প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সংসদের বিশেষ অধিবেশন উপলক্ষে লোকসভায় ভাষণ দেন। ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংসদের এই বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ নতুন ভবনে স্থানান্তরের আগে পর্যন্ত ভারতের সংসদের ৭৫ বছরের যাত্রার স্মরণ এবং স্মৃতিচারণার বিশেষ মুহূর্ত। পুরাতন ভবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের স্বাধীনতার আগে এটি ইম্পিরিয়াল বিধান পরিষদ হিসেবে পরিচিত ছিল এবং স্বাধীনতার পর এটি ভারতের সংসদ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তিনি বলেন, বিদেশী শাসকরা এই ভবন নির্মাণ করলেও, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, ভারতীয়দের কঠোর শ্রম ও ত্যাগ এবং প্রচুর অর্থব্যয়ে এটি নির্মিত হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, “আমরা নতুন ভবনে চলে গেলেও, এই ভবনটি আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাবে। কারণ, ভারতীয় গণতন্ত্রের সোনালী অধ্যায়ের সাক্ষী হল এই ভবন।”
অমৃত কালের আলোকে প্রধানমন্ত্রী ভারতের মানুষের আস্থা, সাফল্য এবং সক্ষমতার কথা তুলে ধরেন। সেইসঙ্গে গোটা বিশ্বে কীভাবে ভারত এবং ভারতীয়দের সাফল্য নিয়ে চর্চা চলছে, তারও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “সংসদের ৭৫ বছরের ইতিহাসে যৌথ প্রয়াসের ফলশ্রূতি হল এই সাফল্য।”
চন্দ্রযান ৩ –এর সাফল্যের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি আধুনিকতা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ভারতীয় বিজ্ঞানীদের নৈপুণ্য এবং ১৪০ কোটি ভারতবাসীর শক্তিকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে। সংসদ এবং দেশের হয়ে সাফল্যের জন্য বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
জি২০ সভাপতি হিসেবে ভারতের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সাফল্য ১৪০ কোটি ভারতবাসীর, কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। দেশের ৬০টির বেশি জায়গায় ২০০টিরও বেশি বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের সাফল্য সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সাফল্য হল ভারতের বৈচিত্র্যের সাফল্য। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে আবেগঘন মুহূর্তের কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, ‘জি২০ সভাপতিত্বকালে আফ্রিকান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ভারত সবসময় গর্ব অনুভব করবে।’
ভারতের সক্ষমতা নিয়ে কিছু মানুষের নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহমতের ভিত্তিতে জি২০ ঘোষণাপত্র তৈরিতে সাফল্য এসেছে এবং এতে ভবিষ্যতের দিশা রয়েছে। নভেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত ভারতের জি২০-র সভাপতিত্বের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ পূর্ণমাত্রায় এর সদ্ব্যবহারের চেষ্টা চালাবে। সেইসঙ্গে পি২০ শীর্ষ বৈঠক (পার্লামেন্টারি ২০)-এর আয়োজন নিয়ে অধ্যক্ষের প্রস্তাবকে সমর্থন জানান তিনি।
তিনি বলেন, “এটি আমাদের সবার কাছে গর্বের যে, ভারত ‘বিশ্ব মিত্র’ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং গোটা বিশ্ব আজ ভারতকে বন্ধুর চোখে দেখছে। এর কারণ হল, আমাদের ‘সংস্কারসমূহ’, যা আমরা বেদ থেকে বিবেকানন্দের মাধ্যমে আত্মস্থ করেছি। সবকা সাথ সবকা বিকাশ মন্ত্র আমাদের একত্রিত করছে, গোটা বিশ্বকে আমাদের পাশে নিয়ে আসছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন ভবনে স্থানান্তর এবং পুরনো সংসদ ভবনকে বিদায় জানানো আমাদের কাছে এক অত্যন্ত আবেগের মুহূর্ত। বিগত বছরগুলিতে সংসদের বিভিন্ন মুহূর্তের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যে, সব সদস্যের কাছে এগুলি স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে থেকে যাবে। তিনি বলেন, “এর গৌরবের সঙ্গে আমরাও জড়িয়ে রয়েছি।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদের ৭৫ বছরের ইতিহাসে নতুন ভারত গড়ার পাশাপাশি দেশ অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী হয়েছে এবং আজ ভারতের সাধারণ নাগরিকদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের সুযোগ এসেছে।
প্রথমবার সাংসদ হয়ে সংসদ ভবনে তাঁর পা রাখার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং এই ভবনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এটি ছিল একটি আবেগপূর্ণ মুহূর্ত, যা কখনো কল্পনা করেননি। তাঁর কথায় “এটাই হল ভারতীয় গণতন্ত্রের শক্তি, যা রেলস্টেশনে জীবিকা নির্বাহ করা এক গরিব শিশুকে সংসদে পৌঁছে দিয়েছে। আমি কখনো কল্পনা করিনি যে, দেশ আমাকে এতটা ভালোবাসা, সম্মান এবং আশীর্বাদ দেবে।”
সময়ের সঙ্গে সংসদের গঠনগত পরিবর্তন এবং সমাজের সবশ্রেণীর মানুষের প্রতিনিধিত্বের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মহিলা সাংসদদের অন্তর্ভুক্তি আমাদের এই সভার মর্যাদা বাড়াতে সাহায্য করেছে।
একটি আনুমানিক হিসেব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে ৭৫০০-র বেশি সদস্য দেশের সেবা করেছেন, যার মধ্যে মহিলা প্রতিনিধির সংখ্যা হল প্রায় ৬০০। তিনি আরও জানান, শ্রী ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত প্রায় ৪৩ বছর সংসদের সদস্য ছিলেন এবং ৯৩ বছর বয়সে শ্রী সফিকুর রহমান সাংসদ হিসেবে কাজ করে গেছেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে শ্রীমতী চন্দ্রাণী মুর্মু-র সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাকবিতন্ডা সত্ত্বেও সংসদের মধ্যে একটি পারিবারিক বোধের আবহ গড়ে উঠেছে এবং তিক্ততা কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। অতিমারীর কঠিন সময় সহ গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও সদস্যরা কীভাবে সভায় এসে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছেন, সেকথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীনতার পর প্রথম দিকে নতুন দেশের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটাই হল সংসদের শক্তি, যা সব সন্দেহকে ভুল প্রমাণ করেছে।
স্বাধীনতার পর মাত্র ২ বছর ১১ মাসের মধ্যে সংবিধান তৈরির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বাধীনতার ৭৫ বছরে সবচেয়ে বড় সাফল্য হল সংসদের প্রতি দেশের সাধারণ মানুষের ক্রমবর্ধমান আস্থা।” তিনি বলেন, ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ, ডঃ কালাম থেকে শুরু করে শ্রী রামনাথ কোবিন্দ, শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু, প্রত্যেকের ভাষণে এই সভা সমৃদ্ধ হয়েছে।
পন্ডিত নেহরু থেকে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, অটল বিহারী বাজপেয়ী থেকে মনমোহন সিং-এর শাসনকালের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের নেতৃত্বে দেশ নতুন দিশা পেয়েছে এবং আজ হল, তাঁদের সাফল্য তুলে ধরার সময়। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, রামমনোহর লোহিয়া, চন্দ্রশেখর, লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং অন্যান্য বিশিষ্টজনদের বিতর্কে এই সভা কীভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে, তার উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। সেইসঙ্গে এই সভায় বিদেশী রাষ্ট্রনেতাদের ভাষণের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় নেহরুজি, শাস্ত্রীজি এবং ইন্দিরাজি-র মৃত্যুতে শোক এবং বেদনার কথা উল্লেখ করেন শ্রী মোদী।
বহু কঠিন সময়ে সভার কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অধ্যক্ষের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দুই মহিলা সহ শ্রী মভলঙ্কার, শ্রীমতী সুমিত্রা মহাজন থেকে শ্রী ওম বিড়লা পর্যন্ত ১৭ জন স্পিকার তাঁদের নিজেদের অবদান রেখেছেন। সংসদের জঙ্গিহানার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটি হল ভারতের আত্মার ওপর হামলা।” জঙ্গিহানায় যাঁরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে সংসদের অধিবেশনে কাজ করতে এসে যেসব সাংবাদিক জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সংসদকে তীর্থক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ৭৫০০ প্রতিনিধি এই সংসদকে তীর্থক্ষেত্রে পরিণত করেছে। তিনি বলেন, “ভগৎ সিং এবং বটুকেশ্বর দত্ত তাঁদের সাহস ও শৌর্যের মাধ্যমে ব্রিটিশদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছিলেন।” তিনি বলেন, পন্ডিত নেহরুর ভাষণ ভারতের প্রত্যেক নাগরিককে অনুপ্রাণিত করে যাবে। সেইসঙ্গে অটল বিহারী বাজপেয়ীর বিখ্যাত উদ্ধৃতির কথাও উল্লেখ করেন তিনি, যেখানে বাজপেয়ী বলেছিলেন “সরকার আসবে এবং যাবে। দল তৈরি হবে এবং ভাঙবে। এই দেশ বেঁচে থাকবে, এর গণতন্ত্র বেঁচে থাকবে।”
প্রথম মন্ত্রিসভার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বাবাসাহেব আম্বেডকরের জলনীতির কথা উল্লেখ করেন। সেইসঙ্গে প্রথম শিল্পমন্ত্রী হিসেবে ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর শিল্পনীতির কথাও তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সভাতেই লাল বাহাদুর শাস্ত্রী যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তা ১৯৬৫-র যুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের উদ্ভুদ্ধ করেছিল। তিনি শাস্ত্রীজির সবুজ বিপ্লবের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। সেইসঙ্গে জরুরি অবস্থার সময় গণতন্ত্রের ওপর আঘাতের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
চরণ সিং-এর প্রধানমন্ত্রিত্বকালে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সৃষ্টির কথাও উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, ভোটারদের বয়স ২১ থেকে কমিয়ে ১৮ বছর করার সিদ্ধান্ত এই সভাতেই নেওয়া হয়েছিল। পিভি নরসিমা রাও-এর প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় দেশের নতুন আর্থিক নীতি এবং বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে। অটল বিহারী বাজপেয়ীর ‘সর্ব শিক্ষা অভিযান’-এর কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
পাশাপাশি ৩৭০ ধারা, জিএসটি, এক পদ এক পেনশন এবং গরিবদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের মতো সিদ্ধান্তের কথাও তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের বহু উত্থান পতনের সাক্ষী হল এই সভা। তিনি বলেন, অটলজির নেতৃত্বে ছত্তিশগড়, উত্তরাখণ্ড এবং ঝাড়খণ্ড এই তিনটি নতুন রাজ্যের সৃষ্টি হয়েছিল। অতিমারীর সময় এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা সাংসদরা কীভাবে দেশের মানুষের সাহায্যার্থে ব্যয় করেছিলেন, সেকথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বর্তমান সাংসদদের অত্যন্ত ভাগ্যবান বলে উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, পুরনো ভবন এবং নতুন ভবনের মধ্যে যোগসূত্র হয়ে উঠেছেন বর্তমান সাংসদরা।
নতুন ভবনে সাংসদরা উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং এই সভায় স্মৃতিচারণার সুযোগ দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষের প্রতি ধন্যবাদ জানান।
Entire country is rejoicing the success of Chandrayaan-3. pic.twitter.com/EhSwjKRq7V
— PMO India (@PMOIndia) September 18, 2023
अमृतकाल की प्रथम प्रभा का प्रकाश, राष्ट्र में एक नया विश्वास, नया आत्मविश्वास भर रहा है। pic.twitter.com/ZRMmKMEJ6R
— PMO India (@PMOIndia) September 18, 2023
During G20, India emerged as a 'Vishwa Mitra.' pic.twitter.com/A8qr2SZZOp
— PMO India (@PMOIndia) September 18, 2023
The biggest achievement of the Parliament over the last 75 years has been the ever-growing trust of people. pic.twitter.com/AEj59fhqLZ
— PMO India (@PMOIndia) September 18, 2023
Terror attack on the Parliament was an attack on the democracy. The country can never forget that incident. I pay my tributes to those who laid down their lives to protect the Parliament: PM pic.twitter.com/04NdTy7wS5
— PMO India (@PMOIndia) September 18, 2023
भारतीय लोकतंत्र के तमाम उतार-चढ़ाव देखने वाला हमारा यह सदन जनविश्वास का केंद्र बिंदु रहा है। pic.twitter.com/xVHQ1jNe7q
— PMO India (@PMOIndia) September 18, 2023