিধা যাতে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের কাছে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে দেশজুড়ে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা কর্মসূচীটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।   

এই কর্মসূচীতে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১০ কোটি সুবিধাপ্রাপক যোগ দেন, যা এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। যাত্রা সূচনার ৫০ দিনের মধ্যে এতো মানুষ যুক্ত হওয়ায় মাধ্যমে এর সাফল্য নিশ্চিত হয়েছে।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
He's running nation on 3 hours of sleep: Saif Ali Khan's praise for PM Modi

Media Coverage

He's running nation on 3 hours of sleep: Saif Ali Khan's praise for PM Modi
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi congratulates the Indian Junior Women's Hockey Team for winning the Asia Cup title
December 16, 2024
“বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা শুধুমাত্র সরকারের কোনো কর্মসূচী নয়, এটি সমগ্র দেশের এক কর্মসূচী”
“যখন দরিদ্র মানুষ, কৃষক, মহিলা এবং যুব সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন হয়, দেশও তখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে”
“ভিবিএসওয়াই-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা যাতে প্রতিটি যোগ্য সুবিধাপ্রাপকের কাছে পৌঁছায়”
“কৃষকদের যে কোন ধরনের সমস্যা দূর করতে আমাদের সরকার সর্বোতভাবে উদ্যোগী হয়েছে”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে  বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার সুবিধা প্রাপকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন। এই কর্মসূচীর হাজার হাজার সুবিধাভোগী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক এবং স্থানীয় প্রশাসনের জনপ্রতিনিধিরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  

প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সকলের উদ্দেশে জানান, সম্প্রতি বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা (ভিবিএসওয়াই)কর্মসূচী ৫০ দিন অতিক্রম করেছে।  ইতিমধ্যেই ১১ কোটি মানুষ এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।  “বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা শুধুমাত্র সরকারের কোনো কর্মসূচী নয়, এটি সমগ্র দেশের এক কর্মসূচী। বর্তমানে মোদীর গ্যারান্টির গাড়ি দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছচ্ছে। দরিদ্র মানুষরা এতদিন বিভিন্ন সরকারি  প্রকল্পের জন্য অপেক্ষা করে থাকতেন। আজ এই প্রকল্পগুলি তাঁদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। সরকার সুবিধা প্রাপকদের বাড়ির দুয়ারে প্রকল্পগুলিকে নিয়ে আসছে এবং সুবিধা প্রাপকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলছে। মোদীর গ্যারান্টির গাড়ির সঙ্গে সরকারি আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিরাও মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছেন”।  

‘মোদীর গ্যারান্টি’ আজ সারা বিশ্বে আস্থা অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নিশ্চয়তার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সুবিধা প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বিকশিত  ভারতের সিদ্ধান্তগুলিকে কার্যকর করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা যাতে প্রত্যেক যোগ্য সুবিধা প্রাপকের কাছে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, “পূর্ববর্তী প্রজন্ম যেভাবে জীবনযাপন করতেন, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ যাতে তার থেকে সহজভাবে জীবনযাপন করতে পারেন আমাদের সরকারে উদ্দেশ্য সেটিই। দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট চাহিদাগুলি পূরণে দেশের বৃহৎ অংশের মানুষ যে সমস্যাগুলির সম্মুখীন হন, তাঁদের সেই সমস্যাগুলি থেকে বের করে নিয়ে আসতে আমাদের সরকার উদ্যোগী হয়েছে। আর তাই আমাদের সরকার দরিদ্র মানুষ, কৃষক, মহিলা এবং যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে থাকে। আমরা মনে করি, দেশের চারটি সবথেকে বড় জাতি হচ্ছেন এঁরা। যখন দরিদ্র মানুষ, কষক, মহিলা এবং যুব সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন হয়, দেশও তখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে”। 
   
প্রধানমন্ত্রী বলেন,ভিবিএসওয়াই-এর মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা যাতে প্রতিটি যোগ্য সুবিধা প্রাপকের কাছে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করা। তিনি জানান, এই যাত্রা শুরু হবার পর থেকে উজ্জ্বলা যোজনার জন্য ১২ লক্ষ নতুন আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এছাড়াও, সুরক্ষা বীমা যোজনা, জীবনজ্যোতি যোজনা এবং পিএম স্বনিধির মতো প্রকল্পের জন্য লক্ষ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। 
ভিবিএসওয়াই-এর প্রভাব সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রী মোদী জানান, এই কর্মসূচীর ফলে এপর্যন্ত ২ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।এর মধ্যে কেউ যক্ষা আক্রান্ত কিনা, এধরনের পরীক্ষা করা হয়েছে ১ কোটি এবং সিকল সেল নির্ধারণের জন্য ২২ লক্ষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা আজ দরিদ্র, দলিত, পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় এবং আদিবাসী সমাজের মানুষের দুয়ারে পৌছচ্ছেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলি যা ভাবতেও পারতনা। আয়ুষ্মান যোজনার মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থা করা হয়ে্ছে। এই প্রকল্পের আওতায়  দরিদ্র মানুষরা বিনামূল্যে ডায়ালিসিস করার সুয়োগ পাচ্ছেন। জনঔষধি কেন্দ্রগুলি থেকে স্বল্প মূল্যে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। “দেশ জুড়ে আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির গড়ে তোলা হচ্ছে, এগুলি দরিদ্র মানুষ এবং  গ্রামবাসীদের কাছে উন্নত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চাহিদা পূরণ করছে।”

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করেছে। মুদ্রা যোজনায় সহজেই ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। ব্যাঙ্ক মিত্র, পশু সখী এবং আশাকর্মী হিসেবে মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। গত ১০ বছরে ১০ কোটি মহিলা বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের জন্য ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে দেশের অনেক বোনই লাখপতি দিদি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এই সাফল্যগুলির খতিয়ান তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন, সরকার দেশ জুড়ে লাখপতি দিদির সংখ্যা ২ কোটিতে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে। নমো ড্রোন দিদি প্রকল্পের আওতায় ভিবিএসওয়াই-এর মাধ্যমে ১ লক্ষ ড্রোন প্রদর্শিত হয়েছে।  

দেশের ইতিহাসে এই প্রথম জনসাধারণকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করা হয়েছে। “বর্তমানে শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, আগামীদিনে অন্যান্য ক্ষেত্রে যাতে ড্রোন ব্যবহার করা যায়, সেবিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।”      

 

শ্রী মোদী বলেন, অতীতের সরকারগুলি দেশের কৃষিনীতি নিয়ে আলোচনা করার সময় শুধুমাত্র কৃষিপণ্যের উৎপাদন এবং তা বিক্রির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখত। কৃষকদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সমস্যার কথা তারা বিবেচনা করত না। “কৃষকদের সবধরনের সমস্যা দূর করতে আমাদের সরকার সর্বোতভাবে উদ্যোগী হয়েছে”। তিনি জানান, পিএম কিষাণ সম্মাননিধির আওতায় প্রত্যেক কৃষক অন্তত ৩০ হাজার টাকা পেয়েছেন। পিএসিএস, এফপিও-র মতো বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে কৃষকদের সহযোগিতা বৃদ্ধিতে নানা উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। কৃষিপণ্যের গুদামজাত করার সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য   প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের উন্নতিতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত অড়হর ডাল বিক্রির ক্ষেত্রে অন লাইনে সরাসরি সরকারকে বিক্রি করার সুবিধা পাচ্ছেন। এরফলে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে এই ডাল বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে। কৃষকরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। অন্যান্য ডালের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা শীঘ্রই শুরু হবে। “বিদেশ থেকে ডাল আমদানির জন্য যে অর্থ আমরা ব্যয় করতাম, তা যাতে দেশের কৃষকরাই পান, সেটি নিশ্চিত করাই আমাদের উদ্দেশ্য।” 

তাঁর ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী ভিবিএসওয়াই-এর সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। স্থানীয় প্রশাসন যেভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে এই কর্মসূচীর বাস্তবায়ন করছে, তিনি তারও প্রশংসা করেন। “এই ভাবেই আমরা ভারতে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের কর্তব্যগুলি পালন করব।” 

 প্রেক্ষাপটঃ  

২০২৩-এর ১৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচীর সূচনা করেন। এরপর তিনি নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। ৩০ নভেম্বর, ৯ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বর এবং ২৭ ডিসেম্বর-এই চারদিন ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সুবিধাপ্রাপকদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়াও গতমাসে ১৭ এবং ১৮ ডিসেম্বর বারাণসী সফরকালে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকজন সুবিধাপ্রাপকের সঙ্গে আলাপচারিতায় যোগ দেন। 

সরকারের বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের সুবিধা যাতে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের কাছে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে দেশজুড়ে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা কর্মসূচীটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।   

এই কর্মসূচীতে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১০ কোটি সুবিধাপ্রাপক যোগ দেন, যা এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। যাত্রা সূচনার ৫০ দিনের মধ্যে এতো মানুষ যুক্ত হওয়ায় মাধ্যমে এর সাফল্য নিশ্চিত হয়েছে।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন