প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন সংসদ ভবনের রাজ্যসভায় ভাষণ দেন।
প্রধানমন্ত্রী আজকের দিনটিকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি লোকসভায় তাঁর ভাষণের কথা স্মরণ করেন ও এই বিশেষ দিনে রাজ্যসভায় তাঁকে বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দেওয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
রাজ্যসভাকে সংসদের উচ্চকক্ষে হিসেবে পরিগণিত করা হয় বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান প্রণেতাদের উদ্দেশ্য ছিল গভীর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে সংসদকে গড়ে তোলা। দেশকে পথদিশা দেখানোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মত পার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে আলোচনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটি দেশের স্বাভাবিক আশা। দেশের প্রতি এধরনের কাজ অধিবেশনের গুরুত্ব বাড়াবে।”
প্রধানমন্ত্রী সর্বোপল্লী রাধাকৃষ্ণনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সংসদ কেবলমাত্র একটি আইন প্রণয়নকারী সংস্থা নয়, এটি আলোচনারও অন্যতম কেন্দ্রস্থল। রাজ্যসভায় সর্বদাই উন্নতমানের বিতর্ক শোনার সুযোগ হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নতুন সংসদ কেবলমাত্র একটি নতুন ভবন নয়, এ এক নতুন সূচনাও। অমৃতকালের প্রত্যুষে নতুন এই ভবন ১৪০ কোটি ভারতবাসীর মনে নতুন শক্তি সঞ্চয় করবে।
প্রধানমন্ত্রী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যপূরণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, দেশ এখন আর অপেক্ষা করতে প্রস্তুত নয়। তিনি বলেন, নতুন ভাবনা এবং জনগণের চাহিদা পূরণের নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। এখন প্রয়োজন চিন্তা ও কাজের প্রসার ঘটানো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সভা দেশের সবধরনের আইন প্রণয়নকারী সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠতে পারে।
শ্রী মোদী বিগত ৯ বছরের সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ওপর আলোকপাত করে বলেন, এর মধ্যে অনেক সিদ্ধান্তই দশকের পর দশক ধরে বকেয়া ছিল। “এই বিষয়গুলিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বড় ভুল বলে মনে করা হয়” বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজ্যসভায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য না থাকা সত্ত্বেও সরকার এই বড় পদক্ষেপের ক্ষেত্রে সদর্থক সিদ্ধান্ত নেয়। দেশ এবং জাতির হিতার্থে গৃহীত এই পদক্ষেপগুলির জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এক্ষেত্রে সদস্যদের বুদ্ধিমত্তা ও সদর্থক মানসিকতার প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজ্যসভার মর্যাদা সদস্য সংখ্যার জন্য নয়, পরস্পরকে বোঝার এবং সদর্থক মানসিকতার জন্য বৃদ্ধি পেয়েছে।” এজন্য তিনি সভার সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও জাতীয় স্বার্থকে গণতন্ত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
রাজ্যসভার ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশ একজোট হয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে। কেন্দ্র রাজ্য সহযোগিতার উদাহরণ হিসেবে করোনা অতিমারীর উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবলমাত্র বিপদের সময় নয়, উৎসবের সময়ও ভারত বিশ্বকে উদ্বুদ্ধ করেছে। ৬০ টির বেশি শহরে জি-২০-র বিভিন্ন কর্মসূচি এবং দিল্লিতে আয়োজিত শিখর সম্মেলন এই মহান দেশের বৈচিত্র্যকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে।
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫০ বছরে যে অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে তা বর্তমানে কয়েক সপ্তাহে লক্ষ্য করা যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান সদনে আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করেছি। ২০৪৭ সালে এই নতুন ভবনে যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ পালন করা হবে, তখন তা হবে বিকশিত বা উন্নত ভারতের সাফল্যের উদযাপন। তিনি আরও বলেন, পুরনো ভবনে আমরা বিশ্ব অর্থনীতির পঞ্চম ধাপে পৌঁছেছি।
“আমি আত্মবিশ্বাসী যে এই নতুন ভবনে আমরা বিশ্ব অর্থনীতির তৃতীয় ধাপে পৌঁছাব।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যখন দরিদ্রদের উন্নতির জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করি তখন এই নতুন ভবনে আমরা সেই প্রকল্পগুলির সাফল্য উদযাপন করব।”
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বর্তমানে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের সময় এসেছে। নতুন এই সংসদ ভবন বিভিন্ন প্রযুক্তিতে সুসজ্জিত। সভায় নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে সদস্যদের একে অপরকে সহায়তা করার আহ্বান জানান শ্রী মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ডিজিটাল যুগে প্রযুক্তিকে আমাদের জীবনের অংশ করে নিতে হবে। মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ এখন নতুন উদ্যমে এই কর্মসূচিগুলি রূপায়ণ করছে।
লোকসভায় পেশ করা নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়মের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন জীবনযাত্রা সরলীকরণের কথা বলি তখন আমাদের উচিত সর্বপ্রথমে মহিলাদের জীবনযাত্রা সহজ করা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। “ মহিলাদের ক্ষমতাকে সুযোগ দেওয়ার সময় এসেছে। তাদের জীবন থেকে যদি, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে তুলে দিতে হবে” বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
শ্রী মোদী বলেন, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও কর্মসূচি জনআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। তিনি মুদ্রা যোজনা ও জনধন যোজনায় মহিলাদের অংশীদারিত্বের কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা এবং মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য তিন তালাক প্রথা বিলোপের মত কড়া আইন প্রণয়নের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জি-২০-র আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে মহিলা নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিষয়টি বহু বছর ধরে বকেয়া ছিল। প্রত্যেকে এক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ১৯৯৬ সালে এই বিলটি প্রথম আনা হয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অটলজির সময় এই বিষয়ে প্রচুর আলোচনা হয়, কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্যের সমর্থন না পাওয়ায় বিলটি দিনের আলো দেখতে পায়নি। এই বিল অবশেষে আইনে পরিণত হবে এবং নারী শক্তিকে নিশ্চিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। একটি সংবিধান সংশোধনী বিল হিসেবে লোকসভায় নারী শক্তির বন্দন অধিনিয়ম বিল পেশের সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই বিলের ওপর আগামীকাল আলোচনা হবে। মহিলাদের ক্ষমতা যথাযথভাবে ব্যবহারের জন্য এই বিলকে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
Rajya Sabha discussions have always been enriched with contributions of several greats. This august House will infuse energy to fulfill aspirations of Indians. pic.twitter.com/MKC0uXuYCU
— PMO India (@PMOIndia) September 19, 2023
नए संसद भवन में जब हम आजादी की शताब्दी मनाएंगे, वो स्वर्ण शताब्दी विकसित भारत की होगी। pic.twitter.com/Be8IGB1N39
— PMO India (@PMOIndia) September 19, 2023