“যখন বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলির গতি স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল, তখন ভারত শুধু সমস্যা কাটিয়েই ওঠেনি, এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে”
"২০১৪’র পর আমাদের নীতি প্রণয়নে শুধুমাত্র প্রারম্ভিক সুফলগুলির কথাই ভাবা হয়নি, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের প্রভাবগুলিকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে”
“এই প্রথম আমাদের দেশের দরিদ্র মানুষ নিরাপত্তা ও মর্যাদার আসন পেয়েছে”
“সুনির্দিষ্ট পন্থায় দ্রুতগতিতে কর্মকান্ডের সাক্ষী থাকছে গোটা দেশ”
"ক্ষমতা প্রয়োগের মনোভাব থেকে বেড়িয়ে সেবার মনোভাব নিয়ে দরিদ্র মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা”
“বিগত ৯ বছরে দলিত, বঞ্চিত, আদিবাসী, মহিলা, দরিদ্র, মধ্যবিত্ত শ্রেণী – সকলেই একটি পরিবর্তন অনুভব করছেন”
“দেশের বিরাট একটি অংশের মানুষের সুরক্ষা বলয় হ’ল প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা”
“সঙ্কটের সময় ভারত বেছে নিয়েছে স্বনির্ভরতার পথ; এই দেশে সূচনা হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সফল প্রতিষেধক প্রদান অভিযান”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির তাজ প্যালেসে আজ সাধারণতন্ত্র শিখর সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এই শিখর সম্মেলনে যোগ দিতে পেরে আনন্দিত। ২০১৯ – এ সাধারণতন্ত্র শিখর সম্মেলনের মূল ভাবনা ছিল ‘ভারতের মুহূর্ত’। সেকথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনাদেশে দ্বিতীয়বার সুস্থিত একটি সরকার গড়ে উঠেছে ভারতে। গোটা দেশ বুঝে গেছে যে, এই সময়টি ভারতেরই। এ বছরের মূল ভাবনা ‘পরিবর্তনের সময়’। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চার বছর আগে যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তার সুবাদেই দেশের মানুষ এখন একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছেন।

কোনও একটি দেশের অগ্রগমনের অভিমুখ উপলব্ধি করা যায়, তার বিকাশের গতি থেকে – একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হয়ে উঠতে ভারতের সময় লেগেছে ৬০ বছর। ২০১৪’য় কষ্টেশিষ্টে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে সক্ষম হয়েছিল এই দেশ। এর মানে হ’ল – সাত দশকে ভারত ২ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হতে পেরেছে। এরপর, মাত্র ৯ বছরে ভারত হয়ে উঠেছে প্রায় ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশ। অতিমারী সত্ত্বেও এক্ষেত্রে ভারত বিশ্ব তালিকায় ১০ থেকে উঠে ৫ নম্বরে পৌঁছেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কোনও নীতির ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষ্যটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, প্রত্যেক কর্মসূচির দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিঘাতও থাকে, যা বোঝা যায় কিছু পরে। স্বাধীনতার পর দেশ যেভাবে এগিয়েছিল, তাতে সরকার হয়ে উঠেছিল নিয়ন্ত্রক মাত্র। প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হয়েছিল, বেসরকারি এবং অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি ক্ষেত্রকে তেমনভাবে বিকশিত হতে দেওয়া হয়নি। এর ফলে, বিশ্বের অন্য অংশের তুলনায় ভারতের ভোগব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে অনেক কম। বিনিয়োগের সুযোগ কমে যায়, উদ্ভাবনের সহায়ক বাস্তুতন্ত্রের উপস্থিতি ভারতে প্রায় ছিলই না। যুবসমাজ সরকারি চাকরির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন, শুরু হয়ে যায় মগজ চালান।

 

২০১৪’র পর সরকার নীতিসমূহের প্রারম্ভিক সুবিধাগুলির পাশাপাশি পরবর্তী পর্যায়ের প্রভাবগুলির উপরও অগ্রাধিকার দিতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বিগত ৪ বছরে গৃহ প্রাপকের সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লক্ষ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৭৫ লক্ষেরও বেশি বাড়ি প্রাপকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এইসব বাড়ির মালিকানা মহিলাদের। এইসব বাড়ি নির্মাণের খরচ বেশ কয়েক লক্ষ টাকা। ফলে, কোটি কোটি দরিদ্র মহিলা এখন ‘লাখপতি’ দিদি হয়ে উঠেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মসূচিটি কর্মসংস্থানেরও সহায়ক।

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার কথাও উল্লেখ করেন। অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের আর্থিক সহায়তাদানের এই প্রকল্প সম্প্রতি ৮ বছর পূর্ণ করেছে। এর আওতায় ৪০ কোটি উদ্যোগকে ঋণ দেওয়া হয়েছে এবং সুবিধাভোগীদের ৭০ শতাংশই মহিলা। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, এই কর্মসূচির প্রারম্ভিক সুফলটি হ’ল কর্মসংস্থান ও স্বনিযুক্তির সুযোগ বৃদ্ধি। মহিলাদের জন্য জন ধন অ্যাকাউন্ট কিংবা মহিলাদের নেতৃত্বাধীন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এগোনোর কাজ অনেকটাই হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর অভিমত।

পিএম স্বামিত্ব যোজনার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের প্রভাবের বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করেন। এর আওতায় প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সম্পত্তি কার্ড সম্পত্তি সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ এবং প্রশাসনিক জটিলতাও কমেছে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন তাঁর ভাষণে।

 

বিগত ৯ বছরে দলিত, বঞ্চিত, আদিবাসী, মহিলা, দরিদ্র, মধ্যবিত্ত – প্রত্যেকেই ইতিবাচক পরিবর্তন অনুভব করছেন বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুনির্দিষ্ট পন্থায় দ্রুতগতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সাক্ষী থাকছে সারা দেশ। আয়ুষ্মান যোজনা, সুলভে ওষুধপত্র, নিখরচায় প্রতিষেধক কিংবা দুর্ঘটনা বিমা কোটি কোটি মানুষের নিরাপত্তা বলয় হিসাবে কাজ করছে।

পিএম গরীব কল্যাণ যোজনা এমনই একটি নিরাপত্তা বলয় বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা অতিমারীর সময়ও কেউ যাতে অভুক্ত না থাকেন, তা নিশ্চিত করাই ছিল ঐ কর্মসূচির লক্ষ্য। এই অন্ন যোজনার আওতায় সরকার খরচ করছে ৪ লক্ষ কোটি টাকা। ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’, জেম ত্রয়ী প্রভৃতি প্রকল্প প্রকৃত অর্থেই সামাজিক ন্যায়ের বার্তাবাহী। আইএমএফ – এর সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইসব প্রকল্পের কল্যাণে চরম দারিদ্র দূর হওয়ার মতো উৎসাহজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

২০১৪ সালের আগে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে অনেক অনিয়ম হয়েছে, বর্তমানে এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এসেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। এখন সরাসরি সুবিধা হস্তান্তর কর্মসূচির কল্যাণে প্রাপকরা টাকা পেয়ে যাচ্ছেন মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই। বন্ধ করা গেছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার অপচয়।

পরিবর্তনের এই যাত্রাপথে সমকালীনতার পাশাপাশি, ভবিষ্যতের বিষয়টিও যুক্ত বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। বিগত ৯ বছরে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একের পর এক মাইলফলক অতিক্রম করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি সম্পর্কিত ক্ষেত্রগুলি সরকারের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয়ে দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিকশিত হোক – এমনটাই কাম্য। ফাইভ-জি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত যেভাবে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়েছে, তা নজর কেড়েছে সারা বিশ্বের।

করোনা অতিমারীর মতো মারাত্মক সঙ্কটের সময় ভারত আত্মনির্ভরতার মন্ত্রে এগিয়েছে এবং দেশে খুব কম সময়ের মধ্যে তৈরি হয়েছে কার্যকর প্রতিষেধক, শুরু হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম প্রতিষেধক কর্মসূচি। তবে, কিছু মানুষ ভারতে তৈরি প্রতিষেধকের বদলে বিদেশি ওষুধের উপরই সেই সময় ভরসা করেছিলেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

নানা বাধা সত্ত্বেও ডিজিটাল ভারত অভিযান এগিয়ে চলেছে বলে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রেও কিছু মানুষ নেতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন বলেও তাঁর মন্তব্য। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কালো টাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। জেম ত্রয়ীর কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রায় ১০ ভুয়ো প্রাপক চিহ্নিত করা গেছে। সরাসরি সুবিধা হস্তান্তর কর্মসূচি যোগ্য প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে ২৮ লক্ষ কোটি টাকা। সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ঠেকাতে তৈরি হওয়া জেম পোর্টালেরও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অমৃতকালে প্রত্যেক ভারতীয়র প্রচেষ্টা শীঘ্রই বিকশিত ভারতের স্বপ্ন পূরণ সম্ভব করে তুলবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
‘Make in India’ is working, says DP World Chairman

Media Coverage

‘Make in India’ is working, says DP World Chairman
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi condoles loss of lives due to stampede at New Delhi Railway Station
February 16, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has condoled the loss of lives due to stampede at New Delhi Railway Station. Shri Modi also wished a speedy recovery for the injured.

In a X post, the Prime Minister said;

“Distressed by the stampede at New Delhi Railway Station. My thoughts are with all those who have lost their loved ones. I pray that the injured have a speedy recovery. The authorities are assisting all those who have been affected by this stampede.”