প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ১৭তম লোকসভার শেষ অধিবেশনে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি ভারতের গণতন্ত্রের পক্ষে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং দেশকে দিশা দেখানোর ক্ষেত্রে সমস্ত সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “গত পাঁচ বছর ধরে সরকারের মন্ত্র হল, সংস্কার করো, কার্য সম্পাদন করো এবং পরিবর্তন করো।” তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, যাবতীয় প্রয়াসের জন্য দেশের মানুষের ১৭তম লোকসভাকে আশীর্বাদ করবেন। সদস্যদের অবদানের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী তাঁদের প্রতি বিশেষত, অধ্যক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। নিরপেক্ষ এবং ভারসাম্য বজায় রেখে সভার কাজ পরিচালনার জন্য অধ্যক্ষকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
শ্রী মোদী করোনা অতিমারীকে শতাব্দীর সবচেয়ে বড় বিপর্যয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সংসদ এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে এবং দেশের কাজকর্ম স্তব্ধ করা হয়নি। অতিমারীর সময় সদস্যদের বেতনের ৩০ শতাংশ কেটে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে, ক্যান্টিনে সদস্যদের জন্য বরাদ্দ ভর্তুকি তুলে দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
নতুন সংসদ ভবন গড়ার ক্ষেত্রে সব সদস্যকে একজোট করার ব্যাপারে অধ্যক্ষের ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, জি-২০ সভাপতিত্ব ভারতকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছে এবং দেশের প্রতিটি রাজ্য এই সভাপতিত্বকালে তাদের সক্ষমতা তুলে ধরেছে। একইভাবে, পি-২০ শীর্ষ বৈঠক গণতন্ত্রের আঁতুড়ঘর হিসেবে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে আয়োজিত বাৎসরিক আলোচনাসভা এবং প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি দেশের লক্ষ লক্ষ পড়ুয়াকে সংসদীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত করেছে। সংসদের কাজকর্মে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগের জন্য অধ্যক্ষকে ধন্যবাদ এবং তাঁর উদ্যোগের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। ১৭তম লোকসভার সদস্যদের একসূত্রে বাঁধার জন্য অধ্যক্ষকে যাবতীয় কৃতিত্ব দেন শ্রী মোদী। তিনি সভায় জানান, ১৭তম লোকসভার প্রথম অধিবেশনে ৩০টি বিল অনুমোদিত হয়েছিল, যা একটি রেকর্ড।
‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ উদযাপনকালে সংসদের একজন সদস্য হিসেবে তাঁর আনন্দের কথা জানিয়ে এই মহোৎসবকে একটি গণ-আন্দোলনের চেহারা দেওয়ার জন্য সদস্যদের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে, সংবিধানের ৭৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন প্রত্যেক দেশবাসীকে প্রেরণা জুগিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশ শতকের ভারতের শক্ত ভিত্তি পরিলক্ষিত হবে বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের কাজে। তিনি বলেন, “আমরা আনন্দের সঙ্গে বলতে পারি যে, বহু জিনিস, যার জন্য কয়েক প্রজন্ম ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছিল, তা ১৭তম লোকসভায় সম্পন্ন করা হয়েছে।” এ প্রসঙ্গে ৩৭০ ধারার অবলুপ্তির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, এই সিদ্ধান্ত সংবিধানের প্রণেতাদের অবশ্যই খুশি করবে। তিনি বলেন, “সামাজিক ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠায় আমাদের অঙ্গীকার আজ জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।”
সন্ত্রাসবাদ দমনে সংসদে কঠোর আইন তৈরির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে যাঁরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তাঁদের আত্মবিশ্বাসের উন্নতি ঘটেছে এবং সন্ত্রাসবাদ পুরোপুরি নির্মূল করার লক্ষ্য পূরণ হবে। শ্রী মোদী বলেন, “আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে, গত ৭৫ বছর ধরে এই দেশ দণ্ডবিধির অধীনে ছিল, কিন্তু এখন আমরা ন্যায় সংহিতার অধীনে বসবাস করছি।”
নারীশক্তি বন্দন অধিনিয়ম চালুর ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের উদ্যোগের প্রশংসা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, আগামীদিনে মহিলা সদস্যদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই সভা কাজ করে যাবে। এ প্রসঙ্গে ১৭তম লোকসভায় তিন তালাক প্রথা অবলুপ্তির কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ২৫ বছরে দেশের লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণে এই সভা অঙ্গীকারবদ্ধ। ১৯৩০ সালে গান্ধীজির লবণ সত্যাগ্রহ এবং স্বদেশী আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই সময়ে এগুলি গুরুত্বহীন মনে হলেও এগুলি পরবর্তী ২৫ বছরের জন্য ভিত্তি তৈরি করে গিয়েছিল, যার ফলশ্রুতি হল ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা অর্জন। তিনি বলেন, দেশের মানুষ একই ধরনের অভিজ্ঞতার অনুভূতি পাবেন, যখন ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারত গড়ার লক্ষ্যে প্রতিটি নাগরিক অঙ্গীকারবদ্ধ হবেন।
তরুণদের জন্য আইন প্রণয়নে সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশ্ন ফাঁস সমস্যার মোকাবিলায় কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গবেষণা ক্ষেত্রের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন আইন প্রণয়নের ফলে গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ভারত একটি আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন নতুন মাত্রা যুক্ত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে সমুদ্র, মহাকাশ এবং সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, আগামীদিনের দিকে লক্ষ্য রেখে মহাকাশ ক্ষেত্রে যে সংস্কারসাধন করা হয়েছে, তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রয়েছে।
১৭তম লোকসভায় গৃহীত আর্থিক সংস্কারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সাধারণ নাগরিকের জীবনযাত্রা সহজ করতে হাজার হাজার বাধ্যবাধকতা থেকে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মূল কথা হল প্রশাসনের ন্যূনতম হস্তক্ষেপ।
শ্রী মোদী বলেন, ৬০টির বেশি অচল আইনকে বাতিল করা হয়েছে। সহজে ব্যবসার পথ সুগম করার জন্য এর প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। এ প্রসঙ্গে নাগরিকদের আত্মার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। রূপান্তরকামীদের অবস্থার কথা তুলে ধরে এই সম্প্রদায়ের স্বার্থে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সদস্যদের ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্রশংসা মিলেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, রূপান্তরকামীরা এখন স্বীকৃতি পাচ্ছেন এবং সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে তাঁরা শিল্পোদ্যোগী হয়ে উঠছেন। পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপকের তালিকায় রূপান্তরকামীরাও রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কোভিড অতিমারীর সময় যেসব সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতের গণতন্ত্রের যাত্রা চিরস্থায়ী হবে এবং দেশ গোটা মানবজাতির সেবায় কাজ করে যাবে। এ প্রসঙ্গে গোটা বিশ্ব ভারতবাসীর জীবনযাত্রার পথ গ্রহণ করছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী এবং এই ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সদস্যদের কাছে আর্জি জানান তিনি। আসন্ন নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন হল গণতন্ত্রের একটি স্বাভাবিক এবং আবশ্যিক দিক। তিনি বলেন, “আমার বিশ্বাস যে আমাদের গণতন্ত্রের গৌরবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই নির্বাচন সম্পন্ন হবে।”
রাম মন্দির প্রতিষ্ঠায় এই সভায় গৃহীত প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক অধিকার দেবে। তিনি বলেন, ‘সমবেদনা’, ‘সঙ্কল্প’ এবং ‘সহানুভূতি’র সঙ্গে আমাদের মন্ত্র হল – ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণে সদস্যরা মিলিতভাবে কাজ করে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
17th Lok Sabha has been witness to numerous important decisions. These five years have been about 'Reform, Perform and Transform.' pic.twitter.com/jAF34BW0u4
— PMO India (@PMOIndia) February 10, 2024
भारत को इस कालखंड में G-20 की अध्यक्षता मिली और देश के हर राज्य ने विश्व के सामने देश का सामर्थ्य और अपनी पहचान बखूबी प्रस्तुत की। pic.twitter.com/2UeLa3UMYj
— PMO India (@PMOIndia) February 10, 2024
हम संतोष से कह सकते हैं कि हमारी कई पीढ़ियां जिनका सदियों से इंतजार करती आ रही थीं, वे काम 17वीं लोकसभा में हुए। pic.twitter.com/sJnHdyCw91
— PMO India (@PMOIndia) February 10, 2024
The next 25 years are crucial for India. pic.twitter.com/WElzMDttkv
— PMO India (@PMOIndia) February 10, 2024