প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দ্বিতীয় জাতীয় যুব সংসদ উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন। সংসদের সেন্ট্রাল হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উৎসবে জাতীয় স্তরে ৩ জন বিজয়ীর বক্তব্য শুনেছেন। লোকসভার অধ্যক্ষ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
স্বামী বিবেকানন্দকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সময়ের সঙ্গে আমাদের জাতীয় জীবনে স্বামী বিবেকানন্দের প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। জাতীয়তাবাদ, দেশ গঠন এবং মানুষ ও বিশ্বকে তাঁর সেবা করার দর্শন আমাদের অনুপ্রাণিত করে। ব্যক্তিগতভাবে ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বামীজীর অবদানের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, স্বামীজীর সংস্পর্শে যখনই কেউ আসতেন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতেন। আর এইভাবে তাঁরা নতুন প্রতিষ্ঠান নির্মাতা গড়ে তুলতেন। ব্যক্তিগত স্তরে বিকাশের বিভিন্ন পর্যায় থেকে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার এই উদ্যোগটি বিপরীতমুখীও হয়ে থাকে। ভারতের এটিই সবচেয়ে বড় শক্তি। প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে বৃহৎ সংস্থাগুলির যোগাযোগের প্রসঙ্গটি এখানে উল্লেখ করেছেন। সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষা নীতিতে নমনীয়তা ও উদ্ভাবনমূলক শিক্ষার যে ব্যবস্থা করা হয়েছে যুবসম্প্রদায়কে তিনি সেই সুযোগ কাজে লাগাতে বলেছেন। আমরা চেষ্টা করছি, দেশের মধ্যে একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে, যার অনুপস্থিতির জন্য যুবসম্প্রদায় বিদেশে পাড়ি দেন।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, দেশের ভিত্তি হিসাবে স্বামী বিবেকানন্দ আত্মপ্রত্যয়ী, উদার, ভয়হীন এবং সাহসী যুবসম্প্রদায়কে স্বীকৃতি দিয়েছেন। লোহার মতো শক্ত পেশী ও ইস্পাতের মতো স্নায়ুর সাহায্যে ব্যক্তিত্ব গঠন করতে সাহায্য করে। এর মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়া যায়, যার সাহায্যে নেতৃত্বদান ও একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে স্বামীজী সকলের প্রতি আস্থা রাখার যে কথা বলতেন, তা বাস্তবায়িত হয়।
প্রধানমন্ত্রী রাজনীতিতে নিঃস্বার্থ ও গঠনমূলকভাবে অবদান রাখার জন্য যুবসম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আজ সৎ মানুষরা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। এর ফলে, রাজনীতির বিভিন্ন অসাধু কাজকর্মের বিষয়ে যে পুরনো ধারণা ছিল, সেগুলি বদলানো সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেছেন, দুর্নীতি আজ মানুষের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুবসম্প্রদায়কে পরিবারতন্ত্রের ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি অদক্ষ ও একনায়কতন্ত্রকে প্রশ্রয় দেয়। কারণ, এই ধরণের মানুষরা পরিবারের রাজনীতি এবং রাজনীতির পরিবারকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। “আজ, নামের পদবী ব্যবহার করে নির্বাচন জেতার দিন শেষ হয়েছে। কিন্তু, পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির কিছু কুফল এখনও রয়ে গেছে … রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের ফলে দেশের পরিবর্তে ব্যক্তি ও পরিবার অগ্রাধিকার পায়। ভারতের সামাজিক দুর্নীতির অন্যতম কারণ এটি”।
ভুজে ভূমিকম্পের পর পুনর্গঠনের কাজের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী যুবসম্প্রদায়কে বলেছেন, সমাজ দুর্যোগের থেকে তার নিজের পথ তৈরি করার পদ্ধতি শিখতে পারে্, নিজের ভবিষ্যৎ গঠন করতে পারে। আর তাই, আজ ১৩০ কোটি ভারতবাসী নিজেরাই নিজেদের ভবিষ্যৎ তৈরি করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজকের যুবসম্প্রদায়ের প্রতিটি উদ্যোগ, উদ্ভাবন ও সততার শপথ নেওয়ার মাধ্যমে আমাদের দৃঢ় ভবিষ্যতের ভিত্তি গড়ে উঠেছে।