ইনফিনিটি ফোরামের দ্বিতীয় পর্যায়ে আজ বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ইনফিনিটি ফোরাম হল অর্থ-প্রযুক্তি অর্থাৎ, ফিনটেক বিষয়ক একটি বিশেষ মঞ্চ যেখানে বিশেষজ্ঞরা তাঁদের মতামত ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ইনফিনিটি ফোরামের এই দ্বিতীয় পর্বটি আয়োজিত হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস সেন্টার্স অথরিটি (আইএফএসসিএ) এবং গিফট সিটির যৌথ ব্যবস্থাপনায়। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট গ্লোবাল সামিট, ২০২৪’-এর প্রাক্-প্রস্তুতিকালে এটি হল এক বিশেষ উদ্যোগ। ইনফিনিটি ফোরামের দ্বিতীয় পর্বের আলোচ্য থিম বা বিষয়বস্তু হল – ‘গিফট-আইএফএসসি : নার্ভ সেন্টার ফর নিউ এজ গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস’।
অনুষ্ঠানের সমাবেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী অতিমারী কবলিত বিশ্ব যেভাবে অর্থনৈতিক দিক থেকে বিপর্যয় ও অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয়েছিল তার অতীতচারণ করে বলেন যে অতিমারীর সেই ভয়ঙ্কর অধ্যায় যদিও আমরা অতিক্রম করে এসেছি, তাহলেও উদ্বেগ ও আশঙ্কার মেঘ কিন্তু এখনও পুরোপুরি কাটেনি। কারণ, এরপরেও রয়েছে বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, মুদ্রাস্ফীতির উচ্চহার এবং ক্রমাগত ঋণের চাপ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও ভারত সহনশীলতা ও অগ্রগতির একটি প্রতীক রূপে বিশ্বকে আলোর পথ দেখিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে গিফট সিটিতে এই ধরনের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন গুজরাটের গর্বকে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত করেছে। ‘গরবা’ একটি স্পর্শাতীত তথা অতিন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভ করায় এই গুজরাটের এই সাফল্যকে সমগ্র জাতির সাফল্য বলে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
শ্রী মোদী বলেন, ভারতের অগ্রগতির কাহিনী সরকারের নীতিগত অগ্রাধিকার, সুপ্রশাসন এবং নাগরিক কল্যাণ কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বর্তমান আর্থিক বছরের প্রথম ছ’মাসে ভারতের অগ্রগতির হার দাঁড়িয়েছে ৭.৭ শতাংশে। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের এক পর্যালোচনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ২০২৩ সালে সমগ্র বিশ্বের অগ্রগতির হারের নিরিখে ভারত বর্তমানে এক বলিষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। আবার, বিশ্বব্যাঙ্কের এক উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন যে বিশ্বব্যাপী নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় অর্থনীতি এখন সকলের মনেই আশা জাগিয়ে তুলেছে। গ্লোবাল সাউথকে ভারত যে পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে পারে, এই মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীও। আবার, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে দীর্ঘসূত্রিতা এখন ভারতে একটি অতীত অধ্যায়। কারণ, বিনিয়োগের উপযোগী উন্নততর সুযোগ ও পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এখানে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে ভারত যেভাবে রূপান্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও সাবলীল ও শক্তিশালী করে তুলেছে, তাতেই বিশ্ববাসীর মনে ভারত সম্পর্কে আশা ও ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে উঠেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশ যখন আর্থিক তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিশা খুঁজতে ব্যস্ত, তখন ভারত যেভাবে তার অর্থনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথকে প্রশস্ত করেছে, তাতে ভারত প্রকৃত অর্থেই বিশ্ববাসীর কাছ থেকে সম্ভ্রম আদায় করে নিতে পেরেছে।
বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে ভারতীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সংহতিকরণের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে শ্রী মোদী বলেন যে নমনীয় তথা উদার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতির সাফল্য বহু ক্ষেত্রেই দেশকে সুফল এনে দিয়েছে। ভারতীয় এবং বিশ্ব বাজারের মধ্যে সংহতিসাধনের ক্ষেত্রে গিফট-আইএফএসসিএ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গিফট সিটির মধ্যে রয়েছে এমন একটি পরিবেশগত ব্যবস্থা যা আন্তর্জাতিক অর্থনীতির দৃশ্যপটের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে পারে। শুধু তাই নয়, দক্ষতা, উদ্ভাবন এবং বিশ্ব সংহতির ক্ষেত্রে নতুন মাপকাঠি নির্ধারণ করারও ক্ষমতা রয়েছে গিফট সিটির। ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস সেন্টার্স অথরিটি গঠনের বিষয়টিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে চিহ্নিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিনিয়োগ সংক্রান্ত ২৭টি নিয়মনীতি এবং ১০টি কাঠামো ইতিমধ্যেই তৈরি করে ফেলেছে আইএফএসসিএ। এর ফলশ্রুতি হিসেবে, অর্থনৈতিক ডামাডোল সত্ত্বেও বিনিয়োগের নতুন নতুন পথ এখন উন্মুক্ত হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত হল বর্তমান বিশ্বের দ্রুততম গতিতে বেড়ে ওঠা ফিনটেক বাজারগুলির অন্যতম। গিফট-আইএফএসসি-র উদ্ভাবন প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফিনটেক তথা অর্থ-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারতের শক্তি বৃদ্ধি ঘটেছে। সমগ্র বিশ্বের অর্থ-প্রযুক্তির প্রবেশ তোরণ হয়ে ওঠার মতো সম্ভাবনা রয়েছে গিফট সিটির। তাই, এই সুযোগ সর্বোচ্চ মাত্রায় গ্রহণ করার জন্য তিনি আর্জি জানান বিনিয়োগকর্তাদের কাছে।
শ্রী মোদী বলেন, গভীর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের দেশ হল ভারত। এখানে প্রত্যেক বিনিয়োগকারী এবং সংস্থার উপযোগী অনেক রকম সুযোগ-সুবিধাই পাওয়া সম্ভব। ভারতের অগ্রগতির ইতিহাসের সঙ্গে গিফট-এর সম্পর্কের ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে উদ্ভাবন প্রচেষ্টার হাত ধরে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে। আকাশপথে দেশে প্রতিদিন যাত্রী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লক্ষের মতো। দেশে যাত্রী বিমানের সংখ্যা ২০১৪-র ৪০০ থেকে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭০০-রও বেশি। শুধু তাই নয়, গত ৯ বছরে দেশে বিমানবন্দরের সংখ্যাও দ্বিগুণ হয়ে উঠেছে। আগামী বছরগুলিতে ভারতের বিভিন্ন বিমান পরিবহণ সংস্থা এক হাজারটির মতো বিমান কেনার জন্য এখন প্রস্তুত। এক্ষেত্রেও গিফট সিটির অবদান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এইভাবেই প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারত এখন অভাবনীয় সাফল্য সম্ভব করে তুলেছে। প্রসঙ্গত, ভারতীয় যুব সমাজের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ভারতে বর্তমানে বহু তরুণ প্রতিভা উদ্ভাবন প্রচেষ্টার সঙ্গে কোনো না কোনভাবে যুক্ত রয়েছেন। ফলে, বিশ্বের যে কোনো বড় বড় সংস্থা তাঁদের কাছ থেকে দক্ষতা আশা করতে পারে।
ভাষণের শেষ পর্বে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আর কয়েক বছরের মধ্যেই ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে গড়ে উঠবে এক উন্নত ভারত। এই প্রসঙ্গে নতুন নতুন মূলধনী বিনিয়োগ, ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার এবং নতুন যুগের উপযোগী আর্থিক পরিষেবার ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শ্রী মোদী আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্ববাসীর স্বপ্ন পূরণে আসুন, আমরা সকলে মিলে গিফট-আইএফএসসি-র সঙ্গে একযোগে এগিয়ে যাই। বিশ্বের প্রধান প্রধান সমস্যার সমাধানে আমরা মিলিতভাবে আমাদের উদ্ভাবন প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাই।
आज भारत की Growth Story ने दुनिया को दिखाया है कि... pic.twitter.com/mICUFPGPxA
— PMO India (@PMOIndia) December 9, 2023
India - A ray of hope for the world. pic.twitter.com/CNJoTU6vme
— PMO India (@PMOIndia) December 9, 2023
हम GIFT City को New Age Global Financial and Technology Services का Global Nerve Centre बनाना चाहते हैं: PM @narendramodi pic.twitter.com/w6bebrBbcU
— PMO India (@PMOIndia) December 9, 2023
India is one of the fastest growing FinTech markets in the world today. pic.twitter.com/OGuGu7szZn
— PMO India (@PMOIndia) December 9, 2023
India is a country with deep democratic values, and a historical tradition of trade and commerce.
— PMO India (@PMOIndia) December 9, 2023
The most diverse range of opportunities exists for every investor in India. pic.twitter.com/Y2N0sjHxvr